কেন্দ্রবিন্দুতে আজমেরি হক বাঁধন



সুমন ভট্টাচার্য
আজমেরি হক বাঁধন

আজমেরি হক বাঁধন

  • Font increase
  • Font Decrease

রেহানা মারিয়ম নুর থেকে মুসকান জাবেরী। ঢাকা থেকে কলকাতা আপাতত আপ্লুত এক বাংলাদেশি অভিনেত্রীর অভিনীত বিভিন্ন চরিত্র নিয়ে। কান এ তাঁর অভিনয় নিয়ে নিয়ে হইচই শুরু হওয়ার পর থেকে আজমেরি হক বাঁধনকে নিয়ে যে আগ্রহ এপার বাংলা দেখাচ্ছে, স্মরণাতীত কালের মধ্যে কোনো বাংলাদেশি 'মুসলিম মহিলা'কে নিয়ে সেই উচ্ছ্বাস চোখে পড়েনি। এর মধ্যে কান চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের তরুণ পরিচালক মোহাম্মদ সাদের ছবি যদি কোনো পুরস্কার জিতে নেন, যার যথেষ্ট ইঙ্গিত পশ্চিমের চলচ্চিত্র সমালোচকরা ইতিমধ্যেই দিয়েছেন, তাহলে আজমেরি হক বাঁধন যে কত নতুন সিনেমার অফার পাবেন, বলা মুশকিল।

আজমেরি হক বাঁধন

আমি আজমেরি হক বাঁধন সম্পর্কে উল্লেখ করতে গিয়ে অভিনেত্রীর আগে বাংলাদেশের 'মুসলিম মহিলা' শব্দবন্ধটি ইচ্ছে করে ব্যবহার করেছি। আমাদের এই ভট্টাচার্য, ব্যানার্জি, চ্যাটার্জি প্রভাবিত কলকাতার বাঙালি সমাজে একজন মুসলিম মহিলার স্বীকৃতি পেতে কতটা কাঠখড় পোড়াতে হয়, তারপরে সেই মহিলা বাংলাদেশি হলে আরও কি কি চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হয়, সেই সম্পর্কে একটু ধারণা আছে বলেই কথাগুলো লিখেছি। বাঁধন যে গুরুত্ব পাচ্ছেন, তসলিমা নাসরিনের পরে আমি কোনো বাংলাদেশি মহিলাকে এপার বাংলায় সেই গুরুত্ব পেতে দেখিনি। এবং ধর্মকে কেন্দ্র করে বিতর্ককে বাদ দিলে তসলিমা আর আজমেরি হক বাঁধনের মধ্যে আশ্চর্য মিল। দুজনেই ডাক্তার, ঘোষিত সিঙ্গল এবং পুরুষতন্ত্রকে 'বাপি বাড়ি যা' র মতো করে মাঠের বাইরে ফেলে দিতে অভ্যস্ত।

রেহানা মারিয়াম নুর সিনেমার পোস্টারে বাঁধন

বাংলাদেশের প্রথম কোনো সিনেমা হিসেবে সাদ পরিচালিত রেহানা মারিয়ম নুর কান ফেস্টিভাল এ দেখানো এবং সেই প্রদর্শনীর পরে দর্শকদের স্ট্যান্ডিং ওভেশন, তার সঙ্গে কানের প্রতিক্রিয়ায় আপ্লুত বাঁধনের কান্নায় ভেঙে পড়ার ছবি ভাইরাল হওয়া আজমেরি হক বাঁধনকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রেখেছে। এক সিঙ্গল মাদারের ভূমিকায় আরেক সিঙ্গল মাদারের অভিনয় চলচ্চিত্র বিশ্বকে যতটা আলোড়িত করেছে, তার তুলনা মেলা ভার। হলিউড রিপোর্টার বা স্ক্রিন এর উচ্ছ্বসিত রিভিউ বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে যতটা সম্মানিত করেছে, ততটাই অভিনেত্রী হিসেবে, শুধুমাত্র অভিনেত্রী হিসেবে আজমেরি হক বাঁধনের জায়গাকে পোক্ত করেছে। এখানেও আমি ইচ্ছে করেই অভিনেত্রী শব্দটার উপরে যোগ দিলাম। কারণ কান চলচ্চিত্রোৎসবে এই বাঙালি অভিনেত্রীকে নিয়ে তুমুল চর্চা শুরু হওয়ার পর অন্য যে সব বাঙালি নায়িকারা হঠাৎই কানের সমুদ্রসৈকতে রোদ পোয়ানোর ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করছেন, তাঁদের খেয়াল রাখতে হবে তুলনাটা অভিনয় নিয়ে হচ্ছে, কে কি পোষাক পরলেন সেটা মুখ্য বিষয় নয়।

কান উৎসবে বাঁধন

রেহানা মারিয়ম নুর এ নামভূমিকায়, একজন ডিগ্ল্যামারাইজড, মাথায় স্কার্ফ বাঁধা খিটখিটে কিন্তু লড়াকু অধ্যাপকের চরিত্রে বাঁধনের ইনটেন্সড অভিনয় সকলের নজর কেড়েছে। তাই কনটেন্ট ইজ কিং, সমুদ্রতীরে কে কি পোশাক পরল বা পরেছিলেন, তা গৌণ। এই কনটেন্ট এর প্রশ্নেই বলতে হবে আজমেরি হক বাঁধন চমৎকার কথা বলেন, জীবন সম্পর্কে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি স্বচ্ছ। তিনি যে ডিভোর্সী, সিঙ্গল মাদার এবং তাঁর বয়স ৩৭ পেরিয়ে গিয়েছে, এই কথাগুলো এত জোরের সঙ্গে বলেন যে আশা জাগায়। বাংলাদেশের এই মডেল, অভিনেত্রী পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রায় ক্রিস গেইলের ভঙ্গিতেই ব্যাট চালান। এবং এই সোজাসাপটা কথা বলার জন্যই কেন তিনি এতদিন ভাল কাজ পাননি বা বড় পরিচালকদের কাছ থেকে ডাক পাননি, তা বলে দিতে বাঁধনের কোনো দ্বিধা নেই।

 আজমেরি হক বাঁধন চমৎকার কথা বলেন, জীবন সম্পর্কে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি স্বচ্ছ

১৬ জুলাইয়ের পর থেকে আজমেরি হক বাঁধন কোন উচ্চতায় থাকতে পারেন, সেটা আন্দাজ করে নিয়ে হইচই প্ল্যাটফর্মের জন্য তৈরি করা 'রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি' ওয়েব সিরিজের টিজার ছেড়ে দেওয়াটা প্রায় গাভাসকরের মতো টাইমিং সেন্স। মহাম্মদ নাজিমুদ্দিনের বহু প্রশংসিত থ্রিলারকে নিয়ে সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের তৈরি করা এই ওয়েব সিরিজ ও বহু আলোচিত। সেই ওয়েব সিরিজেরও কেন্দ্রীয় চরিত্র, অর্থাৎ মুসকান জাবেরীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের অভিনেত্রী আজমেরি হক বাঁধন।

'রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি' ওয়েব সিরিজ

রেহানা মারিয়ম নুর এর এক্কেবারে ১৮০ ডিগ্রি বিপরীত চরিত্রে, মুসকান জাবেরীর মতো কঠিন ভূমিকায় বাঁধনের লুক, টিজারে রাহুল বোসের মতো অভিনেতার মুখোমুখি হয়ে তাঁর হাসি, লাস্য তুমুল কৌতুহল তৈরি করেছে। গাভাসকরের টাইমসেন্স এবং বলকে কানেক্ট করার দক্ষতা যেমন অনেক শটকে নিশ্চিতভাবে বাউন্ডারিতে পাঠাতো, তেমনি 'রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি' ওয়েব সিরিজ স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্মে এইসময় গোটা বিশ্বের বাঙালিদের চোখ টানবে।

এবং বাংলাদেশের 'মুসলিম অভিনেত্রী', সিঙ্গল মাদার আজমেরি হক বাঁধন ডঙ্কা বাজিয়ে বৃহত্তর বাঙালি মননে জায়গা করে আরও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি-ধন্য হবেন, এটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া হবে। বাংলাদেশের সিনেমা আর বাংলাদেশের লেখকের লেখা থ্রিলারের উপর ভর করেই বিশ্বজয়ের পর ঢাকার মতো কলকাতার বাঙালি মনন তাঁর অনুগমন ছাড়া বিকল্প পথ খুঁজে পাবে না!

লেখক: সুমন ভট্টাচার্য, কলকাতার বিশিষ্ট সাংবাদিক। কবি, কথাশিল্পী ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব।

'রত্নগর্ভা নূরজাহান বেগম ছিলেন মানবিকতার প্রতীক'



মায়াবতী মৃন্ময়ী, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
'রত্নগর্ভা নূরজাহান বেগম ছিলেন মানবিকতার প্রতীক'। বার্তা২৪.কম

'রত্নগর্ভা নূরজাহান বেগম ছিলেন মানবিকতার প্রতীক'। বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রত্নগর্ভা নূরজাহান বেগম ছিলেন মানবিকতার প্রতীক। তিনি ছিলেন উদার, অসাম্প্রদায়িক ও জনহিতৈষী ব্যক্তিত্ব। কিশোরগঞ্জের সমাজ প্রগতি ও জনসেবায় তিনি এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। মরণোত্তর সম্মাননা পদক প্রদানকালে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।

কিশোরগঞ্জের সমাজ-সংস্কৃতি-সাহিত্য বিষয়ক মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সমাজসেবী নূরজাহান বেগমকে ১ম শাহ্ মাহ্তাব আলী ফাউন্ডেশন পদকে ভূষিত করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী অষ্টবর্গ শাহ্ বাড়িতে নবনির্মিত নান্দনিক স্থাপত্য শাহ্ মাহ্তাব আলী কালচারাল কমপ্লেক্সে আনুষ্ঠানিকভাবে এ পদক (মরণোত্তর) প্রদান করা হয়।

পদকপ্রাপ্ত সমাজসেবী নূরজাহান বেগমের পক্ষে তাঁর বড় ছেলে, মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র প্রফেসর, বার্তা২৪.কম এর অ্যাসোসিয়েট এডিটর ড. মাহফুজ পারভেজ পদক গ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে তিনি ‘জীবনের ধ্রুবতারা: আমার মা নূরজাহান বেগম ও কিশোরগঞ্জের স্মৃতি’ শীর্ষক পাবলিক লেকচার প্রদান করেন।

পদক প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শাহ্ মাহতাব আলী ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক লাইজু আক্তার। এতে পদক প্রদান করেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শাহ্ ইস্কান্দার আলী স্বপন। পদক প্রদান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান ডা. গোলাম হোসেন।

এতে সমাজসেবী নূরজাহান বেগমের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সি‌নিয়র আইনজীবী বীর মু‌ক্তি‌যোদ্ধা না‌সির উ‌দ্দিন ফারুকী, সিনিয়র আইনজীবী, গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন, জেলা পাব‌লিক লাই‌ব্রে‌রির সাধারণ সম্পাদক মু আ ল‌তিফ, সি‌নিয়র সাংবা‌দিক আলম সা‌রোয়ার টিটু, সহকারী অধ্যাপক মো. সেলিম, ফ্রন্টিয়ার্স রিপোর্টার্স সোসাইটির সভাপতি মিনহাজ শিহাব ফুয়াদ, সমাজকর্মী লুৎফু‌ন্নেছা চিনু প্রমুখ। সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে সাংবাদিক, সমাজকর্মী, শিক্ষাবিদ এবং বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সমাজসেবী নূরজাহান বেগমের আত্মার মাগফিরাত কামনায় কোরআনখানি ও দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

প্রসঙ্গত, ভাষাসৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, কিশোরগঞ্জের বরিষ্ঠ চিকিৎসক ডা. এ.এ. মাজহারুল হক ও সমাজসেবী নূরজাহান বেগম প্রতিষ্ঠিত কিশোরগঞ্জের সমাজ-সংস্কৃতি-সাহিত্য বিষয়ক সমীক্ষাধর্মী মাজহারুন-নূর ফাউন্ডেশন কিশোরগঞ্জের বিখ্যাত ব্যক্তিদের সম্মাননা প্রদানের মাধ্যমে তাদের জীবন কীর্তির ইতিহাস লিপিবদ্ধ করা ছাড়াও বিভিন্ন জনহিতকর ও সমাজসেবামূলক কাজ করছে।

এছাড়া সমাজসেবী নূরজাহান বেগম বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসাসহ দ্বীনি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। গত ১০ জানুয়ারি এই মহীয়সী নারী পরলোকগমন করেন। তাঁর কর্ম ও স্মৃতিকে অম্লান রাখার জন্য শাহ্ মাহ্তাব আলী ফাউন্ডেশন তাঁকে মরণোত্তর পদকে ভূষিত করেছে।

;

‘প্রতিবন্ধী নারীদের বাধা দূর করতে একসঙ্গে সাইরেন বাজাতে হবে’



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ), অ্যারো ও সিএনএস এর যৌথ উদ্যোগে ‘প্রতিবন্ধী নারী ও কিশোরীদের প্রতি সহিংসতা রোধ’ বিষয়ক একটি কর্মশালা মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ডিআরইউ সহ-সভাপতি মাহমুদুল হাসানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম হাসিবের সঞ্চালনায় বেলা ১১টায় ডিআরইউ’র নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী।

এ সময় তিনি বলেন, বহুমুখী প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছেন প্রতিবন্ধী নারীরা। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এবং স্পিকারসহ শীর্ষ পর্যায়ে নারী ক্ষমতায় থাকলেও নারীরা এখনও তাদের প্রাপ্য সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না। এই নারীরাই যখন প্রতিবন্ধী হয় তখন তারা আরো নানামুখী সমস্যার সম্মুখীন হন।


নারীদের দক্ষতা বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে না এমন মন্তব্য করে ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, রাস্তাঘাটসহ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রজেক্ট থাকলেও মানুষের দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে কোনো মেগা প্রজেক্ট নেওয়া হচ্ছে না। প্রতিবন্ধীদের নিয়েও পর্যাপ্ত পরিমানে প্রকল্প নেই। আমার মনে হয়, রাষ্ট্র একটা ভুল মডেলের দিকে যাচ্ছে। এসব প্রতিবন্ধকতা দূর করতে আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে সবাইকে একসঙ্গে বাঁশি এবং সাইরেনটা বাজাতে হবে, আওয়াজ এক সঙ্গে করতে হবে।

এসময় তিনি ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিকে এ আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, একটি সমন্বিত চেষ্টার মাধ্যমে সরকার, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিকসহ সব শ্রেণি পেশার মানুষ এগিয়ে আসলে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব।

কর্মশালাটিতে প্রতিবন্ধী নারী উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আশরাফুন নাহার মিষ্টি ও ইউএন উইমেন বাংলাদেশ প্রকল্প সমন্বয় বিশেষজ্ঞ তুশিবা কাশেম মূল বিষয়ের উপরে আলোচনা করেন এবং অংশগ্রহণকারী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। এছাড়াও বক্তব্য দেন ডিআরইউ’র তথ্য প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক কামাল মোশারেফ।

অনুষ্ঠানে ডিআরইউ’র যুগ্ম সম্পাদক শাহনাজ শারমীন, অর্থ সম্পাদক এস এম এ কালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কাফি, নারী বিষয়ক সম্পাদক তাপসী রাবেয়া আঁখি, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক কামাল উদ্দিন সুমন, আপ্যায়ন সম্পাদক মুহাম্মাদ আখতারুজ্জামান ও কল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবলু, কার্যনির্বাহী সদস্য সোলাইমান সালমান, সুশান্ত কুমার সাহা, মো: আল-আমিন, এসকে রেজা পারভেজ ও মোহাম্মদ ছলিম উল্লাহ (মেজবাহ) উপস্থিত ছিলেন।

;

ইরানে আন্দোলনরত নারীদের সমর্থনে বিএনএসকে’র মানববন্ধন



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ইরানে আন্দোলনরত নারীদের সমর্থনে বিএনএসকে’র মানববন্ধন

ইরানে আন্দোলনরত নারীদের সমর্থনে বিএনএসকে’র মানববন্ধন

  • Font increase
  • Font Decrease

ইরানি তরুণী মাহ্সা আমিনি’র মৃত্যুর ঘটনায় উপযুক্ত বিচার এবং দেশটিতে চলমান নারী নির্যাতন বন্ধের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশের নারী সাংবাদিকরা।

রোববার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ নারী সাংবাদিক কেন্দ্র আয়োজিত মানববন্ধন থেকে এসব দাবি জানানো হয়। একই সাথে নারী নির্যাতনের প্রতিবাদ ওই দেশে বিভিন্ন শহর ও বিশ্বব্যাপী চলমান আন্দোলনের সাথে তারা একাত্মতা পোষণ করেন।

ইরানে আন্দোলনরত নারী সমাজ ও জনগণের সাথে সংহতি প্রকাশ করে সংগঠনের সভাপতি নাসিমুন আরা হক মিনু বলেন, ‘সঠিক উপায়ে হিজাব না পরার অভিযোগে ইরানি তরুণী মাহ্সা আমিনীকে সম্প্রতি গ্রেফতার ও পুলিশি হেফাজতে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে পুরো ইরানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এর ফলে অজুহাতে ইরানে দীর্ঘদিন ধরে নারীরা এরকম নৃশংস জুলুম-নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, শত শত নারী কারাগারে দুর্বিসহ জীবন কাটাচ্ছেন। ইরানের নারীরা ইরানের জনগণ এই জুলুম নির্যাতনের অবসান চায়। বাংলাদেশেও একটি গোষ্ঠী ধর্মের নামে মেয়েদের ওপর বিরাট বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছে। আমাদের এই বিষয়গুলোকে এভাবেই শক্ত হাতে মোকাবিলা করতে হবে।’

মানববন্ধনে নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের দপ্তর সম্পাদক দিলরুবা খান, নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহনাজ পারভীন এলিস, সদস্য আফরোজা সরকারসহ নারী সাংবাদিকরা বক্তব্য রাখেন।

এসময় তারা পোশাকের জন্য নারীর ওপর খবরদাবি নারীর মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। মানববন্ধন থেকে নারী ওপর এ ধরনের খবরদারি ও জুলুম-নির্যাতন বন্ধসহ মাসা আমিনী হত্যা ঘটনার সঠিক তদন্ত ও বিচার দাবি করা হয়।

;

'আগের পক্ষের স্ত্রী, সন্তানের যত্ন না নিলে দ্বিতীয় বিবাহ নয়'



মায়াবতী মৃন্ময়ী, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
'আগের পক্ষের স্ত্রী, সন্তানের যত্ন না নিলে দ্বিতীয় বিবাহ নয়'

'আগের পক্ষের স্ত্রী, সন্তানের যত্ন না নিলে দ্বিতীয় বিবাহ নয়'

  • Font increase
  • Font Decrease

"প্রথম বা আগের পক্ষের স্ত্রী এবং সন্তানের যত্ন না নিলে দ্বিতীয় বিবাহ করতে পারবেন না মুসলমান পুরুষরা।"

বুধবার (১২ অক্টোবর) এ রায় জানিয়ে দিল এলাহাবাদ হাই কোর্ট। যুগান্তকারী রায়ের প্রসঙ্গে পবিত্র কোরানেরও উল্লেখ করেছে হাই কোর্ট।

মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরানকে উদ্ধৃত করে হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণে জানায়, "আগের পক্ষের স্ত্রী, সন্তানদের যত্ন না নিলে মুসলমানদের দ্বিতীয় বিবাহ করা ধর্মবিরুদ্ধ।" এলাহাবাদ হাই কোর্টের বিচারপতি প্রকাশ কেশরওয়ানি এবং রাজেন্দ্র কুমার তাঁদের পর্যবেক্ষণে আরও বলেন, “যদি কোনও মুসলমান পুরুষ বুঝতে পারেন যে, তিনি আগের পক্ষের স্ত্রী সন্তানদের দায়িত্ব নিতে অক্ষম, তবে তাঁর দ্বিতীয় বিবাহ করার ভাবনা থেকে সরে আসা উচিত।"

অত্যন্ত সংবেদনশীল ও ধর্মীয় দিক থেকে উত্তেজক এই রায়ের প্রসঙ্গে আদালতের সাফ পর্যবেক্ষণ হলো, "ধর্মনির্বিশেষে কোনও পুরুষ যদি প্রথম পক্ষের স্ত্রীর আপত্তি সত্ত্বেও দ্বিতীয় বিবাহ করেন, তবে তিনি প্রথম পক্ষের স্ত্রীকে তাঁর সঙ্গে থাকতে বাধ্য করতে পারেন না।"

কিছু দিন আগেই উত্তরপ্রদেশ নিবাসী আজিজুর রহমান প্রথম পক্ষের স্ত্রীর কাছ থেকে দাম্পত্যের অধিকার দাবি করে আদালতের শরণাপন্ন হন। মামলার দীর্ঘ শুনানি শেষে প্রদত্ত রায়ে আদালত জানায়, "প্রথম পক্ষের স্ত্রীর অজান্তেই দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন ওই ব্যক্তি। তাই ওই ব্যক্তি প্রথম স্ত্রীকে তাঁর সঙ্গে থাকতে কিংবা প্রথম স্ত্রীর কাছ থেকে দাম্পত্যের অধিকার দাবি করতে পারেন না।"

ভারতের বিচারালয় আগেও তিন তালাক, খোরপোশ ও হিজাব সম্পর্কে বিভিন্ন রায় দিয়েছে, যা নিয়ে ধর্মীয় ও রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতণ্ডা ও বাদানুবাদ হয়েছে। তবে দ্বিতীয় বিয়ে প্রসঙ্গে দেওয়া আদালতের রায়ের পক্ষে-বিপক্ষে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা কোনও প্রতিক্রিয়া জানায় নি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রায়ের এক অংশে "ধর্মনির্বিশেষে কোনও পুরুষ যদি প্রথম পক্ষের স্ত্রীর আপত্তি সত্ত্বেও দ্বিতীয় বিবাহ করেন, তবে তিনি প্রথম পক্ষের স্ত্রীকে তাঁর সঙ্গে থাকতে বাধ্য করতে পারেন না" মর্মে উল্লেখ করায় তা কেবল মাত্র মুসলিম সম্প্রদায়কে টার্গেট করে দেওয়া হয়েছে বলা যায় না। তদুপরি, পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরানকে উদ্ধৃত করে হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণে "আগের পক্ষের স্ত্রী, সন্তানদের যত্ন না নিলে মুসলমানদের দ্বিতীয় বিবাহ করা ধর্মবিরুদ্ধ" উল্লেখ করার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে প্রণিধানযোগ্য। সবকিছু মিলিয়ে নারীর অধিকার ও আর্থিক নিরাপত্তার বিষয়গুলো সামনে চলে আসায় রায়ের ক্ষেত্রে ধর্মীয় আবেগের চেয়ে নারীর ক্ষমতায়নের মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলোই প্রাধান্য পেয়েছে।

;