শামীম ঘুষ দিয়েছেন দেড় হাজার কোটি টাকা!
ঠিকাদার মোগল এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীমের কাছ থেকে সবাই সুবিধা নিয়েছেন। সরকারি বড় বড় প্রকল্পের কাজ বাগিয়ে নিতে শামীম সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তাদের কোটি কোটি টাকা ঘুষ দিতেন। এর মধ্যে দু'জন সাবেক প্রকৌশলীকেই তিনি ঘুষ দিয়েছেন দেড় হাজার কোটি টাকা।
রোববার(২২ সেপ্টেম্বর) সমকালে ‘শামীম ঘুষই দিয়েছেন ১৫শ কোটি টাকা; শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদে শামীম জানান, প্রতি টেন্ডারে ৮ থেকে ১০ শতাংশ কমিশন দেওয়া লাগত তার। অনেক সময় নির্দিষ্ট কমিশনের পরও ঘুষ দিতে হতো। লাগামহীন ঘুষ-বাণিজ্যের কারণে কিছু প্রকল্পে তাকে লোকসানের মুখেও পড়তে হয়েছে।
শুক্রবার র্যাবের অভিযানে গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে শামীম এই ঘুষ-বাণিজ্যের কথা স্বীকার করেছেন বলে দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে। গতকাল শনিবার অস্ত্র, মাদক ও মুদ্রা পাচারের দায়ে তিনটি মামলা করা হয় তার বিরুদ্ধে। মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শনিবার তাকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
সূত্রমতে, জিজ্ঞাসাবাদে শামীম দাবি করেছেন যে দুই প্রকৌশলী ছাড়াও যুবলীগের অন্তত দু'জন শীর্ষ নেতাকে মোটা অঙ্কের মাসোহারা দিতেন তিনি। অবশ্য কাজ পেতে ওই নেতাদের নাম ভাঙাতে হতো তার। তাদের নাম ভাঙিয়ে সরকারি প্রকল্পের কোটি কোটি টাকার কাজ বাগিয়ে নিতেন তিনি।
একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, গত বছরের ডিসেম্বরে গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম অবসরে যান। তিনি দায়িত্বে থাকাকালীন সেখানে একচ্ছত্রভাবে ঠিকাদারি কাজ পেয়েছেন শামীম। গণপূর্তে এমন কথা প্রচলিত আছে, ঠিকাদারি কাজ বাগিয়ে নিতে নানা দপ্তরে 'তদবির' করে রফিকুলকে প্রধান প্রকৌশলী বানিয়েছিলেন শামীম।
শামীম আরও জানান, ক্ষমতাসীন দলের এক শীর্ষ নেতাকে 'সন্তুষ্ট' রাখতে নিয়মিতই মোটা অঙ্কের টাকা দিতে হতো। এর বাইরেও তার অর্থভোগীর তালিকা অনেক দীর্ঘ। শামীমের বক্তব্য এমন, ঠিকাদারি ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে তার আয় করা অর্থের বড় অংশই দিতে হতো নানা রথী-মহারথীকে। ঠিকাদারি কাজ ভাগাতে অনেক সময় পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসানকে ব্যবহার করতেন শামীম।