ফেনীর মহিপালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের গুলিতে নিহত জাকির হোসেন শাকিল এবং মো. সবুজের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) সোনাগাজী ও লক্ষ্মীপুর থেকে আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য দাফনের ৩৬ দিন পর তাদের মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
আদালতের নির্দেশে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরগাজী এলাকা থেকে মহিপালে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত অটোরিকশা চালক মো. সবুজের মরদেহ উত্তোলন করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এ সময় রামগতি উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসএম আবদুল্লাহ-বিন-শফিক এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফেনী মডেল থানা পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) কমল কুমার সাহা উপস্থিত ছিলেন। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) আদালত ময়নাতদন্তের জন্য সবুজের মরদেহ উত্তোলনের আদেশে দেন।
এ ঘটনায় গত ১২ আগস্ট নিহত অটোরিকশা চালক মো. সবুজের ভাই মো. ইউসুফ বাদী হয়ে ৬৫ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ৪০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ফেনী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহত সবুজ লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার দক্ষিণ টুমচর গ্রামের আবদুল মালেকের ছেলে। কর্মসূত্রে তিনি ফেনীর বিজয় সিং এলাকায় পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন।
এদিন বিকেল ৫টার দিকে সোনাগাজী উপজেলার মান্দারী গ্রাম থেকে শাকিলের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ফেনী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সোনাগাজী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান এবং মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফেনী মডেল থানা পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) এম ইরফান উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ১৩ আগস্ট মহিপালে নিহত শিক্ষার্থী জাকির হোসেন শাকিলের মা কোহিনূর আক্তার বাদী হয়ে ৭১ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ১৫০-২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ফেনী মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহত শাকিল সোনাগাজী উপজেলার কুঠিরহাট মান্দারী গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে।
এ ব্যাপারে ফেনী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, মামলার তদন্তের স্বার্থে ময়নাতদন্তের জন্য তাদের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে ফের দাফন করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ৪ আগস্ট অসহযোগ আন্দোলনের সমর্থনে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর মহিপাল এলাকায় আন্দোলন চলাকালে ছাত্র জনতার উপর নির্বিচারে গুলি চালায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এতে এখন পর্যন্ত ৯ জন নিহতের তথ্য পাওয়া গেছে। সেদিন সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হওয়া ছাড়াও ইটপাটকেলের আঘাতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী, পথচারী ও সাংবাদিকসহ আহত হয় দেড় শতাধিক।