ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মিনিস্টার (প্রেস) সাংবাদিক শাবান মাহমুদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ আগস্ট) এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, “শাবান মাহমুদ-এর সাথে সরকারের সম্পাদিত চুক্তিপত্রের অনুচ্ছেদ-৮ অনুযায়ী বাংলাদেশ হাইকমিশন, নয়াদিল্লি, ভারত মিশনের প্রেস উইংয়ে মিনিস্টার (প্রেস) পদে তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিল করা হলো। জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।”
বিজ্ঞাপন
২০২০ সালের ১৬ নভেম্বর শাবান মাহমুদকে দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয় তৎকালীন সরকার। তার চাকরির মেয়াদ আরও দুই বছর বৃদ্ধি করে ২০২২ সালের ২ নভেম্বর প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
ঢাকা-টরন্টো-ঢাকা রুটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। সপ্তাহে দুটি ফ্লাইটের পরিবর্তে শীতকালীন সূচিতে তা এখন তিনটিতে উন্নীত করা হয়েছে।
বর্তমানে সপ্তাহের প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার একটি করে ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে। আগামী ৩১ অক্টোবর থেকে এই রুটে প্রতি শনিবার, মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার ফ্লাইট পরিচালিত হবে। এরই মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বক ডিষ্ট্রিবিউশন চ্যানেলে বিক্রির জন্য ওই ফ্লাইটের টিকেটসমূহ উম্মুক্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারের ফ্লাইটের যাত্রীদের বিশেষ ছাড় দেওয়া হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্স ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার দিয়ে এই রুটের ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে। যাত্রীরা বিমানের ওয়েবসাইট, মোবাইল অ্যাপস, কল সেন্টার ১৩৬৩৬, বিমানের নিজস্ব সব সেলস সেন্টার ও এয়ারলাইন্সের অনুমোদিত ট্রাভেল এজেন্সি থেকে টিকেট কিনতে পারবেন।
২০২২ সালের ২৭ জুলাই ঢাকা-টরন্টো রুটে ফ্লাইট শুরু করে বিমান। লাভজনক এই রুটটিতে যাত্রীদের পক্ষ থেকে অনেক দিন ধরে ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানোর দাবি ছিল। তবে বিমানের বিগত ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ উড়োজাহাজ স্বল্পতা ও পাইলট স্বলতার দোহাই দিয়ে দীর্ঘদিনের দাবি সত্ত্বেও রুটটিতে ফ্লাইট বাড়াতে কোনো কার্যকরি উদ্যোগ নেয়নি। বিমানের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সাফিকুর রহমান দায়িত্ব নিয়েই লাভজনক এই রুটে ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নিলেন।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালে এক চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচী দেয় চিকিৎসকসহ নার্স,কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে বেলা ১২ টার পর প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সাথে এক বৈঠকের প্রেক্ষিতে সীমিত পরিসরে জরুরি বিভাগের সেবা চালুর কথা জানান হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক ডা. মং টিং ঞো। কিন্তু দুপুর ২টা পর্যন্ত কোথাও চিকিৎসকদের অবস্থান দেখা যায়নি। চিকিৎসক-নার্সদের চেয়ারগুলো শূন্য পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১টায় হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে মারধরের শিকার হন ডা. সজীব কাজী নামের এক চিকিৎসক। হামলার শিকার সজীব হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ও সিসিইউতে কর্মরত ছিলেন।
হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রোগীর মৃত্যুর পর স্বজনরা সিসিইউতে প্রবেশ করে প্রথমে চিকিৎসকের কক্ষে ভাঙচুর চালায়। পরে চিকিৎসক সজীবকে মারধর করতে থাকে। এক পর্যায়ে তাকে টেনে-হেঁচড়ে মারতে মারতে চারতলা থেকে নিচে নামিয়েও মারধর করতে থাকে। এ সময় হাসপাতালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে অন্য চিকিৎসকরা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে।
এরপরই হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযুক্তদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবিতে জরুরি বিভাগসহ কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করে চিকিৎসকরা।
এদিকে চিকিৎসকরা কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা দিয়ে কর্মবিরতি পালন করায় বিপাকে পড়েছেন হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা জনসাধারণ। ২৫০ শয্যার এ হাসপাতালে ডেঙ্গুসহ নানা রোগের প্রায় আট শতাধিক রোগী ভর্তি রয়েছেন।
ডেঙ্গু পজিটিভ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর স্বজন খালেদ হোসেন আবরার জানান, চিকিৎসা বন্ধ থাকায় তারা চরম আতঙ্কিত সময় পার করছেন। নার্সরা কিছুটা সেবা দিলেও চিকিৎসক না আসায় তারা চিন্তিত।
আন্দোলনরত মেডিকেল অফিসাররা জানান, হাসপাতালে তাদের কোন নিরাপত্তা নেই। যেভাবে তাদের সহকর্মীর উপর হামলা হয়েছে, তাতে তার মৃত্যু হতে পারতো। তাই যতক্ষণ তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না হবে ততক্ষণ তারা কর্মবিরতি করবেন।
একইসাথে কর্মবিরতিতে আছে নার্স ও কর্মকর্তা কর্মচারীরাও। শুভজিৎ রুদ্র নামের একজন জানান, তারা কাজ করতে গিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এদিকে দুপুর ১২টা থেকে হাসপাতালে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।
হামলার বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মং টিং ঞো সাংবাদিকদের বলেন, রোগীর অবস্থা ক্রিটিকাল ছিলো। রোগীর এমন পরিস্থিতিতে তাকে কার্যকর সেবা দেয়ার জন্য স্বজনদের দরকার হয়। কিন্তু ওই সময় স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন না। তারপরও আমাদের চিকিৎসক সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন, যার কোনো ঘাটতি ছিলোনা। তারপরও চিকিৎসকের ওপর হামলা করা হয়।
তত্ত্বাবধায়ক বলেন, হামলাকারীরা গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলমান রাখার ঘোষণা দিয়েছে চিকিৎসকরা। কিন্তু তারা সেবা না দিলে সমস্যা তো হবেই। আমরা চেষ্টা করছি বিষয়টি সমাধানের। প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের সাথে একটি বৈঠক হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে জরুরি সেবা তারা শুরু করেছেন।
চিকিৎসকদেরটা একটি মানবিক পেশা, মানুষের জীবন মরণের সাথে এর সম্পর্ক রয়েছে, তাই তারা দ্রুত অপরাধীদের গ্রেফতার দাবি করেন। যার প্রেক্ষিতে কাজে যোগ দিবেন চিকিৎসকরা। সেইসাথে চিকিৎসকদের জীবনের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে চিকিৎসা সেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চিকিৎসাধীন প্রায় ৮শ রোগী বিপাকে পড়েছে। অনেকে পার্শ্ববর্তী বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাচ্ছেন। তবে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা বন্ধ থাকলেও সেবা চালু আছে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে।
দুপুর ২টার পর জেলা সিভিল সার্জন ডা. আসিফ আহমেদ হাওলাদারের কাছে জানতে চাওয়া হয় চিকিৎসা সেবা বন্ধ নিয়ে। তিনি জানান, ইতিমধ্যে দুইজন অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জরুরি সেবা চালু করা হয়েছে। দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে।
জরুরি সেবা চালুর কথা বলা হলেও চেম্বারগুলোতে চিকিৎসকদের অবস্থান নেই, এমন বিষয়টি তার নজরে আনা হলে তিনি বলেন, সেবা শুরু হয়েছে, হয়তো চেয়ারে দেখা যাচ্ছেনা।
সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা বন্ধ হলেও, চিকিৎসকরা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দিচ্ছেন কেনো এমন প্রশ্নে সিভিল সার্জন বলেন, এই বিষয়টি তার জানা নেই ।
লোডশেডিংয়ে নাকাল হয়ে পড়েছে চাঁদপুরের জনজীবন। এ জেলায় ৮ লাখ গ্রাহকের জন্য বিদ্যুতের চাহিদা ১শ ৮০ মেগাওয়াট। দিনে কিছুটা বিদ্যুৎ মিললেও রাতে ঘাটতি থাকে চাহিদার অর্ধেক। এতে জনজীবন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও পড়াশোনাসহ শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে গ্রাহকদের।
হাজীগঞ্জের রান্ধুনীমুড়ার বাসিন্দা ইকরা ভ্যারাইটিজ স্টোরের স্বত্বাধিকার এসএম মিরাজ মুন্সী বলেন, বিদ্যুতের যাওয়া আসায় দোকানের ফ্রিজের খাদ্যপণ্য নষ্ট হচ্ছে। ক্রেতাদের চাহিদা মেটানো যাচ্ছে না।
চাঁদপুর শহরের জিটি রোডের টেইলার্স আলাউদ্দিন বলেন, লোডশেডিংয়ে ঠিকঠাক মতো সেলাইয়ের কাজ করা যায় না। কয়েকদিন ধরে আয় কমেছে। এভাবে চলতে থাকলে পরিবার নিয়ে সংসার ও দোকান চালানো কষ্টকর হয়ে পড়বে।
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ ও ২ থেকে গ্রাহকদের এই চাহিদা মেটাতে না পেরে কয়েকদিন ধরে বিবৃতি প্রকাশ করেছে।
এতে বলা হয়েছে, জাতীয় পর্যায়ে গ্যাস স্বল্পতার কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, ফলে সারাদেশে চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কম থাকায় লোডশেডিং হচ্ছে। চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিতরণ ব্যবস্থার শতভাগ সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় লোড শেডিং দিতে হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে সাময়িক অসুবিধার জন্য তারা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছেন।
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার রাশেদুজ্জামান জানান, তার অধীনে রয়েছে ৪ লাখ ৭২ হাজার গ্রাহক। দিনে ৭০ মেগাওয়াট আর সন্ধ্যার পর ১০০ মেগাওয়াট চাহিদা। কিন্তু ২০ থেকে ৩৭ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতিতে পরিস্থিতি সামাল দিতে হচ্ছে।
চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ এর জেনারেল ম্যানেজার আতিকুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ৩ লাখ ৬০ হাজার গ্রাহকের জন্য দিনে ৪০ আর সন্ধ্যার পর ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন। কিন্তু বিদ্যুৎ মিলছে মাত্র ৫০-৫৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। এতে গ্রাহকের চাহিদা মেটাতে হিমশিত খেতে হচ্ছে তাদের।
ন্যায্য, টেকসই ও গতিশীল অর্থনীতির ভিত তৈরিতে ১২ সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করেছে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার।
'রি-স্ট্র্যাটেজিসিং দ্য ইকোনমি অ্যান্ড মোবিলাইজিং রিসোর্সেস ফর ইকুইটেবল অ্যান্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট' শীর্ষক এই টাস্কফোর্সের নেতৃত্বে থাকবেন বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ড. কে এ এস মুরশিদ।
পরিকল্পনা বিভাগের এক পরিপত্রে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ও টেকসই উন্নয়ন কৌশল প্রণয়নের জন্য গঠিত টাস্কফোর্স একটি ন্যায়সঙ্গত, টেকসই ও গতিশীল অর্থনীতির ভিত্তি স্থাপনের লক্ষ্যে আগামী তিন মাসের মধ্যে একটি প্রাথমিক পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন তৈরি করবে।
নতুন সদস্য টাস্কফোর্সে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে এবং পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য এর সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
টাস্কফোর্সের অন্য সদস্যরা হলেন- বিশ্বব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা আখতার মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান, কমনওয়েলথ সচিবালয়ের গবেষণা বিভাগের সাবেক প্রধান ড. আব্দুর রাজ্জাক, ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুশফিক মোবারক, বুয়েটের অধ্যাপক ড. শামসুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুমানা হক, এমসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি নাসিম মঞ্জুর, বিআইডিএসের গবেষণা পরিচালক ড. মনজুর আহমেদ, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, বিডিজবসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ কে এম ফাহিম মাশরুর এবং পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. মো. কাওসার আহমেদ।