মোংলায় ৮ ফিশিং ট্রলারসহ ভারতীয় ১৩৫ জেলে আটক



উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মোংলা (বাগেরহাট)
মোংলায় ৮ ফিশিং ট্রলারসহ ভারতীয় ১৩৫ জেলে আটক

মোংলায় ৮ ফিশিং ট্রলারসহ ভারতীয় ১৩৫ জেলে আটক

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশের জলসীমায় অবৈধভাবে প্রবেশ করে মাছ শিকারের অভিযোগে ৮টি ফিশিং ট্রলারসহ ভারতীয় ১৩৫ জেলেকে আটক করেছে মোংলা কোস্টগার্ড বাহিনীর সদস্যরা।

মঙ্গলবার (২৮ জুন) রাত ১০টার দিকে গভীর সমুদ্রে টহলরত নৌবাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে আটক করে।

আটককৃতদের ট্রলারসহ মোংলা থানা পুলিশে হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া ট্রলারে থাকা মাছ মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মৎস্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে নিলামে বিক্রির প্রস্তুতিও চলছে।

মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, ৮টি ট্রলার ও ১৩৫ জন ভারতীয় জেলে আটক হয়েছে। তার মধ্যে প্রথম দফায় ৬৭ জন জেলে ও ৪টি ট্রলার মঙ্গলবার রাতে আর বাকি ট্রলার ও জেলেদের বুধবার থানায় হস্তান্তর করবে নৌবাহিনী। দুই দফায় থানায় হস্তান্তরকৃতদের বিরুদ্ধে সমুদ্রসীমা লঙ্ঘন আইনে পৃথক মামলা দায়েরের পর বাগেরহাট আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

মোংলা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ৮টি ট্রলারের সব মাছ নিলামে বিক্রি করে অর্থ রাজস্ব খাতে জমা দেওয়া হবে। মোংলার দিগরাজ নৌঘাটিতে আনা ট্রলার ও জেলেদেরকে রাতে পুলিশ এবং মৎস্য দফতরে হস্তান্তর করেছে নৌবাহিনী।

   

দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদেরকে প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশপ্রেমিক ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও উদ্যোক্তাদের সকলকেই দুর্নীতি ও অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প পুরস্কার ২০২২’ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, আপনাদেরকে দুর্নীতি এবং অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে . . . যে কোনো পরিস্থিতিতে সরকার সবসময় আপনাদের পাশে থাকবে - উৎসাহ যোগাবে।

তিনি বলেন, দেশের শিল্পোন্নয়নে বিদ্যমান সকল সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে সকলের সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যেই ‘উন্নত বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে সক্ষমতা অর্জন করা সম্ভব।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ইতিমধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমে সনাতনী থেকে ডিজিটাল কর্মসূচিতে পদার্পণের ছোঁয়া পরিলক্ষিত হয়েছে এবং ডিজিটাল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট কর্মসূচিতে পদার্পণে বেশি সময় লাগবে না।

তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের স্লোগান হবে টেকসই শিল্পায়ন স্মার্ট বাংলাদেশের দর্শন। রাষ্ট্রপতি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা নির্মাণে অবদান রাখারও তাগিদ দেন।

দেশে ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ বিদ্যমান- উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, শিল্প খাতের দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য সরকার ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলেছে।

তিনি উল্লেখ করেন, কিন্তু এক শ্রেণির অসাধু-ব্যবসায়ীর অতি মুনাফালোভী মনোভাব ও রাতারাতি বড়লোক হওয়ার স্বপ্ন দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলছে এবং এতে জনগণের ভোগান্তি বাড়ছে। অল্পকিছু লোকের অপকর্মের দায়ভার গোটা ব্যবসায়ী সমাজের হতে পারে না ‘

শ্রমিকদের কল্যাণের পাশাপাশি দুস্থ মানবতার সেবায় দেশের ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার প্রশংসা করেন তিনি।

শ্রমিকদের নিয়ে আন্তর্জাতিক রাজনীতি হচ্ছে উল্লেখ করে, রাষ্ট্রপতি বলেন, কিছু দুষ্টচক্র দু-একজনকে বেছে নেয় এবং এদেরকে মানবাধিকারের কথা বলে দেশ-বিরোধী চক্রান্ত করায়।

তিনি শিল্প-কারখানায় শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা ও অধিকার প্রদানকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনা করারও অনুরোধ জানান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।

আজকের অনুষ্ঠানে ৬টি ক্যাটাগরিতে- ভারী, মাঝারি, ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও কুটির এবং উচ্চ প্রযুক্তির শিল্প ইউনিটের মালিকসহ ১২ জন শিল্পোদ্যোক্তাকে নিজ নিজ ক্ষেত্রে তাদের অসামান্য অবদানের জন্য ‘বঙ্গবন্ধু শিল্প পুরস্কার ২০২২’ সম্মাননা প্রদান করা হয়।

বৃহৎ শিল্প ক্যাটাগরিতে রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড প্রথম, জাবের এন্ড জোবায়ের ফেব্রিক্স লিমিটেড এবং বিএসআরএম স্টিলস লিমিটেড এবং মাঝারি শিল্প ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান অধিকার করে নিতা কোম্পানি লিমিটেড এবং দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে নোমান টেরি টাওয়েল মিলস লিমিটেড।

ক্ষুদ্র শিল্প ক্যাটাগরিতে হযরত আমানত শাহ স্পিনিং মিলস লিমিটেড প্রথম, বসুমতি ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেড দ্বিতীয় এবং টেকনো মিডিয়া লিমিটেড তৃতীয় স্থানে রয়েছে।

এছাড়া মাইক্রো ইন্ডাস্ট্রিজ ক্যাটাগরিতে গ্রিন জেনেসিস ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড এবং কুটির শিল্প ক্যাটাগরিতে শামসুন্নাহার টেক্সটাইল মিলস নির্বাচিত হয়েছে।

ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ ক্যাটাগরিতে প্রথম স্থান অর্জন করেছে এবং সুপার স্টার ইলেকট্রিক্যাল এক্সেসরিজ লিমিটেড ক্যাটাগরিতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে।

রাষ্ট্রপতি বলেন, শিল্প উদ্যোক্তা বা প্রতিষ্ঠানের জন্য এই পুরস্কার একটি অনন্য রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি যা তাঁদেরকে টেকসই শিল্পায়নে বিনিয়োগ ও নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে উৎসাহ এবং প্রেরণা যোগাবে ।

তিনি আশা করেন যে, তাদেরকে (পুরস্কার প্রাপ্তদের) অনুসরণ করে অন্যান্য ব্যবসায়ী, শিল্পপতি ও রপ্তানিকারকগণ আগামী দিনে দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রসারে উৎসাহিত ও উদ্যোগী হবেন।

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বর্তমানে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা চলছে। তাই বাংলাদেশ সরকার বৈশ্বিক পরিস্থিতি অত্যন্ত সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করছে এবং দেশের রপ্তানি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রাখতে সর্বাত্মক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে।

দেশের উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিশ্ব অর্থনীতির বর্তমান অবস্থায় বাংলাদেশের রপ্তানি ও ব্যবসা-বাণিজ্যে কী প্রভাব পড়তে পারে- তা চিহ্নিত করতে হবে এবং ঝুঁকি ও সম্ভাবনা বিবেচনা করে ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদেরকে এগিয়ে যেতে হবে।

তথ্যপ্রযুক্তি ও নতুন নতুন উদ্ভাবনের ফলে ক্রমবর্ধমান ব্যবসা-বাণিজ্যে দ্রুত পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সকল জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি, চাহিদা, সরবরাহ ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে আপনাদেরকেও পদক্ষেপ নিতে হবে।’

ব্যবসায়ীদেরকে ধ্যান-ধারণায় তথ্যপ্রযুক্তিতে জ্ঞান-সম্পন্ন আধুনিক হওয়ার ও উপদেশ দেন রাষ্ট্রপতি। এর পাশাপাশি পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে নিজেদেরকে খাপ খাইয়ে নেয়ার জন্য তাগিদ দেন তিনি।

শিল্প মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, এমপি, এর সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- কৃষি মন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, এমপি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, এমপি, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড (এফবিসিসিআই) এর সভাপতি মাহবুবুল আলম, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ এর চেয়্যারম্যান এসএম নুরুল আলম রেজভী এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাকিয়া সুলতানা।

অনুষ্ঠানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম সম্পর্কিত একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। রাষ্ট্রপতি নিজ আসনে বসে তা অবলোকন করেন।

;

কবিরাজির আড়ালে খুন করাই তার নেশা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকার আশুলিয়ায় একই পরিবারের তিন জনকে নৃশংসভাবে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় এক দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

গ্রেফতাররা হলেন– কথিত কবিরাজ ও সিরিয়াল কিলার সাগর আলী ও তার স্ত্রী ইশিতা বেগম।

সোমবার (২ অক্টোবর) দিবাগত রাতে গাজীপুরের শফিপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে র‌্যাব-৪ এর একটি দল।

র‌্যাব বলছে, ভুক্তভোগী গৃহকর্তা ও তার পরিবারের সদস্যদের ৯০ হাজার টাকা চুক্তিতে শারীরিক চিকিৎসার কথা বলে বাসায় গিয়ে ইসবগুলের শরবতের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানো হয়। এরপর একে একে তিনজনকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়।

মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব সদর দফতরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইং পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

কমান্ডার মঈন বলেন, নিহত মোক্তার হোসেন ও তার স্ত্রী সাহিদা বেগম আশুলিয়ার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তার সন্তান মেহেদী হাসান জয় স্থানীয় একটি স্কুলে ৭ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর সাভারের আশুলিয়া জামগড়া এলাকায় বহুতল ভবনের ৪র্থ তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লে ভবনের অন্য ভাড়াটিয়ারা বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানায়। পরে ফ্ল্যাট থেকে মোক্তার, তার স্ত্রী সাহিদা ও তাদের ১২ বছরের শিশু সন্তান মেহেদীর অর্ধগলিত গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের পর রোববার (১ অক্টোবর) আশুলিয়া থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা হয়।

একই পরিবারের তিনজনকে হত্যার ঘটনায় র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। গত রাতে র‌্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-৪ এর একটি দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গাজীপুরের শফিপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা মো. সাগর আলী (৩১) ও তার স্ত্রী ঈশিতা বেগমকে (২৫) গ্রেফতার করে।

গ্রেফতার সাগর টাঙ্গাইলের মোবারক ওরফে মোগবর আলীর ছেলে। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় হত্যাকাণ্ডের সময় মোক্তারের কাছ থেকে লুট করা আংটি।

কমান্ডার মঈন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার দম্পতি র‍্যাবকে জানিয়েছে, প্রথমে অর্থের লোভে ও পরে কাঙ্ক্ষিত অর্থ না পেয়ে ক্ষোভ থেকে তাদের হত্যা করা হয়।

ঘটনার বিবরণ দিয়ে র‌্যাব মুখপাত্র বলেন, গত ২৮ সেপ্টেম্বর গ্রেফতার সাগর সাভার বারইপাড়া এলাকার একটা চায়ের দোকানে চা খাওয়ার সময় মোক্তারের পাশের একটি কবিরাজি ও ভেষজ ওষুধের দোকানে তার শারীরিক সমস্যার বিষয়ে চিকিৎসা নিয়ে কথা বলতে দেখেন। গ্রেফতার সাগর জানতে পারেন, মোক্তার ওই দোকানে ভেষজ ও কবিরাজি চিকিৎসা বাবদ ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ করেও কোনো ফলাফল পাননি।

সাগর কৌশলে মোক্তারকে ডেকে নিয়ে আলাপচারিতায় ভেষজ ও কবিরাজি চিকিৎসার প্রতি তার আগ্রহ ও আস্থার কথা জানতে পারেন। মোক্তার তার ও তার পরিবারের বেশ কিছু শারীরিক সমস্যার কথাও সাগরকে জানান।

সাগর জানায়, তার স্ত্রী একজন ভালো কবিরাজ এবং সে তার সমস্যার সমাধান করে দেবে। এমন মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে কথাবার্তার এক পর্যায়ে ৯০ হাজার টাকার চুক্তি করেন। সাগর ও তার স্ত্রী পরদিন (২৯ সেপ্টেম্বর) সকালে ওষুধসহ তার বাসায় গিয়ে চিকিৎসা করবে বলে জানান। যোগাযোগের জন্য মোক্তারকে সাগর নিজের নম্বর না দিয়ে এক আত্মীয়ের মোবাইল নম্বর দেন।

বাসায় গিয়ে সাগর স্ত্রী ঈশিতাকে পুরো ঘটনা ও পরিকল্পনার কথা জানান। বিপুল অঙ্কের অর্থ পাওয়ার আশায় রাজি হন সাগরের স্ত্রী।

তারা পরিকল্পনা করেন ভুক্তভোগী মোক্তারের বাসায় গিয়ে ভেষজ ও কবিরাজি চিকিৎসার কথা বলে তার পরিবারের সবাইকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে তাদের অর্থসহ মূল্যবান সামগ্রী লুট করবেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী সাগর গাজীপুরের মৌচাক এলাকার একটি ফার্মেসি থেকে এক বক্স ঘুমের ওষুধ ক্রয় করেন।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৯ সেপ্টেম্বর সকালে গ্রেফতার সাগর ও তার স্ত্রী গাজীপুরের মৌচাক থেকে মোক্তারের সঙ্গে জামগড়া মোড়ে সাক্ষাৎ শেষে বাসায় যান। সেখানে প্রাথমিক পরিচয়ের পর গ্রেফতার সাগরের স্ত্রী ঈশিতা তাদের সমস্যার কথা শুনেন এবং ইসবগুলের শরবতের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে তাদের ভেষজ ও কবিরাজি চিকিৎসার ওষুধ বলে খাওয়ান।

মোক্তার, তার স্ত্রী ও ছেলে ঘুমের ওষুধের প্রভাবে ঘুমিয়ে পড়লে সাগর ও তার স্ত্রী মিলে প্রথমে মোক্তারের কক্ষে গিয়ে মোক্তারের হাত ও পা বাঁধেন, পরে মোক্তারের স্ত্রীর হাত-পা বাঁধেন।

পরে তারা মোক্তারের মানিব্যাগ, তার স্ত্রীর পার্স ও বাসার অন্য স্থানে অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রীর জন্য তল্লাশি করে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা পান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বটি দিয়ে প্রথমে মোক্তারের গলায় উপর্যুপরি কোপ দিয়ে হত্যা করেন সাগর। পরে অন্য কক্ষে গিয়ে ছেলে ও স্ত্রীকে একই বটি দিয়ে পর্যায়ক্রমে কুপিয়ে হত্যা করেন। পালানোর আগে তারা মোক্তারের হাতে থাকা আংটি খুলে নিয়ে যান।

গ্রেফতার দম্পতি ভিন্ন পথে রিকশাযোগে গাজীপুরের মৌচাকে তার শ্বশুরবাড়ি যায় এবং সেখানেই অবস্থান করতে থাকেন। হত্যাকাণ্ডের ঘটনা গণমাধ্যমে প্রচারের পর তারা আত্মগোপনে চলে যান। পরে আত্মগোপনে থাকাকালেই গাজীপুরের শফিপুর এলাকা থেকে তাদের গত রাতে গ্রেফতার হন।

২০২০ সালে একই কায়দায় টাঙ্গাইলে চার হত্যা করেছে সাগর:

গ্রেফতার সাগর সম্পর্কে কমান্ডার মঈন বলেন, সে মাদকাসক্ত এবং বিভিন্ন পেশার আড়ালে চুরি ও ছিনতাই করত বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। ২০২০ সালে টাঙ্গাইলের মধুপুরে ২০০ টাকার জন্য একই পরিবারের চার জনকে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে একই কায়দায় গলা কেটে হত্যায় অভিযুক্ত সাগর।

ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সাগর র‌্যাব-১২ কর্তৃক গ্রেফতার হয়ে সাড়ে তিন বছর কারাভোগ করে ২০২৩ সালের জুন মাসে জামিন পেয়ে গাজীপুরের মৌচাক এলাকায় তার শ্বশুরের ভাড়া বাসায় কিছুদিন অবস্থান করে।

দীর্ঘদিন জেলহাজতে থাকায় তার আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় সে রাজমিস্ত্রি, কৃষি শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার আড়ালে ঢাকা, সিলেট ও টাঙ্গাইলে অবস্থান করে সুযোগ বুঝে চুরি ও ছিনতাই করত।

একটি জেলায় বেশ কিছুদিন অবস্থানের পর স্থান পরিবর্তন করে অন্য জেলায় আশ্রয় নিত সাগর। এছাড়াও সে অবৈধ পথে পার্শ্ববর্তী দেশে জুলাই মাসে গমন করে ২০-২৫ দিন অবস্থান করে এবং আগস্ট মাসে দেশে ফিরে কুমিল্লায় কিছুদিন অবস্থান করে। গ্রেফতার দম্পতির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের এ কর্মকর্তা।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গ্রেফতার সাগর কিন্তু চিহ্নিত সন্ত্রাসী না বা শীর্ষ সন্ত্রাসীও না। তবে সাগর আমাদের জানিয়েছে একটি স্বার্থান্বেষী মহল তাকে ব্যবহার করার চেষ্টা করেছে। আমরা যখন এমন কোনো তথ্য পেলেই তাদের আইনের আওতায় আনা হয়। পাশাপাশি এই ব্যাপারটা ঘিরে আমরা সতর্ক আছি।

;

কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম রাঙামাটি
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলায় কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জঙ্গলে মো. জাফর(৪৫) নামে এক ব্যক্তির অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) সকাল ১০ টার দিকে লাশটির সন্ধান পাওয়া যায় বলে জানান স্থানীয় ইউপি সদস্য মঈন উদ্দিন।

মঈন উদ্দিন বলেন, নিহতের নাম মো. জাফর(৪৫)। তার পিতার নাম সিদ্দিক। তার বাড়ি ভোলা জেলা হলেও তিনি কাপ্তাই প্রজেক্ট এলাকায় নিউ মার্কেট বাজারে একা বসবাস করতো। তিনি গাছ কাটার কাজ করতেন। তার সাথে কাজ করা সঙ্গী এবং আত্মীয় স্বজনরা জানান গত ১৬-১৭ দিন ধরে তার কোন খবর পাওয়া যাচ্ছে না। তাই আমি তার সাথে কাজ করা কবির নামে একজনের সাথে যোগাযোগ করলে সে জানায় ৩ মাস ধরে গাছ কাটেন না তিনি। কিন্তু খবর পেলাম যে, কবির গত ২০ দিন আগেও গাছ কেটেছে। 

তিনি বলেন, কবির ও জাফর শেষ কখন গাছ কেটেছে সেই জায়গার খোঁজ করে গ্রাম পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ফুলবাগান এলাকায় গিয়ে মাথা বিচ্ছিন্ন অবস্থায় লাশ পড়ে থাকতে দেখি। পরে পিডিবি কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করি।

কাপ্তাই পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত আইসি পুলিশ পরিদর্শক শাহীনুর রহমান জানান, বেলা ১২ টার দিকে আমরা এলাকায় গিয়ে লাশটি উদ্ধার করি। পরবর্তীতে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হবে। ময়নাতদন্ত শেষ হলে, এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা যাবে।

;

অর্থপাচার মামলায় ড. ইউনূসকে দুদকে তলব



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অর্থপাচার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শান্তিতে নোবেলজয়ী ও গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ৭ জনকে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) তলব করা হয়েছে।

দুদক সূত্র জানায়, দুদকের দায়েরকৃত মামলায় ড. ইউনূসকে আগামী ৪ ও ৫ অক্টোবর সশরীরে হাজির হতে বলা হয়েছে।

গত ৩০ মে গ্রামীণ টেলিকম থেকে শ্রমিক-কর্মচারীদের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার।

ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আগামী ৪ ও ৫ অক্টোবর ড. ইউনূসসহ গ্রামীন টেলিকমের ৭ জনকে তলব করেছে। ড. ইউনূসকে ৫ অক্টোবর ডেকেছে।

ড. ইউনূস ছাড়াও অন্যরা হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম (৫০), সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান (৬৩), পরিচালক পারভীন মাহমুদ (৬২), নাজনীন সুলতানা (৬১), মো. শাহজাহান (৬৫), নূরজাহান বেগম (৭২), এস. এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী (৬২), অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলী (৪২), অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ (৪৭), গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান (৩৯), সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান (৪৩), গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলাম (৪০)।

;