সবশেষ কোপা আমেরিকার ফাইনালের কথা মনে আছে? টানা ২৮ ম্যাচ অপরাজিত থেকে সেবার ফাইনালে উঠেছিল কলম্বিয়া। সেই দলটা শেষমেশ ফাইনালে হেরেছিল কার কাছে? সে দলটা আর্জেন্টিনা। তার প্রায় দুই মাস পর আবারও দুই দল যখন মুখোমুখি, কলম্বিয়ানদের মনের কোণে প্রতিশোধের বাসনাটা একটু হলেও ছিল বৈকি! তা মঞ্চটা যত ভিন্নই হোক।
সে শোধটা কলম্বিয়ানরা তুলে ফেলেছে। আজ আর্জেন্টিনাকে হারিয়েছে ২-১ গোলে। সে জয়ের পর স্বাগতিক কলম্বিয়ার উল্লাসই বলে দিচ্ছিল, কতটা মরিয়া হয়ে ছিল এই জয়টার জন্য!
দুই মাস আগের সেই ম্যাচের ট্র্যাজিক নায়ক হয়ে ছিলেন কলম্বিয়ান ফরোয়ার্ড হামেস রদ্রিগেজ। দলের ফাইনালে তোলার নায়ক চূড়ান্ত লড়াইয়ে ছিলেন নিষ্প্রভ। টুর্নামেন্টসেরার পুরস্কারটাও তাই মন ভরাতে পারেনি তার। দলের শিরোপাটা যে হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল! যে কারণে ফাইনাল শেষে হাপুস নয়নে কেঁদেওছিলেন তিনি।
সেই তিনিই আজকের ম্যাচের নায়ক। একটা গোল করলেন, আরেকটা করালেন। কলম্বিয়ার জয়টা নিশ্চিত হলো তাতেই।
বারাঙ্কিলায় নিজেদের মাঠ এস্তাদিও মেত্রোপলিতানোয় ম্যাচের শুরু থেকেই ছড়িটা ছিল কলম্বিয়ানদের হাতে। ২৫ মিনিটে রদ্রিগেজের বাড়ানো ক্রস আর্জেন্টিনা রক্ষণ ভেঙে ব্যাকপোস্টের কাছে খুঁজে পায় ইয়েরসন মসকেরাকে। তার দারুণ হেডার গিয়ে আছড়ে পড়ে আর্জেন্টাইনদের জালে।
এরপর দ্বিতীয়ার্ধে আর্জেন্টিনা ম্যাচে ফেরে। হামেস এই ম্যাচে এতটাই জড়িয়ে ছিলেন যে, এই গোলেও প্রত্যক্ষ ‘অবদান’ ছিল তার। কলম্বিয়ান এই মিডফিল্ডারের ভুল পাস পেয়ে যান নিকলাস গঞ্জালেস। সামনে এগোতে থাকা গোলরক্ষক কামিলো ভারগাসকে বোকা বানিয়ে এরপর তিনি বলটা জড়ান জালে।
তবে আর্জেন্টিনার এই সমতায় ফেরার স্বস্তিটা ১২ মিনিট পরই উবে গেছে। কলম্বিয়া পেনাল্টি পেয়ে যায়। আর্জেন্টাইন অধিনায়ক নিকলাস অতামেন্দি ফাউল করে বসেন দানিয়েল মুনোজকে। চিলিয়ান রেফারি পিয়েরো মাজা ভিএআর দেখে এসে পেনাল্টি দেন। এরপর আর্জেন্টাইন পেনাল্টি বিশেষজ্ঞ এমিলিয়ানো মার্তিনেজকে ধোঁকা দিয়ে হামেস তাকে পাঠান অন্য দিকে, শট নেন অন্য পাশে। ২-১ ব্যবধান করে জয়ের সুবাস তখনই পেতে শুরু করে কলম্বিয়ানরা।
ব্যবধানটা আরও বাড়তে পারত। কলম্বিয়ান জন দুরান একটা দারুণ সুযোগ মিস করে বসেন শেষ দিকে। তবে তাতে খুব একটা ক্ষতি হয়নি কলম্বিয়ার। ২-১ গোলের জয় নিয়ে তারা যে যারপরনাই আনন্দিত, তা ম্যাচ শেষে সবার উল্লাসই বলে দিচ্ছিল।
এই জয়ের ফলে ৮ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে কলম্বিয়া উঠে এসেছে কনমেবল বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের দ্বিতীয় স্থানে। আর আর্জেন্টিনা সমান ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে রইল শীর্ষেই।