বয়স বাড়লে দুধ হজমের ক্ষমতা হ্রাস, দুধের বিকল্প হিসেবে কী খাবেন?



প্রবল কুমার মন্ডল
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ল্যাকটোজ একটি ডাইস্যাকারাইড, অর্থাৎ এটি দুটি সরল শর্করা (গ্লুকোজ ও গ্যালাকটোজ) দিয়ে গঠিত। গ্লুকোজ আমাদের দেহে শক্তি উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন। গ্যালাকটোজের রাসায়নিক গঠন গ্লুকোজের মতই, শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে এটা গ্লুকোজেও পরিবর্তিত হতে পারে।

এছাড়াও এটি কোষ ঝিল্লির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। প্রকৃতিতে স্তন্যপায়ীদের দুধ ছাড়া অন্য কোথাও ল্যাকটোজ বিরল।শিশুরা এই গুরুত্বপূর্ণ শক্তির উৎসকে জীবনের প্রথম বছরে ব্যবহার করে (Silanikove et al, 2015)। শিশুদদের পরিপাকতন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়া (প্রোবায়োটিক) উৎপাদনে সহায়তা করে যা শিশুদের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে (Fassio et al., 2018)।

দুধ ও অন্যান্য দুগ্ধজাত খাবারের ল্যাকটোজ নামক ভাঙ্গতে ল্যাকটেজ নামক এনজাইমের প্রয়োজন। অধিকাংশ স্তন্যপায়ী প্রাণীতে এই এনজাইমের উৎপাদন বন্ধ হয়, যখন তারা দুধ খাওয়া ছেড়ে দেয়। তবে পশ্চিম ইউরোপের অধিকাংশ মানুষ এই এনজাইমের উৎপাদন প্রায় সারাজীবনই করে থাকে।

যদি যথেষ্ট পরিমাণ ল্যাকটেজ উৎপন্ন না হয়,তবে ল্যাকটোজ থাকে এমন খাদ্য গ্রহণের ফলে পরিপাক সংক্রান্ত জটিলতা যেমন- পেট ব্যাথা, ডায়রিয়াতে ভোগে। এই অবস্থাকে ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স বলা হয়ে থাকে। অনেকে একে ল্যাকটোজ ডেফিসেন্সিও বলে।

ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে-

• প্রাইমারি ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স:

যখন শিশু অবস্থায় থাকে তখন দুধ হজমের জন্য যথেষ্ট ল্যাকটেজ এনজাইম থাকে। আস্তে আস্তে শিশুরা যখন পারিবারিকক খাবারের সঙ্গে অভ্যস্ত হতে থাকে তখন এনজাইমের উৎপাদন হ্রাস পেতে আরম্ভ করে এবং দুধ হজমে সমস্যা আরম্ভ হয়।

• সেকেন্ডারি ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স:

যদি ক্ষুদ্রান্ত্রে কোন অপারেশন বা সার্জারির কারণে ল্যাকটোজ উৎপাদন হ্রাস পায় তবে তা এই ধারণের অন্তর্ভূক্ত হবে সাধারণত সিলিয়াক ডিজিস, intestinal Infection, Crohn's disease এর কারণে ক্ষুদ্রান্ত্রে এনজাইম উৎপাদন হ্রাস পায়।

• জন্মগত ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স:

এটা সম্ভব কিন্তু বিরল। এই ডিসর্ডার বংশগত। মা ও বাবার থেকে একটি করে মিউটেটেড জিন যখন সন্তানের মধ্যে আসে তখন এই সমস্যা সৃষ্টি হয়। এছাড়াও পূর্বেই জাত (premature) শিশুদের ল্যাকটেজ উৎপাদন ক্ষমতা কম থাকলে এই এই সমস্যা সৃষ্টি হয়।

ককেশীয় অঞ্চলে বসবাসকারীদের ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স হওয়ার সম্ভবনা অনেক কম কিন্তু এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের কিছু দেশে পাঁচ বছর বয়স অতিক্রম করার পর ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সের সম্ভবনা অনেক বেশি। বিশ্বের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ মানুষের ল্যাকটোজ প্রোডাকশন ক্রমাগত হ্রাস পেতে থাকে, বিশেষ করে তিন থেকে পাঁচ বছর বয়সে ল্যাকটেজ হ্রাসের মাত্রা দুগ্ধপোষ্য অবস্থার চেয়ে ১০% কমে যায়। (Ugidos-Rodriguez et al, 2018).

পরিণত বয়সে বিশ্বের মাত্র এক চতুর্থাংশ মানুষের ল্যাকটোজ হজম করার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ ল্যাকটেজ এনজাইম থাকে। (Szilagyi & Ishayek, 2018)

দক্ষিণ এশীয় প্রাপ্তবয়স্কদের ৯৫% এর ল্যাকটেজ স্বল্পতা, অন্যদিকে স্ক্যান্ডিনিভিয়ান অঞ্চলের মাত্র ১০% প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ ল্যাকটেজ এনজাইম স্বল্পতায় ভোগে। (Forsgård, 2019)

ল্যাকটটেজ এনজাইম ক্ষুদ্রান্ত্রের পাওয়া যায়। ক্ষুদ্রান্ত্রে ল্যাকটেজ এনজাইম ল্যাকটোজকে ভেঙ্গে গ্লুকোজ ও গ্যালাকটোজ নামক সরল শর্করায় রূপান্তরিত করে।

যখন প্রয়োজনীয় এনজাইম উৎপন্ন হয় না তখন তা ক্ষুদ্রান্ত্রে ল্যাকটোজ সম্পূর্ণ না ভেঙ্গে বৃহদান্ত্রে যায়।

বৃহদান্ত্রে অনেক ব্যাকটেরিয়া থাকে, যেগুলো অহজমকৃত ল্যাকটোজের সঙ্গে ফার্মেন্টেশন বিক্রিয়া করে ল্যাকটেট,ফ্যাটি এসিড ও বিভিন্ন গ্যাস (হাইড্রোজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন) উৎপন্ন করে। যার ফলে পেট ফেপে যায়, ব্যাথা হয়।

ল্যাকটোজ জাতীয় খাদ্য গ্রহণের ত্রিশ মিনিট থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে এইসব লক্ষণ দেখা যায়। (Costanzo & Canani, 2018)

অনেক মানুষের ল্যাকটেজ স্বল্পতা থাকলেও নির্দিষ্ট মাত্রা পর্যন্ত ল্যাকটোজ সহ্য করতে পারে। যদি কেউ ল্যাকটেজ স্বল্পতায় ভোগে তবে সে যদি ১২ গ্রামের কম ল্যাকটোজ গ্রহণ করে তবে তার ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার সম্ভবনা কম থাকে। (Dekker et al, 2019) যেসব খাবারে ল্যাকটোজের মাত্রা বেশি সেগুলো কম, আবার যেসব খাবারে ল্যাকটোজের মাত্রা কম সেসব একটু বেশি খাওয়া যেতে পারে,তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন ল্যাকটোজ ১২ গ্রাম অতিক্রম না করে।

Low fat Milk অপেক্ষা উচ্চ ফ্যাটযুক্ত দুধ ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সের ক্ষেত্রে ভালো।কারণ ফ্যাটের সঙ্গে ল্যাকটোজ গ্রহণ করা হলে ল্যাকটোজ পাকস্থলী থেকে আস্তে আস্তে ক্ষুদান্ত্রে যায়।ফলে অল্প ল্যাকটেজ দিয়ে হজমে তত বেশি বেগ পেতে হয় না, যার ফলে লক্ষণ কম প্রকাশ পায়, যদিও দুধে ফ্যাটের পরিমাণ মাত্র ৪-৫%। (Ugidos-Rodriguez et al, 2018)

কিছু তরল দুধ ও দধি(yogurt) উৎপাদনের সময় এগুলোতে ল্যাকটেজ এনজাইম যুক্ত করে দেওয়া হয়, ফলে এসব খাদ্য খাদকের মুখে যাওয়ার আগেই ল্যাকটোজকে ভেঙ্গে ফেলে।যদিও এর ফলে খাবারের স্বাদের পরিবর্তন হয়,কিন্তু কোন সমস্যা দেখা দেয় না।

দই,দধি সহ ফারমেন্টেশন প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন দুগ্ধজাতীয় খাবারে যেসব উপকারী ব্যাকটেরিয়া রয়েছে সেগুলো ল্যাকটেজ এনজাইম উৎপন্ন করে। এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ল্যাকটেজ স্বল্পতায় ভোগা মানুষেরা তরল দুধের ১৮গ্রাম ল্যাকটোজ গ্রহণ করার ফলে যেসব লক্ষণ দেখা দিয়েছে, ঠিক সম পরিমাণ দধির ল্যাকটোজ গ্রহণের ফলে একই বৈশিষ্ট সম্পন্ন ব্যক্তিদের তার চেয়ে কম লক্ষণ দেখা দিয়েছে। দেখা যায় যে দধির ল্যাককটোজের ৯০% ই ক্ষুদ্রান্ত্রে হজম হয়েছে। (Savaiano, 2014)

দুধ থেকে পনির তৈরির সময় অনেকদিন রেখে দেওয়া হয় যাতে ব্যাকটেরিয়ার সহায়তায় আকাঙ্ক্ষিত গন্ধ ও গঠন পাওয়া যায়। ফলে এতে থাকা ল্যাকটোজ, ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা ভেঙ্গে যায়। এ কারণে পনিরে খুবই অল্প পরিমাণ ল্যাকটোজ থাকে।

অনেকে ল্যাকটেজ এর অভাব পূরণের জন্য ল্যাকটেজ এনজাইম সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করে থাকেন। এটাও কার্যকরী তবে এক্ষেত্রে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের সময়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ল্যাকটোজ জাতীয় কিছু গ্রহণের পাঁচ থেকে ত্রিশ মিনিট পূর্বে এই সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে হবে। (Fassio et al, 2018)


লেখক: প্রবল কুমার মন্ডল, পুষ্টিবিদ ও লেখক

Email: [email protected]
01827664306

   

সঙ্গী ভালোবাসার অভিনয় করছেন কিনা বুঝার উপায়



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘদিন এক ছাদের নিচে থেকেও উল্টো দিকের মানুষটাকে অচেনা লাগে। সেখানে কয়েক মাসের পরিচয়ে যাকে মন দিয়েছেন, তিনি আসলে কেমন, তা যাচাই করে নেওয়া জরুরি বইকি। না হলে পরে কষ্ট পাওয়ার পাল্লা আপনার দিকেই ভারী হবে। মানুষ চেনা যে কঠিন, সেটা প্রায় ধ্রুব সত্যের মতো হয়ে গিয়েছে। সামনে ভালবাসায় ভরিয়ে দিলেও আড়ালে সঙ্গী কী করছেন, তা সব সময়ে জানা যায় না। অনেক সময়ে সঙ্গীর প্রতি বিশ্বাস এতটাই অটুট হয় যে, কোনও সন্দেহ মনে জন্ম নেওয়ার সুযোগ পায় না। তবে সম্পর্কের মেয়াদ যদি কম দিন হয়, তা হলে চোখ-কান খুলে রাখাই ভাল। কিন্তু সঙ্গী আপনাকে ঠকাচ্ছে কি না, তা বোঝার কি সত্যিই কোনও উপায় আছে? উপায় না থাকলেও কিছু লক্ষণ একটু খেয়াল করে দেখতে পারেন। যদি ঘন ঘন এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, তা হলে বিষয়টি নিয়ে দু’বার ভাবা জরুরি।

>> ফোন হচ্ছে সবচেয়ে ব্যক্তিগত একটি জিনিস। ফোনে কেউ হাত দিক, তা অনেকেই পছন্দ করেন না। কিন্তু এমন অনেক পরিস্থিতি আসে, যখন অন্যের ফোন ব্যবহার করার প্রয়োজন পড়ে। এমন ক্ষেত্রে কখনও ভুলবশতও সঙ্গীর ফোন হাতে নিলে তিনি কি অত্যন্ত বিরক্তি প্রকাশ করেন? রেগে যান? অনেকেই নিজের ব্যক্তিগত পরিসর নিয়ে প্রচণ্ড খুঁতখুঁতে। তবু ফোনে হাত দিলেই যদি চেনা মানুষটি হঠাৎই অচেনা হয়ে ওঠেন, তা হলে বিষয়টি নিয়ে ভেবে দেখতে পারেন।

>> আচরণগত কোনও পরিবর্তন আপনার সঙ্গীর মধ্যে এসেছে কি না, তা লক্ষ করে দেখুন। কাজ আর ব্যস্ততা তো থাকবেই। কাজের দোহাই দিয়ে আপনার সঙ্গে কথা বলা কিংবা দেখা করা কমিয়ে দিচ্ছেন? এড়িয়ে যাচ্ছেন? ভালোবাসা মজবুত হয় তখনই, যখন গোপনীয়তার পর্দা থাকে না। সঙ্গী যদি সম্পর্কে গোপনীয়তার মোড়ক জড়াতে শুরু করেন, তা হলে একবার সরাসরি কথা বলে নেওয়াই শ্রেয়।

>> সারাদিন কীভাবে কাটল, তার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ আপনি সঙ্গীকে দেন। অথচ আপনি জিজ্ঞাসা করলেই খাপছাড়া উত্তর আসছে। সঙ্গী আপনার কাছ থেকে কিছু লুকিয়ে যাচ্ছেন না তো? আবার হতে পারে তিনি কোনও কারণে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। তাই সোজাসুজি সন্দেহ করার আগে সত্যিই কোনও কারণ আছে কি না, তা এক বার যাচাই করে নিন।

;

টাক পড়ার ঝুঁকি কমায় যেসব খাবার



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমানে ছেলেদের অন্যতম সমস্যার মধ্যে চুল পড়া। অল্প বয়সেই অনেক ছেলের মাথায় টাক পড়ে যায়। এ সমস্যাকে আটকাতে হলে চুল মাথা থেকে ঝরে পড়ার প্রবণতা কমাতে হবে। অনেকেই চুল পড়া বন্ধ করতে নানা প্রসাধনী ব্যবহার করেন। বিভিন্ন ওষুধও খান। তবে তাতে যে বিশেষ কোনও লাভ হয়, তা নয়। সে ক্ষেত্রে রোজের খাবারে বদল এনে দেখতে পারেন, সমস্যা থেকে নিষ্কৃতি পাবেন অচিরেই। চুল ঝরার পরিমাণ কমাতে কোন খাবারগুলি বেশি করে খেতে পারেন ছেলেরা?

গাজর

গাজরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে। চুলের গোড়া শক্ত করতে ভিটামিন এ-এর জুড়ি মেলা ভার। মাথার তালুর পুষ্টিতে জোগায় গাজর। মাথার ত্বকে সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে গাজর দারুণ কার্যকরী। সঠিক পুষ্টি উপাদানের অভাবেই চুলের স্বাস্থ্য খারাপ হতে থাকে। গাজর চুলে পুষ্টির ঘাটতি পূরণ করে।

কড়াইশুঁটি

চুল পড়া সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত কড়াইশুঁটি খেতে পারেন। এতে নানা রকমের ভিটামিন তো আছেই, তার সঙ্গে আছে চুলের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু খনিজও। আয়রন, জিঙ্ক, মিনারেলস সমৃদ্ধ কড়াইশুঁটি চুলের গোড়া মজবুত করে। শত অবহেলাতেও চুলের গোড়া দুর্বল হতে দেয় না। ফলে চুলে পড়ে যাওয়ার পরিমাণও অনেকটাই কমে।

ওট্স

ওজন কমাতে ওট্‌সের জুড়ি মেলা ভার। তবে চুল ঝরার সমস্যা থেকেও ছেলেদের মুক্তি দিতে পারে ওট্স। এতে রয়েছে ফাইবার, আয়রন, জিঙ্কের মতো খনিজ। সেই সঙ্গে রয়েছে ওমেগা-৩। এই ফ্যাটি অ্যাসিড মাথার ত্বকে এবং চুলে পুষ্টি জোগায়। মাথার ত্বকের রক্ত সঞ্চালনও সচল রাখে। ফলে চুল পড়া কমে।

;

আমড়া খেলে যেসব উপকার পাবেন



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আমড়া খেলে যেসব উপকার পাবেন

আমড়া খেলে যেসব উপকার পাবেন

  • Font increase
  • Font Decrease

আমাদের দেশে এক এক মৌসুমে এক এক ফল পাওয়া যায়। এর মধ্যে অতিপরিচিত একটি ফল হলো আমড়া। মিনারেল ও ভিটামিনে ভরপুর এই ফলটি মুখরোচক ও সুস্বাধু। টক-মিষ্টি জাতীয় এ ফলটি কাঁচা ছাড়াও আচার, চাটনি, জ্যামসহ বিভিন্ন উপায়ে খাওয়া যায়। 

আমড়ায় আছে ক্যালসিয়াম, আঁশ, আয়রন, ভিটামিন সি-সহ আরও অনেক উপকারী উপাদান। এছাড়াও আমড়া গাছের বিভিন্ন অংশে আছে অনেক ঔষধি গুণাগুণ। যা ডায়রিয়া, কানের ব্যথা, ক্ষতসহ বিভিন্ন চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়।

আমড়া’র স্বাস্থ্য উপকারিতা

হিমোগ্লোবিনের উৎপাদন বৃদ্ধি করে: আমড়াতে আছে প্রচূর পরিমাণে আয়রন। যা আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিন এবং মায়োগ্লোবিন উৎপাদনে সহায়তা করে। এর ফলে শরীরে অক্সিজেন পরিবহণ ক্ষমতা বেড়ে যায়। এছাড়াও  শরীরের রক্তাস্বল্পতা এবং অন্যান্য রক্তের সমস্যা প্রতিরোধে আমড়া অনেক উপকারী।

হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়ক: আমড়ায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ রয়েছে। এই ফলটি হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।। এছাড়াও গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্যসহ বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে আমড়া। নিয়মিত খাবারের পর এই ফলটি খাওয়ার অভ্যাস দূর করতে পারে ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি।

ভিটামিন সি’র ভালো উৎস: আমড়াতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। ফলে এটি হাড় ও দাঁতের রক্ষণাবেক্ষণসহ নানান রোগ নিরাময়ে ভূমিকা রাখে। আমড়াতে থাকা ভিটামিন সি মানুষের দেহের প্রোটিন কোলাজেন উৎপাদনে সহায়তা করে। এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা, দৃঢ়তা বজায় রাখতে উপকারী।

হাড়কে মজবুত করে: আমড়াতে অনেক বেশি পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে। নিয়মিত আমড়া খেলে তা ক্যালসিয়ামের চাহিদা পূরণ করতে পারে। এটি হাড়ের যে কোনো রোগ দূর করে হাড়কে শক্তিশালী রাখতে সহায়তা করে ।

পেশিশক্তি বৃদ্ধি করে: আমড়াতে থিয়ামিন নামের একটি উপাদান পাওয়া রয়েছে, যেটি মানুষের শরীরে পেশি সংকোচন ও স্নায়ু সংকেত সঞ্চালনে সাহায্য করে। 

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ: আমড়াতে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেমন ভিটামিন, মিনারেল ও ফাইটোকেমিক্যাল রয়েছে। এ উপাদানগুলো আমাদের স্ট্রেসের প্রভাব কমাতে সহায়তা করে।

এছাড়াও আমড়া বিভিন্ন ভাইরাসের আক্রমণ থেকে শরীরকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে। এর উপাদান সর্দি-কাশি ও ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগের জীবাণুর বিরুদ্ধে কাজ করে। ব্রণের প্রকোপ কমিয়ে ত্বকের সৌন্দর্য বাড়ায়। আমড়াতে থাকা ভিটামিন সি ত্বক উজ্জ্বল ও সুন্দর রাখতে সাহায্য করে।

;

বিশ্ব হার্ট দিবস আজ



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ব হার্ট দিবস। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘প্রথমেই নিজেদের হার্টকে জানা’। বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যদিয়ে বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হবে।

চিকিৎসাশাস্ত্রের পরিভাষায় হৃদরোগকে বলা হয় মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন। হৃদরোগের কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা বলে থাকেন সচল থাকতে গোটা শরীরের মতো হৃদযন্ত্রেরও অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়। আর করোনারি ধমনি হৃদযন্ত্রে ওই অক্সিজেন সরবরাহ করে।

অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অনিয়মিত জীবনযাপনে করোনারি ধমনির ভিতরের দেওয়ালে ফ্যাট জমে যায়। এর ফলে সময়ের সঙ্গে অক্সিজেন সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফুসফুসে রক্তের সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে কার্ডিয়াক ইস্কেমিয়ার পরিস্থতি তৈরি হয়, যাতে হৃদযন্ত্রে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয়। বেশ কিছু সময় পর্যন্ত বুঝতে না পারলে, বা চিকিৎসায় দেরি হলে হৃদযন্ত্রের কোষগুলির একে একে মৃত্যু ঘটে। তাতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন মানুষ।

অন্যদিকে পৃথিবীব্যাপী সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটে হৃদরোগে, যার অন্যতম প্রধান কারণ তামাক। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতিবছর বিশ্বে ১৯ লাখ মানুষ তামাক ব্যবহারজনিত হৃদরোগে মৃত্যুবরণ করে। বাংলাদেশে প্রতিবছর ২ লাখ ৭৭ হাজার মানুষ হৃদরোগে মারা যায়, যার ২৪ শতাংশের জন্য দায়ী তামাক। গ্লোবাল বারডেন অফ ডিজিজ স্টাডি (জিবিডি) ২০১৯ এর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে মৃত্যু এবং পঙ্গুত্বের প্রধান চারটি কারণের একটি তামাক। বর্তমানে প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর ৩৫.৩ শতাংশ (৩ কোটি ৭৮ লাখ) তামাক ব্যবহার করছে যা হৃদরোগ পরিস্থিতিকে আরও উদ্বেগজনক করে তুলছে।

;