‘এসডিজি অর্জনে সংসদ সদস্যগণের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনে সংসদ সদস্যগণের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, এমডিজি অর্জনে সাফল্যের ধারাবাহিকতায় এসডিজি’র ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ সাফল্যের স্বাক্ষর রাখছে। এই সাফল্যের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে সরকারের গৃহীত পরিকল্পনা ও নীতি বাস্তবায়নে সহযোগী হিসেবে পার্লামেন্টারিয়ানগণও সক্রিয় অংশগ্রহণ করছেন।

শুক্রবার (১২ আগস্ট) জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে ইউএনএফপিএ এর ডেপুটি এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এম্বাসেডর ইব পেটারসেনসহ ইউএনএফপিএ এর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণের সঙ্গে বৈঠককালে স্পিকার এসব কথা বলেন।

ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনগণের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। সেই দায়বদ্ধতা থেকেই বাংলাদেশে পার্লামেন্টারিয়ানগণ জনগণের কল্যাণে অধিক মাত্রায় আত্মনিয়োগ করছেন।

স্পিকার বলেন, সমকালীন বিশ্বে নতুন নতুন সম্ভাবনা যেমন সৃষ্টি হচ্ছে, তেমনি নতুন নতুন সমস্যারও উদ্ভব হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা, নদী দূষণ, বায়ু দূষণ, কার্বন নিঃসরণসহ নানাবিধ সমস্যা মানুষকে মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এসব সমস্যা নিরসনের জন্য পার্লামেন্টারিয়ানদেরও সচেতন ও সচেষ্ট হতে হবে। এই লক্ষ্যে তাদের জনসম্পৃক্ততা আরও জোরালো করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে তারা তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তিও ব্যবহার করতে পারেন।

বাংলাদেশে জনসংখ্যা ও উন্নয়ন ইস্যুতে পার্লামেন্টারিয়ানদের সক্রিয় অংশগ্রহণের বিষয়টি তুলে ধরে স্পিকার বলেন, স্পিকারের নেতৃত্বে পঁচিশ জন সংসদ সদস্যের সমন্বয়ে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব পার্লামেন্টারিয়ানস অন পপুলেশন এন্ড ডেভলপমেন্ট (বিএপিপিডি) গঠন করা হয়েছে। বিএপিপিডি মাতৃস্বাস্থ্য উন্নয়ন ও পরিবার পরিবল্পনা, বাল্যবিয়ে ও জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ এবং যুব উন্নয়ন ও জনসংখ্যার বহুমাত্রিকতা- এই তিনটি ইস্যুতে সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কাজ করে আসছে। এই সব সমস্যা প্রতিরোধের ক্ষেত্রে কি কি প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তা সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্যগণ পর্যালোচনা করে করনীয় নির্ধারণ করছেন এবং প্রয়োজনীয় সুপারিশ প্রণয়ন করছেন।

তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির গৃহীত সুপারিশসমূহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের গোচরে আনা হচ্ছে। সেই সঙ্গে তৃণমূলের সমস্যাগুলো সম্পর্কে সম্যক অভিজ্ঞতা অর্জনের লক্ষ্যে সংসদ সদস্যগণ সমস্যাপ্রবণ অঞ্চলগুলোতে সচেতনতামূলক সভা করছেন। এতে করে সংসদ সদস্যগণ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ ভুক্তভোগীদের সমস্যাগুলো সম্পর্কে সম্যক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারছেন। এই সমস্যাগুলো তারা সংসদ অধিবেশনসহ বিভিন্ন ফোরামে তুলে ধরছেন।

ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, কোভিড অতিমারির সময়েও বিএপিপিডি ভার্চুয়াল ও সরেজমিন- এই দুই পদ্ধতির সমন্বয় করে এসব আলোচনা পরিচালনা করেছেন। কোভিডকালীন ভুক্তভোগীগণ, বিশেষ করে নারী ও কন্যাশিশুগণ যেসব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তা সংসদ সদস্যগণ জানার সুযোগ পেয়েছেন। বিশেষ করে কন্যাশিশু ও নারীদের সাথে আলোচনায় তাদের মূল সমস্যাগুলো উঠে এসেছে। এসব আলোচনায় ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে স্পিকার বলেন, স্কুল কলেজের ছাত্রীদের দাবির প্রেক্ষিতে তাদের প্রজনন স্বাস্থ্য সমস্যাগুলোর বিষয়ে সংসদ সদস্যগণ সম্যক অবহিত হতে পেরেছেন। এসব সমস্যা বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদানের জন্য যাতে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার কিংবা স্বাস্থ্যকর্মী মাসে মাসে সেইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ করা হয় সে বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে অনুরোধ করা হয়েছে।

কোভিডের অভিঘাত মোকাবিলায় সরকারের গৃহীত নানান পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে স্পিকার বলেন, ভুক্তভোগী জনগণকে সরকার নগদ অর্থ সহায়তা , খাদ্য সহায়তা দিয়েছে। এসব সহায়তা জনগণের দোরগোড়ায় সহজলভ্য করার কাজে সংসদ সদস্যগণ সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন।

স্পিকার বলেন, বিএপিপিডি’র কার্যক্রম সফল করার জন্য ইউএনএফপিএ প্রয়োজনীয় কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করছে। তিনি এই সহযোগিতার জন্য ইউএনএফপিএ’র প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। তিনি জানান, স্কুল পর্যায়ে বিশেষ করে ছাত্রীদের প্রজনন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। এই লক্ষ্যে বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাইলট ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। সেসব প্রতিষ্ঠানে বাল্য বিয়ে প্রতিরোধেও প্রয়োজনীয় কর্মসূচি পরিচালনা করা হবে। এসব কার্যক্রমে আরও অধিক মাত্রায় কারিগরি সহযোগিতার প্রয়োজন হবে বলে স্পিকার উল্লেখ করেন।

এ ধরনের সহযোগিতা প্রদান করতে ইউএনএফপিএ প্রস্তুত বলে মি. ইব পেটারসেন জানান। পেটারসেন আরও জানান, ইউএনএফপিএ সংসদ সদস্যগণের মাধ্যমে যুব জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে আরও জোরালো কার্যক্রম পরিচালনায় আগ্রহী। মি. পিটারসেন জানান, বিভিন্ন ক্ষেত্রে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তাই তা নিরসনে আরও জোরালো কার্যক্রম পরিচালনা করা জরুরি। স্পিকার তার সঙ্গে একমত পোষণ করে বলেন, জাতীয় অর্থনীতি তথা জিডিপিতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।

স্পিকার বলেন, সংশ্লিষ্ট সংসদ সদস্যগণ যুব জনগোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হতে পারেন। সমাজের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীদের পেছনে ফেলে কোন সমাজ এগিয়ে যেতে পারে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশে তাই নারীর উন্নয়নে নানামুখী কার্যক্রম চলমান আছে। এর সুফল পাচ্ছে বাংলাদেশ।

বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত, জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের যুগ্মসচিব এম.এ কামাল বিল্লাহ, বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের কাউন্সিলর শাহানারা মনিকা এবং ইউএনএফপিএ’র পক্ষ থেকে রিজিওনাল স্পেশালিস্ট ইসাবেলা জেরালডিন আদজাই উপস্থিত ছিলেন।

   

চুয়াডাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিহত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চুয়াডাঙ্গা
চুয়াডাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিহত

চুয়াডাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিহত

  • Font increase
  • Font Decrease

চুয়াডাঙ্গায় লাটাহাম্বারের সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে টুটুল হোসেন (১৮) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন অপর দুই আরোহী মিলন হোসেন (২৫) ও জাব্বারুল (১৭)।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার হাটবোয়ালিয়া সড়কের খোরদ কবরস্থানের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে আলমডাঙ্গা থানা পুলিশে নিহত টুটুলের মরদেহ উদ্ধার করে ও আহত দুজনকে চিকিৎসার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠায়।

নিহত টুটুল আলমডাঙ্গার ভাংবাড়িয়া ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামের ইলিয়াস হোসেনের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বিকেলে টাইলস কিনে চুয়াডাঙ্গা শহর থেকে মহেশপুর গ্রামে ফিরছিলেন টুটুলের পিতা ইলিয়াস। পথে ভালাইপুর বাজারের অদূরে টাইলসবাহী গাড়িটি বিকল হয়ে পড়লে ইলিয়াস ছেলে টুটুলকে ফোন দিয়ে ডাকেন। টুটুল মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি থেকে মিলন ও জাব্বারুলকে নিয়ে ভালাইপুরের উদ্দেশে বের হন। পথে হাটবোয়ালিয়া সড়কের খোরদ কবরস্থানের সামনে পৌঁছালে সামনে থেকে আসা একটি লাটাহাম্বারের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই টুটুলের মৃত্যু হয়।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. হাসানুজ্জামান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় মিলন হোসেন ও জাব্বারুল নামের দুই যুবক জরুরি বিভাগে আসে। আহতদের মধ্যে মিলনের আঘাত গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। এবং জাব্বারুলকে ভর্তি রাখা হয়েছে।

আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ গণি মিয়া বলেন, ঘটনাস্থলেই টুটুলের মৃত্যু হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই হস্তান্তর করা হয়েছে।

;

দেশে ফিরল সিঙ্গাপুরে রড চাপায় বাংলাদেশি শ্রমিকের মরদেহ



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বেনাপোল (যশোর)
দেশে ফিরল সিঙ্গাপুরে রড চাপায় বাংলাদেশি শ্রমিকের মরদেহ

দেশে ফিরল সিঙ্গাপুরে রড চাপায় বাংলাদেশি শ্রমিকের মরদেহ

  • Font increase
  • Font Decrease

সিঙ্গাপুরে কাজ করার সময় রড চাপায় নিহত রাকিব হোসেন (২৪) নামের এক বাংলাদেশি শ্রমিকের মরদেহ দেশে এসেছে।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১ টার দিকে নিহতের মরদেহ বেনাপোলে নিজ বাড়িতে এসে পৌঁছায়।

নিহত রাকিব বেনাপোল বন্দর থানার ঘিবা গ্রামের মমিনুর রহমানের ছেলে।

এর আগে, গত ৩ এপ্রিল সিঙ্গাপুরে একটি বহুতল ভবনের নির্মাণ কাজ করার সময় অসাবধানতাবশত রডের নিচে চাপা পড়ে মারাত্মক আহত হয় রাকিব। দীর্ঘ ১৬ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শনিবার (২০ এপ্রিল) রাতে তিন সিঙ্গাপুরে মারা যান।

নিহত রাকিবের চাচা মিলন হোসেন জানান, গত ৩ এপ্রিল রাকিব কনস্ট্রাকশনের কাজ করার সময় রড চাপায় গুরুতর আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

রাকিবের বাবা মমিনুর রহমান জানান, সংসারের হাল ধরতে এক বছর হলো রাকিব সিঙ্গাপুর গিয়েছিল। সে কনস্ট্রাকশনের কাজ করতো। গত ৩ এপ্রিল প্রতিদিনের মতো সে কাজে যায়। এক পর্যায়ে ওইদিন বিকাল ৫টার দিকে ভবনের উপরে তোলার সময় তার ছিঁড়ে রডের নিচে চাপা পড়ে রাকিব। পরে তাকে সিঙ্গাপুর সিভিল ডিফেন্স ফোর্সের উদ্ধারকারীরা এবং সহকর্মীরা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। দীর্ঘ ১৬ দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে গত ২০ এপ্রিল রাত ১১টার দিকে সে মারা যায়।

বেনাপোল পোর্ট থানার বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজুর রহমান মফিজ বলেন, সিঙ্গাপুরে নিহত রাকিব আমার ইউনিয়নের ঘিবা গ্রামের বাসিন্দা। তার পরিবারের মাধ্যমে জেনেছি সে সিঙ্গাপুরে কাজ করার সময় রড চাপায় মারা গেছে। তার মৃতদেহ বৃহস্পতিবার রাতে দেশে আনা হয়েছে।

;

প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়ে চাঁদা আদায়, যুবক গ্রেফতার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নোয়াখালী
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে প্রবাসীর স্ত্রীর ব্যক্তিগত ছবি দেখিয়ে চাঁদা আদায় ও অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় প্রবাসীর স্ত্রীর অশ্লীল ছবি সংরক্ষিত মোবাইল উদ্ধার করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ভোর রাতে উপজেলার সিরাজপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বড় রাজাপুর গ্রামের লাল মিয়া মাঝি বাড়ি থেকে নুরুল ইসলামকে (৪০) গ্রেফতার করা হয়।

নুরুল ইসলাম সেনবাগ উপজেলার বীজবাগ ইউনিয়নের ৮ িনম্বর ওয়ার্ডের শ্যামেরগাঁও গ্রামের আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার ছেলে।

পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগীর স্বামী আমেরিকা প্রবাসী। ২০২২ সালের ২২ জানুয়ারি মোবাইলে সমস্যা দেখা দিলে ভিকটিম মোবাইল ঠিক করতে কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট বাজারের আরডি শপিং মলে যায়। অভিযুক্ত নুরুল ইসলাম নিজেকে মোবাইল মেকানিক পরিচয় দিয়ে গৃহবধূর মোবাইল ঠিক করে দেওয়ার কথা বলে নেয়। একপর্যায়ে ভিকটিমের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ ও ভিকটিমের মোবাইল ফোনের গ্যালারি থেকে ব্যক্তিগত ছবি কৌশলে তার মোবাইলে ট্রান্সফার করে নিয়ে যায়।

পুলিশ আরও জানায়, এরপর ভিকটিমের ব্যক্তিগত ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। ভিকটিম সম্মানহানির ভয়ে ও তার সংসার টিকানোর জন্য ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেয়। এতে সে সন্তুষ্ট না হয়ে বাকি আরও আড়াই লাখ টাকা দাবি করে। অন্যথায় ভিকটিমকে তার সাথে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেয়। ভিকটিম প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় নুরুল ইসলাম ভিকটিমের ছবি ও নাম ব্যবহার করে টিকটক আইডি খুলে ব্যক্তিগত ছবি ছেড়ে দেয়। বিষয়টি ভুক্তভোগীর নজরে আসলে পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করে।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। একই সাথে ভিকটিমের ব্যক্তিগত ছবি ও তার নাম এবং ছবি ব্যবহার করা টিকটিক আইডি সংরক্ষিত মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় কোম্পানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

;

টিউবওয়েল আছে পানি নেই!



সোহেল মিয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

দুলালী সরকারের ছয় সদস্যের পরিবার। নিজেদের টিউবওয়েল থাকলেও বেশ কয়েকদিন ধরে পানি উঠছে না। ফলে সীমাহীন কষ্টে ভুগছে পরিবারটি। একদিকে বইছে তীব্র তাপপ্রবাহ অন্যদিকে পানির জন্য হাহাকার। সবকিছু মিলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে দুলালী সরকারের পরিবারের জীবনযাত্রা। পানির অভাব মিটাতে ছুটছেন এদিক-ওদিক। কিন্তু কোথাও মিলছে না একফোঁটা পানি।

শুধু দুলালী সরকারের পরিবারই নয়। পানির জন্য এমন চিত্র রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির সাতটি ইউনিয়নের হাজার হাজার পরিবারের। তীব্র তাপপ্রবাহ এবং শুষ্ক মৌসুমে পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় এই ভোগান্তি বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর।

বালিয়াকান্দি উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, ভৌগোলিক কারণে বৃহত্তর ফরিদপুরের মধ্যে বালিয়াকান্দি উপজেলাটি ভিন্ন। আশেপাশের অঞ্চল থেকে এই অঞ্চলের ভূগর্ভস্থ স্তর নিম্নমুখী। যে কারণে প্রতি বছর পানির স্তর ৮ থেকে ১০ ইঞ্চি নিচে নেমে যাচ্ছে। বালিয়াকান্দিতে মোট পরিবারের সংখ্যা ৫০ হাজার। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ৫টি পরিবারের জন্য কমপক্ষে একটি টিউবওয়েল থাকা জরুরি।

সে অনুযায়ী বালিয়াকান্দিতে প্রয়োজন প্রায় ১০ হাজার টিউবওয়েল। কিন্তু সরকারিভাবে ২০২২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১৬০টি সাবমার্সিবল ও ২০১৯ সাল থেকে ৫২০টি তারা টিউবওয়েল বসানো হয়েছে। যা চাহিদার তুলনায় খুবই সামান্য।

ব্যক্তিগত উদ্যোগে যেসব টিউবওয়েল বসানো হয়েছে সেগুলোতে এখন আর পানি ওঠছে না। পানি না ওঠার কারণ হিসেবে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বলছে- বালিয়াকান্দিতে বর্ষা মৌসুমে পানির স্তর থাকে ১৫ থেকে ২২ ফুট নিচে। আর শুষ্ক মৌসুমে বিশেষ করে এপ্রিল, মে ও জুন মাসে সেটা নেমে দাঁড়ায় ৩২ ফুট নিচে। ব্যক্তিগত উদ্যেগে বসানো ৬ নং টিউবওয়েলগুলো পাম্পিং ক্ষমতা ২০ থেকে ২৪ ফুট। যার কারণে শুষ্ক মৌসুমে এ অঞ্চলে পানি থাকে না। শুধুমাত্র সরকারিভাবে বসানো তারা ও সাবমার্সিবল টিউবওয়েল পানি থাকে।

পানির জন্য হাহাকার

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সরেজমিন সদর ইউনিয়নের পাইককান্দি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি বাড়িতেই প্রায় টিউবওয়েল রয়েছে, থাকলেও বেশির ভাগ টিউবওয়েলে নেই পানি। কোন কোন টিউবওয়েলে সকাল ও সন্ধ্যার পর কিছু পরিমাণ পানি উঠছে। যেখানে সরকারি সাবমার্সিবল ও তারা পাম্প রয়েছে সেখান থেকে অনেকেই সংগ্রহ করছে পানি।

এদিকে বৈশাখ মাসে কোন বৃষ্টি না হওয়ায় বৃষ্টির জন্য বালিয়াকান্দির বিভিন্ন এলাকাতে বিশেষ নামাজ ও প্রার্থনার আয়োজন করছেন মুসল্লিরা।

পাইককান্দি গ্রামের বাসিন্দা গোলাম মোর্তবা রিজু বার্তা২৪.কমকে জানান, প্রায় এক সপ্তাহ হতে চললো বাড়ির টিউবওয়েল থেকে পানি উঠছে না। ৫০টি চাপ দেওয়ার পর এক গ্লাস পানি উঠছে। পানির অভাবে নানা ধরণের সমস্যায় ভুগছে তার পরিবার। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধ নারীরা অনেক কষ্টে রয়েছেন জানান তিনি।

বহরপুর ইউনিয়নের ইলিশকোল গ্রামের বাসিন্দা কামরুজ্জামান কামরুল বার্তা২৪.কমকে জানান, পানির অভাবে নিজেরা তো কষ্টে আছেনি। এর থেকেও বেশি কষ্ট পাচ্ছে পশুপাখি। তার বাড়ির হাঁস-মুরগিগুলো পানির জন্য হাঁফাচ্ছে। তীব্র রোদ ও প্রচন্ড গরমের মধ্যে পানি না থাকার প্রভাব মানুষের পাশাপাশি পড়ছে পশুপাখি ও গাছপালার ওপর।

নবাবপুর ইউনিয়নের মেছুয়াঘাটা এলাকার কৃষক রহিম মিয়া বার্তা২৪.কমকে জানান, পানি না ওঠায় তিনি মাঠে ফসল চাষ করতে পারছেন না। এখন পুরো পাট চাষের উপযুক্ত সময়। জমিতে সেচ দিয়ে পাটের চারা রোপন করতে হবে। পানি না ওঠায় তিনি পাটের বীজ রোপন করতে পারছেন না।

নিরাপদ পানির নিশ্চয়তার জন্য সরকারের কাছে ১০ হাজার টিউবওয়েলের চাহিদা প্রেরণ করা হয়েছে জানিয়ে বালিয়াকান্দি উপজেলা সহকারি প্রকৌশলী মো. রেজাউল করিম বার্তা২৪.কমকে জানান, বালিয়াকান্দির ৬০ শতাংশ পরিবারে এখন পানির অভাব রয়েছে। জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে এ অঞ্চলের ভূগর্ভস্ত পানির স্তরের ওপর প্রভাব পড়ছে।

প্রতি বছর পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। আগামী দিনগুলো আরও কঠিন হয়ে পড়বে। নিরাপদ পানি ও শুষ্ক মৌসুমে পর্যাপ্ত পানি পেতে হলে পরিকল্পনা করে টিউবওয়েল স্থাপন করতে হবে। এখন থেকে যারাই টিউবওয়েল স্থাপন করবেন তারা অবশ্যই সাবমার্সিবল অথবা তারা টিউবওয়েল স্থাপন করবেন। এ সকল টিউবওয়েল কমপক্ষে ১৬০ ফুট নিচের স্তরের পানি তুলতেও সক্ষম।

তিনি আরও বলেন, এখন থেকে টিউবওয়েল স্থাপন করলে আগামী ৫০ থেকে ৬০ বছর পর্যন্ত পানির জন্য কোন চিন্তা থাকবে না।

;