শিক্ষক হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ছাত্রের বাবা গ্রেফতার



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকার আশুলিয়ায় নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর স্ট্যাম্পের আঘাতে শিক্ষক উৎপল কুমার সরকারের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বাবাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (২৯ জুন) রাতে কুষ্টিয়ার কুমারখালী এলাকা তাকে গ্রেফতার করা হয়।

ওই শিক্ষার্থীর বাবা উজ্জল হাজী আশুলিয়ার চিত্রাশাইল এলাকার বাসিন্দা।

শিক্ষক উৎপলকে হত্যার ঘটনায় ওই স্কুলছাত্রকে প্রধান আসামি করে এবং অজ্ঞাত আরও তিন-চার জনের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন নিহত শিক্ষকের ভাই অসীম কুমার।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজে মেয়েদের ক্রিকেট খেলা চলছিল। শিক্ষক উৎপল কুমার মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে খেলা দেখছিলেন। দুপুরের দিকে হঠাৎ এক ছাত্র মাঠ থেকে ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প নিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে পালিয়ে যায়। উৎপলকে দ্রুত উদ্ধার করে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের আইসিউতে রাখা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ভোরে তার মৃত্যু হয়। হত্যায় অভিযুক্ত ছাত্রকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।

   

রাতের বৃষ্টিতে এখনো পানিবন্দী রাজধানীর অনেক এলাকা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
পানিবন্দী রাজধানীর অনেক এলাকা

পানিবন্দী রাজধানীর অনেক এলাকা

  • Font increase
  • Font Decrease

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টানা কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে কার্যত অচল হয়ে পড়েছিল গোটা রাজধানী। ডুবে গিয়েছিল রাজধানীর অলিগলি ও মূল সড়ক। এদিকে বৃষ্টির রাতের পর ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও জলাবদ্ধতা থেকে রেহাই রাজধানীর অনেক এলাকা।

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর পুরান ঢাকা, নিউ মার্কেট, আজিমপুরসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অলিগলিতে এখনো হাঁটু সমান পানি জমে আছে। অনেক দোকানপাট বন্ধ। বাসাবাড়িতে আটকা পড়েছেন অনেকে। অনেকে আবার বাধ্য হয়েই ময়লা পানি মাড়িয়ে ছুটছেন নিজ নিজ গন্তব্যের দিকে। তবে সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় পথে মানুষের আনাগোনা কম, যানবাহনও কম চলাচল করছে।

রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মার্কেটের ভিতরে হাঁটু সমান পানি জমে থাকায় ব্যবসায়ীরা দোকান খুলতে পারেননি। এমন অবস্থায় ক্রেতা সমাগমের কথা তো চিন্তাও করা যায় না। অথচ অন্যান্য শুক্রবারে সকাল ৯টার পর থেকেই খুলতে শুরু করে নিউমার্কেটসহ ওই এলাকার দোকানপাট। ক্রেতার ভিড়ও লেগে যায় সকাল থেকেই। কিন্তু রাতের মুষলধারে বৃষ্টি সব হিসাব উল্টে দিয়েছে।

দোকান খুলবেন তো দূরের কথা অনেক ব্যবসায়ীকে রাতের বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়া কাপড় রোদে শুকাতে ব্যস্ত থাকতে দেখা গেছে। এমন হাঁটু পানি জমে আছে ঢাকা নার্সিং কলেজের ভেতরেও। মেয়র হানিফ উড়ালসড়ক থেকে নামার জায়গা ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনের অংশের সড়কও সকালে পানির নিচে ছিল।

এদিন পুরান ঢাকার হোসাইনী দালান রোড, নাজিমুদ্দিন রোড, চাঁনখারপুল লেন ও নিমতলী এলাকা ঘুরে জলাবদ্ধতার এমন চিত্রই দেখা গেছে। আগের রাতের বৃষ্টিতে পরদিন দুপুরেও পানিবন্দী পুরান ঢাকার মানুষ।

আজিমপুরের দিক থেকে আসা সিএনজি চালক আলীম সরকার বলেন, যাত্রাবাড়ী থেকে আজিমপুরে একটা ট্রিপ নিয়ে এসেছিলাম। কিন্তু এসে দেখি ওই দিকের রাস্তায় এখনও পানি জমে আছে। সিএনজি নিয়ে গেলে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাবে। তাই যাত্রী নামিয়ে রিকশা ঠিক করে দিয়েছি।

নাজিমুদ্দিন রোডের বাসিন্দা অলোক। তিনি বলেন, বৃষ্টির পানিতে সড়কের পাশে জমিয়ে রাখা ময়লা-আবর্জনা ও ড্রেনের ময়লা একাকার হয়ে গেছে। রাত থেকে নোংরা পানি মাড়িয়েই চলাচল করছেন মানুষ। রাস্তার দুপাশের অধিকাংশ দোকানে পানি ঢুকেছে।

;

লক্ষ্মীপুরে রাতের অন্ধকারে স্কুল ভাঙচুর, অনিশ্চিত পাঠদান



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, লক্ষ্মীপুর
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

লক্ষ্মীপুরে রাতের অন্ধকারে দু'দফা হামলা চালিয়ে ১০ টি সেমিপাকা ও দুটি টিনসেট শ্রেণিকক্ষ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) গভীর রাত ও শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) ভোরে সদর উপজেলার পালেরহাট মডেল একাডেমিতে এ ভাঙচুর চালানো হয়। জমির মালিকানা দাবি করে তোফায়েল আহমেদ ও আবু তাহেররা দলবল নিয়ে এ ঘটনা ঘটায়।

এসময় দুটি ল্যাপটপ ও শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতনের ১ লাখ টাকা নিয়ে যায় হামলাকারীরা। ভাঙচুর ও লুটপাটে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রতিষ্ঠান প্রধান মোরশেদ কামাল দাবি করেছেন।

বিদ্যালয়ের প্রধান মোরশেদ কামাল ও তার বড় ভাই সাইফুল ইসলাম জানায়, তাদের মা ফাতেমা বেগম এই জমির মালিক। ২০১৪ সালে এ জমিতে বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়। কিন্তু তাদের মায়ের চাচাতো ভাই তোফায়েল আহমেদ, আবু তাহের ও খোরশেদরা জমির মালিকানা দাবি করে আসছে। এনিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে একাধিকবার বৈঠক হলেও তোফায়েলরা জমির কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। সবশেষ ১৩ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়েও বৈঠক হয়। সেখানেও তারা কোন কাগজপত্র উপস্থাপন করতে পারেনি।

এদিকে তোফায়েলরা দলবল নিয়ে জোরপূর্বক জমি দখল করতে বৃহস্পতিবার রাতের অন্ধকারে বিদ্যালয়ে ভাঙচুর চালায়। বাজারের একজন নৈশ প্রহরীর কাছ থেকে খবর পেয়ে ৯৯৯ এ কল দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল আসে। হামলাকারীরা তাৎক্ষণিক পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ চলে গেলে শুক্রবার ভোরে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত দলবল নিয়ে ফের ভাঙচুর চালায়। এতে বাধা দিতে গেলে প্রতিষ্ঠান প্রধান মোরশেদকে মারধর করে তারা। হামলাকারীরা বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষসহ ১০টি সেমিপাকা, দুটি টিনসেট শ্রেণিকক্ষ, একটি ডেস্কটপ কম্পিউটারসহ সকল আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। পরে দুটি ল্যাপটপ ও শিক্ষকদের মাসিক বেতনের জন্য রাখা ১ লাখ টাকা নিয়ে যায় হামলাকারীরা।

শিক্ষার্থী ইয়াসিন আরাফাত ও মেহেদী হাসান জানান, বৃহস্পতিবারও তারা ক্লাস করে গেছে। এখন তাদের স্কুলটা ভেঙে তছনছ করে ফেলেছে। তারা কোথায় ক্লাস করবে। সামনে তাদের বার্ষিক পরীক্ষা। এ অবস্থায় ক্লাস করতে না পারলে তাদের পড়ালেখার সমস্যা হবে।

শিক্ষার্থীদের অভিভাবক বেলাল হোসেন ও এমরান হোসেন জানান, বিদ্যালয়টি এমনভাবে ভাঙচুর করেছে পাঠদান কর্মসূচি চালানো অসম্ভব। এতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ভবিষ্যতে ছেলেমেয়েদের ভর্তি করানো ঝুঁকি মনে হচ্ছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোরশেদ কামাল বলেন, দু'দফা হামলা চালিয়ে পুরো ভেঙে তছনছ করে ফেলা হয়েছে। প্লে থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত আমাদের প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এ শিক্ষার্থীদের পাঠদান এখন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আনিছ উজ জামান বলেন, খবর পেয়ে রাতে ঘটনাস্থল এসে ভাঙচুরের সত্যতা পায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তখন হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এরপর আমরা চলে গেলে ফের স্কুলে ভাঙচুর চালানো হয়। ঘটনাস্থল এসে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। হামলাকারীদের তথ্য নেওয়া হয়েছে। থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

;

চিংড়ি চাষের পাশাপাশি সবজি চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সাতক্ষীরায় চিংড়ির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মিঠা এবং নোনা পানির মাছের ঘেরের ভেড়ি বাঁধে সবজি চাষ। চিংড়ি মাছ চাষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ঘেরের আইলে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষও। ফসল হিসেবে শুরু হলেও এখন মূল ফসলের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে সমানে সমান। মাচায় বা ঘেরের আইলে সবজি আর নিচে পানিতে চিংড়ি মাছ চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।

সাতক্ষীরার তালা উপজেলা ও পাটকেলঘাটার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে দেখা যায় এমন দৃশ্য। অধিকাংশ মাছের ঘেরে যতদূর চোখ যায় সবুজের হাতছানি। ঘেরের আইলের ওপরে নির্মিত সারি সারি মাচায় ঝুলছে করলা, লাউ, কুমড়া, বরবটি, চিচিঙ্গা, ধুন্দল, শসা ও তরমুজ। আইলের ওপরে রয়েছে ঢ্যাঁড়শ, পুঁইশাক। চিংড়ি চাষের পাশাপাশি সবজি চাষে ঝুঁকছেন কৃষকরা। চিংড়ি চাষের পাশাপাশি ঘেরের বাঁধে সবজি চাষ করে বাড়তি টাকা আয় করে খুশিতে কৃষকরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হরশিত নামে এক কৃষক মাছের খাবার দিচ্ছেন এবং বাঁধের ওপর কিছু মানুষ সবজির পরিচর্যা করছেন।

তার সঙ্গে চিংড়ি চাষ ও সবজি চাষ সম্পর্কে কথা বলতে চাইলে বলেন, আমরা ঘেরে চিংড়ি চাষ করি তার পাশাপাশি এই দুই বছর ঘেরের বাঁধ বড় করে সেখানে সবজি চাষ করছি। কারণ চিংড়ি চাষ করতে হলে ঘেরের বাঁধ উঁচু করতে হয়। বাঁধ ফেলে না রেখে সবজি চাষ শুরু করলাম এবং ভালো ফলন পাচ্ছি। চিংড়ির পাশাপাশি সবজি চাষ করে লাভবান হচ্ছি।

পাশে ঘেরের বিকাশ মন্ডল। তিনি স্ত্রী পুত্র সঙ্গে নিয়ে দেখি ঘেরের বাঁধে সবজি তুলছেন। তার কাছে শুনতে চাইলে বলেন, আমি ঘেরের বাঁধে মিঠাকুমরা, খেরায়, সোসা, বরবুটি এসব ফসল রোপন করেছি। আমি একদিন বাদে বাদে সবজি তুলে বিক্রি করে দেয় এবং তা থেকে আমি অনেক লাভবান হচ্ছি বলে জানিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আমি সারাবছর সবজি চাষ করবো বলে আরো নতুন বীজ নিয়ে আসছি সেগুলো রোপণ করবো দেখা যাক ভালো ফলন পায় কি না।

সাতক্ষীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মোঃ সাইফুল ইসলাম বলেন, গত বছরের তুলনায় এবছর মাছের ঘেরে অনেক সবজি চাষ হয়েছে এবং প্রতিবছর ক্রমান্বয়ে সবজি চাষ বাড়ছে। আমরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সব সময় চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছি এবং সব সময় ওদের পাশে আছি।

সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য অফিসার মোঃ আনিছুর রহমান বলেন, সাতক্ষীরাতে চিংড়িকে সাদা সোনা বলা হয়। সাতক্ষীরার চিংড়ি দেশ বিদেশে ভ্রমণ করছে এবং এখানকার চিংড়ি ঘের গুলো এখন দেখছি বাঁধ উচু করে সেখানে সবজি চাষ করছে পাশাপাশি তারা লাভবান হচ্ছে। এই উদ্যোগ তাদের অনেক লাভবান করছে এবং আমরা সব সময় তাদের পরামর্শ দিয়ে আসছি।

;

ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণে নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে উদ্যোগ গ্রহণের দাবি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণে নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে উদ্যোগ গ্রহণের দাবি

ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণে নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে উদ্যোগ গ্রহণের দাবি

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বের যেখানেই প্রাইভেট কারের উপর নির্ভরশীলতা বেড়েছে সেখানেই যানজট, সময় অপচয়, জ্বালানী অপচয়ের মত সমস্যাগুলো ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস ২০২৩ উদযাপনের মধ্য দিয়ে আমরা নীতিনির্ধারকদের কাছে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণ এবং হাঁটা, সাইকেল, গণপরিবহনবান্ধব নগর যাতায়াত ব্যবস্থা নিশ্চিতের গুরুত্ব তুলে ধরতে চাই।

আজ ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস ২০২৩ উদযাপন উপলক্ষ্যে ধানমন্ডি ২৭ এর মোড় থেকে আবাহনী খেলার মাঠ পর্যন্ত আয়োজিত “স্বল্প দূরত্বে হেঁটে ও সাইকেলে চলি, ব্যক্তিগত গাড়ি পরিহার করি” শীর্ষক র‌্যালিতে বক্তারা এ কথা বলেন। বিশ্বব্যাপী বর্তমানে প্রায় ৪০০০ শহরে দিবসটি পালিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশেও ২০০৬ সাল থেকে দিবসটি উদযাপিত হয়ে আসছে। বিশ্ব ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত দিবস আয়োজক সংস্থাসমূহের সম্মিলিত উদ্যোগে আয়োজিত র‌্যালীতে রায়েরবাজার এলাকার শিক্ষার্থী এবং বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিসহ দুই শতাধিক অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন।

পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খানের সভাপতিত্বে এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট- এর সহকারি প্রকল্প কর্মকর্তা মোঃ মিঠুনের সঞ্চালনায় আয়োজনের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জনাব শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকন। র‌্যালীর পূর্বে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর পরিচালক গাউস পিয়ারী। আরো বক্তব্য রাখেন নাগরিক অধিকার সংরক্ষণ ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হাফিজুর রহমান ময়না, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবীর, ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট এর নির্বাহী পরিচালক আদিল মোহাম্মদ খান, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা এম এ মান্নান মনির, রায়েরবাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক তাহাজ্জোত হোসেনসহ আরো অনেকে।

শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকন বলেন, ব্যক্তিগত গাড়ির কারণে সৃষ্ট সমস্যা সম্পর্কে আমরা সকলেই অবগত। গাড়িকেন্দ্রিক নগর যাতায়াত পরিকল্পনার কারণে গাড়ির সংখ্যা যেমন বেড়েছে, ঠিক তেমনি ট্রাফিক জ্যামও বেড়েছে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে। ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের লক্ষ্যে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা করতে হবে। আমাদের প্রত্যাশা বিষয়টির গুরুত্ব বিবেচনায় সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে কার্যকর পদক্ষেপ গৃহীত হবে।

হাফিজুর রহমান ময়না বলেন, আমরা দীর্ঘদিন থেকে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি। বাংলাদেশে 'কার ফ্রি ডে' অনেক বছর ধরে উদযাপন করা হলেও ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণে কোন টেকসই উদ্যোগ বা দিবসটি জাতীয় পর্যায় থেকে পালনের কোন উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। এ বিষয়ে ডিটিসিএ, সিটি কর্পোরেশন, সড়ক পরিবহন বিভাগ-কে আরো সচেষ্ট হতে হবে।

হেলাল আহমেদ বলেন, যাতায়াত পরিকল্পনায় যান্ত্রিক যানবাহন যেভাবে প্রাধান্য পায় সেভাবে হেঁটে ও সাইকেলে যাতায়াত প্রাধান্য পায় না। অনেকে আবার পথচারী ও সাইক্লিস্টদের যান্ত্রিক যান চলাচলের ক্ষেত্রে বাধা বলে মনে করেন। পথচারী ও সাইকেলবান্ধব যাতায়াত ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে স্বল্প দূরত্বে ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারে মানুষকে নিরুৎসাহিত করা সম্ভব। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ প্রয়োজন।

আলমগীর কবীর বলেন, ২০১৯ সালে বায়ুদূষণের প্রভাবে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে সর্বোচ্চ ৮৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। দেশে বায়ুদূষণের শীর্ষে রয়েছে ঢাকা বিভাগ এবং যান্ত্রিক যানের নিয়ন্ত্রণহীন সংখ্যা বৃদ্ধি এর অন্যতম কারণ। ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য পৃথিবী নিশ্চিত করতে আমাদের কর্তব্য ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ। আজকের এ আয়োজনের মাধ্যমে এ বার্তাই আমরা পৌঁছে দিতে চাই।

আদিল মোহাম্মদ খান বলেন, ধারণ ক্ষমতার থেকে অনেক বেশি পরিমাণে ব্যক্তিগত গাড়ি ঢাকা শহরে রয়েছে। ফলে যানজট, দূষণসহ বিভিন্ন সমস্যাও অনিয়ন্ত্রিতভাবে বেড়ে চলেছে। যথাযথ নগর পরিবহন পরিকল্পনার মাধ্যমে ব্যক্তিগত গাড়ির রেজিস্ট্রেশন এর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষকে যথাযথ নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে হবে। সেই সাথে পরিকল্পনাগত বিশ্লেষণের মাধ্যমে গাড়িমুক্ত রাস্তা তৈরি করা প্রয়োজন।

গাউস পিয়ারী বলেন, রাজউকের আওতাধীন এলাকায় ১৩,৮৬৫ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে মাত্র সাড়ে ১০ শতাংশ রাস্তা ২০ ফুটের বেশি চওড়া। অপ্রশস্ত সড়কগুলোতে ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল সময় নিয়ন্ত্রিত করা বা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা, এবং সপ্তাহে একদিন সমগ্র শহর ব্যক্তিগত গাড়িমুক্ত রাখার উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে।
আবু নাসের খান বলেন, ঢাকা শহরে ৫-৭ শতাংশ মানুষের ব্যক্তিগত গাড়ি আছে। তাতেই যানজট এমন অবস্থা ধারণ করেছে যে গাড়ির গতি হাঁটার গড় গতির নিচে নেমে গেছে। ঢাকার বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, বাস সার্ভিস উন্নয়ন এবং হেঁটে যাতায়াতের সুষ্ঠুু পরিবেশ নিশ্চিতের বিকল্প নেই।

;