স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেছেন, শুধু সিটি কর্পোরেশন বা সরকারি সংস্থা দিয়ে এডিস মশাকে নির্মূল করা কঠিন কারণ এই মশাকে এলিট মশা বলা হয় যা পরিষ্কার পানিতে জন্ম নেয়। এডিস মশা নর্দমা কিংবা নালা বা খালবিল ও বনজঙ্গলে জন্ম নেয় না। এডিস মশার বংশবৃদ্ধি বাসা বাড়ি, ছাদবাগান, প্লাস্টিকের পরিত্যক্ত জিনিস, ডাবের খোসা, পরিত্যক্ত টায়ারে জমাটবদ্ধ পানি থেকে হতে পারে। এমনকি বাসার বাথরুমের কমোড দীর্ঘদিন ফ্লাশ না করলে তাও এডিস মশা জন্মানোর উপযুক্ত জায়গা। তাই যখনই থেমে থেমে বৃষ্টি হয় এবং তারপরে গরম পড়ে এ ধরনের আবহাওয়ায় আমাদের নাগরিকদের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশগ্রহণ করা জরুরি। আমাদের সচেতনতাই ডেঙ্গু রোগের প্রাদুর্ভাব হ্রাস করতে সহায়তা করবে।
রোববার (১ অক্টোবর) বিকেলে স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে সারাদেশে ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত অন্যান্য রোগ প্রতিরোধে সিটি কর্পোরেশন ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট অংশীজনের কার্যক্রম পর্যালোচনার লক্ষ্যে "ডেঙ্গু সহ মশাবাহিত অন্যান্য রোগ প্রতিরোধ বিষয়ক জাতীয় কমিটি" এর সভায় সভাপতিত্বকালে তিনি এসবকথা বলেন। এতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়ের মোঃ আতিকুল ইসলামসহ জাতীয় কমিটির অন্যান্য সদস্যগণ।
আমাদের নাগরিকদের সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, শুধু ব্যক্তির সচেতন হলে হবে না, সমাজের সবাইকে সচেতন হতে হবে। দশজন সচেতন হলেও একজন অসচেতন থাকলে সবার ডেঙ্গুর ভয়াবহতার মোকাবেলা করতে হতে পারে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতায় নাগরিক আন্দোলন জরুরি বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সভায় তিনি জাতীয় কমিটির সদস্যদের ডেঙ্গু প্রতিরোধে মাঠ পর্যায়ের অভিজ্ঞতা শোনেন। সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরে নিজ উদ্যোগে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান জোরদার করার উপর সভায় গুরুত্ব আরোপ করা হয়। এতে জানানো হয়, কেউ পূর্বে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হলে তাকে সাথে সাথে হাসপাতালে ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসার আওতায় আনতে হবে। দ্বিতীয়বার ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর অবস্থা খুব দ্রুত অবনতি হয় জানিয়ে এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে এবং এর চিকিৎসার বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে মিডিয়ার ভূমিকার উপর সভায় গুরুত্ব আরোপ করা হয়। মসজিদ মন্দিরের দৈনন্দিন ও সাপ্তাহিক প্রার্থনার পরে ইমাম বা ধর্মীয় নেতাদের ডেঙ্গু প্রতিরোধে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার উপর আলোচনা করার উপর সভায় গুরুত্ব দেওয়া হয়। এছাড়া মোবাইলে বিটিসিএল এর মাধ্যমে সচেতনতামূলক মেসেজ পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সিটি কর্পোরেশনের মশক নিধন কার্যক্রমে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে এতে কোনোরকম গাফিলতি সহ্য করা হবে না বলেও উল্লেখ করা হয়।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক ডেঙ্গুর মতো রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়বে উল্লেখ করে বলেন, এ পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে সামাজিক আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই।