জিয়াউর রহমান ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের প্রধান কুশীলব: তথ্যমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ

  • Font increase
  • Font Decrease

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক শক্তি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধাচারণ করেছিল সেই দুই শক্তি একীভূত হয়ে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করেছে। আর সেই হত্যাকাণ্ডের অন্যতম প্রধান কুশীলব ছিল বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান।

তিনি বলেন, আগস্ট মাস আসলেই নানামুখী ষড়যন্ত্রে সরব হয় বিএনপি এবং স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি। এই আগস্ট মাসেই তারেক জিয়ার নেতৃত্বে এবং বেগম জিয়ার জ্ঞাতসারে প্রকাশ্য দিবালোকে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। ১৭ আগস্ট সারাদেশে একযোগে পাঁচশ’ জায়গায় বোমা হামলা হয়েছে। আগস্ট মাস আসলে বিএনপি নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু করে, এবারও তারা সারা দেশব্যাপী নানামুখী ষড়যন্ত্র-নাশকতা করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। দেশকে উত্তপ্ত করার সেই পরিকল্পনারই অংশ হিসেবে ভোলায় তারা গণ্ডগোল করেছে।

সোমবার (১ আগস্ট) বিকেলে চট্টগ্রাম নতুন রেল স্টেশনে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘর’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুকুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য দেন রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান যান্ত্রিক প্রকৌশলী বোরহান উদ্দিন।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর জিয়াউর রহমানকেই সেনাবাহিনীর প্রধান নিয়োগ করেছিল খোন্দকার মোস্তাক আহমেদ। এতে কি প্রমাণিত হয়? এতে প্রমাণিত হয় জিয়াউর রহমানই বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের অন্যতম প্রধান কুশীলব। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড শুধুমাত্র জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড নয়, সেদিন প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে হত্যা করার লক্ষ্যেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক এবং দেশীয় শক্তি এই হত্যাকাণ্ডের সাথে যুক্ত ছিল, মদদ দিয়েছিল।

তিনি বলেন, আজকে শোকের মাস আগস্ট শুরু হয়েছে, বঙ্গবন্ধুকে ১৫ আগস্ট হত্যা করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ১৫ আগস্ট শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়নি, আমাদের স্বাধীনতাকে হত্যা করার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছিল। কারণ ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার পর পাকিস্তানের সাথে কনফেডারেশন করার অপচেষ্টা হয়েছিল। আমাদের জাতীয় সঙ্গীত এবং জাতীয় পতাকা পরিবর্তন করার অপচেষ্টা হয়েছিল।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, যখন বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের খবর জিয়াউর রহমানের কাছে পৌঁছে তখন মাত্র ফজরের আজান হয়েছে। তিনি তখন সুটেট-বুটেট অবস্থায় ছিলেন। তিনি ছিলেন তখন সেনাবাহিনীর উপ-প্রধান। ফজরের আজানের সময় সেনাবাহিনীর কেউ সুটেট -বুটেট থাকে? সুটেট-বুটেট অবস্থায় তিনি তখন শেভ করছিলেন।

তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের কাছে যখন সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে খবর দেওয়া হল, রাষ্ট্রপতিকে হত্যা করা হয়েছে তখন তার জবাব ছিল ‘সো হোয়াট, ভাইস প্রেসিডেন্ট ইজ দেয়ার’। আর তিনি কাপড় চোপড় পরে তৈরি হয়ে বসেছিলেন বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার জন্য।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে। ইতিহাসকে যদি সঠিকভাবে তথ্য দিতে হয়, পাঁচশ বছর পরের প্রজন্ম যাতে ইতিহাস সঠিকভাবে জানতে পারে সেজন্য একটি কমিশন গঠন করে জিয়াউর রহমানসহ যারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের কুশীলব ছিল তাদের মুখোশ উম্মোচন হওয়া প্রয়োজন। ইনশাল্লাহ সেটি হবে। এটি যদি আমরা না করি আজ থেকে পঞ্চাশ বছর পরের প্রজন্ম সঠিক ইতিহাস জানবে না। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের প্রসিডিংটা রেলওয়ের ভ্রাম্যমাণ যাদুঘরে রাখার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, সেখানে যারা জবানবন্দি দিয়েছেন, তারা জিয়াউর রহমান কোন অবস্থায় ছিল, খোন্দকার মোস্তাক কি অবস্থায় ছিল এগুলো বিস্তারিত বলেছেন।

   

ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম: দুশ্চিন্তায় সাতক্ষীরা উপকূলের মানুষ



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

‘মিধিলির’ রেশ কাটতে না কাটতেই বঙ্গোপসাগরে ‘মিগজাউম’ নামের আরেকটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। তবে সাতক্ষীরার উপকূলে ‘মিধিলির’ তেমন প্রভাব না পড়লেও ক্ষতির মুখে পড়েন চাষিরা। 

ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের কারণে মাঠে থাকা পাকা আমন ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলের মানুষ।

পূর্বাভাসে বলা হয়, বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমে পরিণত হয়েছে। ফলে ঘূর্ণিঝড়ের সরাসরি কোনো প্রভাব না পড়লেও পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে বৃষ্টি হতে পারে। কিছুটা উত্তাল থাকবে সমুদ্র উপকূল।

কৃষকরা জানান, শ্যামনগর উপকূলে লবণাক্ততার কারণে শুধু আমন মৌসুমেই ধান হয়। এখন বিলের পর বিল পাকা ধানে ভরা। কিছু কিছু ধান কেটে ঘরে তুলেছেন অনেকে। তবে বেশির ভাগই এখনও মাঠেই রয়েছে। অনেকে কাটার চেষ্টা করছেন। কিন্তু শ্রমিক সংকটে সে চেষ্টাও খুব সামান্য। এই সময়ে ঝড়-বৃষ্টি হলে এসব ধান মাঠেই নষ্ট হয়ে যাবে।

কৃষক নূরুল হক বলেন, বিলে আট বিঘা জমিতে আমন মৌসুমের ১০ ও ৮৭ ধান চাষ করেছি। ‘মিধিলির’ কারণে প্রায় দুই বিঘা জমির ধান ক্ষেতে নুইয়ে পড়ে। বিঘাতে ২০-২২ মণ ধান পেতাম। কিন্তু মিধিলির কারণে এ বছর কমপক্ষে ১০ মণ ধান কম পাব। আরও কিছু ধান চিটা হবে। কিন্তু আবার ঝড় আসছে শুনে দিশেহারা হয়ে পড়েছি।

শ্যামনগর উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, উপজেলায় ১৬ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। ইতোমধ্যে ৩০ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। এ সপ্তাহের মধ্যে আরও ২০ শতাংশ জমির ধান কাটা সম্ভব হতে পারে। এরপরও অবশিষ্ট ৫০ শতাংশ জমিন ধান গোলায় তোলা সম্ভব হবে না। কিছু কিছু জায়গায় ধান এখনো অপরিপক্ক রয়েছে। আধা পাকা এই ধান পাকতে আরও ১৫ থেকে ২০ দিন সময় লাগতে পারে।

শ্যামনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল হুদা বলেন, ৮০ শতাংশ পেকেছে এমন ধান কাটলে কোনো ক্ষতি হবে না। তাই ঝড় ও ভারী বৃষ্টির আভাস পেয়ে কৃষকদের ধান কাটার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কারণ মিগজাউমের প্রভাবে ঝড় ও ভারী বর্ষণ হলে কৃষকের আরও বেশি ক্ষতি হতে পারে।

;

যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নারী ও কন্যাশিশুদের প্রতি নির্যাতন বন্ধে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন করার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম এবং এডুকো বাংলাদেশ।

মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে একটি জরিপ উপস্থাপন করা হয়েছে। জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম এডুকো বাংলাদেশের সহায়তায় ৭০টি জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা এবং ২৮টি ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া থেকে তথ্য সংগ্রহ করছে। সংগ্রহীত তথ্যে দেখা যায়, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর এই ১০ মাসে ৬৯৫ জন নারী ও কন্যাশিশুকে হত্যা করা হয়েছে, এদের মধ্যে নারী ৫০২জন এবং ১৯৩জন কন্যাশিশু। আত্মহত্যা করেছে ৫৯০জন- ৩৪৭ জন নারী এবং ২৪৩ জন কন্যাশিশু, গৃহের অভ্যন্তরে সহিংসতার শিকার হয়েছে ১৭৯ জন নারী এবং ২০ জন কন্যাশিশু। পাচার এবং কিডন্যাপের শিকার ৩২ জন নারী এবং ১৩৬ জন কন্যাশিশু, ধর্ষণের শিকার হয়েছেন মোট ১০২২জন, এদের মধ্যে ৩৬২ জন নারী এবং ৬৬০ জন কন্যাশিশু এবং ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছিল আরো ৫৩ জন নারী এবং ১৩৬ জন কন্যাশিশুকে। ধর্ষণ পরবর্তী হত্যার শিকার হয়েছেন ১৩ জন নারী এবং ৩৪ জন কন্যাশিশু। যৌন হয়রানীর শিকার হয়েছেন মোট ৩৫২ জন, যার মধ্যে ৯৬ জন নারী এবং ২৫৬ জন কন্যাশিশু।

সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সম্পাদক নাছিমা আক্তার জলি লিখিত বক্তব্যে বলেছেন, আমরা মনে করি, সহিংসতা, যৌন হয়রানীর ঘটনার এই ভয়াবহ বাস্তবতার পেছনে যথাযথ বিচার না হওয়ার বিষয়টি বড় ভূমিকা রাখে। যৌন হয়রানীর ঘটনার বিচারের জন্য সুনির্দিষ্ট আইন না থাকা ন্যায় বিচার পাওয়ার পথে একটি বড় প্রতিবন্ধক। এই সমস্যার কার্যকর সমাধানের জন্য প্রয়োজন একটি যথাযথ আইন। এই বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে আমরা দেশের সকল রাজনৈতিক দলের কাছে যৌন হয়রানী প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানাই।

তিনি আরও বলেন, ২০২৪ সালের শুরুতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এরকম একটি প্রেক্ষাপটে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম মনে করে, সংসদ নির্বাচনের পূর্বে সকল রাজনৈতিক দলসমূহের নিকট নারী ও কন্যাশিশুদের সমস্যার ব্যাপকতা তুলে ধরা প্রয়োজন, যাতে দলসমূহ তাদের নিজ নিজ নির্বাচনী ইশতেহারে নারী ও কন্যাশিশুদের কল্যাণে প্রয়োজনীয় প্রতিশ্রুতি ও পদক্ষেপ তুলে ধরে এবং বিজয়ী দল সেগুলো বাস্তবায়ন করতে পারে।

চাইল্ড রাইটস স্পেশাইজড এন্ড এ্যক্টিভিস্ট টনি মাইকেল গোমেজ এর সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সহসভাপতি এবং নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আক্তার ডলি, জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সহ সম্পাদক এবং অপরাজেয় বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ওয়াহিদা বানু, এডুকো বাংলাদেশের ডিরেক্টর অফ প্রোগ্রামস ফারজানা খান, গুডনেইনারস বাংলাদেশের হেড অব এডুকেশন এন্ড হেলথ রাজিয়া সুলতানা প্রমুখ।

;

১০ বছরে সম্পদ ও আয় বেড়েছে ফরহাদ হোসেনের 



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মেহেরপুর
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মেহেরপুর-১ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেনের সম্পদ বেড়েছে। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় তার অস্থাবর সম্পদ ছিল ৯৩ লাখ টাকার। এখন তা দাঁড়িয়েছে ৩ কোটি ২৭ লাখ টাকায়। ৫ বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ২ কোটি টাকার ওপরে। একইসাথে বেড়েছে তার বার্ষিক আয়।

এর আগে ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় তার অস্থাবর সম্পদ ছিল ২৬ লাখ ৬৬ হাজার টাকার। গত ১০ বছরে তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ দুটিই বৃদ্ধি পেয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া হলফনামা থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মেহেরপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন ফরহাদ হোসেন। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে এ আসনটিতে এমপি নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক স্বাধীনতা পদক জয়ী (মরোনত্তোর) বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত ছহিউদ্দীনের যোগ্য উত্তরসুরী হিসেবে জায়গা করে নেন মন্ত্রিপরিষদে। গেল পাঁচ বছর তিনি জন প্রশাসন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

ফরহাদ হোসেনের হলফনামা বিশ্লেষণে দেখা যায়, তার বার্ষিক আয় এখন ৭৭ লাখ ১ হাজার ৮৫০ টাকা। আয়ের খাতগুলো হলো- কৃষিখাত, ব্যবসা, সঞ্চয়পত্র ও প্রতিমন্ত্রীর সম্মানী, পারিশ্রমিক ও ভাতা। পাঁচ বছর আগে তার বার্ষিক আয় ছিল ১০ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এর আগে ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে তার বার্ষিক আয় ছিল ৬ লাখ ১২ হাজার ৩৪০ টাকা। যার উৎস ছিল চাকরি।

২০১৪ সালের নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হওয়ার আগে পেশায় শিক্ষক ফরহাদ হোসেনের চাকরি ছাড়া কৃষিখাত কিংবা ব্যবসায় কোন আয় ছিল না। ২০১৮ সালের নির্বাচনের হলফনামায় কৃষিখাত, শেয়ার-সঞ্চয় ও অন্যান্য আয় বৃদ্ধি পেয়েছিল। এর ধারাবাহিকতায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দেওয়া হলফনামায় তার আয় আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে তার বড় আয়ের খাত হলো প্রতিমন্ত্রীর পারিশ্রমিক, ভাতা, সম্মানী। এখান থেকে তার বার্ষিক আয় ২৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। কৃষি খাত থেকে ২৫ লাখ ১৮ হাজার টাকা, ব্যবসা থেকে ১৭ লাখ ৭৯ হাজার টাকা এবং শেয়ার, আমানত, সঞ্চয় থেকে ৪ লাখ ২৮ হাজার টাকা।

অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে ফরহাদ হোসেনের হাতে নগদ টাকা আছে ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ২৯ লাখ ১ হাজার টাকা। বন্ড, শেয়ার বা সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ আছে ৪০ লাখ টাকা। গাড়ি আছে ১টি যার মূল্য ৭৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। স্বর্ণ আছে ২৫ ভরি এবং ইলেট্রনিক্স সামগ্রী ও আববাসপত্র রয়েছে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকার। ব্যবসায় বিনিয়োগ আছে ৩১ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। শটগান ও পিস্তল ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার এবং শেয়ার ব্যালেন্স ১২ হাজার টাকা এবং ২৫ ভরি স্বর্ণ যার দাম ৩ লাখ ২০ হাজার টাকার।

এর বিপরীতে প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের ব্যক্তিগত ঋণ (বন্ধক বিহীন) আছে ৫৮ লাখ টাকা। 

২০১৮ সালের নভেম্বরে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য জমা দেওয়া হলফনামায় ব্যাংকে জমাসহ নগদ টাকার পরিমাণ ছিল ৬০ লাখ টাকা। অস্থাবর সম্পদ ছিল ৯৩ লাখ টাকার এবং স্থাবর সম্পদ হিসেবে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া জমির পরিমাণ ৫১ শতক। 

এবারের নির্বাচনের হলফনামায় তার কৃষি জমির পরিমাণ ২৭৪.৪৫ শতক (উত্তরাধিকার ও ক্রয় সূত্রে) এবং অকৃষি জমি ৩১.৪৩ শতক ও উত্তরা এপার্টমেন্ট প্রজেক্টে ১৬৫৪ বর্গ ফুটের ফ্লাট বুকিং রয়েছে।

মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী নামে অস্থাবর সম্পদের মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের হলফনামা অনুযায়ী এর পরিমাণ ১ কোটি ২০ লাখ এবং স্বর্ণ ১৩০ ভরি (বিবাহের উপহার ও উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত)। এর মধ্যে নগদ টাকা ৪৭ লাখ, বাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, স্থায়ী আমানত ২০ লাখ, ১টি মাইক্রোবাস ৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ইলেকট্রনিক্স ও আসবাবপত্র ৪ লাখ টাকার এবং ব্যবসায় বিনিয়োগ ৪০ লাখ টাকা।

গত ১০ বছরে ফরহাদ হোসেনের স্ত্রীর সম্পদও বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েকগুণ। ২০১৪ সালের হলফনামায় স্ত্রী অস্থাবর সম্পদ ছিল ১৪ লাখ ৭০ হাজার এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনের হলফনামায় এ পরিমাণ ৫৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

;

কম দামে সার ও বীজ চায় লালমনিরহাটের কৃষক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লালমনিরহাট
কম দামে সার ও বীজ চায় লালমনিরহাটের কৃষক

কম দামে সার ও বীজ চায় লালমনিরহাটের কৃষক

  • Font increase
  • Font Decrease

 “বাবা কায় ক্ষমতায় আসিল, আর কায় হামাক কি দিবি এল্লা নিয়ে চিন্তা করার সময় হামার নাই বাহে। হামা যদি জমিত আবাদ করির পাই তাহলে হামার পেটোত ভাত যাইবে। আর আবাদ করির না পাইলে হামার পেটোত ভাত জুটবে না। কায় ক্ষমতায় আইসে আসুক অইল্লা দেখার টাইম হামার নাই বাহে, হামা কম দামে সার, বীজ আর তেল চাই।”

এভাবেই বলছিলেন, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার চর হলদীবাড়ী গ্রামের কৃষক আশরাফ আলী। সার ও বীজের দাম নিয়ে কেবল আশরাফ আলীই নন, বিপাকে পড়েছেন লালমনিরহাটের অধিকাংশ কৃষক।  

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, আমন ধান ও বাদাম ঘরে তোলার পর পরই জমি পতিত না রেখে আবারও ফসল ফলানো জন‌্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষকরা। চলছে ভুট্টা, আলু, পেঁয়াজ, রসুন ও মিষ্টিকুমড়া চাষাবাদ। তবে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও মোকাবিলা করতে হয়েছে কৃষকদের। বন্যা শেষ হওয়ার পরই চাষাবাদে ব্যস্ত হয়ে পড়ে কৃষকরা। তবে সার ও বীজের দাম বেশি হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তাঁরা।

নীলফামারী সীমান্ত দিয়ে তিস্তা বাংলাদেশে প্রবেশ করে লালমনিরহাট জেলার পাঁচ উপজেলা দিয়ে কুড়িগ্রাম জেলা হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে মিলিত হয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে ১১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ নদীটি লালমনিরহাটেই পড়েছে বেশিরভাগ অংশ।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলায় আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৩ শত হেক্টর জমিতে আর ভুট্টা ৩২ হাজার ৯ শত ২০ হেক্টর জমিতে। এছাড়া পেঁয়াজ ৯ শত হেক্টর ও রসুন ৪ শত হেক্টর চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।


কৃষি বিভাগ জানায়, লালমনিরহাটের বিভিন্ন চরাঞ্চলের ৬০ হাজার হেক্টর জমির মধ্যে ৬৫ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রকার আবাদ করা হয়ে থাকে।

হাতীবান্ধা উপজেলার চর সিন্দুর্না গ্রামের মমতাজ আলী জানান, ‘আমরা কম দামে সার, বীজ ও তেল কিনতে চাই। ভালোভাবে সার দিতে পারলে ভালো ফসল পাবো। এতে যদি ভালো দাম পাই।’

একই এলাকার মকবুল হোসেন বলেন, ‘আমার তিস্তার চরে এক একর জমি আছে। সেই জমিতে প্রতিবছর বিভিন্ন আবাদ করেই চলি। চরের এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষে সব মিলিয়ে খরচ হয় প্রায় ১৫-২০ হাজার টাকা। আর এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ উৎপাদন হয় ৩০-৩৫ মণ। আমাদের এখানকার অনেকে চরে বিভিন্ন আবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করছে।’

তিস্তার চরে কাজ করছিলেন ছকিনা বেগম। তিনি জানান, সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কাজ করলে মজুরি পান ৪০০ টাকা। পুরুষরা পান ৬০০ টাকা। মজুরিটা একটু বেশি হলে ভালো হতো। তারপরেও নিয়মিত কাজ থাকার কারণে সংসারে একটু অভাব কমেছে। এইরকম কাজ সারাবছর থাকলে, আমার মত পরিবারগুলোর অনেক ভালো হতো।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হামিদুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ব অর্থনীতির মন্দার পরেও এ জেলার কৃষকরা কৃষিতে বিপ্লব ঘটানোর চেষ্টা করছে। কৃষকরা ভুট্টাসহ শীতকালীন আলু, সরিষা, পেঁয়াজ, রসুন ও মিষ্টিকুমড়া চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এবার কৃষকরা সবজিতে ভালো দাম পাওয়ার কারণে খুব খুশি। আমরা তাদেরকে সবসময় পরামর্শ দিয়ে আসছি।‘

;