সাহারার ধুলোঝড়ে এথেন্সের আকাশ কমলা রঙে রঙিন
সাহারা মরুভূমি থেকে ধেয়ে আসা ধুলোঝড়ে গ্রিসের রাজধানী এথেন্সের আকাশে কমলা রঙের রঙিন হয়ে উঠেছে।
গ্রিসের কর্মকর্তারা বলছেন, ২০১৮ সালের পর গ্রিসে আঘাত হানা সাহারা মরুভূমির ধূলিঝড় আঘাত হানার পর এটিই সবচেয়ে ভয়াবহ।
মার্চের শেষের দিকে ও এপ্রিলের শুরুতে একইভাবে গ্রিসের আকাশ কমলা রঙের রঙিন হয়ে গিয়েছিল, যা সুইজারল্যান্ড এবং দক্ষিণ ফ্রান্সের এলাকাগুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছিল।
স্থানীয় সময় বুধবার (২৪ এপ্রিল) আকাশ পরিষ্কার হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে গ্রিসের আবহাওয়া পরিষেবা।
সাহারা থেকে ধেয়ে আসা ধূলিঝড়ের কারণে দেশটির অনেক এলাকায় বায়ুর মান খারাপ হয়েছে। আজ সকালে ধুলার কারণে এথেন্সের অন্যতম পর্যটন এলাকার ঐতিহাসিক স্থাপনা অ্যাক্রোপলিস দেখা যাচ্ছিল না। এই মেঘ এথেন্সের উত্তরে থেসালোনিকি শহর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে।
পরিস্থিতিতে এমন যে ধুলার মেঘ পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত যাদের শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা আছে তাদের বাইরে বের হওয়া ও শারীরিক ব্যায়াম এড়াতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিরোধমূলক মাস্ক পরতে বলা হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, সাহারা থেকে প্রতি বছর ৬০ থেকে ২০০ মিলিয়ন টন খনিজ ধূলিকণা নির্গত হয়। বেশিরভাগ ধূলিকণা দ্রুত চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। তবে কিছু কিছু ছোট কণা বহুদূর, কখনো কখনো ইউরোপ পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে।
উচ্চ তাপমাত্রার সংমিশ্রণে এসব ধুলাবালি বিশেষ করে দক্ষিণ গ্রিসের বায়ুমণ্ডল দমবন্ধ হয়ে উঠে।
আবহাওয়াবিদ কোস্টাস লাগোভার্দোস একটি আবহাওয়া কেন্দ্র থেকে এথেন্সের দৃশ্যকে মঙ্গল গ্রহের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) গ্রিসের ফায়ার সার্ভিস গত ২৪ ঘণ্টায় ২৫টি দাবানলের খবর দিয়েছে। ক্রিট দ্বীপে একটি নৌ ঘাঁটির কাছে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে বর্তমানে তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। এ কারণে বেশ কিছু বাড়ি এবং একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল খালি করতে হয়েছে।
থাই সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহার করলো মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী
মিয়ানমারের একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী থাইল্যান্ড সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ একটি শহর থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) একজন কর্মকর্তা স তাও নি বলেছেন, জান্তার সেনাদের কাছ থেকে বিদ্রোহীরা চলতি মাসে এই মূল বাণিজ্য বন্দরটি দখল করেছিল।
কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়নের (কেএনইউ) একজন মুখপাত্র বলেছেন, মায়াওয়াদ্দি শহর থেকে তাদের বাহিনী অস্থায়ীভাবে পশ্চাদপসরণ করেছে।
স তাও নি বলেছেন, ‘কেএনএলএ সেনারা জান্তা সেনাদের এবং তাদের ব্যাকআপ দলকে ধ্বংস করবে যারা মায়াওয়াদ্দির দিকে অগ্রসর হয়েছিল।’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি মায়াওয়াদ্দিতে লড়াই শুরু হয়েছিল। লড়াইয়ের তীব্রতায় একদিনে সেখানকার ৩ হাজার বেসামরিক লোককে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল।
থাইল্যান্ড বুধবার (২৪ এপ্রিল) বলেছে, লড়াই কম হয়েছে এবং বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তারা তার সীমান্ত ক্রসিং পুনরায় চালু করার আশা করছে।
থাই সরকারের মুখপাত্র নিকোর্ন্দেজ বালাঙ্কুরা এক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, ‘পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। তবুও, আমরা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। কারণ, পরিস্থিতির পরিবর্তন হতে পারে।’
পাকিস্তানে আকস্মিক সফরে ইরানের প্রেসিডেন্ট
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য। হামলা-পাল্টা হামলায় লিপ্ত দুই দেশই। সরাসরি না হলেও পরোক্ষভাবে এই যুদ্ধে ঢুকে পড়েছে যুক্তরাষ্টও। এমন পরিস্থিতিতে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির আকস্মিক পাকিস্তান সফর নিয়ে সোরগোল শুরু হয়েছে বিশ্বকূটনৈতিক মহলে।
তিন দিনের সফরে পাকিস্তানে রয়েছেন ইব্রাহিম। এএনআই সূত্রে খবর, তার এই সফর সম্পর্কে ইসলামাবাদের কাছে তেমন কোনও খবর ছিল না।
এদিকে, ইরান এবং পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক খুব একটা মধুর নয়। গত জানুয়ারিতে দুই দেশের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়। হামলা-পাল্টা হামলায় জড়িয়ে পড়ে দুই প্রতিবেশী দেশ।
গত ২৩ জানুয়ারি পাকিস্তানের বালুচিস্তানে জঙ্গি সংগঠন জইশ আল অদলের ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালায় ইরান। কেন এই হামলা, তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছিলেন যে, ওই হামলার লক্ষ্য ছিল জঙ্গি সংগঠন জইশ অল অদল বা ‘আর্মি অফ জাস্টিস’-এর ঘাঁটি ধ্বংস করা।
তেহরানের দাবি ছিল, জইশ অল অদল নামক জঙ্গি সংগঠনের কার্যকলাপ মূলত ইরান-পাকিস্তান সীমান্তজুড়ে। ওই জঙ্গি গোষ্ঠী ইরানের মাটিতে বেশ কয়েকটি হামলা চালিয়েছে বলেও দাবি তোলে ইব্রাহিম সরকার। সেই কারণেই তাদের ঘাঁটি নির্মূল করতে হামলা চালানো হয়েছে পাকিস্তানের মাটিতে।
ইরানের এই দাবি মানতে নারাজ ছিল ইসলামাবাদ। পাকিস্তান সরকার দাবি করে, ইরানের হামলায় দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ইরানকে পাল্টা হামলার হুঁশিয়ারিও দেয় ইসলামাবাদও।
পাকিস্তানের হুঁশিয়ারি যে ফাঁপা ছিল না, তার প্রমাণ মেলে দুই দিনের মধ্যেই। ইরানের উপর পাল্টা হামলা চালায় পাকিস্তান। ইরান এবং পাকিস্তানের হামলা-পাল্টা হামলার আবহে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে ফাটল ধরে।
তার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে। এই আবহে ইরানের প্রেসিডেন্টের আচমকা পাক সফর খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। কেন তিনি পাকিস্তানে গেলেন? এ বিষয়ে তেহরানের যুক্তি, দুই দেশের ভেঙে পড়া সম্পর্ক মজবুত করার লক্ষ্যেই এই সফর।
সোমবার (২২ এপ্রিল) ইসলামাবাদে পা রাখেন রাইসি। শুধু তিনি একা নন, এই সফরে ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে রয়েছেন তার স্ত্রী। এ ছাড়াও ইব্রাহিমের সফরসঙ্গী হিসাবে রয়েছেন তার দেশের মন্ত্রিসভার একাধিক সদস্যও। কয়েক জন ব্যবসায়ীও রয়েছেন রাইসির সঙ্গে।
সোমবারই পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শরীফের সঙ্গে বৈঠক করেন ইব্রাহিম। দুই প্রতিবেশী দেশের অর্থনীতি, সীমান্ত, জ্বালানি সমস্যা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হয় দুই নেতার মধ্যে। পাকিস্তান সরকারও ইরানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
রাইসির এই আকস্মিক সফরের নানা গুঞ্জনের মধ্যে বিশ্লেষকদের ধারণা, ইসরায়েলে আক্রমণের তেজ বৃদ্ধি করতে নতুন কৌশল অবলম্বন করছে তেহরান। তারা ইসরায়েলের উপর পারমাণবিক বোমা দিয়েও হামলা চালাতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তাই নিজেদের পারমাণবিক শক্তির ভান্ডার বৃদ্ধি করতেই প্রতিবেশী দেশের সাহায্য চাইছে ইরান।
ইরান সফরে উত্তর কোরিয়ার প্রতিনিধি দল
উত্তর কোরিয়ার একটি অর্থনৈতিক প্রতিনিধি দল ইরান সফরের উদ্দেশ্যে পিয়ংইয়ং ত্যাগ করেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। পরমাণু শক্তিধর দেশটির সরকারি সংবাদ মাধ্যম বুধবার (২৪ এপ্রিল) এ খবর নিশ্চিত করেছে।
এদিকে উত্তর কোরিযার প্রতিনিধি দলের এই ব্যতিক্রমী সফরকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে।
উত্তর কোরিয়ার বৈদেশিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিষয়ক মন্ত্রী উন জং হু দেশটির প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সির (কেসিএনএ) খবরে বলা হয়েছে, প্রতিনিধি দলটি সোমবার (২২ এপ্রিল) ইরানের উদ্দেশ্যে পিয়ংইয়ং ত্যাগ করেছে। তবে সংস্থার খবরে বিস্তারিত আর কিছু উল্লেখ করা হয়নি।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে মস্কোর সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা জোরদার করছে পিয়ংইয়ং। আর এই প্রেক্ষাপটেই ইরানে তাদের এই সফর অনুষ্ঠিত হলো।
অন্যদিকে সিউলের দাবি, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্যে রাশিয়াকে সাত হাজার কন্টেইনার গোলাবারুদ সরবরাহ করেছে উত্তর কোরিয়া।
উত্তর কোরিয়ার শুরু করা গোয়েন্দা স্যাটেলাইট কর্মসূচিতে মস্কোর কারিগরী সহায়তার বিনিময়ে এই কন্টেইনার সরবরাহ করা হয়েছে বলে ধারণা করছে সিউল।
ইরান ও রাশিয়াও ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক ও সামরিক মিত্র। রাশিয়া প্রায়শই ইউক্রেন যুদ্ধে ইরানের ড্রোন ব্যবহার করছে।
কোরিয়া ইন্সষ্টিটিউট ফর ন্যাশনাল ইউনিফিকেশনের সিনিয়র বিশ্লেষক হং মিন বলেছেন, সফরটি এই আভাস দিচ্ছে যে, ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক আরো সম্প্রসারণে আগ্রহী উত্তর কোরিয়া। সম্ভবত অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে দেশটি সম্পর্ক আরো গভীর করতে চায়। ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘর্ঘের প্রেক্ষিতে ইরানের আরো অস্ত্র প্রয়োজন হতে পারে।