আবারো প্যারিসে হামলায় নিহত ১, হামলাকারীও নিহত
প্যারিসের কেন্দ্রস্থলে এক আততায়ী ‘আল্লাহু আকবর’ বলে চিৎকার করে ছুরি নিয়ে হামলা চালিয়ে এক পথচারীকে হত্যা ও অপর চার জনকে আহত করেছে।
শনিবার রাতের এ ঘটনায় হামলাকারীও পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ফ্রান্সের কর্তৃপক্ষ, খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
হামলাকারীর পরিচয় এখনো নিশ্চিত করতে না পারলেও হামলাকারী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর সদস্য হতে পারেন বলে ধারণা করছে দেশিটির পুলিশ।
প্যারিস পুলিশের বরাত দিয়ে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করেছে বিবিসি। প্রাথমিকভাবে হামলায় দু'জন নিহত ও পাঁচজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেলেও পরে জানা যায়, ছুরিকাঘাতে একজন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন।
এক সংবাদ সম্মেলনে ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী এদুয়ার ফিলিপ জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৪৭ মিনিটে পুলিশের কাছে প্রথম কলটি আসে, এর পাঁচ মিনিটের মধ্যে পুলিশ কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান এবং নয় মিনিটের মধ্যে হামলাকারীকে ‘প্রতিরোধ’ করেন।
পুলিশ ইউনিয়নের প্রতিনিধি রোকো কনতেন্তো রয়টার্সকে জানিয়েছেন, পাশে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনের ওপর ছুরি নিয়ে হামলার পর আততায়ী পুলিশের কাছে এসে চিৎকার করে বলতে থাকে, “আমি তোমাদের হত্যা করবো, আমি তোমাদের হত্যা করবো!”
তখন পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে গুলি করে।
হামলার জন্য ফ্রান্সের রাজধানীর কেন্দ্রস্থলে পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় একটি স্থান বেছে নেয় হামলাকারী। প্যারিসের এই জায়গাটিতে বহু রেস্তোরাঁ ও ক্যাফে, নামকরা খুচরা পণ্যের দোকান ও প্যারিস অপেরা অবস্থিত।
সংবাদ সম্মেলনে সরকারি কৌঁসুলি ফ্রাঁসোয়া মোলা জানিয়েছেন, পুলিশের সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিট ঘটনার বিষয়ে একটি তদন্ত শুরু করবে।
হামলাকারীর পরিচয় তখনো পর্যন্ত জানা যায়নি বলে রোববার ভোররাতের দিকে জানিয়েছে কর্মকর্তারা।
রয়টার্সের হাতে আসা একটি ছবিতে খালি গায়ে কালো ট্রাউজার পরা দাড়িওয়ালা এক তরুণকে দেখা গেছে, যাকে হামলাকারী বলে দাবি করেছে একটি সূত্র।
নিজেদের বার্তা সংস্থা আমাকে হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস; কিন্তু দাবির পক্ষে বিস্তারিত কোনো প্রমাণ দাখিল করেনি।
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরার্দ কুলম্ব ঘটনাটিকে ‘জঘন্য’ হামলা বলে অভিহিত করেছেন।
কীভাবে ওই আততায়ীকে পুলিশের দিকে দৌঁড়ে যেতে দেখেছেন, ফরাসি গণমাধ্যমে প্রত্যক্ষদর্শীরা তার বর্ণনা দিয়েছেন।
এক নারী প্রত্যক্ষদর্শী এলসিএল টেলিভিশনকে বলেছেন, “আমাদের দ্রুত একটি বারে ঢুকে যেতে বলা হয়। আমি কৌতুহলি হয়ে আবার বের হই। বের হয়ে দেখি, ২০০ মিটার দূরে এক ব্যক্তি মাটিতে পড়ে আছেন। পুলিশ, দমকল ও অ্যাম্বুলেন্স পৌঁছে গেছে। এরপর আমি আর কিছু দেখিনি।”
২০১৫ সালে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) অনুগত জঙ্গিদের ধারাবাহিক হামলায় ফ্রান্সজুড়ে ২৪০ জন নিহত হওয়ার পর থেকে দেশটি উচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে, এর মধ্যেই এ হামলাটি হল।
হামলার পর এক বিবৃতিতে ‘সন্ত্রাসীকে প্রতিরোধ’ করার জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রশংসা করে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেছেন, “স্বাধীনতার শত্রুদের এক ইঞ্চিও ছাড় দিবে না ফ্রান্স।”