মত বিনিময় সভা, শ্রম আইনে গৃহকর্মীদের অন্তর্ভুক্তি দাবি

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সভায় মূল বক্তা ছিলেন শাহনাজ মুন্নী, রাজীব নূর ও ফারজানা রুপা। ছবি : সংগৃহীত

সভায় মূল বক্তা ছিলেন শাহনাজ মুন্নী, রাজীব নূর ও ফারজানা রুপা। ছবি : সংগৃহীত

শ্রমিক হিসেবে শ্রম আইনে গৃহকর্মীদের অন্তর্ভুক্তি দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্টজন। তারা বলেন, আমাদের জীবন সহজ ও সুন্দর করতে গৃহশ্রমিকরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। কিন্তু, অনেক ক্ষেত্রেই তাদের যোগ্য মজুরীসহ মানবিক অধিকার আদায় হয় না। উপরন্তু, তাদের ওপর চলে অমানবিক নির্যাতন।

নীতিমালা ২০১৫-কে আইনে রূপান্তরিত করে এর কার্যকর বাস্তবায়নেরও জোর দাবী জানান বক্তারা। আর এজন্য গণমাধ্যমে অধিক প্রচারনার আহ্বানও জানান তারা।

বিজ্ঞাপন

আজ সোমবার রাজধানীর মিরপুরে ইউসেপ বাংলাদেশ-এর কনফারেন্স কক্ষে অনুষ্ঠিত ‘গৃহকর্মীদের অধিকার নিশ্চিতকরণে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব দাবি জানান। গৃহকর্মীদের জীবন দক্ষতা ও কারিগরী দক্ষতা বৃদ্ধিতে পরিচালিত ‘সুনীতি’ প্রকল্পের আওতায় ‘সময় এখন, গৃহকর্ম ও গৃহকর্মীর সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির, শ্রমিক হিসেবে শ্রম আইনে অন্তভুক্তির’ প্রতিপাদ্য করে দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (ডিএসকে) ও ইউসেপ-এর যৌথ উদ্যোগে এ সভা আয়োজিত হয়।

সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন ইউসেপ বাংলাদেশ প্রোগ্রাম এন্ড ইনোভেশনস পরিচালক মো: আব্দুল মান্নান। সঞ্চালনা ও সভার উদ্দেশ্য উপস্থাপন করেন ডিএসকে যুগ্ম পরিচালক (প্রকল্প) ফজিলা খানম এবং সভার সমাপনী বক্তব্য রাখেন ইউসেপ বাংলাদেশ-এর নির্বাহী পরিচালক ড. মো. আবদুল করিম।

বিজ্ঞাপন

প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন নিউজ টোয়েন্টিফোর টেলিভিশনের প্রধান বার্তা সম্পাদক শাহনাজ মুন্নী, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের স্পেশাল এ্যসাইনমেন্ট এডিটর রাজীব নূর, একাত্তর টেলিভিশনের ফারজানা রুপা এবং রেডিও স্বাধীনের হেড অব প্রোগ্রাম শাকিল আহমেদ।

সভায় আরও আলোচনা করেন সারাবাংলা ডট কমের প্রধান বার্তা সম্পাদক রহমান মুস্তাফিজ, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সিনিয়র রিপোর্টার মাহফুজা জেসমিন, বাংলাদেশ লেবার জার্নালিস্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, মোহাম্মদপুরের গৃহকর্মী কুলসুম, মাহফুজা আক্তার প্রমূখ।

প্রকল্প এলাকায় পরিচালিত সমিক্ষার উপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডিএসকের এ্যাডভোকেসি অফিসার রাজশ্রী গায়েন।

তিনি বলেন, ২০২২ সাল পর্যন্ত করা সমিক্ষায় দেখা যায় অধিকাংশ গৃহশ্রমিক অশিক্ষিত। তারা ১৬ হাজার গৃহকর্মী নিয়ে কাজ করেন।
ড. মো. আবদুল করিম বলেন, একদিনে গৃহশ্রমিকের চাহিদা শেষ হবে না। তারা আমাদের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই তাদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব কর্তব্য পালন করতে হবে। তাদের মর্যাদা দিতে পরিবার থেকে শেখাতে হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

শাহনাজ মুন্নী বলেন, গৃহকর্মকে পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। গৃহকর্মীদের প্রতি মানবিক আচরণ ও সংবেদনশীল হওয়ার জন জনমত তৈরীতে গণমাধ্যম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে পারে বলে তিনি উল্লেখ্য করেন।

রাজীব নূর গণমাধ্যমকে অধিক যুক্ত করতে সংশ্লিষ্টদের সাংবাদিকদের ফেলোশিপ প্রদান, সম্পাদকদের সঙ্গে মতবিনিময় করা, মিডিয়ায় সঙ্গে যৌথ প্রোগ্রাম করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এ ছাড়াও গৃহকর্মীদের সুরক্ষা এবং দাবি আদায়ের ক্ষেত্রে আইন তৈরিতে সহায়ক পরিবেশ তৈরির জন্য দেশব্যাপী সাংগঠনিক ভিত্তি গড়ে তোলার ওপর জোর দেন। তিনি এ বিষয়ে খবর প্রকাশের জন্য সাংবাদিকদের বার বার নক করার জন্য এনজিওগুলোকে পরামর্শ দান করেন।

ফারজানা রুপা গৃহকর্মী নির্যাতন বন্ধে নির্যাতনকারীদের যথাযথ শাস্তির আওতায় আনার ওপর গুরুত্বারোপ করে গৃহকর্মীদের ঘণ্টাভিত্তিক কাজ এবং সে অনুসারে মজুরী প্রদান নিশ্চিত করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণের পরামর্শ দেন।

অক্সফাম এর প্রতিনিধি ও প্রকল্প সমন্বয়কারী তারেক আজিজ এবং অক্সফাম কানাডা-এর প্রতিনিধি রীচা শর্মা সাংবাদিকদের গৃহকর্মী অধিকার আদায়ে কাজ করার সকল সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

বক্তরা গৃহকর্মীদের নিবন্ধন, ঘণ্টাভিত্তিক কাজ ও ঘণ্টাভিত্তিক মজুরি নিশ্চিতকরণ, গৃহকর্মী ও নিয়োগকর্তা উভয়ের নিরাপত্তার স্বার্থে নিয়োগপত্র নিশ্চিতকরণ, গৃহকর্মীদের সংগঠিত করা, গৃহকর্মী হত্যা/নির্যাতনের খবর প্রচার ও বিচার প্রক্রিয়াকে রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত রাখা, গৃহকর্মীর অধিকার বিষয়ে প্রচারণায় গণমাধ্যমের বলিষ্ঠ ভূমিকা ও তাদের আইনী অধিকার নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ প্রদান করেন।