বিশ্বে প্রতি মিনিটে ২০ জন মানুষ উদ্বাস্তু হচ্ছে!



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর,বার্তা২৪.কম
আদিঅন্তহীন শরণার্থীরা, ছবি:রয়টার্সের সৌজন্যে

আদিঅন্তহীন শরণার্থীরা, ছবি:রয়টার্সের সৌজন্যে

  • Font increase
  • Font Decrease

উদ্বাস্তু বা শরণার্থী বা রিফিউজিদের পক্ষে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য ২০ জুন আন্তর্জাতিক শরণার্থী দিবস পালন করা হলেও বৈশ্বিক রিফিউজি সমস্যার চিত্রটি মোটেও ভালো নয়। শরণার্থী দিবসের প্রাক্কালে বিলাতের প্রখ্যাত ডেইলি সান পত্রিকা যে সর্বসাম্প্রতিক পরিসংখ্যান হাজির করেছে, তা মারাত্মক, ভয়াবহ ও আশঙ্কাজনক।

'সান'-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, বর্তমান সময়ে প্রতি এক মিনিটে বিশ্বের নানা স্থানে ২০ জন মানুষ উদ্বাস্তু হচ্ছে। যুদ্ধ, সহিংসতা ও প্রাণনাশের বিপদ থেকে বাঁচতে ঘরবাড়ি ছেড়ে এসব মানুষ উদ্বাস্তু পরিচয়ে শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নিচ্ছে, যাদের অর্ধেকই শিশু-কিশোর।

উদ্বাস্তুদের ৮৬% ভাগ উন্নয়নশীল দেশের হতভাগা নারী ও পুরুষ। এরা মূলত এশিয়া ও আফ্রিকার সংঘাত কবলিত দেশগুলোর বিপন্ন নাগরিক। দাঙ্গা-হাঙ্গামা-যুদ্ধ-বিদ্রোহের বিশ্ব তালিকাটিতেও এশিয়া-আফ্রিকার দেশগুলো এগিয়ে। এসব দেশের মানুষই অকাতরে উদ্বাস্তু হচ্ছে।

বিশ্বের মোট শরণার্থীর ৫১% ভাগ ১৮ বছরের কম বয়সী। তারা হলো শিশু ও কিশোর। জীবনের কঠিন বাস্তবতায় যাদের শিক্ষা ও শৈশব ধূলিসাৎ হচ্ছে রক্ত, মৃত্যু, অস্ত্রের তাণ্ডবে।

কেনিয়ার দাদাব শরণার্থী শিবিরকে বলা হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় উদ্বাস্তু আবাস, যেখানে ৩২৯,০০০ শরণার্থী নারী-পুরুষ-শিশু বসবাস করে। তবে সান পত্রিকার এই সংখ্যাগত দাবির পরিপ্রেক্ষিতে চ্যালেঞ্জ করা যায়, বাংলাদেশের কক্সবাজারের টেকনাফ-কুতুপালং রিফিউজি ক্যাম্পকে সামনে রেখে।

মায়ানমারের জাতিগত নিধনের কবল থেকে রক্ষা পেতে যে ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তরেখায় বসবাস করছেন, অনেক বিশেষজ্ঞই তাদেরকে বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ শরণার্থী গোষ্ঠী বলে মনে করেন। তাদের আশ্রয়স্থলকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ রিফিউজি ক্যাম্প বলেও বিশ্বাস করেন তারা।

ডেইলি সান আরও যে চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছে তা হলো, বিশ্বের আলাদা আলাদা রিফিউজিরা এখন একটি একক জনগোষ্ঠীতে পরিণত হচ্ছে। বিভিন্ন দেশ ও জাতিসত্তার পাশাপাশি বিশ্বের রিফিউজিরাও একটি নিজস্ব দল গঠন করে অলিম্পিক ক্রীড়ায় অংশ নিচ্ছে। ২০১৬ সালের রিও অলিম্পিক প্রতিযোগিতায় প্রথমবারের মতো রিফিউজিদের নিয়ে তৈরি টিম অংশ নেয়।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jun/20/1561003239358.jpg
বিপন্ন-অসহায় শরণার্থীরা, যাদের অর্ধেকই শিশু, ছবি:রয়টার্সের সৌজন্যে

 

জাতিসংঘের একাধিক সংস্থা, মানবিক ও ত্রাণ সংগঠন, গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বিশেষজ্ঞরা একটি বিষয়ে একমত হয়েছেন যে, পৃথিবীতে মানব সভ্যতার ইতিহাসে সর্বাধিক সংখ্যক শরণার্থীর দেখা পাওয়া যাচ্ছে বর্তমান সময়ে। অতীতে আর কখনোই এতো বিপুল শরণার্থী পৃথিবীতে ছিল না।

তবে কোনও ব্যক্তি বা সংস্থার পক্ষে বিশ্বে শরণার্থীর প্রকৃত সংখ্যা নিরূপণ করা সত্যিই কঠিন। কারণ, বর্তমানে পৃথিবীর নানা প্রান্তে প্রতি মিনিটে মানুষ গৃহহীন ও উদ্বাস্তু হচ্ছে। স্রোতের মতো মানুষ ঘরবাড়ি, দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে আদিঅন্তহীন শরণার্থীদের মিছিলে। ফলে ক্রমবর্ধমান সংখ্যাটি সঠিকভাবে হিসাব করে বের করাও বেশ দুরূহ বিষয়।

তথাপি ধারণা করা হয় যে, বিশ্বে বর্তমানে আনুমানিক ৭ কোটি মানুষ স্বদেশ ও স্বগৃহ ছেড়ে শরণার্থী জীবন বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন। এই সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) কর্তৃক প্রতি বছর প্রকাশিত 'গ্লোবাল রিফিউজি ট্রেন্ডস' নামক রিপোর্টে প্রাপ্ত তথ্য, পরিসংখ্যান ও হিসাবগুলো লক্ষ্য করলে শরণার্থীদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা দেখতে পাওয়া যায়।

বিভিন্ন স্টাডি রিপোর্ট অনুযায়ী ফিলিস্তিন, আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, মায়ানমার, সোমালিয়া, দক্ষিণ সুদান, সিয়েরালিওন প্রভৃতি দেশকে বিশ্বের প্রধান শরণার্থী উৎসস্থল রূপে বিবেচনা করা হয়। বাংলাদেশ, লেবানন, আজারবাইজানকে গণ্য করা হয় সর্বাধিক সংখ্যক রিফিউজিদের আশ্রয়দাতা দেশ হিসাবে। 

আফ্রিকা, এশিয়া, বিশেষত মধ্যপ্রাচ্য, দক্ষিণ ও পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলের মানুষ শরণার্থী হয়েছেন সবচেয়ে বেশি। দেশগুলো অনুন্নত ও দরিদ্র এবং সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে পশ্চাৎপতা ও অশিক্ষায় জর্জরিত। দুঃখজনক তথ্য হলো, সংঘাত কবলিত ও শরণার্থী সমস্যাগ্রস্ত সিংহভাগ দেশই মুসলিম অধ্যুষিত।

বর্তমান সময়ে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি শরণার্থী সৃষ্টি হওয়ার পেছনে যুদ্ধ, গৃহযুদ্ধ, দাঙ্গা ও সংঘাতকে অন্যতম কারণ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞ-গবেষকরা। রাজনৈতিক-মতাদর্শিক কারণে এবং ধর্মীয়-জাতিগত উগ্রতা ও সম্প্রদায়গত বিরোধের জন্য সৃষ্ট যুদ্ধ-বিগ্রহ, গণহত্যা ও শারীরিক-মানসিক-যৌন নিপীড়ন থেকে বাঁচতে পরিবার বা আস্ত সম্প্রদায় দেশ ছেড়ে শরণার্থী হয়ে পালিয়ে রক্ষা পাচ্ছে।

যারা পালাচ্ছে, তারা মানবেতর জীবন-যাপন করে হলেও বেঁচে থাকতে পারছে। কিন্তু খুব সামান্যই স্বদেশের নিজ বাস্তুভিটায় ফিরে যেতে পারছে। পৃথিবীতে এমন বহু শরণার্থী শিবির আছে, যেখানে উদ্বাস্তুরা কয়েক প্রজন্ম ধরে বসবাস করছেন। শরণার্থী পরিচয়েই মারা যাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ এবং শরণার্থী পরিচয়েই জন্ম নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ শিশু।

ফলে বিশ্বের মানবিক সমস্যার মধ্যে এক নম্বর বলে শরণার্থী ইস্যুকে বিবেচনা করা হচ্ছে। শুধু শরণার্থী বা তাদেরকে স্বভূমিতে প্রত্যাবর্তনই নয়, তাদের পরিবার-পরিজন, শিশু-নারী, স্বাস্থ্য-শিক্ষা, ভরণপোষণ, নিরাপত্তা ইত্যাদি চ্যালেঞ্জিং এজেন্ডাও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। আশ্রয়দাতা দেশগুলোর বিভিন্ন বিষয়ও শরণার্থীদের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা কাঠামোয় অগ্রাধিকার পাচ্ছে।

এসব কারণে শরণার্থী ইস্যু একজন ব্যক্তি বিশেষের সমস্যার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা, সামাজিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক ভারসাম্য, রাজনৈতিক শান্তি ও সাংস্কৃতিক সহনশীলতা বিষয়ক প্রপঞ্চের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহকেও স্পর্শ করছে।

শরণার্থী সমস্যার বহুমাত্রিক অভিমুখের কারণে এবং সংশ্লিষ্ট প্রাসঙ্গিক বিষয়াবলীকে মোকাবেলার প্রত্যয়ে বিদ্যমান শরণার্থী সমস্যাকে সমন্বিত ভাবে দেখার প্রয়োজনীয়তা তীব্রতর হচ্ছে। ফলে চলতি ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক শরণার্থী দিবসের মূল স্লোগান বা প্রতিপাদ্য ঘোষণা করা হয়েছে 'Global Compact on Refugees'.

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের কাঁধে ১১ লাখ রোহিঙ্গার বোঝা

   

দুর্নীতি মামলায় তদন্তের মুখোমুখি মাহাথির ও তার ছেলেরা



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বলেছেন, তারা এমন একটি দুর্নীতি মামলার তদন্ত শুরু করতে যাচ্ছেন যে মামলায় দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ ও তার ছেলেদের নাম রয়েছে।

মিডিয়া সংস্থাগুলোর দ্বারা প্রকাশিত অফশোর আর্থিক এবং ব্যবসায়িক রেকর্ডগুলোর তদন্তের অংশ হিসাবে গত জানুয়ারিতে মাহাথিরের ব্যবসায়ী পুত্র মিরজান এবং মোখজানিকে তাদের সম্পদের পরিমান ঘোষণা করার নোটিশ দিয়েছিল দেশটির দুর্নীতি দমন কমিশন।

রয়টার্স জানিয়েছে, মালয়েশিয়ার দুর্নীতি দমন প্রধান কমিশনার আজম বাকি বৃহস্পতিবার মাহাথির বা তার ছেলেদের বিরুদ্ধে তদন্তের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে অস্বীকার করেছেন।

তিনি এক মন্তব্যে টেলিভিশন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আগে তদন্ত শেষ হতে দিন। একটি উপযুক্ত সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করুন, যখন আমরা মামলার ফলাফল প্রকাশ করতে পারবো।’

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের দীর্ঘদিনের শত্রু ৯৮ বছর বয়সি মাহাথিরের সঙ্গে মিত্রতা রয়েছে এমন বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের বিরুদ্ধে কমিশন বেশ কয়েকটি দুর্নীতি মামলা চালু করেছে।

তবে, আনোয়ার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের টার্গেট করার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছেন, ‘তদন্তগুলো উচ্চ পর্যায়ের দুর্নীতি মোকাবেলায় সরকারের প্রচেষ্টার অংশ।’

;

মোদি এবং রাহুলের বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণ বিধিভঙ্গের অভিযোগ নিয়ে তলব করেছে নির্বাচন কমিশন।

এ ছাড়াও এ বিষয়ে কংগ্রেস এবং বিজেপির সভাপতিকে নোটিশ পাঠিয়ে দুই দলের দুই তারকা প্রচারককে সাবধান করার জন্যও বলেছে কমিশন।

শুধু তাই নয়, মোদি এবং রাহুলকে কী বলে সাবধান করা হলো, সেটা চিঠি লিখে জানানোর নির্দেশও দিয়েছে কমিশন। একই সঙ্গে ওই চিঠিতে বিজেপি এবং কংগ্রেসকে দল এবং দলের তারকা প্রচারকদের দায়িত্বও মনে করিয়ে দিয়েছে নির্বাচনী সংস্থাটি।

এনডিটিভি জানিয়েছে, মোদি এবং রাহুল-উভয়ের বিরুদ্ধেই ধর্মের নামে সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করে ভোট চাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে নালিশও জমা পড়েছে।

গত রবিবার (২১ এপ্রিল) ভোটপ্রচারের জন্য রাজস্থানের বাঁশওয়ারায় একটি জনসমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন মোদি। সেখানে গিয়ে তিনি অভিযোগ তুলেছিলেন যে, কংগ্রেস তার ইস্তাহারে দেশের সম্পদ মুসলমানদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

তিনি বলেছিলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং অতীতে বলেছিলেন, দেশের সম্পদে সর্বাগ্রে অধিকার মুসলিমদের। সেই কারণেই সমীক্ষা করার পরিকল্পনা নিয়েছে কংগ্রেস। যাতে দেশবাসীর কষ্টার্জিত অর্থ মুসলিম এবং অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া যায়।’

এর পরে সোমবার উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে গিয়ে মোদি বলেছিলেন, ‘কংগ্রেসের নজর আপনার সম্পত্তির উপরে। ক্ষমতায় এলে এরা মা-বোনেদের মঙ্গলসূত্র ছিনিয়ে নেবে।’

এদিকে, সম্প্রতি হায়দরাবাদে কংগ্রেস নেতা রাহুল মন্তব্য করেন যে, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে কোন শ্রেণির হাতে কত সম্পদ আছে, তা আর্থ-সামাজিক সমীক্ষা করে দেখবে। সেই মন্তব্যের রেশ ধরেই বাঁশওয়াড়া এবং আলিগড়ে ওই মন্তব্য করেন মোদি। মোদির সেই মন্তব্যের নিন্দায় সরব হয় কংগ্রেস এবং বামেরা। কমিশনের কাছে অভিযোগও জমা দেন তারা।

অন্যদিকে, রাহুলের বিরুদ্ধে ভাষা এবং অঞ্চলের ভিত্তিতে ঘৃণা ও বিভেদ সৃষ্টির অভিযোগ তুলে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপিও। পদ্মশিবিরের অভিযোগ, দেশের দারিদ্র বৃদ্ধি নিয়ে রাহুল যে দাবি করে চলেছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। রাহুলের বিরুদ্ধে ভোটের পরিবেশ নষ্ট করার চেষ্টা করার অভিযোগও তোলে বিজেপি।

;

গণকবরের বিষয়ে ইসরায়েলের কাছে জবাব চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসরায়েলের অবরোধে ধ্বংস হওয়া গাজার দুটি হাসপাতালে গণকবর আবিষ্কারের পর ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে জবাব চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

খবরটি বুধবার (২৪ এপ্রিল) রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছে হোয়াইট হাউস।

গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি জানিয়েছে, ২৪ এপ্রিল স্বাস্থ্যকর্মীরা খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে ইসরায়েলি বাহিনীর হত্যার শিকার এবং গণকবরে প্রায় ৩৪০ জনের মরদেহের সন্ধান পেয়েছেন।

গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালের চত্বরেও দুটি গণকবরে প্রায় ৩০টি মরদেহ পাওয়া গেছে বলে জানা গেছে।

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা জবাব চাই। আমরা এটি পুঙ্খানুপুঙ্খ এবং স্বচ্ছ তদন্ত দেখতে চাই।’

গণকবরগুলো আবিষ্কারের ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমর্থনে পরিস্থিতির স্বাধীন তদন্তে জাতিসংঘের দাবি জোরালো হচ্ছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর নাদাভ শোশানি বলেছেন, ‘নাসেরের কবরটি কয়েক মাস আগে গাজাবাসীরা খনন করেছিল।’

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী স্বীকার করেছে, ফিলিস্তিনিদের দেওয়া কবরের মরদেহগুলো জিম্মিদের সন্ধানকারী সেনারা পরীক্ষা করেছিল। তবে এই হত্যাকান্ডের পেছনে ইসরায়েলের সেনারা ছিল এমন অভিযোগের ব্যাপারে সরাসরি কিছু বলেননি তিনি।

গাজায় ছয় মাসেরও বেশি সময় চলমান যুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনে সুরক্ষা পাওয়া হাসপাতালগুলো বারবার ইসরায়েলি বোমাবর্ষণের শিকার হয়েছে।

উল্লেখ্য, হামাস পরিচালিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে ইসরায়েলের প্রতিশোধমূলক নির্বিচার এই হামলায় গাজায় কমপক্ষে ৩৪,২৬২ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী এবং শিশু।

;

তীব্র ক্ষুধার মুখোমুখি বিশ্বের ২৮ কোটি মানুষ



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার সংকট চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। অবস্থার অবনতি হয়ে বিপজ্জনক মাত্রায় তীব্র ক্ষুধার মুখোমুখি হয়েছে বিশ্বের ২৮ কোটি মানুষ। জাতিসংঘ সংস্থা এক প্রতিবেদনে এ বিষয়ে সতর্ক থাকার কথা বলেছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে সতর্ক বার্তায় বলা হয়েছে, দক্ষিণ সুদান, বুর্কিনা ফাসো, সোমালিয়া এবং মালির লোকেরা সম্ভবত ২০২৩ সালে তীব্রভাবে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ভুগছে।

২০১৯ সালের শেষের দিকে যখন করোনাভাইরাস আঘাত হানে, তখন ৫৫টি দেশের ওপর বৈশ্বিক খাদ্য সংকট নিয়ে করা গবেষণায় দেখা যায়, প্রতি ছয়জনের মধ্যে একজন উদ্বেগজনক হারে খাদ্য সংকটে ভুগছিল। ঠিক পরের বছরই এ সংখ্যা পাঁচজনের মধ্যে একজনে চলে আসে।

২০২৩ সালে ৫৯টি দেশে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন তীব্র খাদ্য সংকটের মুখোমুখি হয়েছিল, যেখানে ২০১৬ সালে ৪৮টি দেশে ১০ জনের মধ্যে একজন খাদ্য সংকটে ভুগছিল।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) পরিচালক ডমিনিক বারজিন বলেছেন, ‘তীব্র খাদ্য সংকটের ফলে তীব্র ক্ষুধার সৃষ্টি হয়। এটি মানুষের জীবিকা ও জীবনের জন্য তাৎক্ষণিক হুমকির সৃষ্টি করে। এমন খাদ্য সংকটের কারণে বিভিন্ন দেশে দুর্ভিক্ষের সৃষ্টি হতে পারে এবং এতে ব্যাপক মৃত্যু হতে পারে।’

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডাব্লওিএফপি) এবং জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) এর যৌথ গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২২ সালের তুলনায় গত বছর ১.২ শতাংশ বেশি মানুষ খাদ্য সংকটে ভুগছিল। করোনা মহামারির পর থেকে এ সংকট উল্লেখযোগ্যভাবে খারাপের দিকে যাচ্ছে। ২০২৩ সালে খাদ্য সংকট উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে।

বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির পরিচালক জিয়ান কার্লো সিরি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, গাজা এবং সুদানে খাদ্য সংকট চরমে পৌঁছেছে। এসব এলাকার মানুষ তীব্র ক্ষুধার কারণে ঘাস খাচ্ছে, ভিক্ষা করছে। যেখানে মানুষ স্পষ্টতই ক্ষুধায় মারা যাচ্ছে। তাদের বেশিরভাগই এখন নিঃস্ব।

ডব্লিউএফপির এ কর্মকর্তা বলেন, আমরা দিনে দিনে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতির কাছাকাছি চলে আসছি। শিশুদের মধ্যে অপুষ্টি ছড়িয়ে পড়ছে। আমরা অনুমান করছি, দুই বছরের কম বয়সী ৩০ শতাংশ শিশু এখন তীব্রভাবে অপুষ্টি এবং উত্তরাঞ্চলের জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ তীব্র ক্ষুধার সম্মুখীন হয়েছে। দুর্ভিক্ষ মোকাবেলায় এখন প্রয়োজন খুব স্বল্প সময়ে খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা।

;