যেখানে মেটে সমুদ্র সৈকতের ক্ষুধা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সূর্যাস্ত বিকেলবেলা। ঘড়ির কাটায় সোয়া পাঁচটা। তখন মিষ্টি তাপ ছড়িয়েছে। সেই আলোয় পদ্মাপাড়ের বালিতে পেতে রাখা চেয়ারে সবে চোখ বুঝে অচিন দেশে হারিয়ে গেছে শ্রাবন আর লাবনী। তারা দুজনের একজন রাজশাহী নগরীর প্রাণকেন্দ্র শাহ্ শখদুম রুপোশ (র.) এর মাজারের পাশে অবস্থিত রাজশাহী কলেজের ইতিহাস বিভাগের অন্যজন (শ্রাবন) একই কলেজের বাংলা বিভাগের। পড়ার ফাঁকে নিজেদের একটু মনের ভেতরে প্রানের নিশ্বাস নিতে প্রায়দিনই তারা এখানে আসেন।

কথা হয় তাদের সাথে। তারা জানান, সারাদিন পড়াশোনার পর এখানে এসে প্রশান্তির হওয়া ক্ষেতে আসেন। কিছুটা মিষ্টি রোদ আর হালকা শীতল বাতাস মিলে এক মজার অনুভূতি হয়। এখান থেকে সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগে তারা বাড়িতে চলে যান। এখানে আসলেই সারাদিনের ক্লান্তি দূর হয়ে যায় বলেন জানান তারা।

লাবনী আক্তার বলেন, ছোটবেলা থেকে বাবা-মা, বড় ভাই-বোনদের মুখে সমুদ্র সৈকতের অপরুপ সৌন্দর্যের বর্ণনা শুনেছি। বড় আপুর সমুদ্র সৈকতে তোলা ছবি দেখে অভিভূত হয়েছি। তখন থেকেই সমুদ্রসৈকতের সৌন্দর্য নিয়ে আমার কল্পনায় এ এক আবেশ সৃষ্টি হয়। যখন স্কুলে পড়ি তখন বই-পত্র পড়ে, বন্ধু-বান্ধব ও শিক্ষকদের কাছ থেকে সমুদ্র সৈকতের বর্ণনা শুনে আমার কল্পনার সৈকতে আরও নতুন মাত্রা যোগ হয়। আমার কল্পনার সমুদ্র সৈকত ছিল বিশাল। যেখানে ছিল পানি আর ঢেউয়ের এক অদ্ভুত সুন্দর তরঙ্গ। ছিল বিস্তীর্ণ বালুচর, তীরে আছড়ে পড়া রাশি রাশি ঢেউ। আমার কল্পনার সমুদ্র সৈকত আমাকে ভাবুক করে তুলত। তবে এখানে আসার পর সেই অনুভবটা করতে পারছি। এখানে আসলেই মনে হয় যেন সমুদ্রপাড়ে আছি।

কনক্রিটের শহরে যান্ত্রিক জীবনে একটু শান্তির পরশ পেতে আমাদের চাহিদার মধ্যে ক্রমেই যুক্ত হচ্ছে ভ্রমণ। ভ্রমণ মানুষকে সমৃদ্ধ করে। খুলে দেয় মনের জানালা, উন্মোচিত করে স্বপ্নের দরজা। নতুনত্বের নান্দনিক দৃষ্টি বিনির্মাণ ও সুস্থ মানসিকতা গঠনে ভ্রমণের তুলনা নেই। এমনটাই বলছিলেন নাঈম ইসলাম শ্রাবণ।


তিনি বলেন, রাজশাহীর মানুষের ঘুরে বেড়ানোর জায়গা বলতেই পদ্মার পাড়। আগে পদ্মার পাড়ে তেমন মজা হতো না। এখন বসলেই একটু মজা করে গল্প করা যায়। কলেজ-প্রাইভেট শেষে প্রায়দিনই এখনে এসে বসি। সমুদ্র তো অনেক দূর। কাজের চাপে যাওয়া হয় না। এখানে এসেই সেই ক্ষুধা মেটাই।

সাগরের তীব্র গর্জনের অগণিত আওয়াজ না পাওয়া গেলেও ফুলে ফেঁপে ওঠা পদ্মার ছলাৎ ছলাৎ ঢেউয়ে হারিয়ে যেতে পারেন আপনি। বর্ষাকালই সে আবহ উপলব্ধির উত্তম সময়। তবে শীতের পড়ন্ত রোদেলা বিকেল ভিন্ন এক মহিমায় হাজির হবে। পদ্মাপাড়ের বালুচরে হেঁটে সে স্বাদ আস্বাদন করবার চেষ্টা ফলপ্রসূ হবে। নদীর বুকে ঘুরতে ঘুরতে পশ্চিম আকশে হেলে পড়া সূর্যের মিঠে রোদ নদীর ঢেউয়ে আলতো পরশ বুলিয়ে কমলা রঙের যে চিকিমিকি আবহ তৈরি করবে, তা-ই দেখা যাবে মনের কুঠুরিতে আনন্দের ভিন্ন ঢেউ বইয়ে দিচ্ছে।

অববাহিকা ধরে যেতে যেতে মনে হবে শেষ বিকেলের মিহি ঢেউ নদীতে বইছে না, বইছে যেন আপন অন্তরজুড়ে। ঢেউয়ের লুকোচুরির এই মায়াবী রূপও অবলোকন করা যাবে এই সুযোগে। মানবজীবন যেমন উত্থান-পতনে ভরপুর; ঢেউও বুঝি জীবনের মতো কোথাও উথিত, কোথাও নীরব-মসৃণ, আবার কোথাও ঘূর্ণিতে প্যাঁচানো।

পদ্মার পানির কাছাকাছি সারি সারি ছাতার নিচে পাতা রয়েছে এ ধরনের বিচ চেয়ার। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে পদ্মাপাড়ের দর্শনার্থীদের বিনোদনের নতুন সংযোজন হিসেবে এই ছাতা-চেয়ারের পাশাপাশি বিচ বাইকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গত ২৪ ডিসেম্বর কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।

বদলে যাওয়া পদ্মাপাড়ে এখন মিলছে সমুদ্রের স্বাদ। এই স্বাদ নিতে অবশ্য গুনতে হবে ২০ টাকা। এ টাকায় সমুদ্রের মতো স্বাদ নেওয়া যাবে এক ঘণ্টা।

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের কর্মচারী মনিরুল ইসলাম এসব বেঞ্চের টিকিট বিক্রি করেন। তিনি বলেন, চালুর পর প্রথমদিকে সব সময়ই ভর্তি থাকতো। এখন একটু কম থাকছে। তবে বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সবগুলো চেয়ার বুক থাকে।

   

ঢাবি সাংবাদিক সমিতির আমন্ত্রণে এক ছাদের নিচে সব রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন



ঢাবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) আয়োজিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে সকল রাজনৈতিক ও সামাজিক ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) প্রশাসন অংশগ্রহণ করেছেন।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) ঢাবির ছাত্র শিক্ষক মিলনায়তনে (টিএসসি) ‘শিক্ষাঙ্গনে সংকট, ছাত্র সংগঠন নির্বাচনের প্রাসঙ্গিকতা’ শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি। এ আয়োজনে সকল রাজনৈতিক ও সামাজিক ছাত্র সংগঠন অংশগ্রহণ করেন।

এ আলোচনা সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আলোচনা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আল সাদী ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেখক, বিশ্লেষক ও ঢাবির বাংলা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক। বিশেষ অতিথি হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

এ আয়োজনে সভাপতির বক্তব্যে ডুজা সভাপতি আল সাদী ভূঁইয়া বলেন, আমরা ক্যাম্পাসে সকল রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের মতানৈক্য দেখি বা ক্যাম্পাসে তাদের সহাবস্থান সেভাবে লক্ষ্য করি না। তবে আজকে ডুজার আয়োজনে সকল রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনগুলোকে আমরা এক ছাদের নিচে আনতে পেরেছি। এটা আমাদের জন্য একটা বিশেষ প্রাপ্তি। আমরা সাংবাদিক সমিতি চাই ক্যাম্পাসে সবসময়ই রাজনৈতিক সহাবস্থান বিরাজ করুক এবং শিক্ষার্থীরা সুস্থ রাজনৈতিক চর্চা করার সুযোগ লাভ করে। সকলকে এই আয়োজন সফলভাবে সম্পন্ন করার জন্য ধন্যবাদ জানাই।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, আজকে ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দকে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করে রাখা হয়েছে, যা আধুনিক যুগের ছাত্র রাজনীতির সম্পূর্ণ পরিপন্থী। আমরা চাই, বর্তমান পরিস্থিতিতে ডাকসুর নির্বাচন যেনো অতি সত্বর দেওয়া হয়৷ তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ পরিষদের মিটিং করা প্রয়োজন। ক্যাম্পাসের সকল রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের অবাধ নির্বাচন ও বিচরণ নিশ্চিত করতে হবে৷ হলগুলো রাজনৈতিক সংগঠন কাছ থেকে মুক্ত করে শিক্ষার্থীদের আবাসন নিশ্চিত করা হোক।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিকাশ, শিক্ষার্থীদের অবাধ রাজনৈতিক চর্চায় ডাকসুর ভূমিকা রয়েছে। এটা শিক্ষার্থীদের আইনি অধিকারও৷ আমরা বিশ্বাস করি ছাত্র রাজনীতিকে আরও স্মার্ট ও যুগোপযোগী করতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন জরুরি। এর মাধ্যমে ক্যাম্পাস ভায়োলেন্স কমিয়ে আনা সম্ভব। এসময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকট, লাইব্রেরি সংকট ও অন্যান্য সমস্যা নিরসনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাস্টারপ্লান দ্রুত সময়ে বাস্তবায়নের অনুরোধ জানান।

অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, ১৯২১ সাল থেকে ১৯৪৭ সাল এবং পাকিস্তান আমলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পরে তা অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবর্তন পরিবর্ধিত হয়েছে। তবে শিক্ষাক্ষেত্রে আরও পরিবর্তন আনা জরুরি। আমি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য ও প্রশাসনের সবাইকে অনুরোধ জানাই, যেনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষায় আরও উন্নয়ন করা হয় এবং শিক্ষার্থীদের আস্থার সংগঠন ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে নতুন করে ভাবা হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, আমরা ছাত্রনেতাদের ছাত্র সংসদ নির্বাচন কেন্দ্রিক বক্তব্য শুনেছি। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকুক। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় থাকুক। প্রশাসন চায় বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানে নিয়ে যেতে শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংঠনের সহযোগিতা প্রয়োজন। ডাকসু নির্বাচন নিয়ে আমাদের আপত্তি নেই। এটি শিক্ষার্থীদের সহ-শিক্ষা কার্যক্রমকে প্রসারিত করে। নির্বাচনের সুন্দর পরিবেশ পেলে আমরা নির্বাচনের আয়োজন করতে পারি। তবে এই দায়িত্ব প্রশাসন বা কোনো ছাত্রসংগঠনের একার নয়। এতে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সহযোগিতা করবে। তাহলেই আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেস্ট হিউম্যান রিসোর্স প্রোভাইড করতে পারবো।

তিনি আরো বলেন, লাইব্রেরি সংস্কার, আবাসন সংকট সমাধানের জন্য আমরা কাজ শুরু করেছি। আশা করি মাস্টারপ্লানের কাজ শুরু হলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক চিত্র পালটে দিতে পারবো এবং শিক্ষার্থীদের অনুকূল শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারবো।

উল্লেখ্য, এ অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ, আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীল দল এবং বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, ঢাবি সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির, ছাত্রদলের ঢাবি সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি (একাংশ) রাগীব নাঈম, সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল রনি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি (অন্য অংশ) দীপক শীল, সাধারণ সম্পাদক মাহির শাহরিয়ার রেজা, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মশিউর রহমান খান রিচার্ড, সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফসহ সকল রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

;

ঈদের আগে জিম্মি নাবিকদের দেশে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা কম



তাসনীম হাসান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ঈদের আগে জিম্মি নাবিকদের দেশে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা কম

ঈদের আগে জিম্মি নাবিকদের দেশে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা কম

  • Font increase
  • Font Decrease

 

সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে ১৮দিন ধরে জিম্মি বাংলাদেশি ২৩ নাবিককে ঈদের আগে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা কম। দস্যুদের প্রতিনিধির সঙ্গে জাহাজটির মালিকপক্ষের আলোচনা চলমান থাকলেও এখনো নাবিকদের মুক্তি নিয়ে বলার মতো তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে এবার হয়তো পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ করা হচ্ছে না নাবিকদের।

ঈদের আগে নাবিকদের উদ্ধার করার কথা প্রচার হচ্ছে কোথাও কোথাও। এমন পরিস্থিতিতে জাহাজটির মালিক চট্টগ্রামভিত্তিক কবির গ্রুপের (কেএসআরএম) অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এসআর শিপিংয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, দস্যুদের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা চলমান আছে। তবে এখনো বলার মতো কিছু হয়নি। নাবিকদের পরিবারের সদস্যদেরও মানসিকভাবে প্রশান্তিতে রাখার একটা বিষয় আছে। সেজন্য হয়তো কোথাও কোথাও বলা হচ্ছে, ঈদের আগে নাবিকদের মুক্ত করে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। তবে প্রকৃত সত্য হচ্ছে, ঈদের আগে নাবিকদের মুক্ত করা কঠিন।

১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করে সোমালিয়ার দস্যুরা। পরে তারা জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে কয়েকবার জায়গা বদলের পর বর্তমানে সোমালিয়ার গদভজিরান জেলার জিফল উপকূল থেকে দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে জাহাজটি নোঙর করে রেখেছে দস্যুরা।

প্রায় ১৩ বছর আগে ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর এমভি জাহান মণি নামের একই গ্রুপের মালিকানাধীন একটি জাহাজ জিম্মি করেছিল সোমালিয়ার জলদস্যুরা। তখন মুক্তিপণ আদায়ের পর জাহাজ থেকে নেমে গিয়েছিল দস্যুরা। ১০০ দিন পর সব নাবিকসহ উদ্ধার করা হয়েছিল। এবার এখনো মুক্তিপণের বিষয়ে তেমন কিছু জানা যায়নি। আর মুক্তিপণের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে তেমন কিছু জানায়নি। মুক্তিপণ চাওয়ার পর মালিকপক্ষ থেকে দর কষাকষি করা হবে। তখন ৪০দিনে দুই পক্ষের মধ্যে মুক্তিপণের বিষয়ে সমাঝোতা হয়েছিল। এরপর চাহিদা অনুযায়ী অর্থ পাঠানো হয় দস্যুদের দেখিয়ে দেওয়া জায়গায়। পরে মুক্তিপণের টাকা পেয়ে জাহাজে এসে সেই টাকা ভাগ করে দস্যুরা। এরপরই জাহাজ থেকে নেমে যায় দস্যুরা। অর্থাৎ সমাঝোতার পরও মুক্তি পেতে প্রায় দুই মাস সময় লেগেছিল। এবারও সেই প্রক্রিয়ায় মুক্তি মিলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে সব প্রক্রিয়া শেষ হওয়া সময়সাপেক্ষ বিষয়।

অবশ্য নাবিকদের উদ্ধারে দেরি হলেও ভালো খবর হচ্ছে, এখন পর্যন্ত নাবিকেরা সবাই সুস্থ আছেন। দস্যুদের পক্ষ থেকেও ভালো আচরণ করা হচ্ছে। তাঁদের ওপর কোনো নির্যাতন কিংবা ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে না। এরই মধ্যে জাহাজের নাবিকদের জন্য তীর থেকে দুম্বা ও ছাগল আনা শুরু করেছে দস্যুরা। ফলে খাবার নিয়ে নাবিকদের মধ্যে থাকা দুশ্চিন্তা অনেকটাই কমে গেছে। অবশ্য জাহাজে বিশুদ্ধ পানি কমে যাওয়া নিয়ে নাবিকদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ আছে।

অবশ্য জাহাজটির মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের মুখপাত্র এবং মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম জানিয়েছেন নাবিকদের মুক্তির বিষয়ে দস্যুদের সঙ্গে আলোচনা ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ হলেও জলদস্যুরা তাতে ভালোভাবে সাড়া দিয়েছে। নাবিকদের সঙ্গেও তারা ভালো আচরণ করছে। নাবিকদের তাঁরা নিজ নিজ কেবিনে থাকতে দিচ্ছে, জাহাজের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ কাজে অংশ নিতে দিচ্ছে। এমনকি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে দিচ্ছে। সবমিলিয়ে ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছে দস্যুরা। আশা করছি খুব দ্রুত নাবিকদের মুক্তির বিষয়ে তাদের সঙ্গে সমাঝোতা হবে। সবমিলিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সংকটের সমাধান করে নাবিকদের দেশে ফিরিয়ে আনাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’

;

শিক্ষার মৌলিক লক্ষ্য অর্জনে ক্লাবভিত্তিক সহশিক্ষা কার্যক্রম অত্যন্ত সহায়ক: ধর্মমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
শিক্ষার মৌলিক লক্ষ্য অর্জনে ক্লাবভিত্তিক সহশিক্ষা কার্যক্রম অত্যন্ত সহায়ক: ধর্মমন্ত্রী

শিক্ষার মৌলিক লক্ষ্য অর্জনে ক্লাবভিত্তিক সহশিক্ষা কার্যক্রম অত্যন্ত সহায়ক: ধর্মমন্ত্রী

  • Font increase
  • Font Decrease

ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, শিক্ষার মৌলিক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনে ক্লাবভিত্তিক সহশিক্ষা কার্যক্রম অত্যন্ত সহায়ক। যদি দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাবভিত্তিক সহশিক্ষা কার্যক্রম সম্প্রসারিত করা যায় তাহলে শিক্ষার সামগ্রিক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জন ত্বরান্বিত হবে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) বিকেলে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে দ্বিতীয় ডিআরএমসি জাতীয় রমাদান ফেস্টিভ্যাল ২০২৪ এর সমাপনি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

ধর্মমন্ত্রী বলেন, ইসলামের সংবিধান হলো মহাপবিত্র আল কুরআন। এটি কিয়ামত পর্যন্ত সকল মানুষের জন্য ইহকালীন ও পরকালীন মুক্তির পথপ্রদর্শক। মুসলিমদের জন্য রয়েছে আরেকটি বিধান সেটি হলো মহানবী (স.) এর হাদীস। এই দুটিকে আঁকড়ে ধরতে পারলে পথভ্রষ্ট হওয়ার কোন আশঙ্কা নেই। বরং কুরআন ও হাদীসের আলোকে জীবন পরিচালনা করতে পারলে পরকালে পুরস্কার হিসেবে রয়েছে চির শান্তির জান্নাত।

তিনি বলেন, আমরা যদি নতুন প্রজন্মের মধ্যে ইসলামের আলো সঞ্চারিত করতে পারি তাহলে অবশ্যই তারা আদর্শ মানুষ হয়ে গড়ে উঠবে। তারা সকল ধরণের অন্যায়-অনাচার, পাপাচার থেকে বিরত থাকার শিক্ষা পাবে এবং তারা আদর্শবান ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হয়ে গড়ে উঠবে। আমরা গড়ে তুলতে পারবো একটি সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা।

ফরিদুল হক খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৪১ সালে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছি। এই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য নৈতিক, মানবিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক মূল্যবোধসম্পন্ন প্রজন্ম গড়ে তোলার বিকল্প নেই। তাছাড়া, শিক্ষার্থীদের মেধা ও মননে কর্তব্যবোধ, মানবাধিকার সচেতনতা, মুক্তবুদ্ধির চর্চা, শৃঙ্খলা, সৎ জীবনযাপনের মানসিকতা, সৌহার্দ্য, সহমর্মিতা ও গণতান্ত্রিক চেতনাবোধ ইত্যাদির বিকাশ ঘটানো প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ক্লাবভিত্তিক সহশিক্ষা কার্যক্রম বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।

তিনি শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ইসলামী জ্ঞান অন্বেষণ ও সঞ্চারিত করার জন্য ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ ইসলামিক কালচারাল ক্লাবের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।

ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী শামীম ফরহাদের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে কলেজের উপাধ্যক্ষসহ অন্যান্য শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

পরে মন্ত্রী বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

;

রংপুরে মাটি বহনকারী ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে শিশু নিহত



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরের মিঠাপুকুরে মাটি বহনকারী ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে মামুন মিয়া (৪) নামে এক শিশু নিহত হয়েছে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ ফেরদৌস ওয়াহিদ। এদিন সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ইমাদপুর মুন্সীপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ওই শিশু মামুন মিয়া ইমাদপুর ইউনিয়নের সোনার পাড়া গ্রামের দিনমজুর শহিদুল মিয়ার ছেলে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শিশু মামুনের বাড়ির পাশের রাস্তা দিয়ে প্রতিনিয়ত ইটভাটার মাটি আনার জন্য ট্রাক্টরগুলো যাতায়াত করে। সকালের দিকে শিশুটি রাস্তার পাশে দাড়িয়ে ভেকু দিয়ে মাটি কাটার দৃশ্য দেখছিল। এ সময় ভেকু দিয়ে কাটা মাটি বহনকারী একটি ট্রাক্টর মাটি নেওয়া শেষে পিছনে ঘুড়ানোর সময় মামুনকে চাপা দেয়। এতে মাথায় প্রচন্ড আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই শিশুটির মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে মাটি বহনকারী ট্রাক্টরটি আটক করেন। পরে পরিবারের আবেদনে শিশুটির মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

;