আমাদেরকে গণতন্ত্র শেখাতে আসবেন না: তথ্যমন্ত্রী

যারা গণতন্ত্র শিক্ষা দিতে চান তাদের অনেকের দেশেই গণতন্ত্র নাই
‘আজকে মানবাধিকার নিয়ে যারা কথা বলে, ১৯৭৭, ৭৮, ৭৯ সালে জিয়াউর রহমানের হত্যার শিকার নিরপরাধ সেনা সদস্যদের স্বজনদের সংগঠন 'মায়ের কান্না'র আর্তনাদ কি তারা শোনে না? ২০১৩, ১৪, ১৫ সালে অগ্নিসন্ত্রাসে নিহতদের স্বজনদের কান্না তাদের কানে কেন পৌঁছায় না’ প্রশ্ন রেখেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার (২ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘মায়ের কান্না’ সংগঠন কর্তৃক আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ প্রশ্ন রাখেন।
‘মায়ের কান্না’র আহবায়ক কামরুজ্জামান লেলিনের সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, সাবেক প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এবং স্বজনহারা ব্যক্তিবর্গ এ সময় বক্তব্য দেন।
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, গত কয়েক বছর ধরে দেশ জুড়ে মায়ের কান্না কেঁদে চলছে। আমি প্রশ্ন রাখি যারা মানবাধিকারের কথা বলেন, মানবাধিকার নিয়ে ব্যবসা করেন, তাদের কর্ণকুহরে এই কান্না কেন পৌঁছায় না। আপনাদের কাছে দেখা করার দরখাস্ত দেওয়া হয়েছিল, আপনারা এখনও পর্যন্ত দেখা করেন নাই। অর্থাৎ মানবাধিকার এখন কিছু কিছু রাষ্ট্রের একটি অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে সমস্ত দেশ উন্নয়ন-অগ্রগতি করে কিন্তু তাদেরকে ঠিক মতো ব্যবসা দেয় না, তাদেরকে দমিয়ে রাখার জন্য মানবাধিকার এখন একটি অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। মানবাধিকার নিয়ে ব্যবসা করা, অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা দেশে-বিদেশে বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।
আগামী নির্বাচন নিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঘুরে দাঁড়িয়েছে এবং এই অগ্রযাত্রা অনেকের পছন্দ নয়। সে জন্য নানা ছলছুতায় প্রথমে আনে মানবাধিকার তারপর বলে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন। আমাদের দেশে অবশ্যই অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং জনগণের অংশগ্রহণে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন হবে। সরকার সর্বোতভাবে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করবে।
বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর প্রতি তথ্যমন্ত্রী বলেন, দয়া করে আমাদেরকে গণতন্ত্র শেখাতে আসবেন না। আমাদের পার্লামেন্ট ভবনে হামলা চালিয়ে, ঘেরাও করে কেউ হত্যাকান্ডের শিকার হয় নাই। আমাদের দেশে পরাজিত প্রার্থীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পরাজয় মেনে নেয়। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো পরাজয় মেনে নেন নাই। যারা গণতন্ত্র শিক্ষা দিতে চান তাদের অনেকের দেশেই গণতন্ত্র নাই। সুতরাং আমাদেরকে গণতন্ত্র শিক্ষা দিতে আসবেন না।
হাছান মাহমুদ আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে এ দেশের মানুষকে সঙ্গবদ্ধ করে সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রাম করে এ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। সুতরাং যারা মানবাধিকার আর গণতন্ত্রের কথা বলে দেশে দেশে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে তারা দয়া করে আমাদেরকে গণতন্ত্র শেখাতে আসবেন না।