এখনও বন্ধ এলএনজি টার্মিনাল, আরও কমেছে গ্যাস

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে ডুবুরি নেই তাই সিঙ্গাপুর থেকে ডুবুরি আনা হয়েছে এফএসআরইউ (ফ্লোটিং গ্যাস রি-গ্যাসিফিকেশন ইউনিট) মেরামতের জন্য। পানি ঘোলা থাকায় তারা কাজ করতে পারছে না।

৫ সদস্যের টিমকে দৈনিক ৭৭ হাজার ডলার দিতে হচ্ছে সামিট গ্রুপকে। জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, কক্সবাজারের মহেশখালীতে টার্মিনালটি নোঙর করার সময় মেসেঞ্জার লাইনে (বিশেষ এক ধরনের দড়ি) দুর্ঘটনা ঘটে। এতে লাইনটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভাটার সময় যার অবস্থান ১৮ মিটার পানির নিচে। আর বাংলাদেশের কোন ডুবুরি ১০ মিটারের নিচে গিয়ে কাজ করার সক্ষমতা নেই। তাই সিঙ্গাপুর থেকে ডুবুরি আনতে হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার বার্তা২৪.কমকে বলেছেন, ;২১ জুলাই টিমটি বাংলাদেশে আসে। তারপর থেকে দুই দফায় সাগরে নিম্নচাপ থাকায় কাজ ব্যহত হয়েছে। এখন নিম্নচাপ সরে গেলেও পানি ঘোলা (বৃষ্টিপাতের কারণে) ডুবুরিরা মেরামত কাজ পরিচালনা করতে ব্যর্থ হচ্ছেন। যে কারণে এফএসআরইউটি দিয়ে গ্যাস সরবরাহ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এতে করে সারাদেশে কিছুটা গ্যাস সংকট রয়েছে।'

এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, 'তারা স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারলে ২ দিনের মধ্যেই শেষ করতে পারবে।'

বিজ্ঞাপন

২৭ মে ঘূর্ণিঝড় রিমালের সময় একটি ভাসমান পন্টুন বঙ্গোপসাগরে ভাসমান টার্মিনালটিতে আঘাত করে। এতে ভাসমান টার্মিনালের একটি ব্যালাস্ট ট্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর ওই টার্মিনাল দিয়ে জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। মেরামত করার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সিঙ্গাপুরে মেরামত শেষে গত ১০ জুলাই মহেশখালীর অদূরে বঙ্গোপসাগরে ফিরেছে। কক্সবাজারের মহেশখালীতে টার্মিনালটি নোঙর করার সময় মেসেঞ্জার লাইনে (বিশেষ এক ধরনের দড়ি) দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু মেরামত করতে না পারায় চালু করা যাচ্ছে না। দুটি ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের মাধ্যমে দৈনিক ১০০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আমদানি করা হয়। একটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জাতীয় গ্রিডে এলএনজি সরবরাহ প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে।

অন্যদিকে দেশীয় গ্যাস ফিল্ডগুলোর উৎপাদনও কমে আসছে। এক সময় দেশীয় গ্যাস ফিল্ডগুলো থেকে দৈনিক ২৮০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ পাওয়া যেতে। মজুদ কমে যাওয়ায় উৎপাদন কমে যাচ্ছে। উৎপাদন কমতে কমতে ২০০০ মিলিয়ন ঘনফুটে নেমে এসেছে। ৫ থেকে ৬ আগস্ট ২৪ ঘণ্টায় দেশীয় গ্যাস ফিল্ডগুলো থেকে মাত্র ১৮৬৩ মিলিয়ন গ্যাস পাওয়া গেছে। এরমধ্যে রাষ্ট্রীয় ৩টি কোম্পানির (বাপেক্স, এসজিএফসিএল, বিজিএফসিএল) ৬৬টি কূপ থেকে এসেছে ৭৭১ মিলিয়ন ঘনফুট, আর বহুজাতিক কোম্পানির মালিকানাধীন ৬৯টি কূপ থেকে পাওয়া গেছে ১০৯২ মিলিয়ন ঘনফুট।

মজুদ বিবেচনায় সবচেয়ে বড় গ্যাস ফিল্ড বিবিয়ানার উৎপাদন প্রতিনিয়ত কমে যাচ্ছে। ২০২০ সালে ১৫ নভেম্বর গ্যাস উত্তোলন করা হয় ১৩৩৪.৯ মিলিয়ন ঘনফুট। পরের বছর ২০২১ সালের ১৫ নভেম্বর উৎপাদন নেমে আসে ১২৪৬.৮ মিলিয়নে। আর ৬ আগস্ট পাওয়া গেছে ৮৯৯ মিলিয়ন ঘনফুট। দেশীয় গ্যাস ফিল্ডের উৎপাদন হ্রাসের জন্য অনুসন্ধানে স্থবিরতাকে দায়ী করে আসছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।