আগামী ২৪ ঘণ্টা বা তার চেয়ে একটু বেশি সময়ের মধ্যে ড. ইউনুসের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যর একটি অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন করা হবে বলে জানিয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।
বুধবার (০৭ আগষ্ট) রাত ১২ টা ১৫ মিনিটে বঙ্গভবনে ৫ ঘন্টার রুদ্ধতার বৈঠক শেষে তিনি এই কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, তিন বাহিনীর সঙ্গে আমাদের একটি ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। ছাত্র ও নাগরিকের কাছ থেকে যে অন্তবর্তীকালীন সরকার ঘোষণা করা হবে, সেটাই চুড়ান্ত করা হবে- আজকের মিটিং থেকে আমরা এই নিশ্চয়তা নিয়ে এসেছি। আমরা প্রথমিকভাবে অন্তর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে সর্বজন গ্রহনযোগ্য নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব ডক্টর মো. ইউনুসকে প্রস্তাব করেছিলাম। মহামান্য রাষ্ট্রপতি আমাদের প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছেন, ডক্টর মো. ইউনুসকে প্রধান করে অন্তর্তীকালীন সরকার খুব দ্রুত ঘোষণা করবেন।’
এসময় সমন্বয়কদের পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একটি তালিকাও দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
এতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান করে এই সরকার গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুলও এমন তথ্য জানিয়েছেন।
পোশাক শ্রমিকের বকেয়া বেতন-ভাতা বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সকালের মধ্যে পরিশোধ করা হবে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।
চলমান শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ে বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, সাভারের আশুলিয়ায় পোশাক কারখানাগুলোতে যে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে, আজ (বুধবার) রাত কিংবা আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) সকালের মধ্যে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করা হবে। ইতোমধ্যে শ্রম সংক্রান্ত অভিযোগ পর্যালোচনা কমিটি করা হয়েছে, যেখানে যে কেউ শ্রমের বিষয়ে অভিযোগ জানাতে পারবেন।
শ্রমিকদের আন্দোলনে অনুপ্রবেশকারীরা অসন্তোষ ছড়াচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ভাতা অবিলম্বে পরিশোধ করতে করতে। শ্রম সংশ্লিষ্ট না এমন অনেকেই অনুপ্রবেশকারী হিসেবে এই অসন্তোষ ছড়াচ্ছেন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান বিষয়ক উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ৪০ থেকে ৬০টি কারখানা এখন বন্ধ আছে। ১০ থেকে ১৫ ভাগ অর্ডার সাময়িক সময়ের জন্য অন্য জায়গায় চলে গেছে।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আব্দুস সামাদকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) হিসেবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়েছে।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন নিয়োগ-১ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এতে সই করেছেন উপসচিব মো. আলমগীর কবির।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে।
ঢাকা-টরন্টো-ঢাকা রুটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। সপ্তাহে দুটি ফ্লাইটের পরিবর্তে শীতকালীন সূচিতে তা এখন তিনটিতে উন্নীত করা হয়েছে।
বর্তমানে সপ্তাহের প্রতি শনিবার ও মঙ্গলবার একটি করে ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে। আগামী ৩১ অক্টোবর থেকে এই রুটে প্রতি শনিবার, মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার ফ্লাইট পরিচালিত হবে। এরই মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বক ডিষ্ট্রিবিউশন চ্যানেলে বিক্রির জন্য ওই ফ্লাইটের টিকেটসমূহ উম্মুক্ত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারের ফ্লাইটের যাত্রীদের বিশেষ ছাড় দেওয়া হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্স ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার দিয়ে এই রুটের ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে। যাত্রীরা বিমানের ওয়েবসাইট, মোবাইল অ্যাপস, কল সেন্টার ১৩৬৩৬, বিমানের নিজস্ব সব সেলস সেন্টার ও এয়ারলাইন্সের অনুমোদিত ট্রাভেল এজেন্সি থেকে টিকেট কিনতে পারবেন।
২০২২ সালের ২৭ জুলাই ঢাকা-টরন্টো রুটে ফ্লাইট শুরু করে বিমান। লাভজনক এই রুটটিতে যাত্রীদের পক্ষ থেকে অনেক দিন ধরে ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানোর দাবি ছিল। তবে বিমানের বিগত ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ উড়োজাহাজ স্বল্পতা ও পাইলট স্বলতার দোহাই দিয়ে দীর্ঘদিনের দাবি সত্ত্বেও রুটটিতে ফ্লাইট বাড়াতে কোনো কার্যকরি উদ্যোগ নেয়নি। বিমানের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও সাফিকুর রহমান দায়িত্ব নিয়েই লাভজনক এই রুটে ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নিলেন।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালে এক চিকিৎসককে মারধরের ঘটনায় কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচী দেয় চিকিৎসকসহ নার্স,কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তবে বেলা ১২ টার পর প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সাথে এক বৈঠকের প্রেক্ষিতে সীমিত পরিসরে জরুরি বিভাগের সেবা চালুর কথা জানান হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক ডা. মং টিং ঞো। কিন্তু দুপুর ২টা পর্যন্ত কোথাও চিকিৎসকদের অবস্থান দেখা যায়নি। চিকিৎসক-নার্সদের চেয়ারগুলো শূন্য পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১টায় হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে মারধরের শিকার হন ডা. সজীব কাজী নামের এক চিকিৎসক। হামলার শিকার সজীব হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ও সিসিইউতে কর্মরত ছিলেন।
হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, রোগীর মৃত্যুর পর স্বজনরা সিসিইউতে প্রবেশ করে প্রথমে চিকিৎসকের কক্ষে ভাঙচুর চালায়। পরে চিকিৎসক সজীবকে মারধর করতে থাকে। এক পর্যায়ে তাকে টেনে-হেঁচড়ে মারতে মারতে চারতলা থেকে নিচে নামিয়েও মারধর করতে থাকে। এ সময় হাসপাতালে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে অন্য চিকিৎসকরা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে।
এরপরই হামলার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অভিযুক্তদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতারের দাবিতে জরুরি বিভাগসহ কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করে চিকিৎসকরা।
এদিকে চিকিৎসকরা কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা দিয়ে কর্মবিরতি পালন করায় বিপাকে পড়েছেন হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা জনসাধারণ। ২৫০ শয্যার এ হাসপাতালে ডেঙ্গুসহ নানা রোগের প্রায় আট শতাধিক রোগী ভর্তি রয়েছেন।
ডেঙ্গু পজিটিভ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর স্বজন খালেদ হোসেন আবরার জানান, চিকিৎসা বন্ধ থাকায় তারা চরম আতঙ্কিত সময় পার করছেন। নার্সরা কিছুটা সেবা দিলেও চিকিৎসক না আসায় তারা চিন্তিত।
আন্দোলনরত মেডিকেল অফিসাররা জানান, হাসপাতালে তাদের কোন নিরাপত্তা নেই। যেভাবে তাদের সহকর্মীর উপর হামলা হয়েছে, তাতে তার মৃত্যু হতে পারতো। তাই যতক্ষণ তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না হবে ততক্ষণ তারা কর্মবিরতি করবেন।
একইসাথে কর্মবিরতিতে আছে নার্স ও কর্মকর্তা কর্মচারীরাও। শুভজিৎ রুদ্র নামের একজন জানান, তারা কাজ করতে গিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এদিকে দুপুর ১২টা থেকে হাসপাতালে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।
হামলার বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মং টিং ঞো সাংবাদিকদের বলেন, রোগীর অবস্থা ক্রিটিকাল ছিলো। রোগীর এমন পরিস্থিতিতে তাকে কার্যকর সেবা দেয়ার জন্য স্বজনদের দরকার হয়। কিন্তু ওই সময় স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন না। তারপরও আমাদের চিকিৎসক সর্বোচ্চ চেষ্টা করেন, যার কোনো ঘাটতি ছিলোনা। তারপরও চিকিৎসকের ওপর হামলা করা হয়।
তত্ত্বাবধায়ক বলেন, হামলাকারীরা গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলমান রাখার ঘোষণা দিয়েছে চিকিৎসকরা। কিন্তু তারা সেবা না দিলে সমস্যা তো হবেই। আমরা চেষ্টা করছি বিষয়টি সমাধানের। প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের সাথে একটি বৈঠক হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে জরুরি সেবা তারা শুরু করেছেন।
চিকিৎসকদেরটা একটি মানবিক পেশা, মানুষের জীবন মরণের সাথে এর সম্পর্ক রয়েছে, তাই তারা দ্রুত অপরাধীদের গ্রেফতার দাবি করেন। যার প্রেক্ষিতে কাজে যোগ দিবেন চিকিৎসকরা। সেইসাথে চিকিৎসকদের জীবনের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে হবে।
এদিকে চিকিৎসা সেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চিকিৎসাধীন প্রায় ৮শ রোগী বিপাকে পড়েছে। অনেকে পার্শ্ববর্তী বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাচ্ছেন। তবে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা বন্ধ থাকলেও সেবা চালু আছে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে।
দুপুর ২টার পর জেলা সিভিল সার্জন ডা. আসিফ আহমেদ হাওলাদারের কাছে জানতে চাওয়া হয় চিকিৎসা সেবা বন্ধ নিয়ে। তিনি জানান, ইতিমধ্যে দুইজন অপরাধীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জরুরি সেবা চালু করা হয়েছে। দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে।
জরুরি সেবা চালুর কথা বলা হলেও চেম্বারগুলোতে চিকিৎসকদের অবস্থান নেই, এমন বিষয়টি তার নজরে আনা হলে তিনি বলেন, সেবা শুরু হয়েছে, হয়তো চেয়ারে দেখা যাচ্ছেনা।
সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা বন্ধ হলেও, চিকিৎসকরা বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা দিচ্ছেন কেনো এমন প্রশ্নে সিভিল সার্জন বলেন, এই বিষয়টি তার জানা নেই ।