ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিচার-পর্ব-১

সাত বছরে ২৬৫১ মামলা সাজা ১৫টিতে



নাজমুল আহসান রাজু, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সারা দেশের সব সাইবার অপরাধের বিচার চলছে রাজধানীর ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে। সাত বছরে আগে ২০১৩ সালে এই ট্রাইব্যুনাল যাত্রা শুরু করে। বিচারকাজ চলে ২০০৬ সালের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে। শুরুর দিকে মামলা নিষ্পত্তিতে ঢিমেতাল থাকায় প্রথম রায় আসে ২০১৪ সালে। গত দুই বছর বেড়েছে মামলা নিষ্পত্তির হার। ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস হওয়ার পর বেড়েছে মামলার সংখ্যাও। সব মিলে সাত বছরে মামলা হয়েছে ২ হাজার ৬৫১টি। এগুলোর মধ্যে প্রায় অর্ধেক এক হাজার ৫৯টি নিষ্পত্তি হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে সাজা হয়েছে মাত্র ১৫ মামলায়। আসামিরা খালাস পেয়েছেন ৯১টিতে।

অভিযোগ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ডিজিটাল মাধ্যমে অপপ্রচার, মানহানি, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, মিথ্যা ও ভীতি প্রদর্শনের জন্য অশ্লীল ছবি ও ভিডিও প্রচারের সাজা চাওয়া হচ্ছে বেশিরভাগ মামলায়। ডিজিটাল মাধ্যম হিসেবে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক, স্কাইপ, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো, ইউটিউব ও বিভিন্ন ওয়েবসাইটে এসব ঘটনা ঘটছে। স্বামী স্ত্রীর পারিবারিক বিরোধ ও প্রেমিক-প্রেমিকার বিচ্ছেদের পর এক পক্ষ আরেক পক্ষকে ‘দেখে নেওয়ার’ জন্য যায় সাইবার মামলায়। এ ধরনের মামলাই বেশি। আবার গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ক্ষুব্ধ হয়েও মামলা করেন অনেকে।

ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানায়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইন, ২০০৬ এর অধীনে সাইবার ট্রাইব্যুনালের যাত্রা শুরুর পর গত বছরের ৮ অক্টোবর চারটি ধারা বিলুপ্তির আগ পর্যন্ত ২ হাজার ২৫৫ মামলা হয়েছে। আইসিটি আইনের এসব মামলার মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ৮৫৮টি। এর মধ্যে মাত্র ১৫টি মামলায় সাজা হয়েছে, ১৯ জনের। খালাস পেয়েছেন ৯১ জন। আইসিটি আইনে এখনো বিচারাধীন এক হাজার ৩৯৭ মামলা।

সূত্র জানায়, ২ হাজার ২৫৫ মামলার মধ্যে সারা দেশের থানাগুলোতে হয় ২ হাজার ৪৮টি, আর রাজধানীর ট্রাইব্যুনালে হয়েছে ২০৬টি। নিষ্পত্তি হওয়া ৮৫৮ মামলার মধ্যে সরাসরি খারিজ (একতরফা) হয়েছে ৬২১ মামলা। বাদী বিবাদীর (দোতরফা) শুনানি শেষে নিষ্পত্তি হয়েছে ১৩১ মামলা।

২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর গত ১১ মাসে ৩৯৬টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে ৩১৫টি ট্রাইব্যুনালে, বাকী ৮১টি বিভিন্ন থানায়। নতুন এই আইনে ২০১টি মামলা নিষ্পত্তি হলেও রায় হয়নি একটিতেও। খালাস বা সাজাও পাননি কোনো আসামি। ট্রাইব্যুনাল একতরফাভাবে সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন ১৯৭ মামলা। চারটি মামলা খারিজ হয়েছে দোতরফায়। বিচারাধীন রয়েছে ১৯৫ মামলা। গত ১৯ আগস্ট সাইবার ট্রাইব্যুনাল থেকে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে পাঠানো নথিপত্র বিশ্লেষণে এসব তথ্য পেয়েছে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম।

২০০৬ সালে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির আইনগত বৈধতা ও নিরাপত্তা প্রদানের জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইন, ২০০৬ প্রণয়ন করা হয়। দীর্ঘদিন এ আইনের প্রয়োগ হয়নি। ট্রাইব্যুনালও ছিলনা।

২০১৩ সালে দুই দফায় বড় ধরণের সংশোধন আনা হয় আইনে। ৫৪, ৫৫, ৫৬, ৫৭ ও ৬৬ ধারা সংশোধন করে ডিজিটাল বিন্যাস ও সাজা বাড়ানো হয়। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি (৯০ শতাংশ) মামলা হয়েছে ‘বিতর্কিত’ ৫৭ ধারায়।

এমন পরিস্থিতিতে সমালোচনার মুখে সরকার গত বছর ৮ অক্টোবর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ প্রণয়ন করে। নতুন আইনে আইসিটি আইনের ৫৪, ৫৫, ৫৬, ৫৭ ও ৬৬ ধারার বিলুপ্তি ঘটে।

২০১৩ সালে দুই দফা আইন সংশোধনের উদ্দেশ্য ছিল আইসিটি আইনের একটি মামলার বিচার নিয়ে। পুলিশ অভিযোগপত্র দেওয়ার পর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত তা মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠিয়ে দেন। এখতিয়ার না থাকায় দায়রা আদালত শুনানি করতে পারছিলেন না। এরপর সরকার ওই বছর সাইবার ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করে। সেখানে মামলাটি শুনানির জন্য আসে।

আইসিটি আইন কার্যকর থাকা পর্যন্ত ৫৭ ধারায় মামলা হয়েছে ৯০ শতাংশ। অন্যদিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ প্রণয়নের পর আগের ৫৭ ধারা ভেঙে চারটি পৃথক ধারা করা হয়েছে। এখন আগের মতো একক কোনো ধারায় নয়, একাধিক ধারায় মামলা হচ্ছে।

প্রথম রায়ে ২০১৪ সালের ১৩ আগস্ট আসামি জুয়েলকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ (১) ধারার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায় ৫৭ (২) ধারায় ৭ বছর কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয় ট্রাইব্যুনাল। একই বছর দ্বিতীয় রায়ে শাহীন শেখকে ৭ বছর কারাদণ্ড ও সাত হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

সর্বশেষ চলতি বছর ৯ জানুয়ারি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারার মামলায় মনির হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে সাত বছর কারাদণ্ড দেন সাইবার ট্রাইব্যুনাল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান ও ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের ছবি বিকৃত করার অভিযোগে সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন এ রায় দেন।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশের তিনদিন পর ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রথম মামলাটি করা হয় রাজধানীর পল্টন থানায়। মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার ভুয়া প্রশ্নপত্র তৈরি করে তা বিক্রির অভিযোগে আটক পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলাটি করে পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

দ্বিতীয় মামলাটি হয় চট্টগ্রামে। আবুল কাসেম নামে বিএনপির এক সমর্থকের বিরুদ্ধে মামলাটি হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে ব্যঙ্গ করে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় এ মামলা করেন উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আবু তালেব। মামলার পরপরই আবুল কাসেমকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম (শামীম) বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, শুরুতে মামলা নিষ্পত্তি কম হয়েছে। এখন দ্রুত নিষ্পত্তি হচ্ছে। বাদী আপোষ রফার মাধ্যমে আদালতে এসে বলছেন আসামির বিরুদ্ধে তার কোন অভিযোগ নেই। এতে আদালতের কিছু করার থাকে না। আদালত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে রায় দেন। সাক্ষ্যের পর্যায়ে এসে বাদী কিছু বলতে না চাইলে মামলা খারিজ হওয়াই স্বাভাবিক।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী ব্যারিস্টার জ্যেতির্ময় বড়ুয়া বলেছেন, মামলা নিষ্পত্তিতে গতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। মোট মামলার ১৯ শতাংশ নিষ্পত্তি হয়েছে। এতে এটা স্পষ্ট মামলাগুলো হয়রানিমূলক ছিল। এ কারণে কোন ফলাফল পাওয়া যায়নি। এখন মামলার বিবাদী পক্ষ মিথ্যা মামলার অভিযোগে আদালতে প্রতিকার চাইতে পারেন।

   

তাপদাহ: সুপ্রিম কোর্টে গাউন ছাড়া শুনানি করা যাবে



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সারাদেশে চলমান তীব্র তাপ প্রবাহের কারণে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগে শুনানির সময় গাউন পরিধানের আবশ্যকতা শিথিল করা হয়েছে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্টার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, দেশব্যাপী চলমান তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগে মামলা শুনানিকালে আইনজীবীদের গাউন পরিধানের আবশ্যকতা শিথিল করা হলো। এ নির্দেশনা ২১ এপ্রিল হতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

প্রধান বিচারপতির সঙ্গে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের আলোচনাক্রমে এই সিদ্ধান্ত হয় মর্মে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

;

সিলেটে যুক্তরাজ্য ফেরত বৃদ্ধা হত্যা: ১ জনের মৃত্যুদণ্ড



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
সিলেটে যুক্তরাজ্য ফেরত বৃদ্ধা হত্যা: ১ জনের মৃত্যুদণ্ড

সিলেটে যুক্তরাজ্য ফেরত বৃদ্ধা হত্যা: ১ জনের মৃত্যুদণ্ড

  • Font increase
  • Font Decrease

সিলেটের ওসমানীনগরে যুক্তরাজ্য ফেরত বৃদ্ধা রহিমা বেগম ওরফে আমিনা বেগম (৬০) হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা প্রথম আদালতের বিচারক জজ মো.ইব্রাহিম মিয়া এ রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আব্দুল জলিল ওরফে কালু একই উপজেলার নগরীকাপন গ্রামের মৃত আব্দুল কাছিমের ছেলে। পাশাপাশি রায়ে আসামিকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন- সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন ।

মামলার সূত্রে জানা যায়, এ ঘটনার এক বছর আগে যুক্তরাজ্য থেকে দেশে ফিরেন রহিমা বেগম ওরফে আমিনা বেগম। সন্তানরা যুক্তরাজ্যে বসবাস করায় তিনি ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার নিজ বাসায় একা থাকতেন। তার ভাই মামলার বাদী আব্দুল কাদির ও আব্দুল খালিক বোনের দেখাশোনা করতেন। ২০২০ সালের ২৮ জুলাই বিকেল ৩টার দিকে রহিমা বেগম ওরফে আমিনা বেগমের সঙ্গে সর্বশেষ ফোনে কথা বলেন তার ভাই আব্দুল কাদির। এরপর ফোন বন্ধ পেয়ে ৩০ জুলাই বাদীর ছোট ভাই আব্দুল খালিক তার ছেলে আব্দুস সামাদকে পাঠালে ঘরের কলাপসিবল গেট তালাবদ্ধ দেখে বাড়িতে ফিরে আসেন। পরবর্তীতে আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে খোঁজ নিয়ে না পেয়ে ফের রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাসায় গিয়ে কলিং বেল দিলেও কোনো সাড়া শব্দ মেলেনি। ঘটনাটি যুক্তরাজ্যে বসবাসরত ছেলেমেয়েদের জানানোর হয়। এরপর থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে বাসার ভেতরে ডাইনিং রুমের বাথরুমে গলাকাটা ও মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত অবস্থায় রহিমা বেগম ওরফে আমিনা বেগমের মরদেহ উদ্ধার করে।

পুলিশের ধারণা, ওই বছরের ২৮ জুলাই থেকে বিকেল ৩টা থেকে ৩০ জুলাই সকাল সাড়ে ১১টার মধ্যে যেকোনো সময় তাকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই ওসমানীনগরের ছোট বিরাই গ্রামের মৃত মন্তাজ উল্লাহর ছেলে আব্দুল কাদির বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করে এক আগস্ট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

তদন্তকালে পুলিশ নিহতের পার্শ্ববর্তী বাসার জলিল ওরফে কালু মিয়াকে যুক্তরাজ্য প্রবাসী নারীর লুণ্ঠিত মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে গ্রেফতার করে। পরে স্বেচ্ছায় তিনি আদালতে হত্যায় নিজেকে জড়িয়ে জবানবন্দি দেয়। তার দেখানো মতে, বসতঘর থেকে হত্যার আলামত সংগ্রহ করে পুলিশ।

এ ঘটনায় জলিল ওরফে কালুকে অভিযুক্ত করে ২০২০ সালের ১৬ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসমানীনগর থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম।

মামলাটি এই আদালতে বিচারের জন্য ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর অভিযোগ গঠন করে আসামির নামে বিচারক কার্য শুরু হয়। দীর্ঘ শুনানিতে ২১ সাক্ষীর ১৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বিচারক এ রায় ঘোষণা করেন।

;

যৌন নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে মালিককে খুন, যুবকের ৬ বছর কারাদণ্ড



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁওয়ে যৌন নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে মালিককে খুনের ঘটনায় কর্মচারীকে ৬ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে আদালত তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁঞা এ রায় দেন। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ।

দণ্ডিত মো. ইউনুছ (৩৫) চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার মধ্যম সরফভাটা গ্রামের বাসিন্দা।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০৯ সালের ১২ জুন নগরীর চান্দগাঁও বহদ্দারহাট এলাকায় হক মার্কেটে নিজের সেলাই মেশিন ওয়ার্কশপে খুন হন কামাল উদ্দিন। পরদিন সকালে কামালের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় কামাল উদ্দিনের ছেলে মো. সাদেক চান্দগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে কর্মচারী ইউনুছকে গ্রেফতার করে। ইউনুছ খুনের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।

জবানবন্দিতে ইউনুছ জানান, মালিক কামাল তাকে নিয়মিত যৌন নির্যাতন করতেন। ১২ জুন রাতে কামাল তাকে ওয়ার্কশপে নিয়ে তিনবার যৌন নির্যাতন করেন। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে ইউনুছ কামালকে ধাক্কা দেন। কামাল আবার তাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে তার গায়ে সেলাই মেশিন ছুড়ে মারেন। কিন্তু সেটা ইউনুছের শরীরে লাগেনি। এরপর তিনি ইউনুছকে গলাটিপে খুন করতে চান। পরে ইউনুছ কামালের গালে কামড় দেন এবং গলা চেপে ধরলে শ্বাসরোধ হয়ে কামাল মারা যান।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ জানান, মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে ২০১০ সালের ৩ মার্চ অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১১ সালের ৬ জানুয়ারি ইউনুছের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। মামলায় ১৩ জনের সাক্ষ্য নিয়ে আদালত দণ্ডবিধির ৩০২ থেকে ৩০৪ ধারায় রূপান্তর করে এ রায় দেন। আসামি ইউনুছ জামিনে গিয়ে পলাতক আছেন। তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন আদালত।

;

ভ্রাম্যমাণ আদালতে মাদকসেবীর কারাদণ্ড



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরের তারাগঞ্জে মাদক সেবনের অভিযোগে নুর হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫শ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল রানা এ কারাদণ্ড প্রদান করেন।

মাদকসেবী নুর হোসেন উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের জিগাতলা এলাকার কপার উদ্দীনের ছেলে।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের জিগাতলা এলাকার অভিযান চালায় জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সদস্যরা। এসময় নিজ বাড়িতে মাদক সেবনের সময় হাতেনাতে নুর হোসেনকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে কাছে সোপর্দ করে তারা। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে নুর হোসেনকে ২ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫শ টাকা জরিমানা করা হয়।

এলাকাবাসী অভিযোগ নুর হোসেন প্রতিনিয়ত মাদক সেবন করে এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্ট করছে এবং যুবসমাজকে নষ্ট করছে। এর আগেও মাদক কারবারির দায়ে সে কারাগারে যায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ইউএনও রুবেল রানা বলেন, আটক ব্যক্তিকে মাদক সেবনের দায়ে কারাদণ্ড এবং জরিমানা করা হয়েছে। মাদক প্রতিরোধে এমন অভিযান অব্যাহত থাকবে।

;