রাজশাহীতে বাড়ছে শীতের তীব্রতা, দু’দিন ধরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড
রাজশাহীতে বেড়ে চলেছে শীতের প্রকোপ। পরপর দুইদিন ভোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে, যা এবারের শীত মৌসুমের সর্বনিম্ন। মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) ভোরেও একই তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২২ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা শুক্রবার কিছুটা বেড়ে ২৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়।
তীব্র শীতে ভোগান্তি বেড়েছে রাজশাহীর সাধারণ মানুষের। বিশেষত শ্রমজীবী মানুষের দুর্ভোগ প্রকট আকার ধারণ করেছে। ভোরে কাজের সন্ধানে বের হওয়া মানুষ শীত নিবারণের জন্য খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাচ্ছেন। ফুটপাতে গরম কাপড়ের দোকানগুলোতেও মানুষের ভিড় দেখা যাচ্ছে।
রিকশাচালক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ভোরবেলা যাত্রী খুব একটা পাই না। শীতের জন্য গায়ে দেয়ার ভালো কাপড়ও নেই। শরীর জমে আসে। তবুও জীবিকার তাগিদে বের হতে হয়।
দিনমজুর নুর ইসলাম বলেন, শীতের সকালে কাজ খুঁজতে বের হলে অনেক সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। কুয়াশা আর ঠান্ডায় হাত-পা কাজ করতে চায় না। এই শীতে দিনমজুরের জন্য জীবনযাপন আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
পথচারী আকবর আলী বলেন, সকালে জরুরি কাজে বের হয়েছি। কিন্তু এত ঠান্ডা যে রাস্তা দিয়ে চলতে কষ্ট হচ্ছে। গরম কাপড় থাকলেও শীত কিছুতেই মানছে না। মনে হচ্ছে শীত আরও বাড়বে।
শীতের কারণে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। ঠান্ডাজনিত সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে অনেকেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হচ্ছেন।
কুয়াশা ও শৈত্য প্রবাহের কারণে কৃষিক্ষেত্রেও প্রভাব পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। চাষিরা শীতকালীন ফসল, বিশেষত গম ও আলুর ফলন নিয়ে উদ্বিগ্ন। টানা শীতের কারণে রবিশস্যের ক্ষতির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের উচ্চ পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন জানান, তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। সে অনুযায়ী রাজশাহীতে দু’দিন ধরে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে।
আবহাওয়া আরও দু’একদিন এমন থাকতে পারে বলে তিনি জানান।