‘অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য বিদেশিদের চাপ থাকবে’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ড. আকবর আলি খান

ড. আকবর আলি খান

  • Font increase
  • Font Decrease

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. আকবর আলি খান বলেছেন, নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করলে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য বিদেশিদের পরোক্ষ চাপ থাকবে। তবে বিদেশিদের চাপ সরকার কিভাবে নিবে তা বলা কঠিন।

শনিবার (০৯ এপ্রিল) এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের প্রতি জনগণের আস্থা নিয়ে এক ছায়া সংসদে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

ড. আকবর আলি খান বলেন, ভালো নির্বাচনের জন্য পাকিস্তানের বর্তমান নির্বাচন ব্যবস্থা অনুসরণ করে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করা যেতে পারে, যেখানে সাবেক প্রধান বিচারপতি সরকার প্রধান হিসেবে কাজ করেন এবং বিচার বিভাগের কর্মকর্তারা নির্বাচন পরিচালনায় সম্পৃক্ত থাকেন। নির্বাচনকালীন সরকারসহ জাতীয় পর্যায়ে অমীমাংসিত বিষয়ে গণভোটের বিধান চালু করলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সহজতর হবে।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে শতভাগের অধিক ভোট পেয়েও নির্বাচিত হওয়ার নজির রয়েছে। এ ধরণের ঘটনায় নির্বাচন বাতিল করার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের থাকলেও তা প্রয়োগ করা হয়নি বরং জালিয়াতির সঙ্গে সম্পৃক্তদের বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। সেই জন্য বর্তমান কমিশনকে সাহসী হতে হবে।

তিনি বলেন, অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে জেলা প্রশাসকের পরিবর্তে জেলা জজদের রিটার্নিং কর্মকতা নিয়োগ করা যেতে পারে। বাংলাদেশে বর্তমান অবস্থায় সরকারি দল না চাইলে নির্বাচন ব্যবস্থার পরিবর্তন সহজ নয়। তবে দীর্ঘস্থায়ী গণআন্দোলনের মাধ্যমে পরিবর্তন আনা সম্ভব, সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক সমঝোতা জরুরি।

ড. আকবর আলি খান আরও বলেন, আইন অনুযায়ী নির্বাহী বিভাগের কর্মকর্তারা নির্বাচন পরিচালনায় সম্পৃক্ত থাকেন। রাজনৈতিক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে নির্বাহী বিভাগ ক্ষমতাসীনদের নির্দেশনার বাইরে যেতে পারেন না, এমনকি তারা ভবিষ্যৎ বেনিফিট নেওয়ার চিন্তা করে। তাই বাংলাদেশে বর্তমান অবস্থায় শুধু নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা সম্ভব নয়।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, একটি অংশগ্রহণমূলক অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে। ইসির সঙ্গে চলমান সংলাপে পেশাজীবী প্রতিনিধিদের বেশিরভাগই নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থার বিষয়ে নানা প্রস্তাব করেছেন। অনেকে মনে করছেন সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচনকালীন সরকার কি হবে তার জন্য আইন ও সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হলে ইসি সরকারকে সেটি প্রস্তাব করবেন। কিন্তু সে বিষয়ে সর্বশেষ সংলাপের আলোকে ইসি বলেছেন ‘নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি রাজনৈতিক নেতারা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিবেন। তাই আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ইসি জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারবে কি না তা বোঝার জন্য আমাদের আরও অপেক্ষা করতে হবে।

নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ ১০ দফা সুপারিশ করেন।

সুপারিশগুলো হল-

>> সর্বশেষ দুই নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতার বিভিন্ন দিক চিহ্নিত করে আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করার জন্য রোডম্যাপ তৈরি করা।

>> মনোনয়নপত্র দাখিল থেকে শুরু করে নির্বাচন প্রক্রিয়া সর্বস্তরে সকল প্রার্থীর জন্য সমতল ক্ষেত্র তৈরি করা।

>> নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে বিভিন্ন নির্মোহ পেশাজীবীদের সাথে আলোচনাকালে যে সকল প্রস্তাব এসেছে সেগুলো প্রতিবেদন আকারে প্রকাশ করা।

>> জেলা প্রশাসকদের বদলে ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া।

>> পূর্বের নির্বাচন ব্যবস্থার সাথে সম্পৃক্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা অথবা অন্য কোন ব্যক্তি আইন ভঙ্গ করে নির্বাচনী অপরাধ করে থাকলে তা চিহ্নত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া।

>> নির্বাচনের পূর্বে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মতবিরোধ দূর করতে ইসিকে সরকারের সাথে আলোচনার ক্ষেত্র প্রস্তুত করা।

>> অকারণে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হওয়ার মতো পরিবেশ তৈরি না হয় সেদিকে ইসিকে দৃষ্টি দেয়া।

>> যেসব আইনের দ্বারা নির্বাচনকালীন সময়ে গণমাধ্যম বাঁধা সম্মুখীন হতে পারে সাংবাদিকদের জন্য সে আইন শিথিল করা।

>> নারী ও সংখ্যালঘু ভোটারদের ভোট পূর্ববর্তী ও পরবর্তী প্রতিহিংসা রোধের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

>> গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে বাধা তৈরি হলে প্রয়োজনে ইসিকে পদত্যাগের সৎ সাহস রাখা।

প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজির বিতার্কিকরা অংশগ্রহণ করে। ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র আয়োজনে ছায়া সংসদের বিষয় ছিল- বর্তমান নির্বাচন কমিশন জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হবে।

প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইস, ড. এস এম মোর্শেদ, সাংবাদিক শাকিলা জেসমিন ও সাংবাদিক কাজী জাবেল। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলকে ট্রফি ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।

   

মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে পিতার মৃত্যুদণ্ড



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে পিতার মৃত্যুদণ্ড

মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে পিতার মৃত্যুদণ্ড

  • Font increase
  • Font Decrease

১৪ বছরের কিশোরী মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় পিতাকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল-৪ এর বিচারক শাহরিয়ার কবির এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

রায় ঘোষণার আগে আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণার পর আসামিকে ফের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী কিশোরী বাবার সঙ্গে রাজধানীর কেরানীগঞ্জ এলাকায় বসবাস করত। কিশোরীর মা বিদেশে থাকতেন।

২০২২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বাসায় ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে তার বাবা। এই ঘটনায় ওই কিশোরী বাদী হয়ে রাজধানীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় বাবার বিরুদ্ধে মামলা করেন।

পরবর্তীতে আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারের পর আসামি মেয়েকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন।

রায় ঘোষণার আগে মামলায় ছয় জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে আদালত।

;

সাতক্ষীরায় পিলারে মোটরসাইকেলের ধাক্কা, চালক নিহত



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সাতক্ষীরায় বাইপাস সড়কের ধারে পিলারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে রাজমোহন দাস (৩৫) এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল দশটার দিকে সাতক্ষীরা বাইপাস সড়কে এই ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) নজরুল ইসলাম। 

নিহত রাজমোহন সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার রাজেন্দ্রপুর গ্রামের প্রভাত কুমার দাসের ছেলে।

পুলিশ জানায়, রাজমোহন দাস মোটরসাইকেলে সাতক্ষীরা থেকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে বেলা দশটার দিকে মোটরসাইকেলটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সাতক্ষীরা বাইপাস সড়কের ধারে থাকা একটি পিলারের সাথে সজোরে ধাক্কা লাগে। এতে মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়ে রাজমোহন দাস ঘটনাস্থলে নিহত হন।

 

;

একটা রিকশার আক্ষেপে ২৫ বছর পার



ছাইদুর রহমান নাঈম, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪ কম, কটিয়াদী ( কিশোরগঞ্জ)
একটা রিকশার আক্ষেপে ২৫ বছর পার

একটা রিকশার আক্ষেপে ২৫ বছর পার

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র দাবদাহ ও কাঠফাটা রোদে রাস্তার মোড়ে মাথায় হাত দিয়ে বসা এক রিকশাচালক। টপটপ করে ঘাম ঝরছে। বারবার মাথার ঘাম গামছা দিয়ে মোছার চেষ্টা করছেন। গরমের কারণে রাস্তায় তেমন লোকজন নেই। রিকশাচালক গোলাপ মিয়ার মাথায় চিন্তার ভাঁজ। একদিকে রিকশার ভাড়ার চাপ, আরেকদিকে সংসার চালানো।

দিনটা পার হলেই রিকশার ভাড়া দিতে হবে, তিনশো টাকা৷ সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে দুপুর একটা পর্যন্ত তার উপার্জন মোট আশি টাকা। রাতে রিকশার মহাজনকে যেভাবেই হোক টাকা দিতেই হবে। উপার্জন হোক বা না হোক এ-টাকা তাকে দিতেই হবে। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে কণ্ঠ ভারী হয়ে আসে তার।

কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার পৌরবাজারে দেখা মিলেছে এমনই এক রিকশারচালকের৷ তার নাম গোলাপ মিয়া (৪০)। পার্শ্ববর্তী নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউপির পূর্ব বীরগাঁও গ্রামের মাঝিবাড়ির বাসিন্দা তিনি।

এলাকাবাসী ও রিকশাচালকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্ত্রী দুই মেয়ে ও দুই ছেলেকে নিয়ে ছয় সদস্যের সংসার গোলাপ মিয়ার। মেয়ে এবার এইচএসসি পরীক্ষার্থী। বাকিরাও স্কুলে লেখাপড়া করছে। ছেলেমেয়েরা সবাই মেধাবী। লেখাপড়ায় তারা আগ্রহী। তীব্র অভাব অনটনে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।

এলাকাবাসী জানান, গোলাপ খুবই সহজ সরল ও পরিশ্রমী মানুষ। নিয়মিত নামাজ পড়েন। নিজস্ব থাকার নিজস্ব কোন জায়গা নাই। ছেলেমেয়েরা পড়াশোনায় ভালো। অভাবের কারণে খাবার জোটানো কঠিন। লেখাপড়ার খরচ তাদের জন্য যুদ্ধ করার মতো কষ্ট হচ্ছে। তার নিজস্ব একটা গাড়ি হলে পরিবার নিয়ে উপার্জন করে ভালোভাবে চলতে পারতেন বলে ধারণা তাদের।

রিকশাচালক গোলাপ মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, সংসার নিয়ে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করছি। ভাত জোটানো যেখানে দায় সেখানে লেখাপড়া কীভাবে করাব বলেন? তবুও সন্তানের মুখের দিকে তাকালে মনডা মানে না আর, তাদের আবদার রাখতে পারি না।

তিনি আরও জানান, একটা আনলে আরেকটা বাকি থাকে। আমার নিজস্ব একটা প্যাডেলের রিকশা ছিল। ২৫ বছর আগে চিকিৎসার খরচ আর তীব্র অভাবে বিক্রি করেছিলাম। পরে আর কেনার সাধ্য হয়নি। একটি অটোরিকশা হলে সংসারটা চালাতে পারতাম। বাড়িটাও ঝুপড়ি ঘর, বৃষ্টি আসলেই ভিজতে হয়; এভাবেই চলছি।

;

কুষ্টিয়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে আহত ৪



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুষ্টিয়া
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কুষ্টিয়ায় আধিপত্য বিস্তার ও মসজিদ কমিটি কে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে চারজন আহত হয়েছেন। তাদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) রাতে সদর উপজেলার ইবি থানার উজানগ্রাম ইউনিয়নের বিত্তিপাড়া গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- উপজেলার উজানগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের বিত্তিপাড়া গ্রামের মৃত কলিল মন্ডলের ছেলে জাহিদুর মন্ডল (৫৫), মৃত ফকির মন্ডলের ছেলে মনি মন্ডল (৬০), মৃত মকবুল মন্ডলের ছেলে খালেক মন্ডল (৫৫) ও মৃত আহসান আলীর ছেলে আক্কাস মন্ডল (৫০)।

আহতরা সবাই উজানগ্রামের বিত্তিপাড়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেন মেম্বারের সমর্থক।

আহতরা জানান, মাগরিবের নামাজের পরে বিত্তিপাড়া তেল পাম্পের নিকটে মোহিদের দোকানে বসে চা পান করছিলেন তারা। হঠাৎ করে উজানগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কার সিদ্দীক ও তার লোকজন তাদের উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে , বিত্তিপাড়া গ্রামে প্রভাব বিস্তার নিয়ে দুপক্ষের বিরোধ অনেক পুরনো। একপক্ষে নেতৃত্ব দেন উজানগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বক্কার সিদ্দীক এবং অপরপক্ষে বিত্তিপাড়া ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেন মেম্বার।

বুধবারের এই ঘটনার আগে গ্রামের ঈদগাহ কমিটি নিয়ে এই দুপক্ষের মতানৈক্য চলছিল। এর আগে ঈদের (ঈদুল ফিতর) নামাজের পর বসে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু ১১ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৭টার দিকে গোশত কিনতে গিয়ে দু’পক্ষের কর্মী রশিদ ও জামালের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়।

এরপর ঈদগাহে আসার পথে বক্কার গ্রুপের লোকদের মারধর করা হয়। পরে সাড়ে ৮টার দিকে ঈদগাহের দখল নিয়ে দুপক্ষের তুমুল সংঘর্ষ হয়।

সংঘর্ষে বক্কার গ্রুপের যোয়াদ মণ্ডল, আব্দুল্লাহ, শাহীন ও বাবু এবং হোসেন মেম্বার গ্রুপের রাজা ও মিন্টু আহত হন। পূর্বের ঘটনার জেরে সর্বশেষ এই ঘটনা ঘটেছে।

সদর উপজেলার উজানগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের ৪, ৫, ৬ ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার মোছা. শারমিন আক্তার জানান, ‘আমার মাধ্যমে জেলা পরিষদ থেকে বিত্তিপাড়া জামে মসজিদের গেইটের জন্য এক লক্ষ টাকা অনুদান পাই। পরবর্তীতে আবু বক্কার সিদ্দীক মসজিদে গিয়ে দাবি করেন, তিনি এ টাকা জেলা পরিষদ থেকে নিয়ে এসেছেন, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা। সে সময় তিনি দাবি করেন তাকে মসজিদ কমিটির সভাপতি বানাতে হবে। এই নিয়ে মসজিদে মধ্যে হট্টগোল বাঁধে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এরপর হোসেন মেম্বারের লোকজন বাজারে গোশত কিনতে আসে। লোক মুখে শুনেছি, তখন সরদার পাড়ার জামাল পাগল অর্থাৎ জামাল খোড়া হোসেন মেম্বারের এক সমর্থককে মারধর করে। পরবর্তীতে উভয়পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সেই সংঘর্ষে ৭ জন আহত হয়। ওই মারামারি ঘটনা সমাধান না হওয়ার জের ধরে বুধবার অতর্কিতভাবে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বাক্কার সিদ্দীকের সমর্থকরা হোসেন মেম্বারের সমর্থকদের উপর এই হামলা চালিয়েছে।’

তিনি আরও দাবি করেন, ‘জেলার শীর্ষ নেতারা উভয় পক্ষের লোকজনদের এক জায়গায় বসিয়ে এই মারামারি, এই সংঘর্ষ পুনরায় যাতে না হয়, সে বিষয়ে একটি সমাধান করে দেবেন। আমরা গ্রামের শান্তি চাই।’

কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মামুন রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এলাকার আধিপত্য বিস্তার ও পূর্বশত্রুতার জেরে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সংঘর্ষের ঘটনায় ৪ জন অহত হয়েছে। বর্তমানে তারা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। বিত্তিপাড়া গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

;