২০২৩ সালের এসএসসি এপ্রিলে, এইচএসসি জুনে



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
২০২৩ সালের এসএসসি এপ্রিলে, এইচএসসি জুনে

২০২৩ সালের এসএসসি এপ্রিলে, এইচএসসি জুনে

  • Font increase
  • Font Decrease

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, ২০২৩ সালের এসএসসি-এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাও এ বছরের মতো সংক্ষিপ্ত সিলেবাসেই নেওয়া হবে। আগামী বছরের এসএসসি পরীক্ষা এপ্রিলে এবং উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের পরীক্ষা জুনে অনুষ্ঠিত হবে।

মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) সচিবালয়ে এক প্রেস কনফারেন্সে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা জানান।

তিনি বলেন, নির্ধারিত পুনর্বিন্যাসকৃত (সংক্ষিপ্ত) সিলেবাসে আগামী বছরের এসএসসি-এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা হবে।

বর্তমানে দশম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা ২০২৩ সালে এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষায় এবং একাদশ শ্রেণিতে অধ্যয়নরতরা এইচএসসি, আলিম ও সমমান পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘২০২৩ সালের এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষার্থীরা নবম শ্রেণিতে ২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়নি। ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে ওমিক্রনের প্রভাব শুরু হওয়ার আগে চলতি বছর ১৪ মার্চ পর্যন্ত সপ্তাহে দু'দিন করে সরাসরি ক্লাশ করার সুযোগ পেয়েছে তারা। এর মধ্যে ২০ জানুয়ারি থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওমিক্রনের সংক্রমণে আবারও প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল।

তিনি জানান, গেল ১৫ মার্চ থেকে তারা সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রমে সপ্তাহে ছয় দিন করে অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে। আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত সরাসরি শ্রেণি কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে এই নবম ও দশম শ্রেণিতে মিলে সর্বমোট ১৬২ কর্মদিবস শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। যেখানে স্বাভাবিক অবস্থায় তারা ৩১৬ কর্মদিবস ক্লাস করার কথা। তাছাড়াও এই শিক্ষার্থীরা ২০২০ সালে ৮ম শ্রেণিতে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষাতেও অংশ নিতে পারেনি। এমনকি নবম শ্রেণির পরীক্ষাও দিতে পারেনি।

এসব দিক বিবেচনায় ২০২৩ সালের এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষা ২০২২ সালের পরীক্ষার জন্য ঘোষিত সিলেবাস অনুসারেই অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।

২০২৩ সালে এইচএসসির পরীক্ষার্থীদের বিষয়ে ডা. দীপু মনি বলেন, ‘এই শিক্ষার্থীরা ২০২১ সালের ১ জুলাই থেকে একাদশ শ্রেণিতে ক্লাস করার কথা ছিল। কিন্তু তারা ক্লাস শুরু করতে পেরেছে চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে। অর্থাৎ তারা ৮ মাস ক্লাস করার সুযোগই পায়নি।

তিনি বলেন, ‘আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত তাদের স্বাভাবিক শ্রেণি কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে তারা সর্বমোট ২০০ কর্মদিবস শ্রেণি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবে। স্বাভাবিক অবস্থায় ৩৩০ কর্মদিবস শ্রেণি কার্যক্রম হতো। এই পরীক্ষার্থীরা ২০২১ সালের এসএসসি, দাখিল ও সমমানের সংক্ষিপ্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে উত্তীর্ণ হয়েছে। এ অবস্থায় ২০২৩ সালের এইচএসসি, আলিম ও সমমান পরীক্ষা ২০২২ সালের পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত ১৮০ কর্মদিবসের পাঠ্যসূচি অনুসারে অনুষ্ঠিত হবে।’

   

দেশীয় অস্ত্রসহ কিশোর গ্যাং’র বিভিন্ন গ্রুপের ৩৫ জন গ্রেফতার 



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে কিশোর গ্যাং এর বিভিন্ন গ্রুপের মূলহতাসহ ৩৫ জন কে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব২)।আটককৃতরা বিভিন্ন গাড়ির হেলপার ও ড্রাইভার, দোকানের কর্মচারী, নির্মাণ শ্রমিক, পুরাতন মালামাল ক্রেতা, সবজি বিক্রেতা ইত্যাদি পেশার আড়ালে ডাকাতি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি করতো বলেও জানান তিনি।

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) র‌্যাব-২ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) এএসপি শিহাব করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

গ্রেফতারকৃতরা হলো, ‘এফডিসি মুন্না’ গ্রুপের অন্যতম মূলহোতা মো. ইসমাইল হোসেন ওরফে এফডিসি মুন্না (২৮), গ্যাং সদস্য মো. আকাশ (২৪), মো. ফরিদ। ‘কিং জামাল গ্রুপ’ এর মূলহোতা মো. জামাল হোসেন (৩১), মো. ইমাম হোসেন (২০), মো. আরিফ ওরফে রাসেল মিয়া (২০)। ‘কিং মোশারফ গ্রুপ’ এর মো. মোশাররফ (৩২) তার সহযোগী মো. ফেরদাউস বেপারী (২৫), মো. আরমান শেখ (১৮), মো. সানি মিয়া (১৮)। ‘আপনা ভাই গ্রুপ’ এর মূলহোতা শাকিব ওরফে বস্তি শাকিব (১৯), মো. নাহিদ (২০), মো. লাদেন (২১) সহ অন্যান্য গ্রপের মো. হৃদয় (২২), মো. আবু সিদ্দিক (৪৫), মো. খোকন (৩৫), মো. নিলয় আহম্মেদ (২৫), মো. ইব্রাহিম (২৬), মো. বিপ্লব শেখ (২০), রাব্বি হোসাইন (২৪), তারেক জিয়া (২২), মো. জামাল (২৬), মো. শিমুল (২৩), মো. রতন(১৯), মো. পলাশ (২৪), মো. সাঈদ (২৪), মো. শরিফ (২০), মো. রাজন (২২), মো. মানিক (২৪), মো. কবির (২৪), হাসান (২২), মো. সাইদ (১৯), মো. রাজা শেখ (২৮), মো. ইকরাম (২৫) এবং মো. বিপ্লব শেখ (২২)।

শিহাব করিম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় বেশ কয়েকটি ‘কিশোর গ্যাং’ গ্রুপের সদস্য কর্তৃক ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের সন্ত্রাসী কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়। এই সন্ত্রাসীদের হামলা ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক সাধারণ ডায়েরী ও মামলা হয়। বিভিন্ন ‘কিশোর গ্যাং’ এর সন্ত্রাসীরা নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে এক গ্রুপ অপর গ্রুপের সাথে সংঘাতে জড়িয়ে মারামারি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করার প্রবণতাও লক্ষ্য করা যায়।

অতি সম্প্রতি মোহাম্মদপুর, আদাবর, নাখালপাড়া ও তার আশপাশের এলাকায় বেশ কয়েকটি ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও অন্যান্য সন্ত্রাসী কর্মকানণ্ড সম্পর্কে তথ্য পায় র‌্যাব। ফলশ্রতিতে র‌্যাবের টহল ও গোয়েন্দা কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১১ মার্চ হতে ১৮ মার্চ পর্যন্ত র‌্যাব-২ এর একাধিক আভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করে।

তিনি বলেন, রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আদাবর, নাখালপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত সন্ত্রাসী কিশোর গ্যাং এর মূলহোতাসহ ৩৫ জন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।

এসময় তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় ছিনতাই ও ডাকাতিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রমে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র চাপাতি, ছুরি, চাকু, চাইনিজ কুড়াল, এন্ট্রি কাটার ও বিভিন্ন দেশীয় ধারালো অস্ত্র। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা পূর্বের বিভিন্ন অপরাধ এবং ভবিষ্যতের বিভিন্ন সহিংসতা সৃষ্টির পরিকল্পনা সর্ম্পকে তথ্য দেন বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, শেরে বাংলা নগরের নাখালপাড়া এলাকা মোহাম্মদপুর, আদাবর, বেড়িবাধঁ ও ঢাকা উদ্যান এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতো। গ্রপের সন্ত্রাসীরা একাকী পথচারীদের আকস্মিকভাবে ঘিরে ধরে চাপাতিসহ ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী ছিনতাই করে দ্রুত পালিয়ে যায়। তারা বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজিসহ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এসব এলাকায় দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারামারিসহ বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতো।

এছাড়াও তারা মাদক সেবনসহ এসব এলাকায় মাদক ব্যবসার সাথেও জড়িত ছিল। মূলত তারা নাখালপাড়া ও মোহাম্মদপুর, আদাবর এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতো বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রাজধানীর বিভিন্ন থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

;

সাদা ফুলের ছদ্মবেশে 'কালো সোনা'



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, রাজশাহী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রকৃতির মায়াজালে আবৃত এক অনন্য দৃশ্যের দেখা মিলবে রাজশাহীতে। এখানকার সাদা ফুল শুধু সৌন্দর্যের সমারোহ নয়, বরং এক অপার সম্পদের আহ্বান হাতছানি দেয়। এই ফুলের প্রশান্ত সৌন্দর্যের আড়ালে লুকিয়ে রয়েছে 'কালো সোনা', যা বাংলাদেশের কৃষকদের অর্থনীতিতে এক অপূর্ব সংযোজন।

পেঁয়াজের বীজের উচ্চ বাজারমূল্যের কারণে কৃষি জগতে 'কালো সোনা' নামে পরিচিত। যেখানে কৃষকের পরিশ্রম ও প্রকৃতির সমন্বয়ে সৃষ্টি হয় এই অমূল্য 'কালো সোনা'।

পেঁয়াজের বাজার দাম উচ্চ থাকা ও অধিক লাভজনক হওয়ায় রাজশাহীতে পেঁয়াজের কদম চাষে আগ্রহের সাথে চাষীদের মধ্যে জনপ্রিয় হচ্ছে। গত বছরের চেয়ে এবছর চাষের জন্য বরাদ্দ জমির পরিমাণ বেড়েছে। বীজ উৎপাদনে বেশি দাম পেয়ে বাড়তি লাভের মুখ দেখছেন চাষীরা।

তবে, পেঁয়াজের কদমে রোগ ও অপ্রত্যাশিত শীলাবৃষ্টির সম্ভাবনা উৎপাদনের মান ও পরিমাণে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন। এ সমস্যা মোকাবেলায়, রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাষীদের পরাগায়নের কাজে মৌমাছি ও সাদা কাপড়ের ব্যবহারের উপর জোর দিয়েছে, যা উচ্চমানের ও অধিক পরিমাণে ফসল পাওয়া নিশ্চিত করতে পারে। এই নতুন উদ্যোগ ও পদ্ধতির মাধ্যমে চাষীদের মধ্যে আশার আলো জাগিয়েছে যে, তারা আগামী দিনে আরো বেশি লাভের সুযোগ পাবে।

নতুন উদ্যোগও পদ্ধতি চাষীদের মধ্যে আশার আলো জাগিয়েছে

রাজশাহীর কৃষি অফিসের মতে, এ বছর রাজশাহীতে পেঁয়াজের বীজ চাষ ১২ হেক্টর বেশি জমিতে করা হয়েছে। বাজারে বীজের দাম উচ্চ হওয়ার কারণে চাষীরা বীজ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। গত বছর, পেঁয়াজের বীজ ১ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

কৃষি বলছে, এ বছর রাজশাহী জেলায় ২৭০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের বীজ চাষ হয়েছে, যা থেকে ২০০ মেট্রিক টনের অধিক বীজ উৎপাদনের প্রত্যাশা করা হচ্ছে। গত বছর, ২৫৮ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের বীজের চাষ হয়েছিল। উৎপাদিত এসব বীজ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে অন্যান্য জেলায়ও সরবরাহ করা হয়।

এ বছর দুর্গাপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজের বীজ চাষ হয়েছে, যেখানে ১০৫ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে। অন্যান্য উপজেলা যেমন গোদাগাড়ীতে ৮৫ হেক্টর, পুঠিয়ায় ৭০ হেক্টর, এবং পবা, মোহনপুর, বাগমারা, চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় ৫ থেকে ১০ হেক্টর জমি করে।

মোহনপুর উপজেলার জাহানাবাদ ইউনিয়নের কইকুড়ি অঞ্চলে ১০ কাঠা ভূমিতে পেঁয়াজের বীজ চাষ করেছেন মো. কলিম খাঁ। তিনি জানান, এ বছর পেঁয়াজের (কদম) রোগের প্রকোপ বেড়েছে। প্রায়ই কীটনাশক প্রয়োগ করতে হচ্ছে। পেঁয়াজের ফুলকা শুকিয়ে যাচ্ছে, যা ফলনের উপর ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। বৈশাখ মাসের শীলাবৃষ্টি সবচেয়ে বড় হুমকি, কারণ এতে পেঁয়াজের কদম নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

মো. কলিম খাঁ বলেন, পেঁয়াজের কদম চার মাস জমিতে থাকবে। চাষ শুরু করার সময় তিনি বীজ পেঁয়াজ কিনেছিলেন ৪ হাজার টাকা মণ প্রতি। গত বছরও তিনি পেঁয়াজ কদমের চাষ করেছিলেন এবং পেঁয়াজের কদম থেকে আহৃত বীজ ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার টাকা প্রতি হাজারে বিক্রি করেছিলেন।

কালো সোনা চাষে লাভবান চাষীরা

দুর্গাপুর উপজেলার জমির উদ্দিন গত বছর এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজের বীজ চাষ করে লাভবান হয়েছিলেন। তাই এ বছর তিনি দেড় বিঘা জমিতে পেঁয়াজ বীজের চাষ করেছেন। তিনি জানান, গত বছর বীজ বিক্রি করে তিনি ৮৫ হাজার টাকা লাভ করেছিলেন। এবছর তিনি নিজের এবং লিজ নেওয়া জমিতে পেঁয়াজ বীজের চাষ করেছেন, যেখানে এক বিঘা জমিতে তার মোট খরচ হয়েছে ৫৮ হাজার টাকা। পেঁয়াজ বীজের ফসলে পরিচর্যা বেশি প্রয়োজন, এবং পরিচর্যা না করলে ফলন কমে যেতে পারে। সময়মতো কীটনাশক প্রয়োগ করা আবশ্যক।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মোজদার হোসেন উল্লেখ করেন, পেঁয়াজের ফুলকে সাধারণত কদম বলা হয়; যা থেকে পেঁয়াজের বীজ তৈরি হয়। গত বছর চাষীরা ভালো দাম পেয়েছিলেন, যার ফলে এ বছর পেঁয়াজ বীজের চাষ বেড়েছে। পেঁয়াজের বীজ চাষে মৌমাছির পরাগায়ন নিয়ে নতুন চাষীদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও সাদা কাপড়ের মাধ্যমে পরাগায়ন ঘটানোর কথা বলেছি। এতে বীজ ভালো মানের ও বেশি ফসল উৎপাদন হবে।

;

রাজধানীতে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ২৩



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মাদকবিরোধী অভিযান চালিয়ে ২৩ জনকে আটক করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ ও গোয়েন্দা বিভাগ। মাদক বিক্রি ও সেবনের অভিযোগে তাদের আটক করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

সোমবার (১৮ মার্চ) সকাল ছয়টা থেকে মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সকাল ছয়টা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদকদ্রব্য উদ্ধারসহ তাদেরকে আটক করা হয়।

এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫৩২৫ পিস ইয়াবা, ১৮৬ গ্রাম হেরোইন, ৪ কেজি ৮২৫ গ্রাম গাঁজা ও ২০০টি ইনজেকশন উদ্ধার করা হয়েছে বলে জা‌নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ ও গোয়েন্দা বিভাগ।

ডিএমপির নিয়মিত মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে এ অ‌ভিযান প‌রিচালনা করা হয়েছে বলে জানানো হয়। সেই সঙ্গে আটককৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ১৫টি মামলা রুজু হয়েছে বলেও জানানো হয়।

;

ফেনীতে বেড়েছে তরমুজ চাষ, শত কোটি টাকা বিক্রির আশা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার উপকূলীয় চরাঞ্চলের মাটি এবং আবহাওয়া তরমুজের জন্য বেশ উপযোগী। প্রতিবছর ধারাবাহিক ভাবে চাষ হচ্ছে তরমুজ। প্রতি বছর কৃষকদের তরমুজ চাষে আগ্রহ যেমন বাড়ছে তেমনি পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তরমুজের ব্যবসা। এই অঞ্চলের তরমুজ অনেক বড় এবং সুস্বাদু হওয়ায় বাজারেও রয়েছে এর বেশ চাহিদা। এ উপজেলায় ৩ হাজার ৮৫০জন কৃষক এ বছর তরমুজ চাষ করেছেন।

কৃষি বিভাগের দেয়া তথ্যমতে, এ বছর সোনাগাজীর ৫৭৫ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হয়েছে। আবাদকৃত জমিতে ৩০ হাজার ২০৯ মেট্রিকটন তরমুজ উৎপাদনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবহাওয়া- বাজার অনুকূলে থাকলে এবং শিলা বৃষ্টি না হলে এবছর চাষকৃত জমি থেকে ১০৭ কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি হবে বলে আশা করছেন কৃষক এবং কৃষি বিভাগ।

সোনাগাজীর ৫৭৫ হেক্টর জমিতে আবাদকৃত তরমুজের মধ্যে ২২৫ হেক্টর জমিতে বাঙ্গালিংক জাত, ১৪৬ হেক্টর জমিতে গৌরি জাত, ব্ল্যাক বেরী জাত ৫৫ হেক্টর, ভিক্টর সুপার জাত ৮৪ হেক্টর, ওপেন সুগার ৫৬ হেক্টর এবং ১০ হেক্টর জমিতে অন্যান্য জাতের তরমুজ চাষ হয়েছে।

কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, কানি  (৩৯.৬৬৯ শতক) প্রতি সর্বনিম্ন খরচ ১ লাখ টাকা এবং বিক্রি আড়াই লাখ থেকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত। কৃষক পর্যায় থেকে হিসেব করলে এর পাইকারি বাজার মূল্য ৩০-৩৫ টাকা কেজি ধরলেও ৫৭৫ হেক্টর জমিতে ১০৭ কোটি ৪৫ লাখ ৩৫ হাজার ৪৬৫ টাকার তরমুজ বিক্রি হবে বলে আশা করছেন তারা।

নোয়াখালীর সুবর্ণচর থেকে আসা আমান উল্লাহ নামে এক তরমুজ চাষী জানান, ১০ জন সম্মিলিত ভাবে সোনাগাজী চরদরবেশে ৫৬ কানি জমিতে তরমুজ চাষ করেছি। কানি প্রতি (৩৯.৬৬৯ শতক) খরচ হয়েছে ১ লাখ টাকা এবং আবহাওয়া ঠিক থাকলে কানিতে তরমুজ বিক্রি করা যাবে ৩ লাখ টাকার। এ বছর সোনাগাজীতে তরমুজ চাষে বিপ্লব ঘটেছে বলে জানান এ কৃষক।

সোনাগাজী আমিরাবাদ ইউনিয়নের স্থানীয় তরমুজ চাষী মিলন জানান, গত বছর ৩৫ একর জমিতে তরমুজ চাষ করে কানি প্রতি ৩ লাখ থেকে সাড়ে ৩ লাখ বিক্রি করেছিলেন। গতবার লাভবান হওয়ায় এবার চাষের পরিমাণ বাড়িয়ে ১০০ একরে তরমুজ আবাদ করেছেন। এবার কানিতে ১ লাখ টাকার অধিক খরচ করে এর ২ গুণ বেশি দামে বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করেন এই কৃষক।


কৃষি বিভাগ জানায়, পূর্বে এসব জমি রবি মৌসুমে খালি পড়ে থাকতো। ২০১৭ সালে এই উপজেলায় পরীক্ষামূলক তরমুজ চাষে অভাবনীয় সাফল্য পায় এক কৃষক। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে ৮-১০ জন কৃষক চাষ করে। এভাবে উপজেলায় তরমুজ চাষের ধারাবাহিকতা শুরু হয়ে ২০২০ সালে ১০৫ হেক্টর জমিতে, ২০২১ সালে ৩১৭ হেক্টর জমিতে, ২০২২ সালে ৩৪৫ হেক্টর জমিতে এবং ২০২৩ সালে ৫৭০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের তরমুজ চাষ করা হয়। গত বছর শিলা বৃষ্টি এবং অতি বৃষ্টির কারণে কিছু পরিমাণ ফলন নষ্ট হলেও ৫০ কোটি টাকার তরমুজ বিক্রি হয়েছিল।

এ বিষয়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্রনাথ জানান, ফেনীর সোনাগাজীর চরাঞ্চলে বিস্তীর্ণ ভূমি রয়েছে। যার ফলে এখানকার মাটি এবং আবহাওয়া তরমুজ চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। তিন মাসের মধ্যে ফলন পাওয়া যায়। পরিচর্যার খরচের তুলনায় আয় বেশি হওয়াতে চাষিরা তরমুজ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

তিনি বলেন, হেক্টর প্রতি তরমুজের ফলন হয় ৫০ হতে ৬০ মেট্রিক টন। কানি প্রতি (৩৯.৬৬৯ শতক) খরচ হয় ১ লক্ষ টাকা এবং বিক্রি হয় ৩ লাখ থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকার মত। খরচের তুলনায় ২ গুণ থেকে ৩ গুণ বেশি লাভ হয়। জমি থেকেই তরমুজ বিক্রি হয়ে যায় এখানে। ঢাকা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালীসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পাইকাররা এসে সরাসরি ক্ষেত থেকে তরমুজ নিয়ে যায়।

কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. আল-আমিন শেখ বলেন, গত বছর অতিবৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টির কারণে কিছুটা ক্ষতি হয়েছিল। এবার চাষ বেড়েছে, যদি এই মৌসুমে শিলা বৃষ্টির প্রভাব না পড়ে তাহলে শতকোটি টাকা আয় সম্ভব হবে। কৃষি বিভাগ মূল্য নির্ধারণ এবং বাজারজাতকরণ না করলেও পর্যবেক্ষণে সর্বনিম্ন ৩০ টাকা কেজি দরে অথবা কানি প্রতি দর আড়াই লাখ টাকা ধরা হলেও এর বাজার মূল্য হয় ৯০ কোটি টাকা।

তবে লাভের বিপরীতে তরমুজ চাষে শতকরা ৫০ শতাংশ ঝুঁকি রয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।

তিনি বলেন, তরমুজ চাষে হঠাৎ ক্ষতির সম্ভাবনা শতকরা ৫০ শতাংশ। চাষি ঝুঁকি নিয়ে এবং আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে চাষ করে থাকেন।

এবিষয়ে কৃষকরা জানান, তরমুজ চাষে আগ থেকে কোন কিছু নির্দিষ্ট করে বলা যায় না। সব ঠিক থাকলে একবারে ৩ থেকে ৪ গুণ পর্যন্ত আয়ের সুযোগ থাকে। না হলে তাদের জমি বর্গা নেওয়া এবং রোপনসহ আনুষাঙ্গিক খরচের টাকা পর্যন্ত তুলতে পারেন না।

কালাম নামে একজন বলেন, গতবছর বৃষ্টির কারণে পানিতে সব তরমুজ ভেসে উঠে ৷ এতে আমার লাভ তো দূরে থাক যা খরচ করেছি তাও উঠেনি।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্রনাথ বলেন, তরমুজ চাষে যেমন রয়েছে আয় তেমনি রয়েছে ঝুঁকিও। যদি তরমুজ চাষ পদ্ধতি অনুযায়ী না হয় এবং আবহাওয়া অনুকূলে পাওয়া না যায় তাহলে কিছু তরমুজ চাষি এবেবারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে সঠিক সময়ে ওষুধ না দেওয়া, পোকার আক্রমণ, অতি বৃষ্টি, শিলা বৃষ্টি, গাছ মারা যাওয়া। এর মধ্যে অতি বৃষ্টি ও শিলা বৃষ্টি হলে ফলন নষ্টে প্রভাব ফেলে বেশি। এসব বিষয়ে কৃষকদের সচেতন থাকার পরামর্শ দেন এ কর্মকর্তা।

;