ঘরে বসে শামীমার মাসে আয় ৪০ হাজার টাকা



আরিফুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, টাঙ্গাইল
শামীমা সুলতানা

শামীমা সুলতানা

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমানে নারীরা কোনো কাজেই পিছিয়ে নেই। তারা তাদের নিজ যোগ্যতায় এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়তই। ঘরে বাইরে সব পেশায় নিজেদের নিয়োজিত করছে। সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন উদ্যোক্তা। অনলাইন ব্যবসায়ের প্রবর্তনের ফলে নারীরা আরও বেশি পরিমাণে সফল উদ্যোক্তায় পরিণত হচ্ছে। নিজের জমানো মাত্র ৩০০ টাকা দিয়ে ব্যবসা শুরু করে বর্তমানে ৩ লাখেরও বেশি টাকার পুঁজি করেছেন ‘আনকোরা’র স্বত্ত্বাধিকারী শামীমা সুলতানা। প্রতি মাসে আয় করছেন ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা।

নিজের স্বামী ও এক মেয়েকে ঠিক যতটুকু সময় দেন, তার চেয়ে বেশি সময় দেন নিজের ফেসবুক ভিত্তিক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান আনকোরায়। এক কন্যা সন্তানের মা অনার্স শেষ না হতেই যখন চাকরির আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরতে গিয়ে নিজের মধ্যে হতাশা আবিষ্কার করলেন, ঠিক তখনই ব্যবসায়ী হওয়ার স্বপ্ন মাথায় চাপে। এরপর স্বামীর অনুপ্রেরণায় নিজেকে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুললেন। ‘আনকোরা’ ফেসবুক পেজ তার জীবনকে নিয়ে গেল এক অনন্য উচ্চতায়। 

এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষে থাকাকালীন বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয় তাকে। কিন্তু সংসার ও সন্তান লালন-পালনের পাশাপাশি সফলতার সঙ্গে চালিয়ে যান পড়াশোনা। শামীমা সুলতানা টাঙ্গাইলের কুমুদিনী সরকারি মহিলা কলেজ থেকে অনার্স শেষ করেছেন। চাকরির আশায় বসে না থেকে তিনি উইয়ের মাধ্যমে শুরু করেছেন অনলাইন ব্যবসা। ‘আনকোরা’ নামে ফেসবুক পেজ খুলে দেশীয় আমসত্ত্ব বিভিন্ন রকমের আচার ফেসবুক পেজে আপলোড দিতে থাকেন। ধীরে ধীরে অর্ডার আসতে থাকে। সেইসঙ্গে মানুষের চাহিদাও বাড়তে থাকে; ফলে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে থাকে ‘আনকোরা’ পেজ।

শামীমা সুলতানা বলেন, ছোটবেলা থেকে নিজে কিছু করতে চাইতাম তবে সেটা চাকরি না, নিজের স্বাধীনতা থাকবে এমন কিছু রান্না-বান্নায় মোটামুটি ঝোঁক থাকলেও কিভাবে কি করবো সেটা বুঝতাম না। আমার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার গল্পটা শুরু মূলত করোনাকালীন ঘরবন্দি সময়ে। করোনার জন্য স্বাভাবিক জনজীবন যখন স্থবির তখন ফেসবুকে দেখা পেয়েছিলাম ‘উই’ নামক একটি ফেসবুক পেজ। যেখানে হাজার হাজার নারী উদ্যোক্তাদের মিলন-মেলা। ঘরে বসেই সব সামলাচ্ছেন তারা, বেশ একটা সাহস সাথে অনুপ্রেরণাও পেলাম। তখন আমারও মনে হলো আমিও তো কিছু করতে পারি। রান্নার প্রতি টুকটাক ঝোক থাকার কারণে আচার বানানোটা ভালোই পারতাম আর সেটা নিয়ে সেখান থেকেই শুরু হলো উদ্যোক্তা জীবনের গল্প। এ জন্য কষ্ট হলেও কাজ দিয়ে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে হয়। নিয়মিত থেকে নিজেকে নিজের কাজের মাঝে টিকিয়ে রাখতে হয়। অন্যের সমালোচনা বা কটু কথা শুনে যদি শুরুতেই হতাশ হয়ে যান তবে কখনোই কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছতে পারবেন না। আর আপনি যখন সত্যি ভালো কিছু করছেন বা করবেন তখন পারিবারিক বা সামাজিকভাবে সমর্থন এমনিতেই পেয়ে যাবেন। তবু আমার ক্ষেত্রে যেটা না বললেই নয় আমার স্বামী শুরু থেকেই আমাকে সমর্থন করে আসছেন যে কারণে এগিয়ে যাওয়াটাও আমার পক্ষে অনেক সহজ হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, প্রায় ৩ বছরের উদ্যোক্তা জীবনে আমি একদিনও অনিয়মিত হইনি। যেহেতু আমি এখনও ছাত্রী সেই সাথে সংসার বাচ্চা তো আছেই তবুও আমি আমার কাজের জায়গায় শতভাগ দেয়ার চেষ্টা করি। আমি এখন যতটা এগিয়ে আসতে পেরেছি সেটা হলো আমার নিয়মিত ধৈর্য ধরে থাকার জন্য। ভালো পণ্য প্রতিনিয়তই গ্রহণের জন্য আর যেটা না বললেই নয় তা হলো একজন মানুষ হিসেবে ভালো ব্যবহার যা ছাড়া ব্যবসা বা কাস্টমার কোনটাই ধরে রাখা সম্ভব না। আসলে আমি যখন উদ্যোক্তা হয়েছি তখন ছিল করোনাকালীন ঘরবন্দি সময়। তাই উদ্যোক্তা হতে গিয়ে শুরুতেই কোন ট্রেনিং নেয়ার সৌভাগ্য আমার হয়নি। প্রথমত আমি আমার কাজে নিয়মিত ভাবে ছিলাম। কাজটাকে সিরিয়াসভাবে নিয়েছি।

শামীমা বলেন, আপনি যা কিছু করুন না কেন সেটা সৎ ভাবে করতে হবে। সততা না থাকলে আপনি যে কোন সময় কাজ থেকে ছিটকে পড়তে পারেন। আর সততা ব্যবসার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ধৈর্য ধরে যে কোন পরিস্থিতিতে নিজেকে টিকে থাকতে হবে। ব্যক্তিগত পরিচয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ যখন মানুষ আপনাকে চিনবে বা আপনার কাজ নিয়ে জানবে তখনই কেবল সে কিনতে আগ্রহী হবে। আমার কাজ নিয়ে আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সুদূরপ্রসারী। তাছাড়া সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো সবার আগে মানুষ হিসেবে আপনাকে ভালো ব্যবহার করতে হবে। এটা কাস্টমার ডিলিং এর ক্ষেত্রে ভীষণ জরুরি। যেহেতু আমার ব্যবসা পুরোপুরি অনলাইন ভিত্তিক, সেখানে একটা মানুষকে সরাসরি না দেখে তার সাথে ডিল করাটা খুবই কঠিন। সেক্ষেত্রে ভালো ব্যবহারটা অবশ্যই জরুরি। কথা দিয়ে কথা রাখতে পারলে ক্রেতার বিশ্বস্ততা অর্জন সহজ হয়ে যায়।

তিনি বলেন, নারীরা ঘর সংসার সামলে চাকরি করবে ব্যাপারটা ইদানীং কিছুটা সহজ হলেও উদ্যোক্তা হওয়াটা মেয়েদের জন্য একরকম যুদ্ধের মতন! তবু ইচ্ছাশক্তি, সততা, সাহস আর টিকে থাকার প্রবল ধৈর্য থাকলে আসলে সবটাই সম্ভব আমার মনে হয়। আত্নবিশ্বাসী হতে হবে তবে সেটা যেন অতিরিক্ত না হয়। পরিশ্রমী, ধৈর্যশীল হতে হবে সেই সাথে নিয়মিত থাকতে হবে। হতাশ হওয়া যাবে না যে কোন পরিস্থিতিতে নিজেকে টিকিয়ে রাখার মানসিকতা থাকতে হবে। ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করতে হবে। আচার-আচরণে যথেষ্ট আন্তরিকতা থাকতে হবে। টাইম ম্যানেজমেন্ট, কমিটমেন্ট ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উদ্যোক্তা জীবনের ক্ষেত্রে সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে আর কথা কাজে মিল রাখাটাও ভীষণ জরুরি। কাজের ক্ষেত্র আর পারিবারিক ক্ষেত্র আলাদা রাখতে হবে। টিম ওয়ার্ক করতে হবে এবং তা লিড করার যোগ্যতা থাকতে হবে। আপনার কাজের ক্ষেত্র যত বড় হবে টিম ওয়ার্ক তত জরুরি হয়ে উঠবে। প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ হতে হবে। কারণ এটা ২০২২ সাল ডিজিটাল যুগ যেখানে প্রায় সবাই এখন প্রযুক্তি নির্ভর। মানুষ যত প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে পড়ছে অনলাইন ব্যবসা তত জমজমাট হয়ে উঠছে। আর আমার কাছে মনে হয় পোশাকের চেয়ে খাবার-দাবারে মানুষের আগ্রহ বেশি। আর সেখানে হোমমেড মানেই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যকরভাবে বাসার খাবারটাই মানুষ পাচ্ছে। যদিও খাবার নিয়ে কাজ করাটা চ্যালেঞ্জিং তবুও আপনার খাবার যখন ক্রেতার ভালো লাগবে তখন সেই ক্রেতা কিন্তু রিপিট ক্রেতা হয়ে বারবার ফেরত আসবে। প্রতিটা ফুড রিলেটেড আইটেমের ক্রেতা থেকে রিপিট ক্রেতার অংকটা কিন্তু বেশ ভালো রকমেরই হয় বা হচ্ছে। তবে সেক্ষেত্রে ডেলিভারি বা কুরিয়ারের ব্যাপারটা যত সহজ হবে ফুড আইটেমটা আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।

তিনি আরো বলেন, আনকোরাকে একটা ব্র্যান্ড হিসেবে গড়তে চাই! আনকোরার মাধ্যমে যেন তাদের জন্য কিছুটা হলেও করতে পারি, সেই চেষ্টায় আমার এই আনকোরার সৃষ্টি। বিএসসি অনার্স (পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ) শেষ। বর্তমানে এমএসসি (পদার্থবিজ্ঞান) অধ্যয়নরত আছি। অল্প বয়সে বিয়ে, বাচ্চা, সংসার, পড়াশোনা সামলে একজন উদ্যোক্তাও! আমি কিছু করছি বরং আমার বাবা, স্বামীর পরিচয় ছাড়াও আমার একটা পরিচয় আছে আর তা হলো আনকোরার স্বত্ত্বাধিকারী আমি শামীমা সুলতানা। এটাই আমার সফলতা আমার নিজের পরিচয়। ইচ্ছাশক্তি, সাহস, আত্নবিশ্বাস আর পরিশ্রমের মানসিকতা থাকলে বিনিয়োগটা কোন সমস্যা বলে আমার মনে হয় না। আপনি কোথাও ঘুরতে গেলেও কিন্তু হাজারখানি টাকা খরচ হয় সেটা না হয় নিজের উদ্যোগেই প্রথম ইনভেস্ট করুন। প্রথমেই লাখ লাখ টাকা ইনভেস্ট করতে হবে এমন কিন্তু না। শুরুটা অল্প থেকেই করুন, আস্তে আস্তে কাজ বুঝে পরিধি বাড়াবেন। আমার ৩০০ টাকার উদ্যোগ কিন্তু তিন লাখ ছাড়িয়েছে বহু আগেই! নিজের টার্গেট সেট করুন। পাঁচ বছর পর নিজেকে বা নিজের উদ্যোগকে কোথায় দেখতে চান সেই হিসাবে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করুন। সৎ থেকে পরিশ্রম করার মানসিকতা থাকতে হবে যে কোন পরিস্থিতিতে মাথা ঠান্ডা রেখে সামলাতে হবে, কোন ভাবেই হতাশ হওয়া যাবে না। নিয়মিত ভাবে নিজের কাজে লেগে থাকতে হবে। সৃষ্টিকর্তার ওপর ভরসা রেখে কাজ করুন সৎভাবে লাখ টাকা বিক্রি করা কোন ব্যাপারনা। সব ধরনের আচার আমসত্ত্ব নিয়ে, আমার সিগনেচার আইটেম আচারি শুঁটকি।

   

বগুড়ায় শিশুকে গলা কেটে হত্যা, আসামী কারাগারে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, বগুড়া
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বগুড়ায় মায়ের সাথে হরিবাসর অনুষ্ঠানে বেড়াতে আসা শিশু বন্ধন (৬) হত্যার সাথে জড়িত সুকুমার দাসকে (২৫) কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) তাকে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। এর আগে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাতে নিহত বন্ধনের বাবা রবি দাস বাদী হয়ে সকুমার দাসকে আসামী করে সদর থানায় মামলা করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়া সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) তয়ন কুমার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গ্রেফতার সুকুমারকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তেমন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কেও সুকুমার মুখ খুলছে না। বারবার বলছে আমার ভুল হয়ে গেছে। সুকুমারকে অনেকে মানসিক রোগী বলে দাবী করলেও তার স্বপক্ষে কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

এদিকে রবিদাসের দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে তার স্ত্রী কাকলী দাসের মামা সুকুমার। মামা-ভাগ্নির পারিবারিক বিরোধের জের ধরে সুকুমার এই হত্যাকাণ্ড ঘটায়। তবে পারিবারিক বিরোধের বিষয়ে স্পষ্ট কিছু উল্লেখ করা হয়নি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আরো জানান, বৃহস্পতিবার হত্যাকাণ্ডের পরপরই সুকুমারকে পুলিশ আটক করে এবং তার দেখানো মতে বাড়ি থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ধান কাটা কাঁচি জব্দ করা হয়।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে বগুড়া সদরের শশিবদন গ্রামে মায়ের সাথে হরিবাসর অনুষ্ঠানে বেড়াতে আসা শিশু বন্ধনকে তার মায়ের মামা সুকুমার ঘরে ডেকে নিয়ে কাঁচি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করে।

;

এসি বিস্ফোরণ থেকে আগুনের সূত্রপাত ধারণা ফায়ার সার্ভিসের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর আগারগাঁও শিশু হাসপাতালের কার্ডিয়াক আইসিইউতে থাকা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) বিস্ফোরণে আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিক ধারণা ফায়ার সার্ভিসের।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) দুপুর ১টা ৪৭ মিনিটে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিটের ৪০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

আগুন নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি নিশ্চিত করেন মোহাম্মদপুর ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মোহাম্মদ ফখরুদ্দিন।

তিনি বলেন, দুপুর ২টা ২৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। এরপর আমাদের ফায়ার সার্ভিসের টিম ঘটনাস্থলে অনুসন্ধান চালায়। তবে আমরা কোনো ভুক্তভোগীকে পাইনি। আগুন লাগার পরপরই আইসিইউতে থাকা সবাইকে সরিয়ে নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্বজনরা।

আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের এ কর্মকর্তা বলেন, আমরা ধরণা করছি আইসিইউর ভেতরে এসি ছিলো। সেটা থেকে হয় তো আগুন লেগেছে। তবে তদন্তের পর সঠিক কারণ জানা যাবে।

তিনি আরও বলেন, আগুনের সঙ্গে সঙ্গে বেশ কিছু যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু ভালো আছে। পাশাপাশি আইসিইউ রুমে যে অক্সিজেন সংযোগ ছিলো সেটি আগুনের কারণে পুড়ে যায়। ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কিছুটা সময় লেগেছে। পরবর্তীতে ফায়ার সার্ভিসের চেষ্টায় অক্সিজেন লাইনটি বন্ধ করা হয়েছে।

;

গাংনীতে ফেনসিডিল ও গাঁজাসহ ৫ মাদক কারবারি আটক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম,মেহেরপুর
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

মেহেরপুরের গাংনী থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ৫ মাদক কারবারীকে আটক করেছে। এদের কাছ থেকে ১১৫ বোতল ফেনসিডিল ও ৪০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে। সেই সাথে জব্দ করা হয়েছে নগদ ১৫০০ টাকা ও মাদক কারবারে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল। 

বৃহষ্পতিবার রাতে পুলিশের পৃথক পৃথক টীম কয়েকটি অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে।

আটককৃতরা হচ্ছেন- গাংনী উপজেলার করমদি গ্রামের ছাদের আলীর ছেলে স্বপন (৩৮) ও আয়ুব আলীর ছেলে লিটন (৪০), পলাশী পাড়ার মৃত সুজা উদ্দীনের ছেলে টেফেন ওরফে খালিদ মাহমুদ (৩০), আলমডাঙ্গার নগর বোয়ালিয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মামুনর রশীদ (৩০) ও ছাতিয়ান গ্রামের আলতাফ হোসেনের ছেলে স্বজল (২৭)। এদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু সাপেক্ষে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে মেহেরপুর আদালতে প্রেরণ করা হয়।

গাংনী থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, মাদক পাচার রোধে গাংনী থানা পুলিশ অভিযানের অংশ হিসেবে তাদেরকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের নামে মাদকের মামলাসহ আদালতে সোপর্দ করা হবে।

;

মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়, জনজীবন বিপর্যস্ত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

টানা চার দিন ধরে চুয়াডাঙ্গা জেলায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। প্রতিদিনই যেন তাপমাত্রার পারদ ক্রমেই উপরে উঠছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) বেলা তিনটায় এ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৭ শতাংশ। বৃষ্টি না হওয়ায় এ তাপপ্রবাহ চলছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস। 

এদিকে, তীব্র তাপদাহে প্রাণীকূল ওষ্ঠাগত হয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখিও যেন তীব্র গরমে বিপর্যস্ত। তীব্র গরমে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শে সচেতনতামূলক মাইকিং করছে জেলা প্রশাসন।

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, ঈদের পরদিন ১২ এপ্রিল থেকেই চুয়াডাঙ্গা জেলায় তাপপ্রবাহ শুরু হয়। যা এখনো অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনই তাপমাত্রা বেড়ে চলতি মৌসুমের রেকর্ড ভাঙছে। আজ শুক্রবার দুপুর ১২টায় চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ১৯ শতাংশ। বেলা তিনটায় তাপমাত্রা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৪১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ১৭ শতাংশ।

মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়, জনজীবন বিপর্যস্ত
 

এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) এ জেলায় ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বুধবার (১৭ এপ্রিল) ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বোচ্চ তামপাত্রা রেকর্ড করা হয়।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান জানান, আজ চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। চলমান এ তাপপ্রবাহ থাকবে আরও কয়েকদিন। এ বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় গড় তাপমাত্রা বেড়ে গিয়েছে। আর চুয়াডাঙ্গা জেলার অবস্থান কর্কটক্রান্তি রেখার কাছাকাছি হওয়ায় প্রতি বছর মার্চ ও এপ্রিলে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকে।

তিনি আরও বলেন, বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা হ্রাস পাবে। তবে আপাতত স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের কোনো সম্ভাবনা নেই। তবে কালবৈশাখী ঝড় হলে তার সাথে বৃষ্টি হতে পারে। এটা আগে থেকে বলা সম্ভব নয়।

চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, এ জেলার ওপর দিয়ে কয়েকদিন ধরেই তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এই গরমে হিট স্ট্রোকের ঝু্ঁকি থাকে, তাই জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শে আমরা জেলা তথ্য অফিসের মাধ্যমে সচেতনতামূলক মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করেছি।

এদিকে, টানা তাপপ্রবাহে কাহিল হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় নেমে এসেছে স্থবিরতা।

সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে, কড়া রোদ ও গরম থেকে বাঁচতে অনেকে গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছেন। কেউবা আবার নির্জন পরিবেশ খুঁজে বাতাসের জন্য প্রকৃতির দিকে চেয়ে আছেন। তবে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ তীব্র গরম উপেক্ষা করে কাজে বেরিয়েছেন।

আলমডাঙ্গা পৌর শহরের পুরাতন মোটরসাইকেলের হাটে বাইক বিক্রি করতে আসা জসিম উদ্দীন নামের এক যুবক জানান, বাইক নিয়ে হাটে এসে পড়েছি বিপাকে। একে তো খোলা মাঠে হাট, মাথার ওপর সূর্য দাউদাউ করে জ্বলছে। রোদ আর গরমে মনে হচ্ছে শরীর একেবারে পুড়ে যাচ্ছে। বাড়ি থেকে ছাতাও নিয়ে আসা হয়নি।

চুয়াডাঙ্গা সদরের ডাব বিক্রেতা শমসের মন্ডল জানান, এই তীব্র গরমে তার ডাবের চাহিদা ও বিক্রি দুটোই বেড়েছে। প্রতিদিন যে পরিমাণ ডাব তিনি বাজারে নিয়ে আসেন, সবই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। মানুষ একটু স্বস্তি নিতে ও শরীর ভালো রাখতে ডাবের পানি পান করছেন।

এদিকে, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে বেড়েই চলেছে জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. উম্মে ফারহানা বলেন, গরমের সাথে হাসপাতালে বেড়েছে জ্বর, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। ঈদের পর থেকে এখন পর্যন্ত শয্যা সংখ্যার বিপরীতে অতিরিক্ত রোগী বিভিন্ন ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছেন। শয্যা সংকুলান না হওয়ার রোগীরা বারান্দা ও করিডোরে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর অতিরিক্ত রোগীর চাপ সামলাতে চিকিৎসক ও নার্সদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

এই চিকিৎসক পরামর্শ হিসেবে বলেন, তীব্র গরমে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি রোগাক্রান্ত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। বেশি করে পানি পান করতে হবে। ঠান্ডাজাতীয় পানীয় বিশেষ করে লেবুর শরবত, ডাবের পানি বেশি করে পান করতে হবে। এসময় তাপ এড়িয়ে ঠান্ডা স্থানে থাকতে হবে।

;