ঐতিহাসিক গণ অভ্যুত্থান দিবস আজ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ ২৪ জানুয়ারি, ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থান দিবস। ১৯৬৯ সালের এই দিনে তৎকালীন পাকিস্তানের স্বৈরাচারী আইয়ুব সরকার আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার করে প্রধান আসামি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সব আসামিকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।

১৯৬৬ সালে মুক্তিকামী নিপীড়িত জনগণের পক্ষে জাতির মুক্তি সনদ খ্যাত ৬ দফা এবং পরবর্তীতে ছাত্র সমাজের দেয়া ১১ দফা কর্মসূচির প্রেক্ষাপটে সংঘটিত হয়েছিল এ গণঅভ্যুত্থান।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

দেশের স্বাধিকার আন্দোলনে যারা শহিদ হয়েছেন, তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, বাংলাদেশের স্বাধিকার ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় ১৯৬৯ সালের ২৪ জানুয়ারি একটি ঐতিহাসিক দিন। এ দিনটি গণঅভ্যুত্থান দিবস হিসেবে আমাদের মুক্তিসংগ্রাম ও স্বাধিকার আন্দোলনের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে।

প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে এক তাৎপর্যপূর্ণ অধ্যায়। বাহান্নর ভাষা আন্দোলন, বাঙালির মুক্তি সনদ ৬ দফা, পরবর্তীকালে ১১ দফা ও ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করেছি মহানস্বাধীনতা। পেয়েছি স্বাধীন-সার্বভৌমরাষ্ট্র বাংলাদেশ।

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে বাঙালির দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত বাঙালির মুক্তির সনদ ৬-দফা ভিত্তিক গণ-আন্দোলনের আদর্শকে ধারণ করে অগ্রসরমান সংগ্রামের পথপরিক্রমায় ১৯৬৯ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়নসহ প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেন এবং ১১-দফা দাবি ঘোষণা করেন।

এই ১১-দফা দাবির মূলভিত্তি ছিল বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ৬-দফা। ৬-দফা ভিত্তিক ১১-দফা দাবিতে ছাত্রসমাজের সমস্যাকেন্দ্রিক দাবি-দাওয়ার পাশাপাশি কৃষক ও শ্রমিকদের স্বার্থ সংক্রান্ত দাবিসমূহ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই আন্দোলনের অন্যতম প্রধান দাবি ছিল আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ রাজবন্দিদের মুক্তি। ৬-দফা এবং পরবর্তীতে ১১-দফা কর্মসূচির প্রেক্ষাপটে সংঘটিত হয় ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান। ’৬৯-এর ১৭ জানুয়ারি ছাত্রনেতারা দেশব্যাপী সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটের ডাক দিলে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনেম খান ছাত্র আন্দোলন দমনের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে।

সরকারি নিপীড়নের প্রতিবাদে ২০ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ছাত্রসভা ও প্রতিবাদ মিছিলের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এ মিছিলে পুলিশের গুলিতে ছাত্রনেতা আমানুল্লাহ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান (আসাদ) নিহত হলে আন্দোলন আরও তীব্র হয়। শহীদ আসাদের আত্মদানের পর ২১, ২২ ও ২৩ জানুয়ারি শোক পালনের মধ্য দিয়ে সর্বস্তরের জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ২৪ জানুয়ারি অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানের সৃষ্টি হয়।

পাকিস্তানি সামরিক শাসন উৎখাতের লক্ষ্যে ১৯৬৯ সালের ২৪ জানুয়ারি সংগ্রামী জনতা শাসকগোষ্ঠীর দমন-পীড়ন ও সান্ধ্য আইন ভঙ্গ করে মিছিল বের করে। মিছিলে পুলিশের গুলিবর্ষণে এদিন ঢাকায় সচিবালয়ের সামনের রাজপথে নবকুমার ইনস্টিটিউটের নবম শ্রেণির ছাত্র কিশোর মতিউর রহমান ও রুস্তম শহীদ হন। প্রতিবাদে সংগ্রামী জনতা সেদিন সচিবালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। বিক্ষুব্ধ জনগণ আইয়ুব-মোনেম চক্রের দালাল, মন্ত্রী, এমপিদের বাড়িতে এবং তাদের মুখপত্র হিসাবে পরিচিত তৎকালীন দৈনিক পাকিস্তান ও পাকিস্তান অবজারভার অফিসে আগুন লাগিয়ে দেয়। ঢাকার পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

এরপর ১৫ ফেব্রুয়ারি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্ত সার্জেন্ট জহুরুল হক বন্দি অবস্থায় ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে নিহত হলে প্রতিবাদমুখর হয়ে বাংলার জনগণ। ১৮ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. শামসুজ্জোহা নিহত হলে সান্ধ্য আইন উপেক্ষা করে রাজপথে নেমে আসে ছাত্র-জনতা। গণঅভ্যুত্থানের প্রবল চাপে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবসহ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অভিযুক্তগণ এবং নিরাপত্তা আইনে আটক ৩৪ জন নেতৃবৃন্দকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় স্বৈরশাসক আইয়ুব খান। ২৩ ফেব্রুয়ারি লাখো জনতার উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের পক্ষ থেকে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করা হয়। ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সামরিক স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের পতন ঘটে। সেই থেকে ২৪ জানুয়ারি গণঅভ্যুত্থান দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় বকশীবাজারস্থ নবকুমার ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে শহীদ মতিউর রহমানের স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে আওয়ামী লীগ।

দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যথাযথভাবে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে সংশ্লিষ্ট সকলকে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন।

৩ দিনের ছুটি ৭ মাসেও শেষ হয়নি কর্মকর্তার!



মোঃ আব্দুল হাকিম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পারিবারিক কাজে ৩ দিনের ছুটি নিয়েছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মো: আবুরেজা তালুকদার। ছুটি শেষও হয়েছে। কিন্তু গত সাত মাসেও কর্মস্থলে যোগ দেননি তিনি। দু’দফা তলব করেও এই কর্মকর্তাকে ফেরাতে পারেনি বিভাগীয় প্রাণীসম্পদ দপ্তর। মাঝে বেতন আটকে গেলে ভুয়া স্মারকের চিঠিতে বেতন আবেদন করে ধরা পড়ে যান এই কর্মকর্তা।

বিভাগীয় ও জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়, সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ডাঃ মো: আবুরেজা তালুকদার গত বছরের আগস্টের ১৫ থেকে ১৭ তারিখ মোট তিন দিনের ছুটি নিয়েছিলেন। পারিবারিক জরুরি কাজ জানিয়ে কর্মস্থল ত্যাগ করেন। তার অনুপস্থিতিতে একই অফিসের এলএইও ডাঃ শামীমা নাসরিনকে সাধারণ দায়িত্ব পালন করতে বলেন। ১৭ দিন পেরিয়ে গেলে সেপ্টেম্বরের ৪ তারিখে গণকর্মচারী শৃঙ্খলা (নিয়মিত উপস্থিতি) অধ্যাদেশ, ১৯৮২ অনুযায়ী কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান। একইসাথে বিভাগীয় ও প্রাণিসম্পদ মহাপরিচালক বরাবর ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান তিনি। কিন্তু কোন সদুত্তর মেলেনি।

সূত্র জানায়, নিয়ম বর্হিভূত কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত ১৯তম বিসিএসের এই কর্মকর্তা।

একই অফিসের দুই কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিষয়ে ভুয়া অভিযোগ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর। সেটা করেন ভুয়া স্মারক ব্যবহার করে যা সম্পর্কে জানেন না জেলা, বিভাগীয় কিংবা খোদ প্রাণিসম্পদের মহাপরিচালক।

একাধিকবার কৈফিয়ত চাওয়া হলেও উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে কোনো জবাব দেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেন নি তিনি। উল্টো দিয়েছেন হুমকি। সে বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর কর্মচারী শৃঙ্খলা (নিয়মিত উপস্থিতি) অধ্যাদেশ, ২০১৭ অনুযায়ী বিভাগীয় মামলা হতে পারে বলে সতর্ক করেন ও তিন দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান।

সর্বশেষ হাল ছেড়ে বিভাগীয় কর্মকর্তা ড. নজরুল ইসলামের কাছে ডাঃ মো: আবুরেজার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান এই কর্মকর্তা। তবে, মুখ খুলতে নারাজ অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

দপ্তরের অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো: তরিকুল ইসলাম জানান বলেন, “উনারা বড় মাপের মানুষ। এসপি আছে, ডিসি আছে, প্রাণিম্পদের সচিব আছে। আমাদের কে আছে? আমাদের হুকুম করলে করতে হয়। ভুয়া স্মারক ব্যবহার, অফিস করেন না, দূর্নীতি যা কিছু আছে সেসব বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।”

এবিষয়ে একই দপ্তরের এলএইও ডাঃ শামীমা নাসরিন বলেন, “স্যার গতবছরের আগস্টে তিন দিনের ছুটি নিয়ে এখন পর্যন্ত একদিনও অফিস করেননি। প্রকল্পের কাজ যখন আটকে গিয়েছিল তখন ভেটেরিনারি সার্জন ডাঃ মো: আখতারুজ্জামানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি কাজগুলো করিয়ে নেন। আমরা এভাবেই কাজ করে যাচ্ছি সমস্যার মধ্য দিয়ে। স্যার কোথায় আছেন আমরা জানিনা।”

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমানকে বলেন, ডাঃ মো: আবুরেজার বিষয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। গতবছরের আগস্টের ১৫ থেকে ১৭ তারিখ মোট তিন দিনের ছুটি নিয়ে বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত ছিলেন।

চলতি মার্চ মাসের ১৩ তারিখে যোগদান করে আবার ছুটি নিয়েছেন। দীর্ঘ সময়ে একদিনের জন্যও চেয়ারে বসেননি। বারবার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। শাস্তির বিষয়ে চাকরি থাকবে কিনা যাবে তা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. নজরুল ইসলাম বলেন, ডাঃ মো: আবুরেজার বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত আছেন। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোস্তাফিজুর রহমান একাধিকবার নোটিশ ও কৈফিয়ত তলব করেছেন তাতে কোন কাজ হয়নি।

এছাড়া ভুয়া স্মারক ব্যবহার করে বেতনভাতা তোলার চেষ্টা করে বিভ্রান্তি করার চেষ্টা করেছেন। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে অধীনস্ত কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর যা সম্পূর্ণ অপরাধ।

বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিতির শাস্তি সম্পর্কে জানতে চাইলে এই কর্মকর্তা বলেন, সরকারি কর্মচারী ( শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৭, সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ১৯৭৮ এবং গণকর্মচারী শৃঙ্খলা (নিয়মিত উপস্থিতি) অধ্যাদেশ, ১৯৮২ অনুযায়ী সম্পূর্ণ শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বিভাগীয় মামলা হতে পারে ও বিনা বেতনে চাকরি বলে গণ্য হবে। এছাড়া বিভাগীয় মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত হতে পারে।

এ কর্মকর্তার অনুপস্থিতির বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডাঃ মোহাম্মদ রেয়াজুল হক জানান, বিনা অনুমতিতে অনুপস্থিত হওয়ার কোন নিয়ম নাই। এজন্য শাস্তি ভোগ করতে হবে। অনুপস্থিত হওয়ার কারণ ব্যখ্যা দিবে। যদি সন্তোষজনক কোন ব্যখ্যা দিতে না পারে তাহলে দপ্তরের নিয়মানুযায়ী শাস্তি দেওয়া হবে। পদাবনতি হতে পারে, পদোন্নতি আটকে থাকতে পারে অনেক কিছুই শাস্তির ব্যবস্থা আছে সেগুলো আমরা করব।

;

ঝালকাঠিতে বৈদ্যুতিক খুটির সাথে বাসের ধাক্কা, নিহত ২



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় সড়কের পাশের বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে বিআরটিসি বাসের ধাক্কায় বাসের সুপারভাইজার ও এক যাত্রী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ১৩ জন। আহতদের পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস উদ্ধার করে ভাণ্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন।

 শুক্রবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে বরিশাল-পাথরঘাটা আঞ্চলিক মহাসড়কের উপজেলার কানুদাশকাঠি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন বিআরটিসি বাসের সুপারভাইজার মেহেদী হাসান ও যাত্রী পাভেল।

পুলিশ ও আহতরা জানান, বরিশাল থেকে যাত্রী নিয়ে পাথরঘাটার উদ্দেশে সকালে যাত্রা শুরু করে বাসটি। বাস ছাড়ার পর চালক ও হেলপার, সুপারভাইজারদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয় কয়েক দফায় এবং চালক বেপরোয়া গতিতে বাসটি চালাচ্ছিলেন। কানুদাশকাঠি এলাকায় চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে সড়কের পাশের বৈদ্যুতিক খুটি ও গাছের সাথে বাসটির ধাক্কা লাগে। এতে বাসের সামনের অংশ দুমড়ে মুচরে যায়। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন বাসের ড্রাইভার সাবু মোল্লা (৪০), সাথী (৩৩), ইমু (২০), মোমেনা (৪৫), তানজিলা (৩১), অমল দেবনাথ (৫৮), মন্টু হাওলাদার (৫৫), শহিদুল খান (৫৭), রাহুল (৪০), জাহানারা বেগম (৫৫), কবির মোল্লা (৩৫), কাওছার (৩২) ও রিতা দেবনাথ (৩৫)। আহতদের মধ্যে দুজনকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। চারজনকে ভাণ্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।

ভাণ্ডারিয়া ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী কর্মকর্তা আব্দুস সোবাহান বলেন, দুর্ঘটনায় বিআরটিসি বাসের সুপারভাইজার মেহেদী ও পাভেল নামে বাসের এক যাত্রী নিহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

রাজাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) পুলক চন্দ্র রায় জানান, ঘটনাস্থলেই সুপারভাইজার ও এক বাস যাত্রী নিহত হন এবং ১০/১২ জন যাত্রী আহত হন। দুর্ঘটনায় যান চলাচল বন্ধ হলে পুলিশ তাৎক্ষণিক যান চলাচলের ব্যবস্থা করে। লাশ উদ্ধার করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

;

আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলনে বাংলাদেশ সহ-সভাপতি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতিসংঘের আয়োজনে প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলন। এতে সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ।

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে সম্মেলনের উদ্বোধনকালে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।

জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিগত ৫০ বছরে জাতিসংঘ আয়োজিত এটি প্রথম আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলন। জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গ-সংস্থাসমূহ, সদস্য রাষ্ট্র এবং অন্য সব অংশীজনের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে বৈশ্বিক পানি বিষয়ক কর্মসূচির বাস্তবায়নে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জনই সম্মেলনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।

এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল মুহিত বলেছেন, সহ-সভাপতি পদে বাংলাদেশকে নির্বাচিত করা জাতিসংঘের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের দক্ষ নেতৃত্বের ওপর বিশ্ব সম্প্রদায়ের গভীর আস্থারই প্রতিফলন।

তিনি বলেন, সহ-সভাপতি পদে নির্বাচিত হওয়ায় বৈশ্বিক পানি বিষয়ক এজেন্ডায় আমাদের জাতীয় অগ্রাধিকারগুলো অর্জনের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বাড়ানোর পথ প্রশস্ত হবে।

একই সঙ্গে এ অর্জন বাংলাদেশকে টেকসই উন্নয়নের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে সম্মত পানি বিষয়ক লক্ষ্যসমূহ অর্জনে বিশ্বব্যাপী চলমান প্রচেষ্টাকে আরও বেগবান করার নেতৃত্ব দানে সহায়তা করবে বলেও উল্লেখ করেন মুহিত।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের নেতৃত্বে এ সম্মেলনে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকসহ ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নিচ্ছে।

বৃহস্পতিবার থেকে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে শুরু হওয়া এ পানি সম্মেলন চলবে আগামী ২৪ মার্চ পর্যন্ত। এতে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধান ও মন্ত্রী পর্যায়ের প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন।

;

রমজানে নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখার আহ্বান এফবিসিসিআই’র



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রমজানে তেল, চিনি, ছোলাসহ সব ধরণের নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে খুচরা ও পাইকারি ব্যবাসয়ী, উৎপাদনকারী, আমদানিকারক এবং বাজার কমিটিগুলোকে আহ্বান জানিয়েছে দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।

বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রমজান উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি, মজুদ, সরবরাহ, বাজার পরিস্থিতি ও বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সাথে মতবিনিময় সভায় এই আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

তিনি বলেন, বাজার স্থিতিশীল রাখতে ইতিমধ্যে সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এক্ষেত্রে ভোক্তা এবং ব্যবসায়ীদেরও দায়িত্বশীল হতে হবে। ভোক্তাদের যেমন প্রয়োজনের অতিরিক্ত কেনাকাটা থেকে বিরত থাকতে হবে, ব্যবসায়ীদেরও অতি মুনাফা করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

কোন ব্যবসায়ী যেন ভোক্তাদের কাছ থেকে পণ্যের অযৌক্তি দাম আদায় করতে না পারে সে বিষয়ে বাজার কমিটিগুলোকে তৎপর থাকার আহ্বান জানান মো. জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, আমরা চাই না ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর অভিযান চালিয়ে ব্যবসায়ীদের হেনস্তা করুক। পণ্য ক্রয়-বিক্রয় ও মজুদ বিষয়ে সরকারের নিয়মনীতি রয়েছে। এসব বিষয়ে সাধারণ ব্যবসায়ীদের সচেতন করতে বাজার কমিটিগুলো উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। কোন পণ্যের সরবরাহ বিঘ্নিত হলে আমাদের জানান, আমরা সহযোগিতা করবো।

কোন বাজারে অযৌক্তিক মূল্যে পণ্য ক্রয়-বিক্রয় হলে এবং এ বিষয়ে বাজার কমিটির উদাসীনতা দেখা গেলে সরকার কমিটির লাইসেন্স বাতিল করবে জানিয়ে সবাইকে সতর্ক করেন এফবিসিসিআই সভাপতি।

কোন অসাধু ব্যবসায়ীদের দায় এফবিসিসিআই নেবে না বলেও সভায় জানান এফবিসিসিআই সভাপতি।

এ সময় এফবিসিসিআই এর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে দ্রব্যমূল্য যা বৃদ্ধি পাওয়ার পেয়েছে। রমজানকে কেন্দ্র করে এই দাম যেন নতুন করে না বাড়ে। আমরা বাজারে খোঁজ নিয়ে জেনেছি চিনি, ভোজ্যতেলসহ অন্যান্য নিত্য পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। পাইপলাইনেও (আমদানি পর্যায়ে) যথেষ্ট পণ্য রয়েছে। গত বছর ঈদের আগে বাজারে যে বিশৃঙ্খলা হয়েছিলো, এবার যেন তার পুনরাবৃত্তি না হয়।

মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে ভোজ্যতেল এবং চিনি উৎপাদনকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা জানান, রমজারে চাহিদার বিপরীতে দেশে পণ্য দুটির পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। কারখানা পর্যায়ে জ্বালানি সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে এসব পণ্যের কোন ঘাটতি হবে না।

এ সময় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ জানান, নিত্যপণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে পাইকারি বাজার কিংবা মিলগেট থেকে রশিদ প্রদান না করায় ভ্রাম্যমান আদালতের জরিমানার মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।

আড়ত ও মিলগেটে পণ্য কেনা-বেচার ক্ষেত্রে রশিদ বাধ্যতামূলক করার বিষয়টি বাস্তবায়নে সরকারের সাথে জোরালোভাবে কাজ করা হবে বলে জানায় এফবিসিসিআই।

মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, এফবিসিসিআই -এর সহ-সভাপতি এম এ মোমেন, মোঃ আমিন হেলালী, পরিচালক এম.জি.আর নাসির মজুমদার, বিজয় কুমার কেজরিওয়াল, হাফেজ হারুন, মোহাম্মদ বজলুর রহমান, আবু হোসেন ভূইয়াঁ রানু, আক্কাস মাহমুদ, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিনসহ অন্যান্য ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ।

;