জুলহাস-তন্ময় হত্যা মামলা বদলির নির্দেশ
মার্কিন দূতাবাসের সাবেক প্রটোকল অফিসার ও ইউএস এইড কর্মকর্তা জুলহাস মান্নান এবং তার বন্ধু মাহবুব রাব্বী তন্ময় হত্যা মামলা বদলির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
মামলাটি বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ায় বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইদুজ্জামান শরীফ এ আদেশ দেন।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) পরিদর্শক মুহম্মদ মনিরুল ইসলাম আটজনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
আসামিরা হলেন-আনসার আল ইসলামের মিডিয়া শাখার প্রধান এবং ইন্টেলিজেন্স সদস্য মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মান (২৫), সামরিক শাখার সদস্য ও সমন্বয়ক মো. আরাফাত রহমান (২৪), ইন্টেলিজেন্স শাখার প্রধান শেখ আব্দুল্লাহ (২৭), সামরিক শাখার সদস্য আসাদুল্লাহ ওরফে ফয়সল (২৫), চাকুরিচ্যুত মেজর সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়া (৪২), সাব্বিরুল হক চৌধুরী (২৬) ও মো. জুনাইদ আহমদ ওরফে মাওলানা জুনেদ আহম্মদ ওরফে জুনায়েত (২৬)।
তদন্তে ১৩ জনের সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করা হলেও বাকি পাঁচজনের নাম ঠিকানা পাওয়া যায়নি।
চার্জশিটে আরো উল্লেখ করা হয়, দু’টি গ্রুপের সমন্বয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। একটি কিলিং গ্রুপ, অন্যটি ইনটেল গ্রুপ। কিলিং গ্রুপের পাঁচ সদস্যের চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সমকামীদের অধিকার বিষয়ক পত্রিকা ‘রূপবান’ এর সম্পাদক জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব তন্ময়কে সমকামীতায় সমর্থন দেওয়ার জের ধরেই তাদের হত্যা করা হয় মর্মে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়।
আসামিদের মধ্যে মোজাম্মেল হোসাইন ওরফে সায়মন, আরাফাত রহমান ওরফে সিয়াম, রশিদ উন নবী ভুইঞা ও শেখ আব্দুল্লাহ ওরফে জোবায়ের গত বছরের ২২ জুলাই খুনের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল বিকেলে কলাবাগান লেক সার্কাস লাল ফকিরের মাজার এলাকায় ৩৫ নম্বর আছিয়া নিবাসের দ্বিতীয় তলায় জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব রাব্বী তনয়কে হত্যা করা হয়।
জুলহাস মার্কিন দূতাবাসের সাবেক প্রটোকল অফিসার ও ইউএস এইডে কর্মরত ছিলেন। নিহত আরেকজন জুলহাসের বন্ধু মাহবুব রাব্বী তনয় থিয়েটার নাট্যকর্মী।
এ ঘটনায় নিহত জুলহাসের ভাই ইমন মান্নান দণ্ডবিধি ও পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শামীম বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় পৃথক দু’টি মামলা করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, পার্সেল ডেলিভারির কথা বলে কয়েকজন যুবক বাসায় ঢুকে দু’জনকে কুপিয়ে হত্যা করেন। জুলহাসের মরদেহ বেডরুমে এবং তনয়ের মরদেহ ড্রইংরুমে পাওয়া যায়। তাদের চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এছাড়া সিসিটিভির ফুটেজে পাঁচজনকে পালিয়ে যেতে দেখা গেছে।
গত বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হলেও রোববার তা জানা যায়।