ফটিকছড়িতে বাস-অটোরিকশা সংঘর্ষে ২ জনের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ফটিকছড়িতে বাস-সিএনজি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে ২ জনের মৃত্যু

ফটিকছড়িতে বাস-সিএনজি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে ২ জনের মৃত্যু

  • Font increase
  • Font Decrease

 

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির দাঁতমারায় বাস-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলে প্রাণ হারিয়েছে ২ জন। এ সময় আহত হয় আরও ৪ জন।

বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার হেয়াকো-ফটিকছড়ি আঞ্চলিক সড়কের দাঁতমারা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত দুজন হলেন- রুবেল ত্রিপুরা(৫০) এবং অভি ত্রিপুরা (১০)। আহতদের নাম পরিচয় জানা যায়নি তবে সকলে একই এলাকার বাসিন্দা।

মো. নাহিদ নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, হারুয়ালছড়িতে একটি বিবাহ অনুষ্ঠান শেষ করে উনারা জোরারগঞ্জ থানার নলখা এলাকায় সিএনজি যোগে যাচ্ছিল। দাঁতমারা পুলিশ ফাঁড়ির সামনে গেলে বিপরীত দিক থেকে আসা বাসটির সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে তত্তরি ত্রিপুরা ও অভি ত্রিপুরা ২ জন মারা যায়। গুরুত্বর আহত হয়েছে আরও ৪ জন। স্থানীয়রা আহতদের ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে নাজিরহাটস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।

এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আরেফিন আজিম জানান, প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে গুরুত্বর আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে প্রেরণ করা হয়েছে।

   

৫০০ টাকার জেরে হামলার শিকার কবি রাধাপদ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুড়িগ্রাম
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

 

ছয় মাস আগে ৫০০ টাকা নিয়ে অনানুষ্ঠানিক এক সালিসে বাগ্‌বিতণ্ডার জের ধরে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার ‘স্বভাবকবি’–খ্যাত রাধাপদ রায়ের (৮০) ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে। হামলায় আহত রাধাপদ বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

গত শনিবার সকালে নাগেশ্বরী উপজেলার গোদ্দারেরপাড় এলাকায় নিজ বাড়িতে রাধাপদ রায় হামলার শিকার হন। পাশের এলাকার দুই ভাই মো. রফিকুল ইসলাম ও কদুর আলীর বিরুদ্ধে এ হামলার অভিযোগ ওঠে। কবিকে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। এতে তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করেন।

এ ঘটনায় কবি রাধাপদ রায়ের ছেলে জুগল রায় গত রোববার রাতে অভিযুক্ত দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে নাগেশ্বরী থানায় মামলা করেন। তবে ঘটনার তিন দিন পরও অভিযুক্ত দুই ভাইকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

নাগেশ্বরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশিকুর রহমান বলেন, ঘটনার দিন থেকে তারা দুই ভাই পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। কবিকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলাম। তিনি এখন সুস্থ আছেন।

রাধাপদ রায়ের ছেলে জুগল রায় বলেন, তার বড় ভাই মাধব রায় ও নাগেশ্বরী পৌরসভার হাসেমবাজার এলাকার মিলন ঢাকায় একসঙ্গে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। পরে মিলন এলাকায় এসে দাবি করেন, তিনি মাধব রায়ের কাছে কাজের টাকা পাবেন। এ নিয়ে তিনি ছয় মাস আগে এলাকায় সালিস ডাকেন। সেখানে একসঙ্গে রাজমিস্ত্রির কাজ করা স্থানীয় শ্রমিকেরা উপস্থিত হন। ওই অনানুষ্ঠানিক সালিসে হিসাবের খাতায় দেখা যায়, মিলন ৫০০ টাকা পাবেন। পরে সালিস বৈঠকের মাধ্যমেই তা ফেরত দেন রাধাপদ রায়।

জুগল রায় বলেন, ওই সালিসে একই উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের কচুয়ারপাড় এলাকার কদুর রহমান এসে উপস্থিত হন। তিনি এলাকায় গ্রামীণ সড়ক অবকাঠামোর নির্মাণকাজ চলাকালে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তোলেন রাধাপদ রায়ের স্ত্রীর বিরুদ্ধে। সে সময় কদুর রহমানের সঙ্গে রাধাপদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়, যা হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায়। পরে কদুর রহমানের ছোট ভাই মো. রফিকুল ইসলাম এ ঘটনার প্রতিশোধ নেবেন বলে হুমকি দেন।

ওই সালিসে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা লিটন রায় (২৯)। তিনিও রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। তিনি বলেন, টাকা পাওয়ার অভিযোগ নিয়ে রাজমিস্ত্রিদের ফোরম্যানসহ তাঁরা ১০–১২ জন বসেছিলেন। সেখানে কদুর রহমান টাকা মেরে খাওয়া নিয়ে ভৎসনা করতে থাকেন। কবির স্ত্রীকে নোংরা ভাষায় গালি দেন। এতে কবি ক্ষিপ্ত হলে তাদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, শনিবার সকালে কদুর আলীর ছোট ভাই মো. রফিকুল ইসলাম কবিকে একা পেয়ে তার ওপর দেশীয় অস্ত্র (বাঁশের লাঠি) দিয়ে অতর্কিত হামলা চালান এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করে চলে যান।

কবি রাধাপদ রায় বলেন, রফিকুলের সঙ্গে তার আগের কোনো শত্রুতা ছিল না। রফিকুলের ভাই কদুর আলীর সঙ্গে ছয় মাস আগে একবার কথা–কাটাকাটি হয়েছিল। সেই প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য কদুর আলী তার ভাই রফিকুল ইসলামকে দিয়ে হামলা চালান। অথচ ছয় মাস আগের ওই ঘটনা তিনি ভুলে গিয়েছিলেন।

;

ছিনতাইকারীর হামলার ১৬ দিন পর কলেজছাত্রের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা ২৪.কম রাজশাহী
ছিনতাইকারীর হামলার ১৬ দিন পর কলেজছাত্রের মৃত্যু

ছিনতাইকারীর হামলার ১৬ দিন পর কলেজছাত্রের মৃত্যু

  • Font increase
  • Font Decrease

ছিনতাইকারীর হামলায় আহত রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী নিশাদ আকরাম (২৪) মারা গেছেন।

মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) ভোররাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তিনি মারা যান।

মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহা. আব্দুল খালেক। 

নিহত নিশাদ আকরামের বাড়ি নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার আড্ডা গ্রামে। তিনি রাজশাহী কলেজের পরিসংখ্যান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।

অধ্যক্ষ আব্দুল খালেক বলেন, ‘নিশাদ বন্ধুর উপকার করার জন্য বন্ধুকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিল। গত ১৭ সেপ্টেম্বর সেখান থেকে ভোর ৫টায় মেসে ফেরার সময় ছিনতাইকারীরা তার মাথায় আঘাত এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। এরপর তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। ১৬ দিন আইসিইউতে থাকার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।’

রাজশাহী নগরের বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সোহরাওয়ার্দী হোসেন জানান, হামলা ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় যে মামলাটি হয়েছিল, সেটিই এখন হত্যা মামলায় রূপ নেবে। হামলা ও ছিনতাইয়ের মামলায় একজনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। হামলার সঙ্গে জড়িত অন্যজনকেও  গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

তিনি আরও জানান, ময়নাতদন্ত শেষে নিশাদের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গ্রেফতার সেলিমকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সেলিম হামলায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তার নামে আগে থেকেই আটটি মামলা ছিল। তিনি একজন পেশাদার ছিনতাইকারী।

উল্লেখ্য, গত ১৭ সেপ্টেম্বর ভোরে রামেক হাসপাতালে অসুস্থ বন্ধুকে দেখে মেসে ফেরার পথে নেসকো অফিসের সামনে ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন নিশাদ। ছিনতাইকারীরা তার মাথায় আঘাত করে সঙ্গে থাকা মোবাইল ও টাকা ছিনিয়ে নেয়। এতে গুরুতর আহত হন নিশাদ। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করেন। 

এ ঘটনায় তার চাচাতো ভাই আসাদুজ্জামান বাদী হয়ে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় একটি মামলা করেন। এ মামলায় সেলিম (৫০) নামের একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

;

তিন ফসলি জমিতে গড়ে উঠছে চালকল, হুমকিতে পরিবেশ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম সিরাজগঞ্জ
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

পরিবেশ আইনের তোয়াক্কা না করে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জের চান্দাইকোনায় ৬৭ শতক তিন ফসলি জমিতে অপরিকল্পিতভাবে বিস্মিল্লাহ চালকল (অটো রাইস মিল) স্থাপনের কাজ চলছে।

চালকলটি চালু হলে মিলের বর্জ্যে ফসলি জমিসহ এলাকার পরিবেশ নষ্ট হবে। চালকলের ধোঁয়া ও ছাইয়ে বয়স্ক ও শিশুরা শ্বাসকষ্টসহ কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ কারণে মিলটি বন্ধের দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে এস.এম সোহাগ নামের এক স্থানীয় কৃষক।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার চান্দাইকোনা বাজারের পাশে জনবসতি এলাকায় পরিবেশ আইন ও নিয়মনীতি না মেনে তিন ফসলি জমিতে রিয়া নামে অটো মিল গড়ে তোলা হয়েছে। এই অটো মিলের অন্তরালে আনোরুল ইসলাম গংরা বিস্মিল্লাহ নামে (অটো রাইস মিল) আরেকটি মিল স্থাপন করছে। এ মিলটি চালু হলে এর বর্জ্য মিশ্রিত দুর্গন্ধযুক্ত পানি, কালো ধোঁয়া ও ছাই বাতাসের সাথে মিশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা, ইউনিয়ন পরিষদ ও পল্লী বিদ্যুৎ সাব-অফিসসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ নষ্ট হবে। একই সঙ্গে স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় জনসাধারণের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে। সেই সাথে নষ্ট হবে তিন ফসলি জমি। এ কারণে অপিরিকল্পিত ভাবে দুটি অটো রাইস মিল বন্ধসহ আইনগত ব্যবস্থার জোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জমির মালিক এস. এম সাগর, আব্দুর রাজ্জাক শেখ, নিজাম উদ্দিন আকন্দ, জহুরুল ইসলাম আকন্দ, মামুন আকন্দ, আবু ওয়াহেদ সোহেল সরকার, আবু হাসেম, দুলাল শেখসহ বেশ কয়েকজন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার রায়গঞ্জ উপজেলায় ছোট বড় মিলিয়ে ১৫০টি চালকল রয়েছে। এরমধ্যে পরিবেশের ছাড়পত্র রয়েছে মাত্র দুটির। বাকি চালকলগুলো অবাধে চলছে। এতে ফসলি জমি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক অঞ্চলে স্থাপনের কারণে পরিবেশের ছাড়পত্র পায়নি অধিকাংশ চালকল। পরিবেশের ছাড়পত্র ও অনুমোদন ছাড়াই দাপটের সঙ্গে ব্যবসা করে চলছে এসব চালকল মালিকরা।

জানা যায়, উপজেলার চান্দাইকোলা ইউনিয়নের মৃত কায়ছার আলী সরকারের ছেলে আনোয়ারুল ইসলাম সরকারসহ প্রভাবশালী ১৫ জন একত্র হয়ে অনুমতি ছাড়াই বিস্মিল্লাহ অটো রাইস মিল নামে একটি বড় মিল তৈরি করেছে।

মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে চোখে পড়ে রিয়া অটোরাইস মিলটি। চালকলটির চারপাশ কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন। ভেতরে ঢুকতেই দেখা গেল, শ্রমিকেরা কাজ করছেন। শ্রমিকদের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতার বালাই নেই। তাঁদের মুখমন্ডলে কালো ছাইয়ের আস্তর পড়ে আছে। চালকলটিতে নেই বর্জ্য পরিশোধনের ব্যবস্থাও। চালকলের সব বর্জ্য ফেলা হচ্ছে পাশের জমিগুলোতে। চুল্লি দিয়ে ধোঁয়ার সঙ্গে তুষের ছাই চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ছে।

চান্দাইকোনা গ্রামের বাসিন্দা হাসান সরকার (৫০) বলেন, মিলের কাছাকাছি ১০ মিনিট দাঁড়ানো যায় না। ছাই উড়তে থাকে পুরো এলাকায়। গাছপালার পাতা কালো হয়ে গেছে। গাছে নতুন করে কোনো ফল ধরে না। এলাকায় শিশু ও বৃদ্ধরা শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে ভুগছে। মিলের ছাই উড়ে আমাদের খাবারের ভিতরে পড়ে সেই খাবার নষ্ট হয়। কিন্তু একই এলাকায় আরেকটি বিস্মিল্লাহ নামে বড় অটো রাইস মিল তৈরী হচ্ছে। এই মিলটি চালু হলে এলাকায় বসবাস করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

একই গ্রামের মৃত কামাল সেখের ছেলে রাজ্জাক শেখ (৫৫) বলেন, রিয়া রাইস মিলের কারণে বর্তমানে বাড়িতে বসবাস করা খুব কষ্টকর হয়ে দাড়িয়েছে। মিলের উড়ন্ত ছাই, তুষ ও কুড়া ঘরের হাঁড়ি-পাতিলে গিয়ে পড়ে। বাড়ি ঘর, গাছপালা ও ফসলি জমি ছাইয়ের আবরণে কালো বর্ণের হয়ে গেছে। মিলের কারণে এ এলাকার অধিকাংশ মানুষ চোখের বিভিন্ন রোগসহ শ্বাসকষ্ট, অ্যাজমা ও চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

মিলের পাশে মুদি দোকানদার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, মিলের উড়ন্ত ছাই, তুষ ও কুড়া রাস্তায় চলাচলকারী পথচারী ও বিভিন্ন গাড়ি চালকদের চোখে পড়ে নানা সমস্যার সৃষ্টি করছে। এতে অনেক সময় রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটছে।

জানতে চাইলে রিয়া অটো রাইস মিলের মালিক আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ‘অটো রাইস মিল চালালে কিছু ক্ষতি হবে, আবার উপকারও হবে। এখানে সব নিয়ম মেনেই মিলটি করা হয়েছে। সবকিছুর অনুমোদন আছে আমাদের। তবে মিলের কিছু সমস্যা আছে। সেগুলো দ্রুত নিরসন করবেন বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে অনুমোদনহীন তৈরী হওয়া বিস্মিল্লাহ চালকল (অটো রাইস মিল) পাটর্নার বাবু সরকার বলেন, আমাদের কোন কাগজপত্র নেই। নির্মাণ কাজ শেষ হলে কাগজপত্র তৈরী করে সকল দপ্তরে আবেদন জমা দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে চান্দাইকোনা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কামরুজ্জামান সরকার অভিযোগ করে বলেন, স্কুল খোলার সাথে সাথে কালো ধোঁয়ায় স্কুলের আশপাশে অন্ধকার হয়ে যায়। এছাড়া অন্যান্য কারণে চরম দুর্গন্ধ হয়।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ভুঁইয়াগাঁতী জোনাল অফিসের (ডিজিএম) ছোলাইমান হোসেন জানান, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া ওই মিলে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া যাবে না। তবে এক মিলের লাইন কৌশলে মালিক পক্ষ যদি অন্য মিলে নিতে চায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৃপ্তি কণা মন্ডল জানান, ওই রাইস মিলের ব্যাপারে স্থানীয়রা লিখিত অভিযোগ করেছে। এ সমস্যা দূর করার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরকে জানানো হবে। পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না পাওয়া পর্যন্ত মিলটি চালু করা যাবে না।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ডিডি) বাবলু কুমার সূত্রধর বলেন, অটো রাইস মিল ও ইটভাটার ধোঁয়া ও ছাই পরিবেশ ও ফসলের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। রায়গঞ্জ উপজেলায় এর প্রভাব বেশি পড়েছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পরিবেশ ও খাদ্য অধিদপ্তরকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।

জেলা খাদ্র নিয়ন্ত্রক এস.এম সাইফুল ইসলাম বলেন, রায়গঞ্জ উপজেলা ছোট-বড় প্রায় ১৫০টি চাল কল আছে। তাদের মধ্যে ২টি চাল কলের অনুমোদন রয়েছে। বাকিগুলো অবৈধ।

তিনি আরও বলেন, বিস্সিল্লাহ ও রিয়া অটো রাইস মিলের কোন অনুমোদন নেই। ফসলী ফমিতে যদি কেউ চাল কল স্থাপন করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

;

জোড়া খুনের মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা ২৪.কম চট্টগ্রাম 
জোড়া খুনের মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার

জোড়া খুনের মামলায় কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি গ্রেফতার

  • Font increase
  • Font Decrease

লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলায় চাঞ্চ্যলকর জোড়া খুনের মামলায় আমৃত্যু কারাদন্ডপ্রাপ্ত প্রধান আসামি ইব্রাহিম খলিলকে (৪৬) গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭ এর সদস্যরা। 

র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-৭ এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) তাপস কর্মকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি থানাধীন তকিরহাট এলাকায় থেকে আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত ইব্রাহিম খলিল লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি উপজেলার আবুল কাশেমের ছেলে।

র‌্যাব-৭ জানায়, ইব্রাহিম খলিল ফেনীর একটি ইটভাটায় মাঝি হিসেবে কাজ করতেন। ইটভাটায় একই গ্রামের বেলাল মাঝির ছেলে ইউসুফ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতো। কাজের সুবাধে বিভিন্ন প্রয়োজনে ইউসুফ প্রায়শই ইব্রাহিমের বাড়িতে যাতায়ত করতো। যাতায়তের এক পর্যায়ে ইব্রাহিমের স্ত্রী ভিকটিম রিনা বেগমের সাথে ইউসুফের অবৈধ সর্ম্পক গড়ে উঠে। 

২০১৭ সালে মে মাসের শেষের দিকে ইউসুফ ইটের ভাটার কাজ ছেড়ে দিয়ে এলাকায় এসে দিন মজুর হিসেবে কাজ করতে থাকেন। একই বছরের ৩ জুন সন্ধ্যায় ইব্রাহিম খলিল ফেনী থেকে বাড়িতে আসেন। এসে তার স্ত্রী ভিকটিম রিনা বেগম ও ভিকটিম ইউসুফকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে ইব্রাহিম ঘরে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে দু’জনকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন। 

পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন ঘটনাস্থল থেকে তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে ৬ জুন নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভিকটিম ইউসুফ এবং রিনা বেগম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যবরণ করেন।

এ ঘটনায় নিহত ইউসুফের স্ত্রী বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর আসামি ইব্রাহিক খলিল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যায়। পরবর্তীতে পুলিশ প্রতিবদেনের ভিত্তিতে বিজ্ঞ আদালত দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে আসামীর অনুপস্থিতিতে আমৃত্যু সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।

র‌্যাব-৭ এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) তাপস কর্মকার বলেন, ‘আমৃত্যু সশ্রম কারাদন্ডের সাজাপ্রাপ্ত আসামি ইব্রাহিম খলিলকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু করে র‌্যাব। একপর্যায়ে ফটিকছড়ি তকিরহাট থেকে আত্নগোপন থাকা ইব্রাহিমকে গ্রেফতার করা হয়। ইব্রাহিম স্বীকার করেন তিনি জোড়া খুন মামলায় আমৃত্যু সশ্রম কারাদন্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে অতিরিক্ত ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি।

গ্রেফতারকৃত আসামি সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান এই র‌্যাব কর্মকর্তা।

;