তীব্র দাবদাহে পুড়ছে দেশ। এর মধ্যে দিনে-রাতে লোডশেডিংয়ে মানুষের ভোগান্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে।
রাজধানী খিলক্ষেতের বাসিন্দা রাসেল আহমেদ। সারাদিনের কর্মক্লান্তি শেষে বাসায় ফিরে বিছানায় গা এলিয়ে দিয়েছিলেন। মাত্রই ঘুমে বন্ধ হয়ে আসছিল চোখ। আর তখনই বিদ্যুৎ চলে গেল। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টায় লোডশেডিংয়ে রাতের ঘুম শিকেয় ওঠে তার।
রাজধানীসহ সারাদেশেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। একবার বিদ্যুৎ গেলে আসতে লাগছে কয়েক ঘণ্টা। দিনের মতোই মধ্যরাতেও লোডশেডিংয়ের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে দেশবাসীকে। এতে মানুষের ঘুমে ব্যাঘাত ঘটছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ভোগান্তি হচ্ছে বেশি। অসুস্থ হয়ে পড়ছে তারা। আর রাতের ঘুম না হওয়ায় চাকরিজীবীদের প্রভাব পড়ছে কর্মক্ষেত্রে।
উত্তরার বাসিন্দা তানিয়া রহমান বলেন, দিবাগত রাত ৪টায় বিদ্যুৎ চলে যায়। আমার ঘরে থাকা ৩ বছর বয়সী ছেলে গরমে জেগে উঠে কান্না করতে থাকে। এ সময় হাতপাখা দিয়ে তাকে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করা হয়। তাকে ঘুম পাড়াতে গিয়ে সারারাত আমরা ঘুমাতে পারিনি।
শ্রমজীবীরা বলছেন, গরমে কাজ করা যাচ্ছে না। রাস্তাও লোকজন কম। এতে আয় কমে গেছে। আর রাতে তো ঘুমাতেই পারছি না।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ওয়েবসাইট বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ঢাকার মধ্যে সর্বোচ্চ এক ঘণ্টার সম্ভাব্য লোডশেডিং এবং ঢাকার বাইরে দুই ঘণ্টা লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে। তবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড নিজেদের শিডিউলই প্রতিনিয়ত ভাঙছে। শিডিউলের সঙ্গে লোডশেডিংয়ের তফাত বিস্তর। রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় দিন-রাত মিলিয়ে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকছে না। ঢাকার বাইরের পরিস্থিতি আরও খারাপ। কোনো কোনো জেলা ও গ্রামাঞ্চলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছে না মানুষ।
এদিকে লোডশেডিং থেকে রেহাই পেতে ভাগ্যের ওপর নির্ভর করা ছাড়া আপাতত কোনো সুখবর নেই। প্রকৃতি বৃষ্টি দিলেই কেবল লোডশেডিং কমতে পারে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ আগামী পাঁচ থেকে ছয় দিন অব্যাহত থাকতে পারে। আগামী পাঁচ দিনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দক্ষিণপশ্চিম মৌসুমী বায়ু টেকনাফ উপকূল পর্যন্ত অগ্রসর হতে পারে। এ সময়ের শেষের দিকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে।