দেশে প্রথমবারের মতো শুরু হলো ‘জেসিআই স্মার্ট বাংলাদেশ সামিট ও এক্সপো’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পর্দা উঠলো দেশে প্রথমবারের মতো জেসিআই বাংলাদেশ আয়োজিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ সামিট ও এক্সপো’র। দুই দিনব্যাপী এই সামিট ও এক্সপো শুরু হলো রাজধানীর কুড়িলের ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায়। শুক্রবার সকালে আয়োজনটির উদ্বোধন করা হয়েছে।

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অগ্রযাত্রা ও স্মার্ট যুগের অপার সম্ভাবনাকে সুদৃঢ় করার প্রচেষ্টায় এগিয়ে এসেছে বিশ্বব্যাপী তরুণদের নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জেসিআই বাংলাদেশের আয়োজনে ও এসপায়ার টু ইনোভেট-এটুআই-এর সহযোগিতায় আজ (শুক্রবার) ও আগামীকাল (শনিবার) চলবে এই ‘জেসিআই স্মার্ট বাংলাদেশ সামিট, এক্সপো ও সিওয়াইই অ্যাওয়ার্ড ২০২৩’ আয়োজন।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টায় রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে শুরু হয় দর্শনার্থীদের প্রবেশ। তারপর উদ্বোধন করা হয় সামিট ও এক্সপোর।

প্রধান অতিথি থেকে ‘জেসিআই স্মার্ট বাংলাদেশ সামিট ও এক্সপো’ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান (সালমান এফ রহমান)। বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ইভেন্টের পরিচালক ও জেসিআই বাংলাদেশের ডেপুটি ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট ইমরান কাদির বলেন, দেশে ২২ লাখ তরুণ চাকরির বাজারে প্রবেশ করার জন্য তৈরি হচ্ছে। দেশে তরুণদের সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম হিসেবে জেসিআই সেই তরুণ জনগোষ্ঠীকে নিয়েই কাজ করছে। ২০৪১ সালের মধ্যে যে ম্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে সরকার এগিয়ে যাচ্ছে, সেখানে জেসিআই সমানভাবে সহযোগিতা করতে চায়।

স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি পিলার বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এটুআই প্রকল্পের পলিসি অ্যাডভাইজার জনাব আনীর চৌধুরী। তিনি তার উপস্থাপনায় সরকার ডিজিটালাইজেশন থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে পদার্পনের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরেন। তিনি জানান, যেখানে ২০০৮ সালে সরকারের ডিজিটাল সেবা ছিল প্রায় শূন্য। সেখান থেকে ২০২৩ সালে এসে সেখানে ২ হাজারের বেশি সেবা দেওয়া হচ্ছে ডিজিটালি। ২০২৩ সালে এসে ইন্টারনেট পেনিট্রেশনের হার খুবই উচ্চমাত্রায়।

আনীর চৌধুরী তার উপস্থাপনায় ডিজিটাল বাংলাদেশের চারটি মূল বিষয়কে তুলে ধরেন। স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট গভর্নমেন্ট, স্মার্ট সোসাইটি ও স্মার্ট ইকোনমি। তিনি দেশের বিভিন্ন উদ্যোগের উদাহরণ দিয়ে দেখান কীভাবে এগুলো ব্যবহার করে বিভিন্ন সমস্যা সমাধান দিচ্ছেন তরুণরা। আর সেগুলো পাওয়া যাচ্ছে সবই হাতের মুঠোয়। তিনি বলেন, ভবিষ্যতের চাকরির বাজার পরিবর্তন হচ্ছে। সেটির জন্য নতুন নতুন দক্ষতা তৈরির ওপর গুরুত্ব দেন তিনি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান জেসিআইয়ের স্মার্ট বাংলাদেশ নিয়ে এমন আয়োজন করায় ধন্যবাদ জানান। সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা জেসিআইয়ের তরুণদের একেবারে ইউনিয়ন পর্যায় থেকে উদ্যোক্তা তুলে আনার আয়োজন করার আহ্বান জানান তিনি।

সালমান এফ রহমান বলেন, প্রযুক্তি খুবই দ্রুত সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। সেটার সঙ্গে খাপ খাওয়ানোটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এখন। এখন যেমন বিশ্বে একটা বড় চ্যালেঞ্জ আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স। এটি এখন এমন সব কাজ করছে যা বিশ্বকে একটা চ্যালেঞ্জ দিচ্ছে। এসব নিয়েই আমাদের কাজ করতে হবে। টেকনোলজির আরেকটা বড় ধরনের অগ্রগতি হবে কোয়ান্টাম কম্পিউটিং। যেটা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন কাজ করছে। এখন বাংলাদেশ সামনের দিনের প্রযুক্তি নিয়ে কী, কীভাবে কাজ করতে পারে সেটা নিয়ে সরকার একটা নীতিমালা করে দিতে পারে। বেসরকারি বিভিন্ন খাতকে এসব নিয়ে কাজ করতে সুযোগ করে দিতে পারে।

তিনি বলেন, বেসিস প্রেসিডেন্ট বাজেটে সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে যে ভ্যাট-ট্যাক্স আরোপের বিষয়টি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন সেটাতে আমিও একমত। আসলে বাজেটে যেটা হয়েছে সেটা ভুল বোঝাবুঝি। সেটা তারা হয়তো বোঝেননি। আমরা সেটা চূড়ান্ত বাজেটে থাকবে না। হয়তো সেটা শতভাগ করতে পারব না। তবে আমি এতটুকু বলতে পারি, বাজেটে যেসব সমস্যার কথা উঠেছে সেগুলো আমরা সলভ করব।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ২০২২ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশ ভিশন ঘোষণা করার পর স্মার্ট বাংলাদেশ নিয়ে প্রথম সামিট করছে জেসিআই।

তিনি বলেন, ব্যবসা করবেন শুধু মুনাফার জন্য নয়, সমস্যার সমাধান নিতে আসতে হবে। এটি করতে পারলে করবেন দেখবেন সারা বিশ্বে আপনি মর্যাদা পাবেন। আগামী ১০ বছরে বাংলাদেশ এমন দশটা স্টার্টআপ পাবে যারা কয়েক মিলিয়ন ডলারের স্টার্টআপ হবে। মিলিয়ন ডলারের স্টার্টআপ হতে বিকাশের লেগেছে ১২ বছর, নগদের ৩ বছর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ করতে হলে মেধাবী সাহসী উদ্যোক্তাদের এগিয়ে এসে সমস্যার সমাধান করতে হবে। তবেই দেশ থেকে নেতৃত্বদানকারী স্টার্টআপ উঠে আসবে।

এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট জসিম উদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রী যখন ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা দেন সেটা নিয়ে অনেকেই হাসাহাসি করেছে। কিন্তু এখন এসে কেউ আর সেটি নিয়ে কোনো কথা বলতে চান না। কারণ, এখনকার ট্রান্সফরমেশন দেখে এটা আমরা নির্দিধায় বলতে পারি স্মার্ট বাংলাদেশ এখন সময়ের ব্যাপার।

এসপায়ার টু ইনোভেট-এটুআই এর প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, এটুআই সবসময় সরকার ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। যখন জেসিআই এমন একটি সুযোগ তৈরি করল স্মার্ট বাংলাদেশকে জানানোর জন্য সামিটের সেখানে এটুআই খুব আগ্রহী হয়ে অংশ নেয়ার কথা জানায়। স্মার্ট বাংলাতেশ গড়ে তুলতে হলে বহুমুখী উদ্যোক্তা গড়ে তুলতে হবে। এখনকার উদ্যোক্তাদের জন্য কোনো জিনিসে ভয় পাওয়া যাবে না। তবেই লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে।

জেসিআই বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সেক্রেটারি জেনারেল নিয়াজ মোর্শেদ এলিট বলেন, জেসিআইয়ের জুনিয়ার চেম্বারের তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আমরা সব অসম্ভবকে সম্ভব করতে চাই। ইয়াং উদ্যোক্তাদের নিয়ে কাজ করছি। তাদের কীভাবে বিনিয়োগ দেওয়া যেতে পারে সে বিষয় নিয়ে আমরা কাজ করছি। সবাইকে এখন বিষয়টিতে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

এছাড়া বক্তব্য দেন, বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ, জেসিআই বাংলাদেশের ২০২৩ এর ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হক ভূঁইয়া , বিজিএমইএ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শহিদুল্লাহ আজীম, এসিআই লজিস্টিকস লিমিটেডের (স্বপ্ন) বিজনেস ডিরেক্টর সোহেল তানভীর খান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয় জেসিআই বাংলাদেশের চেয়ারপারসন ও স্মার্ট বাংলাদেশ সামিট অ্যান্ড ফাউন্ডেশন কমিটির আহ্বায়ক তাহসিন আজিম সেজানের ধন্যবাদ বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে। তিনি জানান, ‘এক্সপো আয়োজনের মাধ্যমে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক নামী ব্র্যান্ডগুলো তাদের ভবিষ্যত স্মার্টসল্যুশন প্রদর্শন করার সুযোগ পাচ্ছে। দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে মোট ১১টি বিশেষ অধিবেশন বা সেশন থাকছে, উক্ত সেশনগুলোতে দেশ এবং দেশের বাইরের বিশেষজ্ঞ ও বক্তারা উপস্থিত থাকবেন।’

জেসিআই স্মার্ট বাংলাদেশ সামিট ও এক্সপো’র প্রধান লক্ষ্য বিশেষজ্ঞ আলোচনার মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশের বিভিন্ন বিষয় সাধারণ মানুষের মাঝে তুলে ধরা। আমন্ত্রিত অতিথি ও প্যানেলিস্টরা তাদের অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও মত বিনিময়ের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ এর সম্ভাবনাময় প্রতিটি দিক তুলে ধরবেন। এছাড়া স্মার্ট এক্সপোতে রয়েছে দর্শনার্থীদের জন্য চমকপ্রদ সকল প্রযুক্তির প্রদর্শন। ভবিষ্যতের স্মার্ট বাংলাদেশ কেমন হবে সেসবের ফিউচারিসস্টিকস আয়োজন।

আয়োজনে সহযোগিতায় রয়েছে তথ্য প্রযুক্তি সংগঠন বেসিস, পোশাক শিল্পের সংগঠন বিজিএমইএ, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, ডেইলি স্টার, এটুআই, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং ইউএনডিপি।

স্মার্ট বাংলাদেশ সামিট, এক্সপো ও সিওয়াইই অ্যাওয়ার্ড-২০২৩ আয়োজনের টাইটেল স্পন্সর স্বপ্ন, পাওয়ার্ড বাই হুয়াওয়ে এবং প্লাটিনাম স্পন্সর বন্ডস্টাইন। গোল্ড স্পন্সর হিসেবে রয়েছে ইশো, লিঙ্কথ্রি, ওয়েজলি, জিও, মাস্টারকার্ড, এমটিবি, ওয়ালটন, সানাফি কনস্ট্রাকশন, সিনগুলারিটি। অনুষ্ঠানে এন্টারটেইনমেন্ট পার্টনার চরকি, টেলিকম পার্টনার গ্রামীণফোন, ইউনিভার্সিটি পার্টনার উত্তরা ইউনিভার্সিটি, রিসার্চ পার্টনার ক্রিয়েভিশন, সেশন পার্টনার ফাইবার অ্যাট হোম, পিকাবু, ইনোভেশন ইন্টারন্যাশনাল, ফুড পার্টনার প্রিমিয়ার, পোলার। ইভেন্ট পার্টনার হিসেবে থাকছে বাক্কো, ই-ক্যাব ও আইএসপিএবি।

জেসিআই স্মার্ট বাংলাদেশ সামিট, এক্সপো ও সিওয়াইই অ্যাওয়ার্ড ২০২৩ এর সকল আপডেট জানাতে একটি ওয়েবসাইট উন্মোচন হয়েছে। সাইটটির ঠিকানা www.jcisummit.com

   

রংপুরে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
রংপুরে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু

রংপুরে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরের কাউনিয়ায় বৈদ্যুতিক শক খেয়ে সনিয়া বেগম (২০) নামে এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। 

মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) সকালে উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের গোপিডাঙ্গা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে

নিহত সনিয়া ওই গ্রামের রিপন মিয়ার স্ত্রী এবং পাবনা সদরের চর বাঙ্গাবাড়িয়া গ্রামের আমিরুল ইসলামের মেয়ে

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তিন বছর আগে সনিয়া বেগমের সাথে রিপনের বিয়ে হয়। সোমবার বিকেল ৩টার দিকে রিপনকে সন্তান নিয়ে বাজারে যেতে বলেন সনিয়া। রিপন সন্তানকে নিয়ে বাজারে গেলে সনিয়া নিজ শয়ন ঘরে ঘুমিয়ে পড়েন। দীর্ঘক্ষণ পরেও তার কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীরা ডাকাডাকি করেন। 

একপর্যায়ে দরজা খুলে বিছানার চাদর ও বালিশে আগুনের ধোঁয়া এবং বিদ্যুতের ছেঁড়া তারের পাশে খাটের ওপর সনিয়াকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন তারা। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে পুলিশ শ্বশুরবাড়ি থেকে সনিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে

কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোন্তাছের বিল্লাহ বলেন, ‘সনিয়া নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ওই নারীর বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করেছেন।’

;

কারাভোগ শেষে মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরল ২৯ বাংলাদেশি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪. কম কক্সবাজার 
কারাভোগ শেষে মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরল ২৯ বাংলাদেশি

কারাভোগ শেষে মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরল ২৯ বাংলাদেশি

  • Font increase
  • Font Decrease

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির মধ্যে পতাকা বৈঠক শেষে ২৯ জন বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরেছেন। সেখানে তারা বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেছেন।

মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে বিজিবি’র টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়ন দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

দেশে ফেরা ২৯ জনের মধ্যে কক্সবাজারের জেলার মহেশখালী উপজেলার বাসিন্দা ১৩ জন, ৩ জন উখিয়ার ও ৭ জনের বাড়ি টেকনাফ উপজেলায়। এছাড়া বান্দরবান সদর উপজেলার ৩ জন এবং রাঙ্গামাটির কাউখালী উপজেলার ৩ জন দেশে ফিরেছেন।

বিজিবি-২ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘সকাল থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুতে বিজিবি ও বিজিপি’র মধ্যে ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সীমান্ত ব্যবস্থাপনাসহ নানা বিষয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বিজিবি এবং মিয়ানমারে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের যৌথ উদ্যোগে যথাযথ কূটনৈতিক প্রক্রিয়া শেষে দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর ২৯ জন বাংলাদেশিকে ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে। স্বজনের কাছে তাদের পৌঁছে দিতে টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’ 

;

লিবিয়ায় আটকে পড়া বাংলাদেশিদের আর্জি: ‘আমরা জানটা ভিক্ষা চাচ্ছি’



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘আমরা নয় প্রবাসী বর্তমানে লিবিয়াতে আছি। দালাল চক্রের ফাঁদে পড়ে আমরা এখানে এসেছি। কিন্তু এখানে কোনো কাজ নেই। ফলে আমরা খুব অভাব আর নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমাদের দেওয়ার মতো এখন আর কিছু নেই। আমরা তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে জানটা ভিক্ষা চাচ্ছি। যেভাবে হোক আমাদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়া হোক।’

দালালের মাধ্যমে ইউরোপে যেতে গিয়ে লিবিয়ায় আটকে পড়াদের একজন চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার কাথরিয়া ইউনিয়নের মোহাম্মদ করিম তাঁর পরিবারের কাছে পাঠানো এক ভিডিও বার্তায় এই আর্জি জানিয়েছেন। ২ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের ভিডিওতে করিমের সঙ্গে লিবিয়ায় আটকে পড়া আরও আটজনকেও দেখা যায়। সেই দলের মাঝখানে বসে করিম জানান, তাদের দুঃসহ অভিজ্ঞতার কথা। করিমের সেই ভিডিওবার্তা পেয়ে চোখ ভিজে যাচ্ছে নয় প্রবাসীর স্বজনদের। তারা ভিডিওটি নিয়ে প্রশাসনের কাছে দৌঁড়াচ্ছেন ভাই কিংবা ছেলেকে নিজের কাছে ফিরিয়ে আনার আবেদন নিয়ে।

করিমের সঙ্গে আটকে পড়া বাকি আটজনও বাঁশখালীর বাসিন্দা। তারা হলেন গন্ডামারা ইউনিয়নের রুকনুল ইসলাম, মো. মোরশেদুল আলম, মোহাম্মদ কাউছার মিয়া, আজগর হোসেন, গিয়াস উদ্দিন, মোহাম্মদ আশেক ও তার ভাই ইব্রাহিম খলিল এবং বাঁশখালী পৌরসভার উত্তর জলদীর আইয়ুব আলী।

লিবিয়ায় আটকে পড়া নয় যুবকদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক লাখ টাকার বিনিময়ে ইউরোপ নেওয়ার কথা বলে ৮ থেকে ১ বছর আগে দালালেরা তাদের নিয়ে যান। কিন্তু ইউরোপ না নিয়ে তাদের লিবিয়ার বেনগাজিতে নিয়ে আটকে রাখা হয়। সেখানে গিয়ে তাদের কোনো কাজ দেয়া হয়নি। জঙ্গলে আটকে রেখে উল্টো আরও টাকার জন্য নির্যাতন করা হয়। সেসব শোনার পর অসহায় পরিবারগুলো জমি বিক্রি আর ধারদেনা করে টাকা পাঠিয়ে দালালের হাতে তুলে দেয়। নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকলে গত ১৭ সেপ্টেম্বর পরিবারের পক্ষ থেকে ওই ৯ জনকে দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রশাসনিক সহযোগিতা ও সরকারি হস্তক্ষেপ চেয়ে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত আবেদন করা হয়। এরপর ইউএনও উদ্যোগ নিলে লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাস ওই নয় প্রবাসীকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে আসে।

ছেলের ভিডিও পাওয়ার পর ঘুমাতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন লিবিয়ায় আটকে পড়া মোহাম্মদ করিমের বাবা আবু আহমদ। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলেসহ নয়জন কি যে কষ্টে আছে তা ভিডিওবার্তা দেখার পর অনুভব করতে পারছি। তাদের কষ্টের কথা শোনার পর থেকে ঘুম আর খাওয়া-দাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে আমাদের। এত কষ্ট করে, জমি বিক্রি করে ছেলেকে বিদেশ পাঠালাম এত কষ্ট পাওয়ার জন্য? আমি সরকারের কাছে শুধু একটাই আবেদন করছি-আমার ছেলেসহ সবাইকে একটু দয়া করে মা-বাবার বুকে ফিরিয়ে দিন।’

লিবিয়ায় আটকে পড়া দুই ভাই মোহাম্মদ আশেক ও ইব্রাহিম খলিলের মা সুনিয়া বেগম। স্বামী অলি আহমদ মারা গেছেন আগেই। এখন দুই ছেলের কষ্টের কথা শুনে শয্যাশায়ী বৃদ্ধা সুনিয়া। ছেলেদের কথা জিজ্ঞাসা করতেই কান্নায় গলা বুজে আসে সুনিয়ার। অস্ফুট স্বরে বলতে থাকেন, ‘আমার দুই ছেলেকে দেখে মরতে চাই। আমার আর কিচ্ছু চাওয়ার নেই।’ 

ভিডিও বার্তা দেখার পর গিয়াস উদ্দিনের বাবা আবদুল মজিদের অবস্থাও একই। অসহায় এই বাবা শুধু বললেন, ‘যদি টাকা থাকত, আমি নিজেই ছেলেকে নিয়ে আসতে লিবিয়া উড়ে যেতাম। কিন্তু আমার তো অত টাকা নেই।’

পুরো ভিডিওতেই মোহাম্মদ করিম একাই কথা বলেছেন। তাঁর দুই পাশে বাকি ৮জন দুঃখমাখা চেহেরায় নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

করিম এক নাগাড়ে তুলে ধরেন নির্যাতনের চিত্র, তুলে ধরেন এখন কেমন আছেন তা-ও। বলেন, ‘আমাদের মা বাবারা খুব অসহায় হয়ে পড়েছে। আমাদের যেসব জমি ছিল, সব বিক্রির পরেও আমরা এখান থেকে যেতে পারছি না। আমাদের দুবার আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। একেকজন থেকে ১০-১৫ লাখ টাকা করে আদায় করেছে দালালেরা। এখন আমাদের দেওয়ার মতোও আর কিছু নেই।’

আটকে পড়া লিবিয়ারা প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পাশাপাশি সাহায্য চান স্থানীয় সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান। আর বর্তমানে তাঁদের নিরাপদ স্থানে রাখার ব্যবস্থা করার জন্য ইউএনওর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

আটকে পড়া নয় বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে লিবিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে আলাপ করেছেন বলে জানিয়েছেন বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেসমিন আক্তার। তিনি বলেন, দূতাবাসকে নয় বাংলাদেশী দালালের হাতে আটক থাকার বিষয়টি জানাই। এরপর দূতাবাসের উদ্যোগে তাঁদের দালালদের হাত থেকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে রাখা হয়েছে। কিন্তু তাঁদের ভিসা-পাসপোর্ট কিছু না থাকায় এখন কীভাবে তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনা যায় সেই বিষয়ে আলোচনা চলছে। পরিবারের কাছে পাঠানো ভিডিওবার্তাটি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাব।’

;

বগুড়ায় ইন্টার্ন নার্সদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বগুড়া
বগুড়ায় ইন্টার্ন নার্সদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি

বগুড়ায় ইন্টার্ন নার্সদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি

  • Font increase
  • Font Decrease

ইন্টার্ন ভাতার দাবিতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি ঘোষণা করেছে ইন্টার্ন নার্স ও ডিপ্লোমা ইন্টার্ন মিডওয়াইফ। বগুড়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে কর্মরত শতাধিক ইন্টার্ন নার্স ও ডিপ্লোমা ইন্টার্ন মিডওয়াইফের মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে এ ঘোষণা দেয়া হয়।

মঙ্গলবার (৩ অক্টবর) সকাল ১০ টায় ব্যানার ও পোস্টার হাতে হাসপাতাল চত্বরে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে এ ঘোষণা দেন তারা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিধিমালা থাকলেও কোনো ইন্টার্ন স্যালারি দেওয়া হচ্ছে না। এছাড়া  ইন্টার্ন নার্স ও ডিপ্লোমা ইন্টার্ন মিডওয়াইফদের কোনো হোস্টেলের সুবিধাও নেই। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও বাড়ি ভাড়াসহ প্রত্যেক ইন্টার্নের ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। পড়াশোনা শেষ করে ইন্টার্নশীপ করা অবস্থায় বাড়ি থেকে টাকা এনে সেই খরচ চালাতে হচ্ছে। ইন্টার্ন স্যালারি বিষয়ে কোনো সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত সকল ইন্টার্ন নার্স ও ইন্টার্ন মিডওয়াইফ অনির্দিষ্ট কালের জন্য কর্মবিরতি পালন করবেন।

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বাংলাদেশ ডিপ্লোমা ইন্টার্ন নার্সেস এসোসিয়েশন (বিডিআইএনএ) বগুড়ার সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান সরকার বলেন, ‘সরকারি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তিন বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করে তারা বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং জেলা ও সদর হাসপাতালে ইন্টার্ন নার্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু তারা কোনো ইন্টার্ন ভাতা পাচ্ছেন না। লগবুকে ইন্টার্ন স্যালারির উল্লেখ থাকা সত্ত্বেও কোনো ইন্টার্ন স্যালারি দেওয়া হচ্ছে না। অবিলম্বে দাবি মানা না হলে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রতদিন ২ ঘন্টা করে কর্মবিরতি পালন করা হবে।’

এবিষয়ে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. শফিক আমিন বলেন, তার হাসপাতালে যারা প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে কাজ করেন তারা কর্মবিরতি শুরু করলে হাসপাতালের কাজে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। কিন্তু হাসপাতাল চত্বরে অব্যাহতভাবে যেকোনো ধরণের সভা-সমাবেশ বা কর্মসূচি পালন করলে সেবাদান কাজে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। তাদের দাবির বিষয়টি সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের বিবেচনার বিষয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

;