রাজারহাটে নদীকর্মীর ওপর হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবি
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার চাকিরপশার নদী সুরক্ষা কমিটির প্রবীণ আন্দোলনকর্মী নজির হোসেনের (৮০) ওপর নদী দখলদাররা হামলা ও মারধর করে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছিনিয়ে নিয়েছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী নজির হোসেন বাদী হয়ে রাজারহাট থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ১১টায় উপজেলার সদর ইউনিয়নের বোতালারপাড় গ্রামের আঙ্গাধোয়া ব্রীজপাড় এলাকায় এই নদীকর্মীর ওপর হামলা করা হয়।
ভুক্তভোগী নজির হোসেন ও স্থানীয় বাসিন্দা সূত্রে জানা যায়, রাজারহাট উপজেলার চাকিরপশার নদীর বিভিন্ন জায়গায় অবৈধ দখলদারদের দখলের কারণে উপজেলার বেশ কয়েকটি মৌজায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে ওই উপজেলার প্রায় ২ হাজার ২০০ একর ফসলি জমির ফসল নষ্টের সম্ভাবনা দেখা দেয়। উপজেলার হাজার হাজার কৃষকের ফসলি জমি জলাবদ্ধতায় ডুবে আছে। এমতাবস্থায় মঙ্গলবার সকালে উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাগণ সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে নদীকর্মী ও চাকিরপশার নদী সুরক্ষা কমিটির সদস্য নজির হোসেনকে সেখানে ডাকেন।
তিনি চাকিরপশার এলাকার জমির কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন। এসময় নজির হোসেনকে সেখানে দেখে দখলদাররা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এবং কৃষি কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতেই অবৈধ দখলদার ইলিয়াস আলী মন্ডল, একরামুল হক এবং সুমি বেগম এলোপাথারি কিল-ঘুষি চড়-থাপ্পর মারতে থাকে। পরে স্থানীয় বাসিন্দা ও নদীকর্মীরা নজির হোসেনকে দখলদারদের হাত থেকে মুক্ত করে নেন। এ ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
চাকিরপশার নদী সুরক্ষা কমিটির সমন্বয়ক ও রিভারাইন পিপল এর পরিচালক অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের অবহেলা ও অবৈধ দখলদারদের পক্ষ নেওয়ার কারণে দিনের পর দিন অবৈধ দখলদাররা আন্দোলনকারীদের লাঞ্ছিত করার সাহস পাচ্ছে। গত সোমবার (১৪ অক্টোবর) এডিসি উত্তম কুমার এর সামনে অবৈধ দখলদাররা লিপি বেগম নামের একজন নদীকর্মীকে মারের হুমকি দিয়েছে। আজ তারা নজির হোসেন নামের প্রবীণ একজন নদীকর্মীর ওপর হামলা চালিয়ে তাকে আহত করেছে। যারা নজির হোসেনকে মেরেছে তাদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় রেলপথ-সড়কপথ অবরোধ, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাওসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।
রাজারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম রেজা বলেন, সকালে চাকিরপশার এলাকার একজন বাসিন্দার ওপর হামলা করা হয়েছে মর্মে ভুক্তভোগী থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা জানান, রাজারহাটের চাকিরপশার দখল উচ্ছেদের নোটিশ আমি এই জেলায় আসার আগেই দেওয়া ছিল বলে জেনেছে। এরমধ্যে দুর্গাপূজার জন্য কিছুদিন আমরা কাজ করতে পারিনি। গতকাল থেকে উচ্ছেদ অভিযানের জন্য সরেজমিন পরিদর্শন শুরু হয়েছে। খাল-বিল ও নদী থেকে সকল দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে।