ভয়াল ২৫ মার্চ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ শনিবার ভয়াল ২৫ মার্চ, গণহত্যা দিবস। বাঙালি জাতির জীবনে ১৯৭১ সালের এইদিন শেষে এক বিভীষিকাময় ভয়াল রাত নেমে এসেছিল। এদিন মধ্যরাতে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের পূর্ব পরিকল্পিত অপারেশন সার্চ লাইটের নীলনকশা অনুযায়ী বাঙালি জাতির কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেয়ার ঘৃণ্য লক্ষ্যে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ উপলক্ষে শনিবার রাত ১০টা ৩০মিনিট থেকে ১০টা ৩১ মিনিট পর্যন্ত সারাদেশে প্রতীকী ‘ব্ল্যাক আউট’ পালন করা হবে।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বাণী প্রদান করবেন এবং সংবাদপত্রসমূহে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে।

এদিন সকাল সাড়ে ৯টায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে গণহত্যা দিবসের ওপর আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও সারাদেশে গণহত্যা ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গীতিনাট্য এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ঢাকাসহ সকল সিটি করপোরেশনের মিনিপোলগুলোতে গণহত্যার ওপর দুর্লভ আলোকচিত্র ও প্রামাণ্যচিত্র প্রচার করা হবে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এদিন বাদ জোহর দেশের সকল মসজিদে বিশেষ মোনাজাত এবং অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোতে সুবিধাজনক সময়ে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে।

বাঙালীর স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা মুছে দেওয়ার চেষ্টায় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ গণহত্যা শুরু করেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। তারপর নয় মাসের সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এসেছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতা। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে ব্যাপক গণহত্যা চালিয়ে বাঙালি জাতিকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী যে সশস্ত্র অভিযান পরিচালনা করে, তারই নাম অপারেশন সার্চলাইট।

এই অভিযানের নির্দেশনামা তৈরি করে পাকিস্তানের দুই সামরিক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা ও মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী। নির্দেশনামার কোনো লিখিত নথি রাখা হয়নি। গণহত্যার সেই পুরো নির্দেশ মুখে মুখে ফরমেশন কমান্ডার বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জানানো হয়। অনেক পরে, ২০১২ সালে, মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা ‘এ স্ট্রেঞ্জার ইন মাই ওন কান্ট্রি’ নামে আত্মজীবনী প্রকাশ করেন। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস প্রকাশিত সে আত্মজীবনীতে প্রথমবারের মতো অপারেশন সার্চলাইট সম্পর্কে কিছু তথ্য প্রকাশিত হয়।

অপারেশন সার্চলাইট কিভাবে পরিকল্পিত হয়, ১৯৭১ সালের সেই স্মৃতিচারণ করে রাজা লিখেছেন, ‘১৭ মার্চ, সকাল প্রায় ১০টা বাজে। টিক্কা খান আমাকে ও মেজর জেনারেল ফরমানকে কমান্ড হাউসে গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করতে খবর পাঠান। খবর পেয়ে আমরা দুজন টিক্কা খানের সঙ্গে দেখা করি। গিয়ে দেখি, সেখানে জেনারেল আবদুল হামিদ খানও রয়েছেন। টিক্কা খান আমাদের বলেন, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে শেখ মুজিবের সমঝোতা আলোচনা ইতিবাচক দিকে এগোচ্ছে না। প্রেসিডেন্ট চান আমরা যেন সামরিক অভিযানের প্রস্তুতি গ্রহন করি এবং সে অনুযায়ী একটা পরিকল্পনা তৈরি করি।

এছাড়া আর কোনো মৌখিক বা লিখিত নির্দেশনা আমরা পাইনি। আমাদের বলা হয়, পরদিন ১৮ মার্চ বিকেলে আমরা দুজন যেন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ওই পরিকল্পনা চূড়ান্ত করি।’ পরদিন সকালেই খাদিম হোসেন রাজা তাঁর কার্যালয়ে রাও ফরমান আলীকে নিয়ে বসেন। তারাই গণহত্যার এ অভিযানের নাম দেন অপারেশন সার্চলাইট।

মার্কিন সাংবাদিক রবার্ট পেইন ২৫ মার্চ রাত সম্পর্কে লিখেছেন, সেই রাতে ৭০০০ মানুষকে হত্যা করা হয়, গ্রেফতার করা হল আরো ৩০০০ লোক। ঢাকায় ঘটনার শুরু মাত্র হয়েছিল। সমস্ত পূর্ব পাকিস্তান জুড়ে সৈন্যরা বাড়িয়ে চললো মৃতের সংখ্যা। জ্বালাতে শুরু করলো ঘর-বাড়ি, দোকান-পাট। লুট আর ধ্বংস যেন তাদের নেশায় পরিণত হল। রাস্তায় রাস্তায় পড়ে থাকা মৃতদেহগুলো কাক-শেয়ালের খাবারে পরিণত হল। সমস্ত বাংলাদেশ হয়ে উঠলো শকুন তাড়িত শ্মশান ভূমি।

পাইকারি এই গণহত্যার স্বীকৃতি খোদ পাকিস্তান সরকার প্রকাশিত দলিলেও রয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানের সংকট সম্পর্কে যে শ্বেতপত্র পাকিস্তান সরকার মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রকাশ করেছিল, তাতে বলা হয়: ১৯৭১ সালের পয়লা মার্চ থেকে ২৫ মার্চ রাত পর্যন্ত ১ লাখেরও বেশি মানুষের জীবননাশ হয়েছিল।

১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়লাভ করা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগের কাছে পাকিস্তানি জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করার ফলে সৃষ্ট রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনের প্রক্রিয়া চলাকালে পাকিস্তানি সেনারা কুখ্যাত ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ নাম দিয়ে নিরীহ বাঙালি বেসামরিক লোকজনের ওপর গণহত্যা শুরু করে। তাদের এ অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল রাজনৈতিক নেতা-কর্মীসহ সকল সচেতন নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা করা। এদিন দুপুরের পর থেকেই ঢাকাসহ সারাদেশে থমথমে অবস্থা বিরাজ করতে থাকে। সকাল থেকেই সেনা কর্মকর্তাদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মত। হেলিকপ্টারযোগে তারা দেশের বিভিন্ন সেনানিবাস পরিদর্শন করে বিকেলের মধ্যে ঢাকা সেনানিবাসে ফিরে আসে।

ঢাকার ইপিআর সদর দফতর পিলখানাতে অবস্থানরত ২২তম বালুচ রেজিমেন্টকে পিলখানার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিতে দেখা যায়। মধ্যরাতে পিলখানা, রাজারবাগ, নীলক্ষেত আক্রমণ করে পাকিস্তানি সেনারা। হানাদার বাহিনী ট্যাঙ্ক ও মর্টারের মাধ্যমে নীলক্ষেতসহ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা দখল নেয়।

সেনাবাহিনীর মেশিনগানের গুলিতে, ট্যাঙ্ক-মর্টারের গোলায় ও আগুনের লেলিহান শিখায় নগরীর রাত হয়ে উঠে বিভীষিকাময়।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল এএকে নিয়াজীর জনসংযোগ অফিসারের দায়িত্বে থাকা সিদ্দিক সালিকের ‘উইটনেস টু সারেন্ডার’ গ্রন্থেও এ সংক্রান্ত একটি বিবরণ পাওয়া যায়। সিদ্দিক সালিক বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় জেনারেল নিয়াজীর পাশেই ছিলেন। বাংলাদেশের মানুষের বিরুদ্ধে অনুগত পাকিস্তানি হিসাবে পাক সামরিক জান্তার চক্রান্ত তিনি খুব কাছে থেকেই দেখেছেন। ২৫ মার্চ, অপারেশন সার্চ লাইট শুরুর মুহূর্ত নিয়ে তিনি লিখেন ‘নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সামরিক কার্যক্রম শুরু হয়ে যায়। এমন আঘাত হানার নির্ধারিত মুহূর্ত (এইচ-আওয়ার) পর্যন্ত স্থির থাকার চিহ্ন বিলুপ্ত হয়ে গেল। নরকের দরজা উন্মুক্ত হয়ে গেল।

পাকিস্তানি হায়েনাদের কাছ থেকে রক্ষা পায়নি রোকেয়া হলের ছাত্রীরাও। ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব ও জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, ড. মনিরুজ্জামানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ৯ জন শিক্ষককে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। ঢাবির জগন্নাথ হলে চলে নৃশংসতম হত্যার সবচেয়ে বড় ঘটনাটি। এখানে হত্যাযজ্ঞ চলে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত।

প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান অপারেশন সার্চ লাইট পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সকল পদক্ষেপ চূড়ান্ত করে গোপনে ঢাকা ত্যাগ করে করাচি চলে যান। সেনা অভিযানের শুরুতেই হানাদার বাহিনী বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তাঁর ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের আগে ২৬ মার্চ (২৫ মার্চ মধ্যরাতে) বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং যে কোন মূল্যে শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

বঙ্গবন্ধুর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র লড়াই শেষে একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর পূর্ণ বিজয় অর্জন করে। বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের।

বিশ্ব পরিবেশ দিবসে বৃক্ষরোপণ করলেন প্রধানমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্ব পরিবেশ দিবসে জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান এবং বৃক্ষমেলার উদ্বোধনী উপলক্ষে বৃক্ষরোপণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণ করেন তিনি।

সোমবার বিশ্ব পরিবেশ দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হচ্ছে।

 

;

ড. ইউনূসের কর ফাঁকির ১২ মামলা আপাতত শুনবেন না হাইকোর্ট



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পাঁচ বছরে প্রায় ১১শ কোটি টাকা কর ফাঁকি ও আয়করসংক্রান্ত ১২ মামলা আপাতত শুনবেন না হাইকোর্ট।

সোমবার (০৫ জুন) বিচারপতি ইকবাল কবির ও বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামানের দ্বৈত বেঞ্চ জানান, কনিষ্ঠ বিচারপতি এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেছিলেন কাজেই তারা এটি শুনতে পারবেন না। পরে নথি পাঠানো হয় প্রধান বিচারপতির কাছে।

গত ৭ মে হাইকোর্টকে এনবিআরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ২০১২ থেকে ২০১৭-এই পাঁচ বছরে ১১শ কোটি টাকা কর ফাঁকি দিয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

এর আগে, ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রায় সাড়ে ১১শ কোটি টাকার আয়কর রিটার্নের মামলা চালুর জন্য হাইকোর্টে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।

রাষ্ট্রপক্ষ বলছে, সরকারের পাওনা অর্থগুলোর মধ্যে একটি হলো গ্রামীণ কল্যাণ ৫৭৬ কোটি ৯৪ লাখ ৫৭ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা। গ্রামীণ কল্যাণের আরেকটিতে ৩৫৪ কোটি ৭৯ লাখ ৮৯ হাজার ৫৪৭ টাকা এবং গ্রামীণ টেলিকমের একটিতে সরকারের পাওনা ২১৫ কোটি টাকা।

ড. ইউনূসের ব্যক্তিগত ও তার প্রতিষ্ঠিত ৯টি প্রতিষ্ঠানের করসংক্রান্ত তথ্য চেয়ে এনবিআরের কাছে চিঠিও দিয়েছিল দুদক। পরে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে এনবিআরের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে সংশ্লিষ্ট সার্কেল এবং জরিপ দপ্তরকে মৌখিক নির্দেশনাও দেওয়া হয়।

;

স্বামীর পরকীয়ার বলি স্ত্রী, বাবার ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধনে সন্তানরা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪. কম, লক্ষ্মীপুর
স্বামীর পরকীয়ার বলি স্ত্রী, বাবার ফাঁসির দাবিতে রাস্তায় সন্তানরা

স্বামীর পরকীয়ার বলি স্ত্রী, বাবার ফাঁসির দাবিতে রাস্তায় সন্তানরা

  • Font increase
  • Font Decrease

লক্ষ্মীপুরে স্বামীর পরকীয়ার প্রেমের বলি হয়েছেন সেলিনা আক্তার নামের এক গৃহবধূ। পরকীয়া প্রেমের প্রতিবাদ করায় প্রবাস ফেরত স্বামী জসীম উদ্দিন তাকে নির্যাতন করে নৃশংসভাবে হত্যা করেন। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পরে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট প্রভাবিত করার অভিযোগ দিয়েছেন নিহতের স্বজনরা। একারণে খুন করেও গ্রেফতার না হয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন অভিযুক্ত জসীম।

সোমবার (৫ জুন) সকালে সদর উপজেলার জকসিন বাজারে স্বজন ও এলাকাবাসীদের নিয়ে বাবার গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন করে নিহত গৃহবধূর সন্তানরা।

বাজারের মূল সড়কে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে অংশ নেয় নিহতের চার ছেলে-মেয়ে। তারা হলো- রোজিনা আক্তার, আসমা আক্তার, লাভলী আক্তার ও আব্দুল আজিজ। এছাড়া স্থানীয় শতাধিক এলাকাবাসী মানববন্ধনে অংশ নেয়।

এসময় নিহতের ভাই মোক্তার হোসেন জানান, সদর উপজেলার বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের কাচারীবাড়ীর প্রবাসী জসীম উদ্দিন তার ভগ্নিপতি। সে প্রতারক,লম্পট ও নারীলোভী চরিত্রের। অর্থের লোভ দেখিয়ে সে বিভিন্ন নারীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। এসব নারীদের অনেককে সে বিদেশে নিয়ে গিয়ে গেছে বলে অভিযোগ করে জানান। সবশেষ শাহিন আক্তার সাথী নামের এক নারীর সাথে পরকীয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বামী জসীমের সাথে বিবাদ হয় স্ত্রী সেলিনা আক্তারের। এর জের ধরে গত ২৭ মে সেলিনাকে তার বাবার বাড়ী থেকে নিজ বাড়ীতে ডেকে নিয়ে নির্মম নির্যাতন শেষে হত্যা করে। পরে মুখে বিষ ঢেলে দেয়। এ ঘটনায় সদর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ প্রভাবিত হয়ে মামলা গ্রহণ করেনি বলে দাবি করেন নিহতের ভাই। এছাড়া মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে সদর হাসপাতালের চিকিৎসককে প্রভাবিত করে পোস্টমর্টেম রিপোর্টে হত্যাকে আত্মহত্যার ঘটনা বলে চালান। একারণে ঘটনার এক সপ্তাহ পর ভাই মোক্তার হোসেন বোনের হত্যার বিচার চেয়ে লক্ষ্মীপুর আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। এতে ভগ্নিপতি জসীমসহ ১২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।


তিনি এ ঘটনার বিচারিক তদন্ত সাপেক্ষে খুনীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। মানববন্ধনে অংশ নিয়ে নিহত গৃহবধূর তিন কন্যা ও এক ছেলে তাদের বাবার বিচার দাবি করে।

এসময় বড় মেয়ে রোজিনা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানায়, তাদের বাবা পরকীয়া প্রেমে জড়িত ছিলেন। তার মা সেলিনা এসবে বাধা দেন। এর জের ধরে বাবা তার মা-কে নির্মম নির্যাতন করে হত্যা করেন। তাই মায়ের হত্যাকারী বাবা জসীমের ফাঁসির দাবি জানায় সে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোছলেহ্ উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা রয়েছে। তাই আলাদা করে হত্যা মামলা নেয়ার প্রয়োজন হয়নি। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে। জানার জন্য সদর হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা (আরএমও) ডা.আনোয়ার হোসেনের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

;

কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে পশু পরিচর্যায় ব্যস্ত খামারিরা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঠাকুরগাঁও
কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত প্রান্তিক খামারিরা

কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ব্যস্ত প্রান্তিক খামারিরা

  • Font increase
  • Font Decrease

আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় সামর্থ্যবান মুসলমানেরা ঈদ-উল-আজহায় পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন। ঈদে দেশীয় গরুর ব্যাপক চাহিদা থাকায় ঠাকুরগাঁওয়ে প্রান্তিক কৃষক ও ছোট খামারিরা গরু পালন করছেন। কিছুটা বাড়তি লাভের আশায় ঈদকে সামনে রেখে সকাল হতে সন্ধ্যা পর্যন্ত গরুকে গোসল করানো খাবার দেওয়া নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রান্তিক খামারিরা। তবে ভালো দিক হলো ক্ষতিকর ইনজেকশন ও ট্যাবলেট ব্যবহার না করে দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করছেন খামারি ও কৃষক।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চন্ডিপুর, গড়েয়া মিলনপুর, সালান্দর, আখানগর ঘুরে দেখা যায় এমন চিত্র।

প্রাণি সম্পদ বিভাগের তথ্য মতে, জেলার পাঁচটি উপজেলায় ৪ হাজার ৩ শত ১৭ জন পারিবারিক ও বাণিজ্যিকভাবে খামারে গবাদিপশু পালন করছে। আর এ থেকে ৬৯ হাজার পশু উৎপাদিত হবে যা চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত।

খামারি শামীম মিয়া বলেন, আমি বহুদিন যাবত খামার করে আসছি। এ বছর ভালো করে প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমার খামারে এখন দেশি গরু ১০-১১ টি রয়েছে। আমারা যারা ছোটখাটো খামারিরা তারা বেশি একটা লাভবান হতে পারি না, কারণ প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বেশি। বেশি দাম দিয়ে খাবার কিনে খাওয়ালে বেশি একটা লাভবান হওয়া যাবে না। আমরা প্রাকৃতিক সব খাবার খাওয়াচ্ছি।

অনন্যা ফার্মের স্বত্বাধিকারী হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদ বলেন, এখানে আমি তিনটি গরু নিয়েছি আজ থেকে চার মাস আগে মোটাতাজা করার জন্য। এক একটা গরু প্রায় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা করে কেনা। ঈদের আগে শেষ মুহূর্তে গরু মোটাতাজা করতেছি। ইন্ডিয়ান গরু না আসে তাহলে আমরা একটু লাভবান হতে পারব। সরকারের কাছে আবেদন ঈদের আগে যাতে ইন্ডিয়ান গরু বাংলাদেশে না ঢুকে তাহলে ছোটখাটো খামারিরা লাভবান হতে পারবো।

আরেক খামারের খামারি সোহেল মাহমুদ বলেন, এ এলাকায় বেশিরভাগ খামারি দেশীয় পদ্ধতিতে গরু মোটাতাজা করছেন। সম্পূর্ণ দেশীয় পদ্ধতিতে ঘাস-খড়ের পাশাপাশি খৈলগুঁড়া ও ভুসি খাওয়ানো হচ্ছে। গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় বর্তমানে গরুতে লাভ কিছুটা কমে গেছে। গতবার চারটি গরু বিক্রি করে প্রায় ৫০ হাজার টাকা লাভ হয়েছিল। এ বছর কোরবানি উপলক্ষে সাতটি গরু পালন করছি। আশা করি এবারও ভালো দাম পাব।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার ডা. মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে ঠাকুরগাঁও জেলায় ৪ হাজার ৩১৭ জন পারিবারিক ও বাণিজ্যিকভাবে খামার পরিচালনা করছেন। এই খামার গুলোকে আমরা প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে ভ্যাকসিন এবং চিকিৎসা পরামর্শ দিয়ে থাকি।

;