কালুরঘাট সেতু হবে পদ্মা সেতুর আদলে, ব্যয় ৬৩৪১ কোটি টাকা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
কালুরঘাট সেতু হবে পদ্মা সেতুর আদলে, ব্যয় ৬৩৪১ কোটি টাকা

কালুরঘাট সেতু হবে পদ্মা সেতুর আদলে, ব্যয় ৬৩৪১ কোটি টাকা

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতু। নাম শুনলেই যেন অপেক্ষা আর শঙ্কার কথা মনে এসে যায়। চোখে ভাসে দীর্ঘ লাইনের সারি সারি গাড়ি। আবার ট্রেন আসলে থমকে যায় লাশবহণকারী গাড়িও। অবশেষে এতসব শঙ্কা ও অপেক্ষার বিদায় দিয়ে আলোর মুখ দেখছে শতবর্ষী এই সেতু।

৬ হাজার ৩৪১ কোটি টাকা ব্যয়ে পদ্মা সেতুর আদলে তৈরি হবে কালুরঘাট সেতু। ২০২৩ সালের প্রথম দিকে শুরু হতে পারে এই সেতুর কাজ। ৭৮০ মিটারের সেতুটির নির্মাণে সময় লাগবে ৪ বছর। পদ্মাসেতুর মতো এ সেতুর ওপরে চলবে গাড়ি আর নিচে ট্রেন। দুটুই চলবে দুই লাইনে। অর্থাৎ ট্রেন-গাড়ি একই সময়ে আসা যাওয়া করতে পারবে।

বুধবার (৬ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সদর দপ্তর সিআরবিতে কালুরঘাট রেল কাম সড়ক সেতুর অগ্রগতি নিয়ে বৈঠকে নতুন সেতুর প্রস্তাবিত নকশা, টেন্ডার, ব্যয় ও নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

বৈঠক শেষে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, কালুরঘাট সেতু নিয়ে কোরিয়ান এক্সিম ব্যাংক ফিজিবিলিটি স্টাডি করছে। আমাদের যেটা জানানো হয়েছে সেটি হচ্ছে, ব্রিজের ওপরের ডেকে থাকবে সড়ক আর নিচের ডেকে থাকবে রেললাইন। দুটুই দুই লাইনের হবে। প্রাথমিকভাবে ব্রিজের দৈর্ঘ্য আমাদের বলা হয়েছে ৭৮০ মিটার, ভায়াডাক্ট ৫ দশমিক ৬২ মিটার। স্পেন হবে ১০০ মিটার। ব্রিজের উচ্চতা হবে ১২ দশমিক ২ মিটার। আগামী আগস্ট মাসে ফাইনাল প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের রিপোর্ট জমা দেবে। এরপর টেন্ডার হবে। আমাদের বলা হয়েছে টেন্ডারের পর নির্মাণকাল প্রায় ৪ বছর। আমাদের টেন্ডার শেষ করতে প্রায় ৬-৮ মাস সময় লাগবে। তারপর ইডিসিএফ ফান্ড দেবে। ফান্ড দিলে কাজ শুরু হবে। সে ক্ষেত্রে ৬ হাজার ৩৪১ কোটি টাকার মতো মোট খরচ হবে বলে আমাদের বলা হয়েছে।


বৈঠক শেষে সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছলেম উদ্দিন আহমেদ বলেন, কালুরঘাট নতুন সেতু নির্মাণের জন্য ২০১০ সালে কর্ণফুলী তৃতীয় সেতু যখন উদ্বোধন করতে এসেছিলেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। সেদিন আমরা সিডিএ'র মাঠে একটা জনসভা করেছিলাম। সেখানে তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে, কালুরঘাটেও নতুন একটি সেতু নির্মাণ করে দিবেন। যেটাতে একসাড়ে গাড়ি এবং ট্রেন চলতে পারবে।

কিন্তু দীর্ঘ এগারো বছর সময় গিয়ে আমার আগেও যিনি এমপি ছিলেন তিনিও চেষ্টা করেছিলেন, হয়নি। এবং দুর্ভাগ্য হচ্ছে বিভিন্ন জটিলতার কারণে এটি একনেকে গিয়েও ফেরত আসছে। তখন কিন্তু খরচও অনেক কম ছিল। যা হউক শেষ পর্যন্ত আমি দায়িত্বে আসার পর এটি নিয়ে যখন আবার কাজ শুরু করলাম। পরে এটি নকশার জন্য টেন্ডার হলো। মধ্য দিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একনেকের মিটিংয়ে বললেন এটি আবার রিভাইস করে আনার জন্য। মধ্যদিয়ে কিছু ভুল বুঝাবুঝি হয়ে লেখা হয়েছিল যে দুইটা সেতু করার জন্য। একটা রেলসেতু আরেকটা সকড়সেতু।

তিনি আরও বলেন, পরবর্তী সময়ে এরা আবার ওইটা নকশা করে যখন প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিয়ে যায়। তখন তিনি বলেন, আমি তো এরকম বলিনি। একটি সেতু হবে। সেটিতে সড়ক ও ট্রেনসেতু থাকবে। প্রধানমন্ত্রী অগ্রাধিকার প্রকল্পের এক নম্বরে দিয়েছেন, এক্সজিম ব্যাংক ফান্ড দেবেন। এবং সরকারের সাথে তাদের কয়েকবার বৈঠকও হয়েছে।

মোছলেম উদ্দিন বলেন, আমি দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে করোনাকালিন সংকটের মধ্যেও প্রতিনিয়ত প্রন্ত্রণালয় ও স্থানীয় রিসোর্ট ডিভিশন, যারা অর্থায়নের জন্য বিদেশের সাথে কথা বলেছিল। তাদের সাথে সচিব, মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী মিলে বারবার কথা বলার পরে পুনরায় টেন্ডার হয়েছে। ভাগ্যভাল ওই টেন্ডারে আগে যারা স্টাডি করেছিল তারাই আবার কাজটি পেয়েছে। ফলে খুব কম সময়ে ডিজাইনটা সাবমিট করছে। তবে এর আগে রেলসহ অন্যান্যদের সাথে আলাপ করে আরও সুন্দর ও পরিপুষ্টভাবে তৈরি করে সরকারের কাছে জমা দেওয়ার জন্য তারা কিছু সময় নিয়েছে। আগামী আগাস্টে তারা সেটি জমা দিবেন। এই জন্য আজকে রেলের সাথে একটি চূড়ান্ত বৈঠক হয়েছে।

তাদেরকে আমরা আরেকটা প্রস্তাব দিলাম, দুই পাশে গাড়ি ওঠা নামার জন্য তারা যে স্থানটি ঠিক করেছে। এটি সরজমিনে দেখে রেলের আরও জায়গা আমাদের মতে মানুষে দখলে আছে সেগুলো সহ নিয়ে এটি করার জন্য তাদেরকে একটি সুপারিশমালা দিয়েছি। এ জন্য আগামীতে হয় তো আরেকবার কালুরঘাটে বা জানালি হাটের ওইদিকে একটি বৈঠক হবে। এটি পদ্মাসেতুর আদলে ব্রিজটা হচ্ছে। নিচ দিয়ে রেললাইন যাবে। তবে আসা যাওয়ার জন্য রেললাইন দুইটা থাকবে। খুবই সুন্দর একটা ডিজাইন করছে। কিন্তু প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার মতো খরচ বেড়েছে।

তবে নতুন সেতুটি আগের স্থান থেকে আরেকটু আগের দিকে অর্থাৎ হালদা নদীর ৭০ মিটার উজানের দিকে হবে বলেও জানান এই সংসদ সদস্য।

   

ভুটানে পৌঁছেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ভুটানে পৌঁছেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী

ভুটানে পৌঁছেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী

  • Font increase
  • Font Decrease

 

ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক এর আমন্ত্রণে ভুটান সফর করছেন বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।

এর আগে বাংলাদেশ সফররত ভুটানের রাজার আমন্ত্রণে গতকাল (২৮ মার্চ) বিকেলে তাঁর সঙ্গে কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলার সোনাহাট স্থলবন্দর দিয়ে সড়কপথে ভারত হয়ে ভুটান যান তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী। এদিন ভুটানের দক্ষিণাঞ্চলীয় গেলেফু সিটিতে অবস্থান করেন ভুটানের রাজা ও বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী। সেখানে অবস্থানকালে ভুটানের রাজা বেশকিছু সময় ধরে বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীকে সাথে নিয়ে গেলেফু সিটি ঘুরে দেখেন এবং সেখানে শান্তিপূর্ণ, পরিবেশবান্ধব, পরিচ্ছন্ন ও সৌন্দর্যমন্ডিত আইকনিক সিটি গড়ে তোলার পরিকল্পনার কথা জানান।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকালে গেলেফু সিটি থেকে ভুটানের রাজার সঙ্গে বিমানযোগে ভুটানের পারো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী। বিমানবন্দরে ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক ও বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাতকে স্বাগত জানান ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে ও ভুটানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শিবনাথ রায়। পরে পারো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে যান ভুটানের রাজা এবং বাংলাদেশের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী।

ভুটান সফর শেষে আগামী রোববার (৩১ মার্চ) দুপুরে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

;

রাজধানীসহ ৪ বিভাগে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টির আভাস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু জায়গায় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অস্থায়ী দমকা, ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এসব তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

পূর্বাভাসে আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ জানান, পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।

এতে আরো বলা হয়েছে, আজ সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে ।

আর আগামীকাল শনিবার (৩০ মার্চ) সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা, ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি এবং বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। তবে ওইদিনও সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।

অপরদিকে রোববারও (৩১ মার্চ) ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের দু-এক জায়গায় বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। একইসাথে ওইদিনও সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।

;

আশুলিয়ায় ৩ কথিত সাংবাদিক গ্রেফতার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,বার্তা ২৪.কম, সাভার (ঢাকা)
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

 

চাঁদা না দিলে গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে আশুলিয়ায় ৩ কথিত সাংবাদিককে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

বিভিন্ন কথিত মিডিয়ার সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে চাঁদা আদায় করে আসছিল চক্রটি। পরে অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর করে র‍্যাব।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) আশুলিয়া থানা থেকে তাদের ঢাকার আদালতে পাঠানো হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুরে তাদের আশুলিয়ার বাইপাইল পশ্চিমপাড়া এলাকা থেকে আটক করা হয়। পরে এক ভুক্তভোগী বাড়ির মালিক বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মাগুরা জেলার মো. শহীদুল ইসলাম (৩৯), সিরাজগঞ্জ জেলার মো. শাহীন (৩২) ও যশোর জেলার মো. আরমান হোসেন (৩০)। তারা আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় ভাড়া থেকে সাভার, আশুলিয়া ধামরাই এলাকায় সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে চাঁদা আদায় করে আসছিল।

তাদের কাছ থেকে একটি প্রেস স্টিকার লাগানো একটি মোটরসাইকেল, সত্য প্রকাশ, আইন সমাজ, জে জে বাংলা টিভি সহ ৬টি বিভিন্ন মিডিয়ার পরিচয় পত্র, টোয়েন্টি ফোর বিডি নিউজ ও এম টিভি নামে দুটি ২টি মিডিয়ার বুম, মোবাইল ও নগদ টাকা জব্দ করা হয়েছে।

র‍্যাব জানায়, সংঘবদ্ধ চক্রটি এলাকার সাধারণ মানুষের বাসায় গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা বা পুনরায় গ্যাস সংযোগ দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন কৌশলে বাড়ির মালিককে ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা চাঁদা আদায়ের প্রতারণা করে আসছিলো।

র‍্যাব ৪ সিপিসি ২ এর কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা চাঁদা আদায়ের কথা স্বীকার করেছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে সাভার-আশুলিয়া আশপাশের এলাকায় ভূয়া সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে আসছিল।

;

রাজশাহীতে জমজমাট ঈদের বাজার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঈদের আগে রাজশাহীতে বেড়েছে কেনাকাটা। শহরের হৃদয়কেন্দ্রিক বাজারগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতার ভিড় এক নতুন প্রাণের সঞ্চার করছে। ঈদ উপলক্ষে বাজারে বিক্রি হচ্ছে নানা রকমের পোশাক, জুতা, গহনা, ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক পণ্য, যা ক্রেতাদের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি ঈদের আনন্দকে দ্বিগুণ করে তুলেছে।

শহরের অলি-গলি, মেইন রোড, শপিং মল এবং লোকাল মার্কেটে সর্বত্রই দেখা যাচ্ছে কেনাকাটার উচ্ছ্বাস। বিক্রেতারা তাদের দোকানগুলোকে আকর্ষণীয় করে সাজিয়েছেন এবং বিশেষ ছাড়, উপহার, এবং অফার ঘোষণা করেছেন, যা ক্রেতাদের আরও বেশি করে আকৃষ্ট করছে। বাজারের এই জমজমাট পরিবেশ শুধু ব্যবসায়িক লেনদেনকেই বাড়িয়ে তুলছে না, বরং সামাজিক বন্ধনকেও আরও দৃঢ় করে তুলছে।

ঈদে রাজশাহীর বাণিজ্যিক এলাকায় পোশাক বিক্রিতে অভূতপূর্ব বৃদ্ধির সাক্ষী হতে যাচ্ছেন বিক্রেতারা। ব্যবসায়িরা আশা করছেন বিক্র প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।

বাজারের প্রান্তে প্রান্তে দোকানগুলো নতুন সংগ্রহে সাজসজ্জা করে উপস্থাপন করছে নানা রঙের ও ডিজাইনের পোশাক।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শুক্রবার ছুটির দিনেও বেশ সরগরম রাজশাহীর সাহেববাজার, আরডিএ মার্কেট ও গণকপাড়া বাজার। রমজানের প্রথম দশদিন পার হওয়ার পরই ভিড় বাড়তে শুরু করেছে বিপণিবিতানগুলোতে। প্রতি বছরের মতো এবারো ভিন্ন ভিন্ন নামের পোশাক এসেছে বাজারে। এগুলোর মধ্যে আলিয়াকাট, আরিগ্রাউন্ড, ইন্ডিয়ান গ্রাউন্ড, নাইরাকাট, সারারা, গাড়ারা ও পাকিস্তানি গাউন বেশি চলছে। এবার বাজারে ক্রেতাদের প্রধান আকর্ষণ নারীদের আলিয়াকাট আর নাইরাকাট জামায়। এছাড়া বাচ্চাদের পোশাক বিশেষ করে বিভিন্ন নকশার পাঞ্জাবিতেও রয়েছে সমান আকর্ষণ।

১২০০ থেকে শুরু করে ১৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব পোশাক। নগরীর সাহেববাজারে অবস্থিত আরডিএ মার্কেটে প্রধানত মধ্যম আয়ের মানুষরা বেশি কেনাকাটা করে থাকেন। এবারও এই মার্কেটে বাহারি রঙের পোশাক এসেছে।

রাজশাহী আরডিএ মার্কেটের রাজ্জাক ফ্যাশনের দোকানের মালিক আব্দুর রাজ্জাক জানান, এবারের ঈদে আমরা আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণ বিক্রির লক্ষ্য নিয়েছি। আমাদের কাছে নতুন ডিজাইনের শাড়ি, পাঞ্জাবি, কুর্তা এবং শিশুদের পোশাকের এক বিশাল সংগ্রহ রয়েছে। আমরা আশাবাদী, এবারের ইদে আমাদের বিক্রি ৫০০ কোটি টাকার বেশি হবে।

এদিকে নগরীর সব বিপণিবিতান আর বিভিন্ন ব্র্যান্ডের শো-রুমগুলো ঝলমলে আলোতে সাজানো হয়েছে। বিক্রেতারা আশাবাদী, এবারের ঈদবাজার নিয়ে। ফড়িং রাজশাহী শাখার ম্যানেজার এমরান হোসেন বলেন, আমরা ঈদ উপলক্ষে বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছি। তিনি বলেন, ঈদ আসতে অনেক সময় এখনও বাকি আছে। আমরা আশা করছি অনেক ক্রেতা হবে। তবে এখন পর্যন্ত ক্রেতা আসলেও তেমন ব্যবসা জমে ওঠেনি। আশা করি শেষ দশ দিনে বেশ ভালো জমে উঠবে।

আরডিএ মার্কেটের একজন ক্রেতা বলেন, এখানে এত বিভিন্ন ধরনের পোশাক দেখে মুগ্ধ হয়েছে। প্রতিটি দোকানে নতুন কিছু আছে, এবং দামের দিক থেকেও মনে হচ্ছে বেশ সুবিধাজনক। বিশেষ করে অফার ও ছাড়ের কারণে আমরা অনেক কিছু কম দামে কিনতে পারছি, যা সাধারণত অন্য সময়ে কিনতে গেলে বেশি দাম দিতে হয়।

বাজারে ঈদের বাজার করতে এসেছে শিশু জয়নব। বাবা আল মামুনের হাত ধরে এসেছে সে। তারও পছন্দ নাইরাকাট জামা। বাবা বলেন, দাম অনেক বেশি। গতবারে চেয়ে অন্তত দেড় থেকে দুইগুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এখন উৎসব, যত কষ্টই হোক না কেন বাচ্চাদের কিনে তো দিতে হবে। একটা নাইরাকাট জামা কিনেছি ১৮০০ টাকা নিয়েছে। এটা অনেক বেশি।

রাজশাহীর আড়ংয়ে শাড়ি কিনতে এসেছেন জাকিয়া ইয়াসমিন জুঁই। তিনি বলেন, রোজার দিনে একটু স্বাচ্ছন্দ্যে কিনতেই আমি সাধারণত এই শো-রুমগুলোতে আসি। তবে এবার ইদের শাড়িগুলোর দাম একটু বেশি। সবমিলিয়ে বেশি দাম হলেও নতুন নতুন ডিজাইনের পোশাক আছে। এতেই খুশি আমরা।

রাজশাহীর ইদ উৎসব এবার শুধু বাণিজ্যিক সফলতা নয়, সামাজিক সংহতি ও ঐক্যের এক অনন্য উদাহরণ হয়ে উঠেছে। এই উৎসব প্রমাণ করে যে, ঐতিহ্য এবং সামাজিক বন্ধন ব্যবসায়িক সফলতার সাথে কীভাবে সমন্বয় সাধন করে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দোর আলী। তিনি বলেন, রাজশাহী জেলায় এখনো তেমন কেনাকাটা জমে ওঠেনি। সাধারণত ঈদের শেষ ১০ দিনে বাজার জমে ওঠে। এবারও তাই হবে। আমরা আশা করছি, এবারের ঈদে শুধুমাত্র জামা-কাপড় ৫০০ কোটি টাকার বেচাকেনা হবে।

তিনি বলেন, সরকারি নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতা বিষয়ক উদ্যোগ নিশ্চিত করা হয়েছে যেন ক্রেতা এবং বিক্রেতা উভয়েই একটি নিরাপদ ও আনন্দদায়ক কেনাকাটার অভিজ্ঞতা লাভ করেন। পুলিশ প্রশাসন বাজার এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার জোরদার করেছে এবং যানজট এড়াতে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে প্রশাসন।

;