১০ হাজার শিক্ষককে বিনামূল্যে অনলাইন ক্লাসের প্রশিক্ষণ দেবে কোডার্সট্রাস্ট



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
১০ হাজার শিক্ষককে বিনামূল্যে অনলাইন ক্লাসের প্রশিক্ষণ দেবে কোডার্সট্রাস্ট

১০ হাজার শিক্ষককে বিনামূল্যে অনলাইন ক্লাসের প্রশিক্ষণ দেবে কোডার্সট্রাস্ট

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের অন্তত ১০ হাজার শিক্ষককে বিনামূল্যে অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার পদ্ধতিগত ও প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ দেওয়ার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে কোডার্স ট্রাস্ট। প্রযুক্তি প্রশিক্ষণ ও জ্ঞান বিতরণে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানটি তাদের ঢাকাস্থ সদর দফতর ও অন্যান্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করবে। প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে সম্পূর্ণ অনলাইনে। প্রশিক্ষণার্থী ১০ হাজার শিক্ষক এরই মধ্যে তাদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। 

এরই উদ্বোধনী হয়ে গেলো শনিবার (২০ জুন)। এক ওয়েবিনারের মাধ্যমে আয়োজিত এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্যসচিব আবদুল করিম, সাবেক শিক্ষাসচিব নজরুল ইসলাম খান, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ। যুক্তরাষ্ট্র থেকে যোগ দেন কোডার্সট্রাস্টের কো-ফাউন্ডার ও ইউটিসি অ্যাসোসিয়েটসের প্রতিষ্ঠাতা আজিজ আহমদ। এছাড়াও ছিলেন, কোডার্সট্রাস্ট বাংলাদেশ’র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) আবদুল হালিম, শিক্ষাডটকম এর সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান খান এবং কোডার্সট্রাস্ট বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আতাউল গনি ওসমানি।

শিক্ষাডটকম এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহায়ক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে। উদ্বোধনীর পরপরই শুরু হয় দিনের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম।

উদ্বোধনী বক্তৃতায় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক সঙ্কটে আমাদের সকল ক্ষেত্রেই স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। আপদকালীন অবস্থায় আমরা কি করে শিক্ষাব্যবস্থাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি, যাতে আমাদের শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে না পড়ে সরকার সে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

সকল সঙ্কট শুধুমাত্র সঙ্কট নয়, তার মধ্য দিয়েই কিছু সম্ভাবনার দিকও উন্মোচিত হয়, এমন মত দিয়ে শিক্ষমন্ত্রী বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষা ব্যবস্থাকে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। এটাকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। আর তেমনই একটি উদ্যোগ এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। এ জন্য আমি কোডার্সট্রাস্ট ও শিক্ষাডটকমকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থায় আমাদের একসময় যেতেই হবে সে ভাবনা আমাদের ছিলো এবং সে লক্ষ্যে প্রস্তুতিও চলছিলো। বিশ্ব যতই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ততই আমাদের এসব বিশেষ দক্ষতা অর্জন জরুরি হয়ে পড়েছে। তবে হঠাৎ করে করোনা পরিস্থিতির কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রাখতে হচ্ছে ফলে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে যা আমরা করতে চেয়েছিলাম তা এখনি শুরু করতে হচ্ছে।

শিক্ষকরা যারা নিজেরা এমন প্রশিক্ষণের প্রয়োজন বোধ করে তা গ্রহণে আগ্রহ দেখিয়েছেন এজন্য তাদের অভিনন্দন জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমি আশা করি এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষকরা অনলাইনে আরও ভালো করে পাঠদান করতে পারবে।

স্বাগত বক্তব্যে মানব সম্পদ বা মানব পূঁজি গঠনে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে সমৃদ্ধ করে তোলার কথা বলেন আজিজ আহমদ। তিনি বলেন, আমার বাবাও ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক। শিক্ষার উন্নয়নে যেখানে যতটুকু সুযোগ পাই করার চেষ্টা করে আসছি। কোভিড-১৯ এর বিদ্যমান পরিস্থিতিতে আমরা থেমে থাকতে পারিনা, এর মধ্যেই কিভাবে শিক্ষা কার্যক্রমকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় সেটাই আমাদের এই কর্মসূচির লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রক্রিয়া চলছে, তারই অংশ হিসাবে আমরা দেশে অনলাইনে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে আসতে পেরেছি। শিক্ষকরা তাদের অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার মৌলিক জ্ঞান ও প্রশিক্ষণ এর মাধ্যমে পাবেন।

মো. ফসিউল্লাহ বলেন, অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষকদের জন্য এই প্রশিক্ষণের উদ্যোগ এ মুহূর্তে আমাদের জন্য খুব দরকারি ও খুবই ভালো উদ্যোগ। বিনামূল্যে এই প্রশিক্ষণ দিতে এগিয়ে আসার জন্য কোডার্সট্রাস্টকে ধন্যবাদ।

প্রাথমিক পর্যায়ে দেশে চার লাখ শিক্ষক রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, অনলাইনের মাধ্যমে তাদের সকলকে প্রশিক্ষণ দেয়া সম্ভব হলে তা অবশ্যই কাজে লাগবে এবং সে দিকেই আমরা যাচ্ছি। এই প্রশিক্ষণ আমাদের সে প্রচেষ্টায় বড় অবদান রাখবে।

আবদুল করিম বলেন, এক সঙ্গে দশ হাজার শিক্ষককে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা একটি কঠিন কাজ। তবে প্রযুক্তির ব্যবহারে দেশের অগ্রগতির কারণেই এখন তা সম্ভব হচ্ছে। শিক্ষকদের আইটিভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, আশা করি কোডার্সট্রাস্টের এই প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা এ বিষয়ে সে দক্ষতা অর্জন করবেন। এর মাধ্যমে কোভিড-১৯ এর কারণে সৃষ্ট ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন আবদুল করিম।  

নজরুল ইসলাম খান বলেন, প্রযুক্তির নতুন নতুন সুবিধা এত রয়েছে যে শিক্ষকরা চাইলেই তার ব্যবহার করে তাদের অনলাইন ক্লাসকে অনেক বেশি লাইভলি ও কার্যকর করে তুলতে পারবেন। যেগুলো খুব সহজ পদ্ধতি। তবে নিশ্চিতভাবেই ধারণা করছি, অনেক শিক্ষকের এখন সেটা জানা নেই। আমি মনে করছি, কোডার্সট্রাস্ট তার প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষকদের সেটা বুঝিয়ে দিতে ও শিখিয়ে দিতে সক্ষম হবে। আর তাতেই সার্বিকভাবে আমাদের অনলাইন শিক্ষণ ব্যবস্থা জোরদার হবে। শিক্ষকরা যারা এই প্রশিক্ষণ নেবেন, তাদের কাছ থেকে ফিডব্যাক নিয়ে ভবিষ্যতে কোন ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া প্রয়োজন তা জেনে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে কোডার্সট্রাস্টের প্রতি আহবান জানান তিনি।

কোডার্সট্রাস্ট বাংলাদেশ’র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল হালিম বলেন, করোনা দুর্যোগ কোনো কোনো ক্ষেত্রে আমাদের সুযোগও তৈরি করে দিয়েছে। এ কারণেই আমরা অপেক্ষাকৃত দ্রুত শিক্ষাক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতির প্রয়োগে যেতে পারছি।

কোডার্সট্রাস্টের এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষকরা বিভিন্ন টুলস সম্পর্কে জ্ঞান ও ধারণা নিতে পারবেন। যার মাধ্যমে তারা নিজেদের ক্লাস পরিচালনা করবেন। আবদুল হালিম বলেন, এই দশ হাজার শিক্ষক যখন প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করবেন, তখন স্কুল যদি খুলে দেওয়া না যায় আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম থেমে থাকবে না। 

সিদ্দিকুর রহমান প্রশিক্ষণের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরে বলেন, কোভিড-১৯ শুরু হওয়ার পর সরকার যখন টেলিভিশনের মাধ্যমে, অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার নির্দেশনা দিলো তখন একটি বিষয় স্পষ্ট হলো দেশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের অধিকাংশ শিক্ষকের এ বিষয়ক প্রযুক্তিগত ধারণা নেই। আর সেটা সমাধানেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কোডার্সট্রাস্টকে ধন্যবাদ এমন একটি মহতী উদ্যোগে বিনামূল্যে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, কোডার্সট্রাস্ট বাংলাদেশে এরই মধ্যে তার আইটি প্রশিক্ষণে স্থান করে নিয়েছে। এর নিয়মিত প্রশিক্ষণগুলোর মেয়াদকাল বড় ও ব্যয়সাপেক্ষ। কিন্তু এই প্রশিক্ষণের জন্য তারা সংক্ষিপ্ত কোর্সের মডেল তৈরি করে তবেই এগিয়ে এসেছে এবং তা বিনামূল্যে।

আতাউল গনি ওসমানি জানান, এরই মধ্যে ১০ হাজার শিক্ষক এই প্রশিক্ষণের জন্য তাদের নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। এদের সকলকেই এই প্রশিক্ষণের আওতায় আনা হবে।  জুম ও গুগল মিট’র মাধ্যমে যেভাবে প্রশিক্ষণ পরিচালিত হবে তার কারিগরি দিকগুলো ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, শিক্ষকরা জুম ও গুগল মিটের মাধ্যমে নিজের প্রশিক্ষণ নেবেন। এবং পরে এই পদ্ধতিতেই তারা নিজেরাও শিক্ষার্থীদের পড়াবেন। প্রতিদিন তিনটি করে ব্যাচের প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করা হবে। প্রতিটি ব্যাচে ৫০ জন করে শিক্ষক প্রশিক্ষণ পাবেন।

উদ্বোধনের পর প্রথম দিনেই তিনটি ব্যাচে ১৫০ জন শিক্ষক প্রশিক্ষণ নেন।

৩ দিনের ছুটি ৭ মাসেও শেষ হয়নি কর্মকর্তার!



মোঃ আব্দুল হাকিম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পারিবারিক কাজে ৩ দিনের ছুটি নিয়েছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মো: আবুরেজা তালুকদার। ছুটি শেষও হয়েছে। কিন্তু গত সাত মাসেও কর্মস্থলে যোগ দেননি তিনি। দু’দফা তলব করেও এই কর্মকর্তাকে ফেরাতে পারেনি বিভাগীয় প্রাণীসম্পদ দপ্তর। মাঝে বেতন আটকে গেলে ভুয়া স্মারকের চিঠিতে বেতন আবেদন করে ধরা পড়ে যান এই কর্মকর্তা।

বিভাগীয় ও জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়, সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ডাঃ মো: আবুরেজা তালুকদার গত বছরের আগস্টের ১৫ থেকে ১৭ তারিখ মোট তিন দিনের ছুটি নিয়েছিলেন। পারিবারিক জরুরি কাজ জানিয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করেন। তার অনুপস্থিতিতে একই অফিসের এলএইও ডাঃ শামীমা নাসরিনকে সাধারণ দায়িত্ব পালন করতে বলেন। ১৭ দিন পেরিয়ে গেলে সেপ্টেম্বরের ৪ তারিখে গণকর্মচারী শৃঙ্খলা (নিয়মিত উপস্থিতি) অধ্যাদেশ, ১৯৮২ অনুযায়ী কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান। একইসাথে বিভাগীয় ও প্রাণিসম্পদ মহাপরিচালক বরাবর ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান তিনি। কিন্তু কোন সদুত্তর মেলেনি।

সূত্র জানায়, নিয়ম বর্হিভূত কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ১৯তম বিসিএসের এই কর্মকর্তা।

একই অফিসের দুই কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিষয়ে ভুয়া অভিযোগ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর। সেটা করেন ভুয়া স্মারক ব্যবহার করে যা সম্পর্কে জানেন না জেলা, বিভাগীয় কিংবা খোদ প্রাণিসম্পদের মহাপরিচালক।

একাধিকবার কৈফিয়ত চাওয়া হলেও উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে কোনো জবাব দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেন নি তিনি। উল্টো দিয়েছেন হুমকি। সে বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর কর্মচারী শৃঙ্খলা (নিয়মিত উপস্থিতি) অধ্যাদেশ, ২০১৭ অনুযায়ী বিভাগীয় মামলা হতে পারে বলে সতর্ক করেন ও তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান।

সর্বশেষ হাল ছেড়ে বিভাগীয় কর্মকর্তা ড. নজরুল ইসলামের কাছে ডাঃ মো: আবুরেজার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান এই কর্মকর্তা। তবে, মুখ খুলতে নারাজ অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

দপ্তরের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো: তরিকুল ইসলাম জানান বলেন, “উনারা বড় মাপের মানুষ। এসপি আছে, ডিসি আছে, প্রাণিম্পদের সচিব আছে। আমাদের কে আছে? আমাদের হুকুম করলে করতে হয়। ভুয়া স্মারক ব্যবহার, অফিস করেন না, দূর্নীতি যা কিছু আছে সেসব বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।”

এবিষয়ে একই দপ্তরের এলএইও ডাঃ শামীমা নাসরিন বলেন, “স্যার গতবছরের আগস্টে তিন দিনের ছুটি নিয়ে এখন পর্যন্ত একদিনও অফিস করেননি। প্রকল্পের কাজ যখন আটকে গিয়েছিল তখন ভেটেরিনারি সার্জন ডাঃ মো: আখতারুজ্জামানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি কাজগুলো করিয়ে নেন। আমরা এভাবেই কাজ করে যাচ্ছি সমস্যার মধ্য দিয়ে। স্যার কোথায় আছেন আমরা জানিনা।”

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমানকে বলেন, ডাঃ মো: আবুরেজার বিষয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। গতবছরের আগস্টের ১৫ থেকে ১৭ তারিখ মোট তিন দিনের ছুটি নিয়ে বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত ছিলেন।

চলতি মার্চ মাসের ১৩ তারিখে যোগদান করে আবার ছুটি নিয়েছেন। দীর্ঘ সময়ে একদিনের জন্যও চেয়ারে বসেননি। বারবার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। শাস্তির বিষয়ে চাকরি থাকবে কিনা যাবে তা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. নজরুল ইসলাম বলেন, ডাঃ মো: আবুরেজার বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত আছেন। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান একাধিকবার নোটিশ ও কৈফিয়ত তলব করেছেন তাতে কোন কাজ হয়নি।

এছাড়া ভুয়া স্মারক ব্যবহার করে বেতনভাতা তোলার চেষ্টা করে বিভ্রান্তি করার চেষ্টা করেছেন। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে অধীনস্ত কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর যা সম্পূর্ণ অপরাধ।

বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিতির শাস্তি সম্পর্কে জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, সরকারি কর্মচারী ( শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৭, সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৮ এবং গণকর্মচারী শৃঙ্খলা (নিয়মিত উপস্থিতি) অধ্যাদেশ, ১৯৮২ অনুযায়ী সম্পূর্ণ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বিভাগীয় মামলা হতে পারে ও বিনা বেতনে চাকরি বলে গণ্য হবে। এছাড়া বিভাগীয় মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত হতে পারে।

এ কর্মকর্তার অনুপস্থিতির বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডাঃ মোহাম্মদ রেয়াজুল হক জানান, বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত হওয়ার কোন নিয়ম নাই। এজন্য শাস্তি ভোগ করতে হবে। অনুপস্থিত হওয়ার কারণ ব্যখ্যা দিবে। যদি সন্তোষজনক কোন ব্যখ্যা দিতে না পারে তাহলে দপ্তরের নিয়মানুযায়ী শাস্তি দেওয়া হবে। পদাবনতি হতে পারে, পদোন্নতি আটকে থাকতে পারে অনেক কিছুই শাস্তির ব্যবস্থা আছে সেগুলো আমরা করব।

;

ঝালকাঠিতে বৈদ্যুতিক খুটির সাথে বাসের ধাক্কা, নিহত ২



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় সড়কের পাশের বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে বিআরটিসি বাসের ধাক্কায় বাসের সুপারভাইজার ও এক যাত্রী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ১৩ জন। আহতদের পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার করে ভাণ্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন।

 শুক্রবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে বরিশাল-পাথরঘাটা আঞ্চলিক মহাসড়কের উপজেলার কানুদাশকাঠি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন বিআরটিসি বাসের সুপারভাইজার মেহেদী হাসান ও যাত্রী পাভেল।

পুলিশ ও আহতরা জানান, বরিশাল থেকে যাত্রী নিয়ে পাথরঘাটার উদ্দেশে সকালে যাত্রা শুরু করে বাসটি। বাস ছাড়ার পর চালক ও হেলপার, সুপারভাইজারদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয় কয়েক দফায় এবং চালক বেপরোয়া গতিতে বাসটি চালাচ্ছিলেন। কানুদাশকাঠি এলাকায় চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে সড়কের পাশের বৈদ্যুতিক খুটি ও গাছের সাথে বাসটির ধাক্কা লাগে। এতে বাসের সামনের অংশ দুমড়ে মুচরে যায়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন বাসের ড্রাইভার সাবু মোল্লা (৪০), সাথী (৩৩), ইমু (২০), মোমেনা (৪৫), তানজিলা (৩১), অমল দেবনাথ (৫৮), মন্টু হাওলাদার (৫৫), শহিদুল খান (৫৭), রাহুল (৪০), জাহানারা বেগম (৫৫), কবির মোল্লা (৩৫), কাওছার (৩২) ও রিতা দেবনাথ (৩৫)। আহতদের মধ্যে দুজনকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। চারজনকে ভাণ্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

ভাণ্ডারিয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী কর্মকর্তা আব্দুস সোবাহান বলেন, দুর্ঘটনায় বিআরটিসি বাসের সুপারভাইজার মেহেদী ও পাভেল নামে বাসের এক যাত্রী নিহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

রাজাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পুলক চন্দ্র রায় জানান, ঘটনাস্থলেই সুপারভাইজার ও এক বাস যাত্রী নিহত হন এবং ১০/১২ জন যাত্রী আহত হন। দুর্ঘটনায় যান চলাচল বন্ধ হলে পুলিশ তাৎক্ষণিক যান চলাচলের ব্যবস্থা করে। লাশ উদ্ধার করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

;

আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলনে বাংলাদেশ সহ-সভাপতি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতিসংঘের আয়োজনে প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলন। এতে সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে সম্মেলনের উদ্বোধনকালে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিগত ৫০ বছরে জাতিসংঘ আয়োজিত এটি প্রথম আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলন। জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গ-সংস্থাসমূহ, সদস্য রাষ্ট্র এবং অন্য সব অংশীজনের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে বৈশ্বিক পানি বিষয়ক কর্মসূচির বাস্তবায়নে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জনই সম্মেলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।

এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল মুহিত বলেছেন, সহ-সভাপতি পদে বাংলাদেশকে নির্বাচিত করা জাতিসংঘের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের দক্ষ নেতৃত্বের ওপর বিশ্ব সম্প্রদায়ের গভীর আস্থারই প্রতিফলন।

তিনি বলেন, সহ-সভাপতি পদে নির্বাচিত হওয়ায় বৈশ্বিক পানি বিষয়ক এজেন্ডায় আমাদের জাতীয় অগ্রাধিকারগুলো অর্জনের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ানোর পথ প্রশস্ত হবে।

একই সঙ্গে এ অর্জন বাংলাদেশকে টেকসই উন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে সম্মত পানি বিষয়ক লক্ষ্যসমূহ অর্জনে বিশ্বব্যাপী চলমান প্রচেষ্টাকে আরও বেগবান করার নেতৃত্ব দানে সহায়তা করবে বলেও উল্লেখ করেন মুহিত।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের নেতৃত্বে এ সম্মেলনে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকসহ ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নিচ্ছে।

বৃহস্পতিবার থেকে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে শুরু হওয়া এ পানি সম্মেলন চলবে আগামী ২৪ মার্চ পর্যন্ত। এতে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধান ও মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন।

;

রমজানে নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখার আহ্বান এফবিসিসিআই’র



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রমজানে তেল, চিনি, ছোলাসহ সব ধরণের নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে খুচরা ও পাইকারি ব্যবাসয়ী, উৎপাদনকারী, আমদানিকারক এবং বাজার কমিটিগুলোকে আহ্বান জানিয়েছে দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রমজান উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি, মজুদ, সরবরাহ, বাজার পরিস্থিতি ও বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভায় এই আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

তিনি বলেন, বাজার স্থিতিশীল রাখতে ইতিমধ্যে সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এক্ষেত্রে ভোক্তা এবং ব্যবসায়ীদেরও দায়িত্বশীল হতে হবে। ভোক্তাদের যেমন প্রয়োজনের অতিরিক্ত কেনাকাটা থেকে বিরত থাকতে হবে, ব্যবসায়ীদেরও অতি মুনাফা করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

কোন ব্যবসায়ী যেন ভোক্তাদের কাছ থেকে পণ্যের অযৌক্তি দাম আদায় করতে না পারে সে বিষয়ে বাজার কমিটিগুলোকে তৎপর থাকার আহ্বান জানান মো. জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, আমরা চাই না ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর অভিযান চালিয়ে ব্যবসায়ীদের হেনস্তা করুক। পণ্য ক্রয়-বিক্রয় ও মজুদ বিষয়ে সরকারের নিয়মনীতি রয়েছে। এসব বিষয়ে সাধারণ ব্যবসায়ীদের সচেতন করতে বাজার কমিটিগুলো উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। কোন পণ্যের সরবরাহ বিঘ্নিত হলে আমাদের জানান, আমরা সহযোগিতা করবো।

কোন বাজারে অযৌক্তিক মূল্যে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় হলে এবং এ বিষয়ে বাজার কমিটির উদাসীনতা দেখা গেলে সরকার কমিটির লাইসেন্স বাতিল করবে জানিয়ে সবাইকে সতর্ক করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।

কোন অসাধু ব্যবসায়ীদের দায় এফবিসিসিআই নেবে না বলেও সভায় জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।

এ সময় এফবিসিসিআই এর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে দ্রব্যমূল্য যা বৃদ্ধি পাওয়ার পেয়েছে। রমজানকে কেন্দ্র করে এই দাম যেন নতুন করে না বাড়ে। আমরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জেনেছি চিনি, ভোজ্যতেলসহ অন্যান্য নিত্য পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। পাইপলাইনেও (আমদানি পর্যায়ে) যথেষ্ট পণ্য রয়েছে। গত বছর ঈদের আগে বাজারে যে বিশৃঙ্খলা হয়েছিলো, এবার যেন তার পুনরাবৃত্তি না হয়।

মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে ভোজ্যতেল এবং চিনি উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা জানান, রমজারে চাহিদার বিপরীতে দেশে পণ্য দুটির পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। কারখানা পর্যায়ে জ্বালানি সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে এসব পণ্যের কোন ঘাটতি হবে না।

এ সময় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ জানান, নিত্যপণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে পাইকারি বাজার কিংবা মিলগেট থেকে রশিদ প্রদান না করায় ভ্রাম্যমান আদালতের জরিমানার মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।

আড়ত ও মিলগেটে পণ্য কেনা-বেচার ক্ষেত্রে রশিদ বাধ্যতামূলক করার বিষয়টি বাস্তবায়নে সরকারের সাথে জোরালোভাবে কাজ করা হবে বলে জানায় এফবিসিসিআই।

মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, এফবিসিসিআই -এর সহ-সভাপতি এম এ মোমেন, মোঃ আমিন হেলালী, পরিচালক এম.জি.আর নাসির মজুমদার, বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, হাফেজ হারুন, মোহাম্মদ বজলুর রহমান, আবু হোসেন ভূইয়াঁ রানু, আক্কাস মাহমুদ, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিনসহ অন্যান্য ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ।

;