কুজাইল হাটে পল্লী মার্কেট ভবন নির্মাণ করতে না দেওয়ার অভিযোগ

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁর রাণীনগরে সরকারি হাটে দুতলা পল্লী মার্কেট ভবন নির্মাণ করতে নির্ধারিত স্থান বুঝিয়ে না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু দখলদারদের বাঁধার মুখে নির্ধারিত ওই স্থানটি ঠিকাদারকে বুঝিয়ে দিতে পারছেনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। দুই তলা ওই ভবনটি উপজেলার কুজাইল হাটে নির্মাণের জন্য বরাদ্দ হয়। সেখানে সরকারি জায়গায় কতিপয় ব্যক্তি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে গড়ে তোলে বহু স্থাপনা। আর সেই স্থাপনাগুলো রক্ষার জন্য নির্ধারিত স্থানে ভবন নির্মাণ করতে না দেওয়ার জন্য তারা বিভিন্নভাবে তালবাহানা করছে। ফলে ঠিকাদার নির্ধারিত স্থানে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করতে পারেনি ।

বিজ্ঞাপন

সূত্রে জানা যায়, দেশব্যাপী গ্রামীণ বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কুজাইল হাটে চারতলা ফাউন্ডেশনে দুতলা পল্লী মার্কেট ভবন নির্মাণ কাজের দরপত্র আহবান করা হয়। যার প্রাক্কলিত মুল্য ধরা হয় ৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। কাজটি পায় মেসার্স সাহারা কনস্ট্রাকশন-ইএসবি নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ভবনের নির্মাণ কাজটি চলতি বছরের ১৯ মে শুরু হয়ে ২০২৫ সালের ৩০ আগষ্ট শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু বাধ সাঁধে কতিপয় স্থানীয় কিছু দখলদাররা। কারণ তারা দীর্ঘদিন ধরে হাটের জায়গা দখলে নিয়ে কেউ গোডাউন করেছে আবার কেউ বড় বড় দোকানঘর নির্মাণ করে রেখেছে। তাই তারা বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করছে, তাদের অবৈধ স্থাপনাগুলো যেন ভাঙা না যায়। যার কারণে ঠিকাদির প্রতিষ্ঠান স্থানীয় কিছু দখলদারদের বাঁধার মুখে ভবন নির্মাণের স্থান বুঝে পায়নি।

তাই আজও শুরু করতে পারেনি দুতলা ওই পল্লী ভবনের নির্মাণ কাজ। ফলে বাধ্য হয়ে ঠিকাদার কাজটি দ্রুত নির্মাণ করতে সাইট বুঝে নেওয়ার জন্য দুই দফায় স্থানীয় উপজেলা প্রকৌশলী বরাবর আবেদন করেন। উপজেলা প্রকৌশলী আবার ইউএনও ও এসিল্যান্ড এর সহযোগীতা চেয়ে আবেদন করেন। কিন্তু আজও কাটেনি জটিলা। আজও বুঝে পাননি কাজের সাইট। যার কারণে ভেস্তে যেতে বসেছে সরকারের গ্রামীণ বাজার অবকাঠামো উন্নয়নের প্রকল্প।

বিজ্ঞাপন

এদিকে হাটটির ভবন নির্মাণের স্থান স্থানীয় ভূমি অফিসের অধীনে। তাই কাজটির কার্যাদেশ হওয়ার আগে উপজেলা প্রকৌশলী তৎকালীন ইউএনও, এসিল্যান্ড, সার্ভেয়ার ও স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে হাটের স্থান নির্ধারণে যান। এরপর বাজার কমিটির মতামতের ভিত্তিতে সর্বসম্মতিক্রমে পারঘাটি যাওয়ার রাস্তা বরাবর পূর্ব-পশ্চিম লম্বায় ভবন নিমার্ণের জন্য স্থান নির্বাচিত হয়। এছাড়া ভবিষ্যতে এই বাজারের পারঘাটিতে একটি ব্রিজ নির্মাণ হতে পারে। তখন সেই স্থাপনাগুলো এমনিতেই ভাঙতেই হবে। তাই সবকিছু চিন্তা করে উপযুক্ত জায়গা নির্বাচিত করা হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

উল্লেখ্য, এই সরকারি হাটের জায়গায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ছোট ছোট দোকানঘর নির্মাণ করে জীবিকা নির্বাহ করার কথা। কিন্তু সেখানে যে যার মতো জায়গা দখল করে আছে। এমনকি অনেকে টাকার বিনিময়ে হাতবদল করছে অনায়াসে। আর সবকিছুই হচ্ছে বিশেষ একটি মহলের সুবিধা নিয়ে ক্ষমতার জোরে, আবার সংশ্লিষ্টদের যোগসাজসে।

জানতে চাইলে মেসার্স সাহারা কনস্ট্রাকশন-ইএসবি নামক প্রতিষ্ঠানের প্রোজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার ইমরুল কায়েস ইমন মুঠোফোনে বলেন, কাজটি প্রায় আড়াই মাস আগে আমরা পেয়েছি। কিন্তু জটিলতার কারণে শুরু করতে পারিনি। এই জন্য এলজিডি অফিসে দুই দফায় আবেদন করেছি। তারা সীমানা বুঝে দিলে আমরা সঙ্গে সঙ্গে কাজ শুরু করে নির্ধারিত সময়ে শেষ করবো।

জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী মো: ইসমাইল হোসেন মুঠোফোনে বলেন, চলতি সপ্তাহের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও, এসিল্যান্ডের সাথে আলোচনা করে কুজাইল বাজারে যাবো। এবং দ্রুত যাতে কাজ শুরু করা যায় সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাইমেনা শারমীন মুঠোফোনে বলেন, আমি নতুন এসেছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ খবর নিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে বলা যাবে বা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।