শান্তির সোপান গড়ার ক্ষেত্রে শিল্প-সংস্কৃতির বিকল্প নেই: প্রধানমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি মনে করেন সংঘাতের বিপরীতে শান্তির সোপান গড়ার ক্ষেত্রে শিল্প-সংস্কৃতি চর্চার কোন বিকল্প নেই। শান্তি প্রতিষ্ঠা ছাড়া রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য প্রতিষ্ঠা অসম্ভব।

বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) থেকে শুরু হচ্ছে ‘১৯তম দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী-২০২২’। এ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।

তিনি বলেন, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি একমাসব্যাপী ‘১৯তম দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী বাংলাদেশ ২০২২’ আয়োজন করছে জেনে তিনি অত্যন্ত আনন্দিত। বিশ্বের দীর্ঘকালব্যাপী চলমান প্রদর্শনীগুলোর মধ্যে অন্যতম এই আয়োজনে ১১৩টি দেশের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ বাঙালি জাতিকে গৌরবান্বিত করেছে।

প্রধানমন্ত্রী এই প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী দেশি-বিদেশি সকল শিল্পী, লেখক, কিউরেটর এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে পেশাদার কর্মীদের আন্তরিক অভিবাদন ও ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, শিল্পের দিগন্ত ক্রমপ্রসারমান। গত এক দশকেরও বেশি সময় জুড়ে দ্বিবার্ষিক এশীয় প্রদর্শনী বৈশ্বিক মাত্রা পেয়েছে, এতে সারা বিশ্বের গুণী শিল্পীদের অংশগ্রহণের সুযোগ হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের উদ্যোগে এই প্রদর্শনী আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক শিল্পী এবং তাদের বৈচিত্র্যময় শিল্পভাষার সাথে আমাদের দেশীয় সংস্কৃতির টেকসই সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্র তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান পৃথিবীর ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে যুদ্ধ-বিবাদ-সংঘাত নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতির পিতার মহান আদর্শ এবং আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সম্মিলনে বাংলাদেশ যুদ্ধের প্রতি সমর্থন পরিহার করে বিশ্বশান্তির প্রচার ও প্রসারে জাতিসংঘসহ নানা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ফোরামে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত সংবিধানে স্বাধীন জাতি-রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রথম এবং শক্তিশালী ভিত্তি হিসেবে বাঙালি জাতীয়তাবাদকে উল্লেখ করেছেন, যা হাজার বছরের শিল্প-সংস্কৃতি চর্চার মধ্য দিয়ে একটি স্বতন্ত্র সত্তায় বিকশিত হয়েছে। তিনি আমাদের জাতীয় সংস্কৃতি বিকাশের ধারা অব্যাহত রাখতে ‘বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি আইন, ১৯৭৪’ প্রণয়ন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। জাতির পিতার সন্তান হিসেবে আমরা সকল ভাই-বোন শিল্প- সংস্কৃতির কোন না কোন শাখায় প্রশিক্ষণ নেওয়া এবং চর্চা করার সুযোগ পেয়েছি।’ আমার ছোট ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন শেখ কামালের শিল্প-প্রতিভা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

শেখ হাসিনা বলেন. শেখ কামাল ছিলেন সংস্কৃতি জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তিনি অভিনয় করতেন, গান গাইতেন, এবং সেতার বাজাতেন। তিনি আন্তঃকলেজ সেতার প্রতিযোগিতায় পুরো পাকিস্তানে রানার্স-আপ এবং আন্তঃকলেজ সংগীত প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছিলেন। দেশ স্বাধীনের পূর্বেই তিনি ‘মৃদঙ্গ’ নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৭২ সালের ১৭ জানুয়ারি স্পন্দন শিল্পীগোষ্ঠী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সংগীত ক্ষেত্রে তিনি 'ট্যালেন্ট শো’ প্রবর্তন করেছিলেন। আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় নাট্য প্রতিযোগিতায় তিনি প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কৃতি সংসদ থেকে ১৯৭২ সালের এপ্রিলে কলকাতায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সংস্কৃতি বিনিময় মেলায় অংশগ্রহণ করে সেখানে তিনি শহিদ মুনীর চৌধুরী অনূদিত জর্জ বার্নাড শ-এর লেখা ‘কেউ কিছু বলতে পারে না’ নাটকের মূখ্য চরিত্রে অভিনয় করে ব্যাপক সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন।

দ্বিবার্ষিক চারুকলা প্রদর্শনী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে উষ্ণ অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি শিল্পকলার অঙ্গনে সৃষ্টিশীলতা ও বুদ্ধিবৃত্তির বিকাশে এই প্রদর্শনীটি মাইলফলক অর্জন হিসেবে বিবেচিত হবে। প্রধানমন্ত্রী ‘১৯তম দ্বিবার্ষিক এশীয় চারুকলা প্রদর্শনী ২০২২’-এর সর্বাঙ্গীণ সফলতা কামনা করেন।

   

স্বচ্ছতার সাথে সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্র বাছাই করা হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারি অনুদান প্রদানের জন্য স্বচ্ছতা ও সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে চলচ্চিত্র বাছাইয়ের কার্যক্রম শুরু করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়। এ লক্ষ্যে প্রথমবারের মতো পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদানের স্ক্রিপ্ট বাছাই কমিটির সামনে প্রস্তাবিত চলচ্চিত্রগুলো নিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা শুরু হয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে অনুদান প্রাপ্তির জন্য আবেদনকৃত মোট ১৯৫টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রের মধ্য থেকে প্রাথমিকভাবে বাছাইকৃত ৪৫টি চলচ্চিত্রের পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) বিকেলে সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

এ দিন পাওয়ার পয়েন্ট উপস্থাপনা দেখে চলচ্চিত্রগুলোকে স্ক্রিপ্ট বাছাই কমিটির সদস্যরা গোপনীয়ভাবে আলাদা আলাদা নম্বর প্রদান করেছেন। এ সময় চলচ্চিত্র অনুদান কমিটির সদস্যরাও পর্যবেক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী বলেন, স্বচ্ছতা ও সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সাথে সরকারি অনুদানের চলচ্চিত্র বাছাই করা হবে। সরকারি অনুদানে চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে সরকার আরও পেশাদারিত্ব নিশ্চিত করতে চায়। স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক প্রক্রিয়ায় যাতে চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য অনুদান প্রদান করা হয়, সে ব্যাপারে সরকার সচেষ্ট। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা যাতে অনুদানের জন্য বাছাই প্রক্রিয়ায় যুক্ত হতে পারেন, সরকার সেটিও নিশ্চিত করতে চায়।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাছাই কমিটির সদস্যগণ আন্তর্জাতিকভাবে প্রচলিত বিভিন্ন মানদন্ডের উপর ভিত্তি করে আবেদনকৃত চলচ্চিত্রের প্রস্তাবনার উপর আলাদা আলাদা ভাবে নম্বর প্রদান করছেন। পরবর্তীতে সকল সদস্যদের নম্বরগুলো গড় করে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া আবেদনগুলো অনুদানের জন্য বিবেচিত হবে। সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার স্বার্থে এ ধরণের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকার, যুগ্ম সচিব মো. কাউসার আহাম্মদ, উপসচিব মো. সাইফুল ইসলাম, পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদানের স্ক্রিপ্ট বাছাই কমিটির সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রিফফাত ফেরদৌস, চলচ্চিত্র নির্মাতা মো. মুশফিকুর রহমান গুলজার, অভিনেত্রী ফাল্গুনী হামিদ ও আফসানা মিমি, পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র অনুদান কমিটির সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড.আবু জাফর মো. শফিউল আলম ভূঁইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার ও পারফরম্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ও অভিনেত্রী ওয়াহিদা মল্লিক জলি, স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা মতিন রহমান, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা কাজী হায়াৎ, চলচ্চিত্র নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী চলচ্চিত্রের উপস্থাপনায় উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, চলচ্চিত্র শিল্পে মেধা ও সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করা এবং বাংলাদেশের আবহমান সংস্কৃতি সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মানবীয় মূল্যবোধসম্পন্ন জীবনমুখী, রুচিশীল ও শিল্পমানসমৃদ্ধ চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও সহায়তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি অনুদান প্রদান নীতিমালা, ২০২০ (সংশোধিত)–এর ভিত্তিতে সরকারি অনুদান প্রদান করা হয়।

;

দাঁড়িয়ে থাকা বাসে পিকআপের ধাক্কা আহত ১০ পোশাক কর্মী



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদের ছুটি শেষে পিকআপে কর্মস্থলে ঢাকায় ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনআহত হয়েছেন ১০ জন পোশাক কর্মী। আহতদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) ভোর ৫টার দিকে টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব-ভূঞাপুর-এলেঙ্গা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঘাটাইলের সিংগুরিয়া ঈদগাঁ মাঠ সংলগ্ন স্থানে এই ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন, গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মকবুল হোসেনের ছেলে মো. শহীদ (৩৪), তার স্ত্রী মোছা. ফেরদৌসী (২৮), শহীদুল ইসলামের ছেলে পলাশ (২৫) এবং একই জেলার সাঘাটা উপজেলার আব্দুল হাইয়ের ছেলে মামুন (২৪)। অন্যান্য আহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তারাও একই জেলার বাসিন্দা।

স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার ফজর নামাজের আগে সিংগুরিয়া মসজিদের সামনে ঢাকাগামী হানিফ পরিবহন নামে একটি বাস দাঁড় করিয়ে রাখা ছিল। ভোর ৫টার দিকে ঢাকাগামী ৮ থেকে ১০ জন যাত্রী নিয়ে একটি পিকআপ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পেছন থেকে বাসটিকে ধাক্কা দেয়।

এতে ঘটনাস্থলে একই পরিবারের ৫ জনসহ কমপক্ষে ১০ জন গুরুতর আহত হয়। পিকআপে থাকা অন্যরা হালকা আঘাত পায়। তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। পরে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ খবর পেয়ে আহতদের উদ্ধার করে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্স ও টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

ভূঞাপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের লিডার মো. স্বপন আলী এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গ থেকে ছেড়ে আসা হানিফ পরিবহন নামে একটি বাস ঢাকা যাচ্ছিল। বাসটি যাত্রীদের ফজর নামাজের জন্য সিংগুরিয়া ঈদগাঁ মাঠ সংলগ্ন মসজিদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ যাত্রীবোঝাই একটি পিকআপ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটিকে ধাক্কা দেয়। এতে পিকআপে থাকা সবাই আহত হন।

তিনি আরও বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছে এবং আহত অবস্থায় ৪ জনকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইলের জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করি। এরআগে আমরা পৌঁছানোর আগে স্থানীয়রা অপর আহত ৫ জনকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে প্রেরণ করেন।

ঘাটাইল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. রুবেল রানা সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, যাত্রীদের ফজর নামাজের জন্য হানিফ পরিবহন নামে বাসটি মসজিদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ একটি পিকআপ পেছন থেকে বাসটিকে ধাক্কা দেয়। এতে পিকআপে থাকা ৮ থেকে ১০ জন যাত্রী আহত হয়। এদের মধ্যে কেউ ভূঞাপুর, কালিহাতী ও টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

;

কটিয়াদীতে শসার দামে ধস, দুশ্চিন্তায় চাষিরা



ছাইদুর রহমান নাঈম, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, কটিয়াদী ( কিশোরগঞ্জ)
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে শসার দামে ধস নেমেছে। ক্রমেই কমছে এই সবজির দাম। ফলে শসা চাষিদের দুশ্চিন্তা বেড়েছে। অথচ কদিন আগেও তা ছিলো চড়া দাম। কয়েকদিন আগে শেষ হয়েছে পবিত্র মাহে রমজান। এরপর পবিত্র ঈদুল ফিতর ও নববর্ষের আমেজও শেষের দিকে। কটিয়াদীতে চলতি মৌসুমে শসার ফলন ভালো হলেও হঠাৎ দাম কমাতে হতাশ হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা।

যে শসা কিছু দিন আগেও পাইকাররা ক্ষেত থেকে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে কিনেছেন এখন ৩-৫ টাকা কেজি দরেও কিনতে রাজি হচ্ছেন না তারা। নদীর বাঁধ বাজারে শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) প্রতি কেজি শসা খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৬ -৮ টাকায়। পাইকারি ৩-৫ টাকা কেজি। দাম কমে যাওয়ায় হতাশ চাষিরা। অন্যদিকে খুশি নিম্ন আয়ের মানুষ।

কটিয়াদী উপজেলার কয়েকটি সবজি বাজারে ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি দোকানে কম বেশি শসার সরবরাহ রয়েছে। তবে ক্রেতা না থাকায় প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ৭-৮ টাকা কেজি দরে। রমজান মাসেও এই শসার কেজি ছিল ৬০-৭০ টাকা কেজি । তখন অনেক ক্রেতাই কিনতে পারেন নি। এখন দাম কমে যাওয়ায় অনেকেই কিনছেন এই শসা।

জালালপুর ইউনিয়নের ফেকামারা গ্রামের শসা চাষি জমির মিয়া বলেন, এ বছর তিনি এক একর জমিতে শসার আবাদ করেছেন। খরচ হয়েছে এক লাখ বিশ হাজার টাকা। এখন যে দাম, তাতে শ্রমিকদের মজুরি খরচ উঠবে না। শসার বাজার নিয়ে বর্তমানে তিনি অনেক দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।

শসা বিক্রেতা জসিম উদ্দিন বলেন, রমজান মাসে সরবরাহ কম থাকায় দাম বেশি ছিল। এখন সরবরাহ অনেক বেশি তাই দাম কম। তবে দাম কম হলেও বাজারে শসার ক্রেতা কম। এছাড়া অন্যান্য সবজির দামও অনেক কম। ক্রেতারা সাধ্যমতো কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

নদীর বাঁধ বাজারে সবজি কিনতে আসা আব্দুর রহিম বলেন, দাম এখন অনেকটা হাতের নাগালেই আছে। রমজান মাসের তুলনায় দাম অনেক কম। দাম কম থাকলেও বাকি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম অনেক চড়া। রমজান মাসে তো হাতই দেয়া যাচ্ছিলো না শসায়। এখন রমজান শেষ ও আমদানি বাড়ায় দাম কমেছে। শসা কিনেছি ডাল দিয়ে রান্না করে খাব বলে।

;

চলে গেলেন জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস



ডেস্ক রিপোর্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলে গেলেন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অন্যতম নকশাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শিব নারায়ণ দাস (৭৮)। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের অবিস্মরণীয় এক পর্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা শিব নারায়ণ দাসের মৃত্যুর মধ্য দিয়ে জীবন্ত এক ইতিহাসের পরিসমাপ্তি ঘটলো। 

সম্প্রতি অসুস্থতা নিয়ে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন শিব নারায়ণ দাস। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকদের পরামর্শে দ্রুত তাকে বিএসএমএমইউতে স্থানান্তর করা হয়। 

কুমিল্লায় জন্ম নেওয়া শিব নারায়ণ দাসের পিতা আয়ুর্বেদীয় চিকিৎসক সতীশচন্দ্র দাস ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানি সেনাদের হাতে হাতে নির্মমভাবে নিহত হন। শিব নারায়ণের স্ত্রী গীতশ্রী চৌধুরী এবং তাদের সন্তান অর্ণব আদিত্য দাস।

৬ জুন, ১৯৭০ সাল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকবাল হলের (বর্তমান শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) ১১৬ নং কক্ষে রাত ১১টার পর বাংলাদেশের পুরো পতাকার নকশা সম্পন্ন করেন শিব নারায়ণ দাস। এ পতাকাই পরবর্তীতে ১৯৭১ এর ২ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় উত্তোলিত হয়। ১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবসে সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানের জাতীয় পতাকার পরিবর্তে শিব নারায়ণ দাশের নকশা করা বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়।

ইতিহাস পাঠে জানা যায়, ১৯৭০ সালের ৬ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ইকবাল হলের ১০৮ নম্বর কক্ষে ছাত্রলীগ নেতা আ স ম আবদুর রব, শাহজাহান সিরাজ, কাজী আরেফ আহমদ, মার্শাল মনিরুল ইসলাম প্রমূখ পতাকার পরিকল্পনা নিয়ে বৈঠকে বসেন। যেখানে অন্যান্যদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা শিবনারায়ন দাসও।  

ঐতিহাসিক সেই সভায় কাজী আরেফের প্রাথমিক প্রস্তাবনায় সর্বসম্মতিতে সবুজ জমিনের ওপর লাল সূর্যের মাঝে হলুদ রঙের বাংলার মানচিত্র খচিত পতাকা তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। কামরুল আলম খান (খসরু) তখন ঢাকা নিউ মার্কেটের এক বিহারী দর্জির দোকান থেকে বড় এক টুকরো সবুজ কাপড়ের মাঝে লাল একটি বৃত্ত সেলাই করে এনে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের কায়েদে আজম হল এর ৩১২ নম্বর কক্ষের এনামুল হকের কাছ থেকে অ্যাটলাস নিয়ে ট্রেসিং পেপারে আঁকা হলো পূর্ব পাকিস্তানের মানচিত্র। শিবনারায়ণ দাস পরিশেষে তার নিপুণ হাতে মানচিত্রটি আঁকলেন লাল বৃত্তের মাঝে। রচিত এই পতাকাই কিছুদিন পর স্বীকৃতি লাভ করে বাংলাদেশের প্রথম পতাকা হিসেবে। মুক্তিসংগ্রামের উত্তাল দিনগুলিতে জনতার হাতে হাতে এই পতাকা বাঙালির আত্মপরিচয়কে মূর্ত করে তুলে। 

১৯৭১ সালের ২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবসে সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে পাকিস্তানের জাতীয় পতাকার পরিবর্তে শিবনারায়ন দাশের নকশা করা বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। যদিও ১৯৭২ সালে সরকার শিবনারায়ন দাসের নকশা করা পতাকার মধ্যে মানচিত্রটি বাদ দিয়ে পতাকার মাপ, রঙ, ও তার ব্যাখ্যা সংবলিত একটি প্রতিবেদন দিতে বলে পটূয়া কামরুল হাসানকে। কামরুল হাসান দ্বারা পরিমার্জিত রূপটিই বর্তমানে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা। কিন্তু স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রারম্ভিক দিসগুলিতে শিব নারায়ণ দাসের অঙ্কিত জাতীয় পতাকা মুক্তি পাগল বাঙালির আবেগের সঙ্গে মিশে আছে। 

;