বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তোপের মুখে দেশ ছেড়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিন দিন বন্ধের পর আজ থেকে সেনাসদস্য পাহারায় ঢাকার ২৯ থানার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে এখনও বন্ধ রয়েছে অনেক থানার কার্যক্রম পরিচালনার কাজ।
শুক্রবার (৯ আগস্ট) সকাল ৮টা থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যদের পাহারায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
মূলত যেসব থানায় হামলা হয়নি বা কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেসব থানার কার্যক্রম শুরু হয় আজ। এছাড়া হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে উল্লেখজনক ক্ষতিগ্রস্ত থানায় পুলিশ সদস্যরা এলেও সেখানে তাদের বসার মতো অবস্থা না থাকায় ২১ থানায় এখনো কার্যক্রম শুরু হয়নি।
কার্যক্রম, ধানমন্ডি, কলাবাগান, রমনা, কোতোয়ালি, চকবাজার, সূত্রাপুর, হাজারীবাগ, ডেমরা, গেন্ডারিয়া, শাহজাহানপুর, শেরেবাংলা নগর, হাতিরঝিল, মতিঝিল, সবুজবাগ, শাহ আলী, কাফরুল, ক্যান্টনমেন্ট, বনানী, উত্তরা পশ্চিম, উত্তরখান, ভাষানটেক, দারুসসালাম, রূপনগর ও বিমানবন্দর থানার কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এর আগে গত (৫ আগস্ট) শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিকেল থেকে রাজধানীর অনেক থানায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পুড়িয়ে দেওয়া হয় থানা-পুলিশের কাজে ব্যবহৃত গাড়ি। অনেক জায়গায় অস্ত্রসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ও নথি লুট হয়। এরপর পুলিশি ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়ে।
পরে গত বুধবার (৭ আগস্ট) বিকাল ৪টার দিকে পুলিশ সদস্যদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্ব-স্ব ইউনিটে যোগদানের নির্দেশ দেন নবনিযুক্ত মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ময়নুল ইসলাম। নির্দেশনা অনুযায়ী গতকাল (০৮ আগস্ট) সন্ধার মধ্যে নিজ নিজ কর্মস্থলে ফিরতে বলা হয় পুলিশ সদস্যদের।
সে সময় দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় পুলিশের ওপর আক্রমণের জন্য পুলিশ বাহিনীর কিছু উচ্চাভিলাষী, অপেশাদার কর্মকর্তার সিদ্ধান্তকে দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের যৌক্তিক আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশবাসীর প্রত্যাশা অনুযায়ী আমরা দায়িত্ব পালন করতে পারিনি। এর কারণে অনেকে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। একটি শূন্যস্থান হয়তো তৈরি হয়েছে। তবে সেটি পূরণে আমরা কাজ শুরু করেছি। আশা করছি অচিরেই এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আমরা নতুন করে শুরু করতে চাই। তাই সবাইকে ৮ আগস্ট সন্ধ্যার মধ্যে কাজে ফেরার নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।’
ছাত্র আন্দোলন দমনে অপারেশনাল ভুলত্রুটি থাকার কথা স্বীকার করে আইজিপি বলেন, ‘ছাত্র, সাধারণ মানুষ, পুলিশসহ অনেকেই নিহত হয়েছেন। সব কিছুর জন্য আইজিপি হিসেবে আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।’
তিনি সবার সহযোগিতা আহ্বান করেন। পুলিশের থানাগুলোকে স্থানীয় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সচেতন মানুষ, সাংবাদিকসহ জনসাধারণকে সঙ্গে নিয়ে একটি নাগরিক নিরাপত্তা কমিটি করার নির্দেশ দেন তিনি।