গ্রেনেড হামলা মামলা: পেপারবুক তৈরি হলে শুনানি হবে হাইকোর্টে



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
গ্রেনেড হামলা। ছবি: সংগৃহীত

গ্রেনেড হামলা। ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

২১ আগস্টের নৃশংস ও ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা মামলায় ১০ মাস আগে বিচারিক আদালতে রায় ঘোষণা করা হয়। তবে উচ্চ আদালতে এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শুরু হয়নি। মূলত পেপারবুক প্রস্তুত না হওয়ায় শুনানি শুরু হচ্ছে না।

উচ্চ আদালতে ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানির জন্য পেপারবুক তৈরি করতে হয়। পেপারবুকের এক মলাটে মামলার এজাহার, তদন্ত প্রতিবেদন, অভিযোগ পত্র, অভিযোগ গঠন, সাক্ষ্য, রায় ও যাবতীয় দলিল থাকে।

সুপ্রিম কোর্ট ও অ্যাটর্নি জেনারেল সূত্রে জানা গেছে, পেপারবুক তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এটি তৈরি হলে দ্রুত শুনানির জন্য পদক্ষেপ নেবে রাষ্ট্রপক্ষ। তখন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুনানি হতে পারে দেশব্যাপী আলোচিত এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের।

ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী বিচারিক আদালত আসামিদের মৃত্যুদণ্ডের রায় দিলে তা কার্যকর করতে হাইকোর্টের অনুমোদন নিতে হয়। মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা মোতাবেক মামলার সকল নথি হাইকোর্টে পাঠিয়ে দেয় সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালত। যা ডেথ রেফারেন্স নামে পরিচিত। এর মধ্যে দণ্ডিত আসামি কারাগারে থাকলে কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রায়ের বিরুদ্ধে তাকে আপিল করতে হয়। বিচারিক আদালতের নথি আসার পর হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সংশ্লিষ্ট মামলার পেপারবুক তৈরি করে। পরে মামলার ক্রম অনুসারে শুনানির জন্য আসে কার্যতালিকায়। তবে গুরুত্বপূর্ণ বা চাঞ্চল্যকর মামলার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষ চাইলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুনানির পদক্ষেপ নিতে পারে। এ জন্য প্রয়োজন হয় প্রধান বিচারপতির সম্মতির।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জানিয়েছেন, পেপারবুক তৈরি হলে ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের দ্রুত শুনানির পদক্ষেপ নেবেন। বিডিআর বিদ্রোহ হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল যেমন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শুনানি হয়েছিল, ২১ আগস্ট মামলায়ও সেরকম হতে পারে। তবে কখন শুনানি হতে পারে এই মুহূর্তে নির্দিষ্ট করে সময় বলে দেয়া সম্ভব নয়। পেপারবুক তৈরি হলে দ্রুত শুনানির পদক্ষেপ নেবেন।

অন্যদিকে পেপারবুক তৈরির অগ্রগতি জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের স্পেশাল অফিসার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান জানিয়েছেন, দুইজন মুদ্রাক্ষরিক পেপারবুক টাইপ করার কাজ শুরু করেছেন। একজন ডেপুটি রেজিস্ট্রার এটি তদারকি করছেন। টাইপ শেষ হলে বিজি প্রেসে পেপারবুক ছাপানোর জন্য পাঠানো হবে।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় গত বছরের ১০ অক্টোবর পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। যাবজ্জীবন দণ্ড দেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে। এছাড়া বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয় ১১ জনকে।

এক মাস পর মামলার রায় ও ৩৭ হাজার ৩৮৫ পৃষ্ঠার নথি পৌঁছে হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখায়।

রায়ে ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে। তারা হলেন- ১. লুৎফুজ্জামান বাবর, ২. মো. আব্দুস সালাম পিন্টু, ৩. মাওলানা মোহাম্মদ তাজউদ্দিন, ৪. মাওলানা শেখ আব্দুস সালাম, ৫. মাওলানা শওকত ওসমান ওরফে শেখ ফরিদ, ৬. মাওলানা আবু সাঈদ ওরফে ডাক্তার জাফর, ৭. মো. আব্দুল মাজেদ ভাট ওরফে মো. ইউসুফ ভাট, ৮. আব্দুল মালেক ওরফে গোলাম মোহাম্মাদ ওরফে জিএম, ৯. মহিবুল্লাহ মফিজুর রহমান ওরফে অভি, ১০. আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, ১১. মো. জাহাঙ্গীর আলম, ১২. হাফেজ মাওলানা আবু তাহের, ১৩. হোসাইন আহম্মেদ তামিম, ১৪. মঈন উদ্দিন শেখ ওরফে মুফতি মঈন ওরফে খাজা ওরফে আবু জানদাল ওরফে মাসুম বিল্লাহ, ১৫. মো. রফিকুল ইসলাম ওরফে সবুজ ওরফে খালিদ সাউফুল্লাহ ওরফে শামিম ওরফে রাশেদ, ১৬. মো. উজ্জ্বল ওরফে রতন, ১৭. মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ১৮. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রহিম এবং ১৯. মো. হানিফ।

১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। তারা হলেন- ১. তারেক রহমান, ২. হারিছ চৌধুরী, ৩. মাওলানা আব্দুর রউফ ওরফে পীর সাহেব, ৪. মাওলানা সাব্বির আহমদ, ৫. হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, ৬. আরিফ হাসান ওরফে সুমন, ৭. শাহাদত উল্যাহ ওরফে জুয়েল, ৮. আবু বকর ওরফে হাফেজ সেলিম হাওলাদার, ৯. আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফ, ১০. মহিবুল মুত্তাকিন, ১১. আনিসুল মুরছালিন, ১২. মোহাম্মদ খলিল, ১৩. জাহাঙ্গীর আলম বদর, ১৪. মো. ইকবাল, ১৫. লিটন ওরফে মাওলানা লিটন, ১৬. কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ, ১৭. মুফতি শফিকুর রহমান, ১৮. মুফতি আবদুল হাই এবং ১৯. রাতুল আহমেদ বাবু ওরফে রাতুল বাবু।

১১ জনের বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড হয়েছে। তারা হলেন- ১. পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) মো. আশরাফুল হুদা ও ২. শহিদুল হক, ৩. খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লেফটেন্যান্ট কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, ৪. লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) সাইফুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার, ৫. ডিজিএফআইয়ের মেজর জেনারেল (অব.) এটিএম আমিন, ৬. ডিএমপির সাবেক উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) খান সাঈদ হাসান, ৭. সাবেক উপ-কমিশনার (পূর্ব) ওবায়দুর রহমান খান, ৮. সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক খোদা বক্স চৌধুরী, ৯. সিআইডির সাবেক বিশেষ সুপার মো. রুহুল আমিন, ১০. সাবেক এএসপি আবদুর রশিদ, ১১. সাবেক এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমানকে দুই বছর কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোট সরকারের সময়ে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে নৃশংস ও ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।

ওই ঘটনায় প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী ও আওয়ামী লীগের তৎকালীন মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। হামলায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ আহত হন দলের তিন শতাধিক নেতা-কর্মী। ঘটনার পরদিন মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফারুক আহমেদ বাদী হয়ে মামলা করেন।

   

বাবুলকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলায় খুন হন মিতু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

স্ত্রী মাহমুদা খানম ওরফে মিতুকে নিয়ে কক্সবাজারের একটি হোটেলে ওঠেন সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার। পাশেই আরেকটি রুমে ওঠেন ভারতীয় এক নারী। সেই নারীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় পরপর দুবার বাবুলকে দেখে ফেলেন মিতু। আর এজন্যই মানসিক অত্যাচার এবং পরবর্তীতে পরিকল্পিতভাবে তাকে খুন করা হয়।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে এসব তথ্য দেন মিতুর মা শাহেদা মোশাররফ।

শাহেদা মোশাররফ বলেন, ২০০২ সালের ২৬ এপ্রিল বাবুল আক্তারের সঙ্গে আমার বড় মেয়ে মাহমুদা খানম মিতুর বিয়ে হয়। তখন বাবুল আক্তার বেকার ছিল। বিবাহের পর একেবারে শুরু থেকে তাদের সম্পর্ক তেমন ভালো ছিল না, মোটামুটি ছিল। পরে পুলিশে যোগদান করেন। এরপর কক্সবাজারে এসপি (অতিরিক্ত পুলিশ সুপার) হিসেবে বদলি হয়। সেখানে ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন বাবুল।

তিনি আরও বলেন, একদিন বাবুল আক্তার মিতুকে নিয়ে কক্সবাজারের একটি হোটেলে ওঠে। পাশের রুমে ওই নারীও ওঠে। ওই নারীর রুমে বাবুল আক্তারকে আপত্তিকর অবস্থায় মিতু দেখে ফেলে। তখন মিতু তাকে জিজ্ঞেস করে, সে এখানে কি করছে? বাবুল মিতুকে বলে বিদেশে যাবার জন্য ল্যাপটপে কাজ করছে। তাদের দুজনকে এ অবস্থায় দেখে মিতুর খুব খারাপ লাগলো। সে কিছুক্ষণ ওখানে ছিল। বাচ্চারা একা থাকায় মিতু তাদের রুমে চলে আসে। বাচ্চারা ঘুমিয়ে যাওয়ার পর সেও ঘুমিয়ে পড়ে।

গভীর রাতে আবারও আপত্তিকর অবস্থায় দেখার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, রাত ৩টার দিকে মিতুর ঘুম ভেঙে যায়। তখনও বাবুল আক্তার মিতুর রুমে ছিলেন না। মিতু আবার ওই নারীর রুমে গেলে তাদের দুজনকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখতে পায়। মিতু রুমে এসে কেঁদে কেঁদে আমাকে ফোন দেয়। তখন আমি তাকে বলি, তুই চলে আয়। মিতু তখন বলে, আমার ছেলে-মেয়েরা আমাকে খারাপ মনে করবে। তাই আমি আল্লাহর ওপর ভরসা রাখি।

সাক্ষ্য দেওয়ার সময় শাহেদা মোশাররফ বলেন, বাবুল আক্তার বিদেশে (মিশনে) থাকার সময় তিন-চারবার বাংলাদেশে আসেন। তবে দেশে ফিরলেও তিনি বাসায় অর্থাৎ মিতু কিংবা ছেলেমেয়েদের কাছে যাননি। মিশন শেষ করে তিনি চীনে চলে যান। সেখানে বসেই বাবুল মিতুকে মারার পরিকল্পনা করেন।

মিতুর একটি ব্যবসা ছিল। ব্যবসার তিন লাখ টাকা দিয়ে মিতুকে খুন করে। মিতু মারা যাওয়ার পর বাবুল আক্তার আমাদের বাসায় ওঠে। ছয়মাস আমাদের বাসায় ছিল সে। সেখানে বসে সে আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ২৪ জুন (২০১৬) বাবুল আক্তারকে ডিবি অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর বাবুল সেখান থেকে চাকরি ছেড়ে আসে। আমি তখন তাকে জিজ্ঞেস করি, চাকরি ছাড়লে কেন? তখন সে বলে, মিতু খুন হওয়ার কারণে আমাকে চাকরি ছাড়তে হয়েছে। আমি তাকে বলি, তোমার চাকরি ছাড়ার বিষয় কি মিতুর খুনের বিচারের জন্য?, বলেন তিনি।

শাহেদা মোশাররফ বলেন, বাবুল আক্তার মিতুকে খুন করার জন্য মুসাকে ৭০ হাজার টাকা দিয়ে অস্ত্র কিনে দেয়। একথা বলেছে মুসার স্ত্রী। মুসার স্ত্রী তাকে জিজ্ঞেস করেছিল, তুমি মিতুকে খুন করেছ? তখন মুসা তার স্ত্রীকে বলে, আমি খুন না করলে বাবুল আক্তার আমাকে ক্রসফায়ার দেবে। বাবুল আক্তার আমাদের বলেছিল, মিতুর খুনের আসামিরা গ্রেফতার হয়েছে। আমি ক্রসফায়ার দিতে বলেছি।

শাহেদা আরও বলেন, আসামি ওয়াসিম, আনোয়ার গ্রেফতার হয়েছিল। এর কিছুদিন পরেই ভোলা ধরা পড়ে। গ্রেফতার হওয়ার পর সে আদালতে জবানবন্দি দেয়- বাবুল আক্তারের নির্দেশেই মিতুকে খুন করেছে মুসা। মিতু মারা যাওয়ার দেড় মাস পর সে যে বাসায় ছিল ওখানে মিলাদ পড়ানোর জন্য আমরা চট্টগ্রাম আসি। এর কিছুদিন পর আসামি কালু ও শাহজাহান গ্রেফতার হয়। আমরা চট্টগ্রাম আসার পরে অবস্থা দেখে মনে হয়েছে পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাবুল আক্তার মিতুকে খুন করেছে। মিথ্যা তথ্য দিয়ে ও নিজেই মিতু হত্যার মামলা করল। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আমার স্বামীকে বলে, আপনারা বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ২০২১ সালের ১২ মে মিতুর বাবা বাবুল আক্তারকে আসামি করে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করলেন।’

মারা যাওয়ার ১৫ দিন আগে (২০১৭ সালে) মিতুর মা শাহেদাকে ফোন করেন বাবুল আক্তারের মা। ফোন করে তিনি বলেন, বেয়াইন, মিতুকে আমার ছেলে (বাবুল) খুন করেছে। তাকে আপনি মাফ করে দেন। তখন আমি তাকে (বাবুলের মা) বলি, বাবুল মরলে কি এ কথা আপনি বলতেন? এসব আমি তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে বলেছি।

এদিন দুপুর ১২টায় চাঞ্চল্যকর এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর পর প্রথমে সাক্ষ্য দেন অবসরে যাওয়া পুলিশ পরিদর্শক মহিউদ্দিন মাহমুদ। যিনি ঘটনার সময় নগরের পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দায়িত্বে ছিলেন। এরপর সাক্ষ্য দিতে কাঠগড়ায় দাঁড়ান শাহেদা মোশাররফ।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় চট্টগ্রামের তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতুকে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এসপি বাবুল ওই ঘটনার কিছুদিন আগেই চট্টগ্রাম থেকে বদলি হন। তিনি ঢাকায় কর্মস্থলে যোগ দিতে যাওয়ার পরপরই চট্টগ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

সাড়ে তিন বছর তদন্ত করেও ডিবি পুলিশ কোন কূলকিনারা করতে না পারায় ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তভার পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এরপর ২০২১ সালের মে মাসে পিবিআই জানায়, স্ত্রী মিতুকে হত্যা করা হয়েছিল বাবুল আক্তারের ‘পরিকল্পনায়’। এজন্য খুনিদের ‘লোক মারফত তিন লাখ টাকাও দিয়েছিলেন’ বাবুল।

পরে বাবুলের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার পর মিতুর বাবা আরেকটি মামলা করেন। তবে সেই মামলা আদালতে না টেকার পর বাবুলের মামলাটিই পুনরুজ্জীবিত হয়। ২০২৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর সেই মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পিবিআই। তাতে বাবুলসহ সাতজনকে আসামি করা হয়। ওই বছরের ১০ অক্টোবর সেই অভিযোগপত্র গ্রহণ করে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত। ২০২৩ সালের ১৩ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। ওই বছরের ৯ এপ্রিল থেকে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। প্রথম সাক্ষী হিসেবে মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন সাক্ষ্য দেন।

;

কেএনএফ'র সাথে সম্পৃক্ততা, রুমা ছাত্রলীগ সভাপতিসহ ৭ জন কারাগারে



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, বান্দরবান
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বান্দরবানে রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি, মসজিদে হামলা, টাকা-অস্ত্র লুটের ঘটনায় কেএনএফ'র সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগে রুমা উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ভান মুন নুয়ান বমসহ ৭ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে আসামিদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বান্দরবান চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। বান্দরবানের কোর্ট ইন্সপেক্টর একে ফজলুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আসামিরা হলেন, ভান মুন নুয়ান বম (৩৩), লাল নুন নোয়াম (৬৮), লাল দাভিদ বম (৪২), চমলিয়ান বম (৫৬), লাল পেক লিয়ান (৩২), লাল মিন বম (৫৬), ভান বিয়াক লিয়ান বম (২৩)। তারা সবাই রুমার মুনলাই পাড়ার বাসিন্দা।

এরআগে সোমবার (২২ এপ্রিল) রুমার মুনলাই পাড়া থেকে তাদের গ্রেফতার করে যৌথ বাহিনী।

এ পর্যন্ত কেএনএফ সদস্য সন্দেহে মোট ৭৮ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৩ জন নারী রয়েছেন।

এদিকে, বান্দরবানের রুমা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ভান মুন নোয়াম বমকে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার করা হ‌য়ে‌ছে। মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) সকালে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি অং ছাইং উ পুলু ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হো‌সেন মানিকের যৌথ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়।

এ বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি পুলু মারমা বলেন, কেএনএফের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে, এজন্য তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

;

পদে থেকেই উপজেলায় প্রার্থী হতে পারবেন ইউপি চেয়ারম্যানরা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পদত্যাগ না করেই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন বলে আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ড. শাহদীন মালিক।

কুষ্টিয়া ও সিলেটের দুটি উপজেলা নির্বাচনের ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের রিটের পরিপ্রেক্ষিতে এমন আদেশ দিয়েছেন আদালত।

;

কুমিল্লায় পারভেজ হত্যা: ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৪ জনের যাবজ্জীবন



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার ছাত্রদল নেতা পারভেজ হত্যা মামলায় একই উপজেলার কালিবাজার ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান সেকান্দার আলীসহ ১৪ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে কুমিল্লার আদালত।

সোমবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক নাসরিন জাহান এ রায় দেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন- বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট শরিফুল ইসলাম। দণ্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে ১১ জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন ও ৩ পলাতক রয়েছেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুমিল্লা জেলার কোতোয়ালি থানার ধনুয়াখালী এলাকার মৃত হাজী মো. আব্দুর রহমানের ছেলে মো. সেকান্দর আলী (৬৪), একই এলাকার আব্দুল লতিফের ছেলে মো. শাহীন (৩৯), সৈয়দপুর এলাকার আব্দুস সাত্তার এর ছেলে মো. সাদ্দাম হোসেন (৩২), কমলাপুর এলাকার মো. মোজাম্মেল হকের ছেলে মো. সাইফুল ইসলাম (২১), যশপুর এলাকার মৃত আহমেদ আলীর ছেলে মফিজ ভান্ডারী, কমলাপুর দক্ষিণপাড়া এলাকার মো. জয়নাল মাস্টারের ছেলে মো. কায়সার (৩২), কমলাপুর এলাকার মৃত মনিরের ছেলে মো. রিয়াজ (৩৩), মনশাসন এলাকার শফিক মেম্বার এর ছেলে বিল্লাল, কমলাপুর এলাকার মৃত আব্দুর রহমান এর ছেলে কামাল হোসেন, কালির বাজার ইউনিয়নের আবদুল ওহেদ এর ছেলে মো. ইব্রাহীম খলিল (৪৫), রায়চোঁ এলাকার ইমদাদুল হকের ছেলে মেহেদী হাসান, সৈয়দপুর এলাকার মৃত হাজী সিরাজুল ইসলামের ছেলে জয়নাল আবেদীন, বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউনিয়নের মৃত হারুন অর রশিদের ছেলে আব্দুল কাদের, নারায়নসার এলাকার মৃত আশ্রাব আলীর ছেলে আনোয়ার।

মামলার তথ্যমতে, ২০২০ সালের ১০ জুন কুমিল্লা জেলার আদর্শ সদর উপজেলার কালির বাজার ইউনিয়নের কমলাপুর বাজারের দক্ষিণ পাশে কবরস্থান সংলগ্ন বাগানে তৎকালীন ছাত্রদল নেতা পারভেজকে নির্মমভাবে হত্যা করে তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান সেকান্দর আলী এবং তার বাহিনীর ক্যাডারেরা।

বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. শরিফুল ইসলাম জানান, এই চাঞ্চল্যকর পারভেজ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে এজাহারে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করে। এই ঘটনায় চারজন আসামির ১৬৪ ধারা জবানবন্দি ও ৩১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণের পর আদালত ১৪ জন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। রায়ের সময় ১৪ জন আসামির মধ্যে ১১ জন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন বাকী ৩ জন আসামি পলাতক রয়েছেন।

;