সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য ঢাকার বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকার বাতাসের মান শুক্রবার সকালেও ‘অস্বাস্থ্যকর’ অবস্থায় রয়েছে। সকাল সাড়ে ৬টায় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) স্কোর ১১৭ নিয়ে দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকা ১০তম স্থানে আছে। যা সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর ধরা হয়।

আজ বিশ্বের ১০০টি শহরের মধ্যে বায়ুদূষণে শীর্ষে আছে ইরাকের বাগদাদ। শহরটির স্কোর ৪০৮। বাতাসের মান ‘বিপজ্জনক’। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা, স্কোর ১৬৫। তৃতীয় অবস্থানে আছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই, স্কোর ১৫৪।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার দূষিত বাতাসের শহরের তালিকা প্রকাশ করে। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ একিউআই সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বায়ু কতটুকু নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয়।

একিউআই ইনডেক্সে স্কোর ১০১ থেকে ১৫০ হলে তা ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়। ১৫১ থেকে ২০০ স্কোরকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়। স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে তাকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ ধরা হয়। ৩০১ থেকে তার ওপরের স্কোরকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ধরা হয়।

একিউআই ইনডেক্সে স্কোর ৫১ থেকে ১০০ হলে তাকে ‘মধ্যম’ বা ‘গ্রহণযোগ্য’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ‘ভালো’ মানের বায়ুর ক্ষেত্রে স্কোর শূন্য থেকে ৫০ হয়ে থাকে।

ঢাকার জন্য বায়ুদূষণ বড় একটি সমস্যা। এ জন্য তিনটি কারণ চিহ্নিত করা হয়। এগুলো হলো ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণকাজের ধুলা। পরিবেশ অধিদফতর ও বিশ্বব্যাংকের এক যৌথ প্রতিবেদনে এই তিন কারণের কথা বলা হয়েছে।

নভেম্বর, ডিসেম্বর, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি—বছরের এই চার মাস ঢাকার বায়ু বেশি দূষিত থাকে। এর মধ্যে জানুয়ারিতে বায়ুর মান থাকে সবচেয়ে বেশি খারাপ।

সমুদ্রে মৎস্য শিকারে আর লাইসেন্স দেবে না সরকার



তরিকুল ইসলাম সুমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সমুদ্রগামী মৎস্য শিকারে উপযোগী জাহাজ নির্মাণ, আমদানি কিংবা শিকারের জন্য নতুন করে আর লাইসেন্স বা অনুমোদন দেবে না সরকার।

সম্প্রতি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এ-সংক্রান্ত (সামুদ্রিক মৎস্য বিধিমালা ২০২৩) বিধিমালা গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে।

বিধিমালা অনুযায়ী, সমুদ্রে আহরণযোগ্য মৎস্য সম্পদের পরিমাণ নিরুপণ না হওয়া পর্যন্ত নতুন করে আর কোনো নৌযান আসছে না। নতুন করে সমুদ্রে মৎস্য শিকার উপযোগী পরিমাণ নির্ধারণ সাপেক্ষে জাহাজের অনুমতি দেয়া হবে। এ জন্য জরিপ করাতে হবে। জরিপ শেষে প্রয়োজন হলে নতুন জাহাজের অনুমতি দেবে সরকার। তবে, নৌযান ডুবে গেলে বা দুর্ঘটনায় ব্যবহারের অনুপযোগী হলেই শুধু নতুন লাইসেন্স দেয়া হবে।

কাঠের ট্রলারের বিষয়ে বলা হয়েছে, নতুন করে কোনো কাঠের ট্রলারের নকশা, আমদানি করার সুযোগ নেই। তবে কোনো মালিক যদি কাঠের ট্রলারের লাইসেন্স জমা সাপেক্ষ স্টিলের জাহাজ নামাতে পারবেন। বাণিজ্যিক ট্রলার নিষিদ্ধকরণে বলা হয়েছে- বিধিমালা কার্যকরের ৫ বছর অতিবাহিত হলে তা বটম ট্রলিং থেকে মিড ওয়াটার ট্রলিং ট্রলারে রূপান্তর করা যাবে। তবে আগের লাইসেন্সটি জমা দিয়ে নতুন লাইসেন্স নিতে হবে।

চিংড়ি পোনা বা ব্রুড আহরণের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে- চিংড়ি পোনা বা ব্রুড আহরণে বাণিজ্যিক জাহাজকে বটম ট্রলিং করতে হলে জাহাজের বয়স কোনো ক্রমেই ১০ বছরের বেশি হবে না।

অবৈধ সম্পর্কে বলা হয়েছে, সরকারি অনুমতি ছাড়া মৎস্য শিকারে বা জলসীমায় প্রবেশ, সরকারি আইন ও বিধিমালায় উল্লেখিত নিয়মকানুন পরিপালনে ব্যর্থ হলে, একই অপরাধ বা জরিমানা বার বার (তিনবার) হলে সংশ্লিষ্ট নৌযান বাতিল বা অবৈধ হিসেবে গণ্য করা হবে।

আহরিত মৎস্য প্যাকেটজাত করার ক্ষেত্রে প্যাকেটের গায়ে জাহাজের নাম উল্লেখ করে ট্যাগ লাগানো প্যাকেটের ওজন সর্বোচ্চ ১৫ কেজি করা, বাস্কেটে প্যাকেট করা হলে তা বরফ ও মাছ সমানুপাতে করতে হবে। এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২৫ কেজি নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে রফতানিমুখী হলে বায়ারদের চাহিদা অনুযায়ী প্যাকিং করা যাবে বলেও বিধিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।

বিদেশি জাহাজের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠান আমাদের দেশের সমুদ্রসীমায় মৎস্য শিকার করলে সেদেশের প্রতিনিধি বা অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানের অফিস থাকতে হবে। যেখানে প্রয়োজনে যোগাযোগ করা ও মামলা মোকদ্দমার বিষয়টি পরিচালনা করা যাবে। জাহাজটি কখন কোথায় যাচ্ছে বা কি কি মাছ শিকার করছে বা কোন জায়গায় মাছ শিকার করছে তা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরকারি প্রশাসনকে জানাতে হবে।

মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞায় বলা হয়েছে, প্রতিবছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সমুদ্রে মাছ ধরা বা শিকার বন্ধ থকবে। তবে এটি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময় পরিবর্তন হতে পারে। সে সময়ে সকল মাছ ধরা বন্ধ থাকবে। তবে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার পর ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত ধৃত মাছ মজুদ ও সংরক্ষণ করা যাবে। এ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। ইলিশ মাছ ধরা বা জাটকা ধরা নিষেধাজ্ঞার সময়েও সমুদ্রে ইলিশ মাছ ধরা বন্ধ রাখতে হবে। এ সময়ে মাছ ধরার জন্য কোনো জাহাজকে সমুদ্রে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে গবেষণা জাহাজ এ নিষেধাজ্ঞার বাইরে থকবে। নিয়মানুযায়ী সরকার কর্তৃক জাটকা ২৫ সেন্টিমিটার নির্ধারণ করা হয়েছে। যেটি পরিবর্তনযোগ্য।

প্রত্যেক জাহাজকে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, প্রয়োজনীয় (জীবন রক্ষাসহ) যন্ত্রপাতি ও উপকরণ, অনুমতিপত্র, লাইসেন্স, রেডিও, পরিচয়পত্র, জাহাজে সংরক্ষণ করতে হবে। শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। জাহাজের মাস্টার ব্রিজের বাইরে দৃশ্যমান নাম লিখতে হবে। যাতে দূর থেকে বোঝ যায়। এ ছাড়াও, বাংলাদেশের জলসীমায় গ্রেফতার বা আটক প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, জলীমায় অবৈধভাবে কাউকে আটক করা হলে গ্রেফতারকৃতদের বিষয়ে তথ্য বেতার বা ইমেইলে সংশ্লিষ্টদের জানাতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। বিদেশিদের ক্ষেত্রেও আটককৃতদের সকল তথ্য স্থানীয় প্রশাসনকে বিস্তারিত জানাতে হবে। প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করবে।

এ বিষয়ে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খ. মাহবুবুল হক বলেন, সমুদ্র মৎস্য গবেষণা জাহাজ আরভি মিন অনুসন্ধানী এবং গবেষণা ইউনিটকে কাজে লাগিয়ে আমরা গবেষণার কাজ করছি। আমরা চাই পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি সামুদ্রিক মৎস্য আহরণে অন্যান্য দেশের মতো গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে। আমাদের দেশে উপকূলীয় এলাকার অনেক মানুষ রয়েছেন যাদের প্রধান জীবিকা হচ্ছে মৎস্য শিকার। রয়েছে হজার হাজার ইন্ডাস্ট্রিয়াল ও আর্টিসান বোট। এগুলো নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি পরিকল্পিত মৎস্য আহরণ জেলেদের জীবন মান উন্নয়নে সহায়ক হবে সরকারের এ উদ্যোগ।

তিনি আরো বলেন, সামুদ্রিক একান্ত অর্থনৈতিক অঞ্চলে (ইইজেড) মৎস্য জরিপ পরিচালনার মাধ্যমে চিংড়ি, তলদেশীয় এবং ভাসমান প্রজাতির মৎস্যের মজুদ নিরূপণ, আহরণ, মৎস্য মজুদ, সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার জন্য কর্মপরিকল্পনা তৈরির কাজ চলছে। বর্তমানে উপকূলীয় এলাকায় সামুদ্রিক মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ৩৪টি থেকে ৬৫টিতে উন্নীত করা হয়েছে। তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে, কোথায় কোন মাছ পাওয়া যচ্ছে, কী পরিমাণ আসছে সব তথ্য পর্যালোচনা করা হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, অধিকাংশ সামুদ্রিক মৎস্য অগভীর সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকায় আহরণ করা হয়ে থাকে। জাহাজের সক্ষমতা ও যথাযথ ফিশিং প্রযুক্তির অভাবে গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ কার্যক্রম কার্যকরভাবে পরিচালনা করা হয় না। বর্তমানে আমাদের মৎস্য আহরণ উপকূল থেকে মাত্র ৭০ কিলোমিটার দূরত্বে সীমাবদ্ধ। সুনীল অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ অত্যন্ত সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র। বর্তমানে বাংলাদেশের সামুদ্রিক মৎস্য খাতের অবদান ছিল মাত্র ১৫-২০ শতাংশ (০.৬৫৯ -৭০০মিলিয়ন মে. টন মৎস্য) এ কাজে ২৫৫টি বাণিজ্যিক ট্রলার এবং ৬৭ হাজার ৬৬৯টি আর্টিসানাল নৌযান (এর মধ্যে যান্ত্রিক ৩২ হাজার ৮৫৯টি এবং অযান্ত্রিক ৩৪ হাজার ৮১০টি মৎস্য নৌযান) মৎস্য আহরণে ব্যবহৃত হয়। তবে এ মাছের সিংহভাগই আসে আর্টিসানাল থেকে।

সূত্র আরো জানায়, দেশের অধিকাংশ মাছ ধরা ট্রলার চলাচল বা মাছ ধরে ৪০ মিটার গভিরতার মধ্যে। শুধুমাত্র বাণিজ্যিক ফিশিং বোট ৪০-১০০ মিটার পানির গভীরে চলাচল করে। এগুলো সাধারনত বাগদা চিংড়ি এবং ফিন ফিশ আহরণে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রপার ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশে সামুদ্রিক মৎস্য আহরণের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ইলিশ মাছ। বর্তমানে বিশ্বের ৫০-৬০ শতাংশ ইলিশ মাছ বাংলাদেশের উপকূলীয় ও সামুদ্রিক জলরাশিতে, ২০-২৫ শতাংশ মিয়ানমারে, ১৫-২০শতাংশ ভারতে এবং অবশিষ্ট ৫-১০ শতাংশ অন্যান্য দেশে আহরিত হয়। এখনও পর্যন্ত দেশে মৎস্য আহরণ সনাতন কৌশল ব্যবহারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। বিশেষ করে সামুদ্রিক মৎস্য আহরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে পুরনো কৌশল ব্যবহার হতে বের হয়ে আসতে হবে এবং সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যমান মৎস্য আহরণ ক্ষেত্রের বাইরে ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত গভীর একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ গভীর সমুদ্র থেকে বিশালাকার পেলাজিক মৎস্য আহরণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রথমেই নতুন নতুন মৎস্য ক্ষেত্র অনুসন্ধানের লক্ষ্যে বঙ্গোপসাগরে সামুদ্রিক মৎস্যের স্টক/মজুদ নির্ণয়ের জন্য জরিপ সম্পাদন করতে হবে। ২০১৮ সালে আরভি মিন সন্ধানি নামক জাহাজ বঙ্গোপসাগরে একটি মৎস্য জরিপ ও মৎস্য ব্যবস্থাপনা-সংক্রান্ত প্রাথমিক গবেষণা করেছে। তবে সুনীল অর্থনীতির পুরোপুরি সুফল পেতে আরো বেশি পরিমাণে এ ধরনের জরিপ সম্পাদন প্রয়োজন।

মৎস্য অধিদপ্তরের (সামুদ্রিক শাখা) উপপ্রধান কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ তানভীর হোসেন চৌধুরী বলেন, সমুদ্র সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্যই সরকার এ বিধিমালা জারি করেছে। দেশের সমুদ্র সম্পদের উন্নয়নে গুরুত্ব অনুযায়ী প্রয়োজনীয় বিধির প্রচলন করা যাবে।

;

পলিথিনের কারণে উন্নয়নে বাধা হতে পারে সবুজ নগরীর



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
পলিথিনের কারণে উন্নয়নে বাধা হতে পারে সবুজ নগরীর

পলিথিনের কারণে উন্নয়নে বাধা হতে পারে সবুজ নগরীর

  • Font increase
  • Font Decrease

পলিথিনের কারণে উন্নয়নে বাধা হতে পারে সবুজ নগরী রাজশাহীর। এমনকি প্লাস্টিক ও পলিথিনের কারণেই ধ্বংস হতে পারে দেশ ও বিশ্বের প্রাণবৈচিত্র্য। এমনটায় আশঙ্কা করছেন রাজশাহীর পরিবেশবাদী সংগঠনগুলো।

রোববার ( ৫ জুন) সকাল ১০ টার দিকে নগরীর সাহেববাজার জিরো পয়েন্ট এলাকায় পরিবেশবাদী সংগঠন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাস নলেজ (বারসিক) ও বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরামের যৌথ আয়োজনে মানববন্ধন ও ধর্মঘট পালন করে।

এসময় বক্তারা বলেন, চারিদিকে সর্বগ্রাসী প্লাস্টিক ও পলিথিনের রাজত্ব, এ যেন আমাদের সমস্ত জীবকুল ও পরিবেশের দখল দারিত্ব নিয়ে নিচ্ছে। প্লাস্টিকের ভয়াবহতা, প্লাস্টিক ও পলিথিনের কারনে পরিবশের বিপর্যয়, জলবায়ু পরিবর্তনসহ প্রাণবৈচিত্র্য ও মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষা আজ ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

বক্তারা বলেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, মনুষ্যসৃষ্ট নানা উন্নয়ন দুর্যোগ, জলবায়ু পরিবর্তনে নেতিবাচক প্রভাব, যুদ্ধ, রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতার পাশাপাশি বিশ্ব আজ প্লাস্টিক দূষণ ও প্লাস্টিকের জন্য ভয়াবহ সংকটের মুখোমুখি। প্লাস্টিকের জন্য আজ প্রাণবৈচিত্র্যসহ আমাদের সুন্দর পরিবেশ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি প্লাস্টিকের কারনে মানব স্বাস্থ্য মারাত্বক ঝুঁকির মধ্যে। একই সাথে জনজীবন ব্যাপকভাবে হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। প্লাস্টিক সমগ্র দুনিয়াকে গ্রাস করছে, দুনিয়ায় যেন বিধ্বংসী প্লাস্টিকের রাজত্ব চলছে। প্লাস্টিকের জন্য পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে, চারিদিকে প্লাস্টিকের জন্য নদী-নালা, খাল-বিল, হাওড়-বাওড় এমনকি আমাদের এই সুন্দর নগরের পরিবেশকে বিষাক্ত করে তুলছে।

বারসিক’র গবেষক ও আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মোঃ শহিদুল ইসলাম বলেন– ‘ইউনাইটেড নেশনস’র পরিবেশ কর্মসূচির এক যৌথ গবেষণায় দেখা যায়, নব্বই শতাংশ পাখি এবং মাছের পাকস্থলী থেকে প্লাস্টিকের কণা পাওয়া গেছে। সেখানে আরো জানা যায় পৃথিবীতে প্রায় আটশত সামুদ্রিক প্রজাতির মধ্যে এ নেতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে।

তিনি বলেন, মাইক্রোপ্লাস্টিক মানুষের দেহে প্রবেশের কারণে ব্রেইন ড্যামেজ, অবিসিটি, ক্যান্সার, ডায়াবেটিকস, হৃদরোগ, এ্যাজমাসহ নারীর বন্ধ্যাতের¡ মারাত্বক ঝুঁকি সৃষ্টি করছে। দিনে দিনে প্লাস্টিক যেন আমাদের জীবন এবং পরিবেশে এক ভয়াবহ হুমকি হিসেবে দেখা দিচ্ছে। এই নগর এবং আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশকে প্লাস্টিকের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা করা এখন সময়ে দাবি।

রাজশাহী পরিবেশ আন্দোলন ও ঐক্য পরিষদের আহবায়ক মাহবুব টুনকু বলেন- পরিবশে সুরক্ষায় আইন করা হয়, কিন্তু সেই আইনের প্রয়োগ আমরা দেখতে পাইনা, মহামান্য আদালতের নিষেধ সত্বেও নির্বাচনগুলোতে যাচ্ছে তাই প্লাস্টিক পলিথিন ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি নির্বাচনী আইনে প্রচার প্রচারণাসহ সব ক্ষেত্রে প্লাস্টিক ও পলিথিন বন্ধের দাবি জানান।

বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম’র সভাপতি শাইখ তাসনীম জামাল’র সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন- ইয়ুথ এ্যাকশন ফর সোস্যাল চেঞ্জ এর সভাপতি শামীউল আলীম শাওন, বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম’র প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাক মো. আতিকুর রহমান আতিক, আদিবাসী ছাত্র পরিষদের সভাপতি নকুল পাহান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নবজাগরণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি রাসেল সরকার ও সদস্য মমতাজ আক্তার, গ্রীণ ভয়েজ’র রাজশাহীর সমন্বয়ক আব্দুর রহীম প্রমুখ।

এদিন প্রতীকী প্লাস্টিক ধর্মঘটে বিভিন্ন ফেস্টুন ও প্লেকার্ডে প্লাস্টিক তাঁর নিজের ভয়াবহতার কথা জানান দেয় এবং একই সাথে প্লাস্টিক ও পলিথিন প্রতিকী হিসেবে ১০ মিনিট রাস্তা অবরোধ করে রাখে।

প্লাস্টিক এ ধর্মঘটে রাজশাহীর বিভিন্ন তরুণ সংগঠনের প্রতিনিধি ও নাগরিক সমাজ অংশগ্রহণ করেন। তাঁরা প্লাস্টিকের ক্ষতিকর দিক এবং এর ভয়াবহতার নানা দিক সম্মিলিত লিখা প্লেকার্ড, ব্যানার, ফেস্টুন হাতে নিয়ে দাড়িয়ে বক্তব্য দেন।

উল্লেখ্য, আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস। দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ‘প্লাস্টিক দূষণের সমাধানে সামিল হই সকলে’ দিবসটির প্রতিপাদ্য স্লোগান ‘সবাই মিলে করি পণ বন্ধ হবে প্লাস্টিক দূষণ’। উক্ত দিবসকে কেন্দ্র করে প্লাসটিকের ভয়াবহতা বিষয়ে জনসচেতনতামুলক উক্ত প্লাসিটিক ধর্মঘটের আয়োজন করা হয়।

;

পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি যুবক নিহত



Mansura chamily
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে এক বাংলাদেশি এক যুবক নিহত হয়েছেন।

সোমবার (৫ জুন) দিবাগত রাতে উপজেলার জগতবেড় ইউনিয়নের কালীরহাট সীমান্তের ৮৫৭ সাব পিলারের কাছে সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ইউসুফ আলী (২৭) ওই ইউনিয়নের মেসের ডাঙ্গা গ্রামের শাহ জামালের ছেলে।

স্থানীয়রা জানান, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ৮৫৭ নম্বর প্রধান পিলারের জগতবেড় ইউনিয়নের কালীরহাট এলাকা সীমান্তে ভারতীয় ১৬৯ মেখলিগঞ্জের রাণীনগর বিএসএফ ব্যাটালিয়নের মীররাপা ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যদের ছোড়া গুলিতে ইউসুফ আলী গুলিবিদ্ধ হয়ে সেখানে নিহত হন।

এ বিষয়ে পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, নিহত ইউসুফের বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

বর্ডারগার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) তিস্তা ব্যাটালিয়ন-২ (৬১ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল শেখ মোহাম্মদ মুসাহিদ মাসুম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি শোনার পরে বিওপি ক্যাম্পে যোগযোগ করা হয়েছে।

এছাড়া কেন গুলি করা হয়ে তা জানতে ভারত-বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পতাকা বৈঠক করা হবে।

আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে ছাত্রলীগ-যুবলীগ সংঘর্ষের সময় রেস্তোরাঁর বাবুর্চি গুলিবিদ্ধ

;

‘পরিবেশ রক্ষা করতেই হবে, না হলে সব সাফল্য বিলীন’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
পরিবেশ রক্ষা করতেই হবেই, না হলে সব সাফল্য বিলীন: বিভাগীয় কমিশনার

পরিবেশ রক্ষা করতেই হবেই, না হলে সব সাফল্য বিলীন: বিভাগীয় কমিশনার

  • Font increase
  • Font Decrease

পরিবেশ আমাদের রক্ষা করতেই হবে; তা না হলে আমাদের সব সাফল্য বিলীন হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার জি এস এম জাফরউল্লাহ্, এনডিসি।

তিনি বলেন, পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধের বিভিন্ন দিক থাকলেও এবার বিশ্ব পরিবেশ সংস্থা প্লাস্টিক দূষণের উপর গুরুত্ব দিয়েছে। প্লাস্টিক যখন উৎপাদন শুরু হয়েছিল তখন এর ক্ষতিকর দিক পর্যালোচনা করে দেখা হয়নি। মানুষও তখন অতটা সচেতন ছিল না।

সোমবার (০৫ জুন) বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তর জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জি এস এম জাফরউল্লাহ্ বলেন, বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে তারা প্লাস্টিক ব্যবহারের পরে যেখানে সেখানে ফেলে না; কিন্তু আমাদের দেশে আমরা যেখানে সেখানে ময়লা ফেলি, এটা আমরা স্বাধীনতা মনে করলেও আসলে এটা স্বাধীনতা নয়। আমাদের বুঝতে হবে স্বাধীনতা এবং স্বেচ্ছাচারিতা এক নয়। সিঙ্গাপুরের মতো আমাদের দেশে আইন করার সময় এসে গেছে। আমরা স্মার্ট দেশে রূপান্তর হতে যাচ্ছি। আমাদের চিন্তা-চেতনা আরও আধুনিক করতে হবে।

বিভাগীয় কমিশনার বলেন, প্লাস্টিকের বিপরীতে সোনালি আঁশ পাট ও কাগজের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। আমরা যদি পাট ও কাগজের ব্যবহার বৃদ্ধি করে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে ফেলতে পারি তা হলেই আজকের এই প্রতিপাদ্য সফল হবে। সুন্দর পরিবেশ গঠনে নিজেকে সচেতন হতে হবে এবং আশেপাশের সকলকে সচেতন করতে হবে। পরিবেশের দিক থেকে রাজশাহী অন্যান্য শহরের তুলনায় অনেক এগিয়ে আছে উল্লেখ করে তিনি এই সফলতা ধরে রাখতে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি নরেশ চাকমা, আরএমপির অতিরিক্ত কমিশনার সামসুন নাহার, রাজশাহী বিশ্বিবদ্যালয়ের ভ‚গোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর ড. আবদুল্লা আল মারুফ। এসময় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, রাজনীতিবিদ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।

আলোচনা সভা শেষে বিভাগীয় কমিশনার বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এ সময় সকল শিক্ষার্থীদের একটি করে গাছ উপহার দেওয়া হয়।

এর আগে সকাল সাড়ে নয়’টায় রাজশাহী পর্যটন মোটেল হতে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের হয়ে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গিয়ে শেষ হয়। র‌্যালি শেষে বিভাগীয় কমিশনার বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে দিবসটির উদ্বোধন করেন। উদ্বোধন শেষে তিনি জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গনে একটি বকুল ফুলের চারা রোপণ করেন। প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে উদ্যাপিত হয় এই দিনটি। এবার ‘প্লাস্টিক দূষণ সমাধানে- সামিল হই সকলে’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারাদেশের মতো রাজশাহীতে দিবসটি নানা আয়োজনে উদ্যাপন করা হয়।

;