সর্তক ও সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি ঘোষণা
বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি কমিয়ে সতর্ক ও সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বুধবার (৩১ জুলাই ) দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের সভাকক্ষে গভর্নর ফজলে কবির নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন।
২০১৯-২০ অর্থবছরের বেসরকারি খাতে কমানো হয়েছে অভ্যন্তরীণ খাতে ঋণ প্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা। যা গত অর্থবছরের তুলনায় ১.৭ ভাগ কম।
একদিকে চলতি অর্থবছরের জন্য বেসরকারি খাতে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে আনা হয়েছে ১৪.৮ শতাংশে, যেখানে সরকারি খাতে ঋণ যাবে ২৪.৩ শতাংশ।
অন্যদিকে অর্থবছরের মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ পরিমিত রেখে ৮.২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য পর্যাপ্ত ঋণ প্রবাহের লক্ষ্যে ঘোষিত মুদ্রানীতি আগের মত সতর্কভাবে সংকুলানমুখী রয়েছে বলে জানানো হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, 'মুদ্রানীতির এই লক্ষ্যমাত্রা দিয়েই মূল্যস্ফীতির সহনীয় পর্যায়ে রেখে কাঙ্ক্ষিত জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব একই সঙ্গে কর্মসংস্থানও সম্ভব।'
এই মুদ্রানীতিতে খেলাপি ঋণ কমানোসহ নতুন করে যেনো খেলাপি সৃষ্টি না হয় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়ার ইঙ্গিত দিয়ে গভর্নর বলেন, 'এখন থেকে পুরো অর্থবছর জুড়ে একবারই মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হবে।'
তিনি বলেন, 'প্রবাসী আয়ে প্রণোদনা দিতে গাইড লাইন তৈরি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক যা পাঠানো হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ে। গাইড লাইন হলে এর অপব্যবহারের সুযোগ নেবে না কেউ। এক হাজার ডলারের মধ্যে প্রবাসী আয় পাঠালে এই কাগজ লাগবে না। এর ওপরে পাঠালে কাগজ পত্র পাঠাতে হবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে।'
মুদ্রানীতি ঘোষণায়, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতের ঋণপ্রবাহের প্রক্ষেপণ ছিল সাড়ে ১৬ শতাংশ। কিন্তু গত জুন শেষে এ খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ দশমিক ৩০ শতাংশ। এটি চলতি মুদ্রানীতির ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৫ শতাংশ কম।
মুদ্রানীতি ঘোষণা অনুষ্ঠানে ডেপুটি গভর্নর এস এম মুনিরুজ্জামান, আহমেদ জামাল,পরিবর্তন ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা আল্লাহ মালিক কাজেমী, বিআইএফইউ এর প্রধান আবু হেনা মো. রাজি আল হাসান, ব্যাংকিং রিফর্ম অ্যাডভাইজার এস. কে. সুর চৌধুরী, অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মো. আখতারুজ্জামানসসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি বছর দু’বার মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও প্রকাশ করে। ছয় মাস অন্তর এই মুদ্রানীতি একটি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ জুলাই মাসে এবং অন্যটি জানুয়ারি মাসে প্রণয়ন হয়। দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় মুদ্রানীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে পরবর্তী ছয় মাসে অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রার সরবরাহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ, বৈদেশিক সম্পদ কতটুকু বাড়বে বা কমবে এর একটি পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।
চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮.২০ শতাংশ। আর মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫.৫ শতাংশ। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করতে মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।