চড়া বাজারে সংসারের খরচ কমাতে পরিকল্পনা জরুরি। ছবি: সংগৃহীত
লাইফস্টাইল
দ্রব্যমূল্যের বাজারে আগুন। বাড়ছে গণপরিবহন ভাড়াও। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে মাস শেষে সঞ্চয় করা কষ্টসাধ্য হয়ে উঠছে। কিন্তু সংসারে খরচ কমানোর তাগিদ সবারই থাকে। কারণ সংসার খরচ যত কমানো যাবে, ততোটুকু সঞ্চয় হবে প্রতি মাসে।
অনেকেই আছেন, যারা মাসে যা উপার্জন করেন; সবটাই সংসারে খরচ করে ফেলেন। আসলে যা উপার্জন করছেন, তার ব্যয় ও সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে যদি ভারসাম্য না তৈরি করতে পারেন, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে সমস্যায় পড়তে হবে।
সংসার খরচ কমানোর ৭ উপায়—
কার্ড নয় নগদ টাকা কেনাকাটার সময় ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের পরিবর্তে নগদ টাকা ব্যবহার করুন। কারণ কার্ড ব্যবহারের ফলে ঠিক কতটা খরচ হচ্ছে, সে হিসাব রাখা মুশকিল। কারণ কার্ড ব্যবহারের ফলে অনেক সময় ট্যাক্স বাবদ খুচরা কয়েক টাকা কেট নেওয়া হয়। এ খরচগুলো এড়াতে নগদ টাকা ব্যবহার করুন কেনাকাটায়।
বিদ্যুতের অপচয় কমান সংসার খরচ অনেকাংশেই বেড়ে যায় ঘরে থাকা ইলেক্ট্রনিক্স যন্ত্রপাতির কারণে। তাই যেসব বৈদ্যুতিক যন্ত্রগুলো সরচরাচর ব্যবহার করেন না; সেগুলোর বিদ্যুৎসংযোগ বন্ধ রাখুন। এতে বিদ্যুতের অপচয় কমবে। যখন প্রয়োজন হবে; তখনই সংযোগ চালু করুন।
পুরোনো জিনিস বেচে সঞ্চয় করুন অনেক সময় ঘরের বিভিন্ন আসবাব থেকে শুরু করে অনেক কিছুই পুরোনো হয়ে যায়। বর্তমানে বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন গ্রুপে পুরনো জিনিসপত্র ক্রয়-বিক্রয়ের সুবিধা আছে। চাইলে ঘরের অপ্রয়োজনীয় পুরনো জিনিস বিক্রি করে দিন। এতে কিছুটা টাকা-পয়সাও হাতে আসবে।
মূল্যছাড়ের দিকে নজর রাখা কেনাকাটার সময় বিভিন্ন উপলক্ষ্য বা আয়োজনকে কেন্দ্র করে কিনুন। এতে মূল্যছাড় পাবেন। টানাটানির সংসারে মূল্যছাড়ের সময় কেনাকাটা করলে অনেক সাশ্রয় হয়। কোনো গিফট ভাউচার পেলে সেটাও ব্যবহার করুন।
গেট টুগেদার হোক ঘরে ঘুরতে যেতে সবারই মন টানে। তাতে খরচ তো হয়ই। তবে ঘুরতে না গেলেও আবার নয়। তবে প্রতি সপ্তাহে ঘোরাঘুরি করে টাকা নষ্ট না করে ঘরেও আয়োজন করতে পারেন স্বল্প খরচের মধ্যে।
কেনা খাবারে নজর কমান মাঝেমধ্যে রেস্টুরেন্টে খাওয়ার ইচ্ছে হতেই পারে। তবে খরচের বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে। রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়ে অযথা খাবার টেস্টের জন্য অর্ডার না করে যেটা খেতে পারবেন, সেটাই খান।
মোবাইল বা টেলিফোন বিল কমান মোবাইলে মাসিক কোন প্যাকেজ ব্যবহার করলে কম রেটে বেশি কথা বলা যাবে বা কত টাকায় কত মিনিট ও কত ইন্টারনেট পাওয়া যাবে সেসব বিষয়েও ধারণা রাখুন। এসব ছোট ছোট হিসাবগুলো কষা থাকলে সংসারের খরচ অনেকখানি বাঁচবে। সেইসঙ্গে কোন বিষয় বাবদ বেশি খরচ হচ্ছে; সেটিও মাথায় থাকবে।
মুখে ব্রণ হয়ে সেরেও য়ায়। কিন্তু তার দাগ থেকে যায় দিনের পর দিন। ব্রণের দাগ সহজে যেতে চায় না। এই দাগ পুরোপুরি মুছতেও সময় লাগে। চেষ্টা করেও চলে যায়নি, এমন উদাহরণও রয়েছে অনেক।
আজকাল অনেকেই মুখের দাগ মেটাতে সার্জারির সাহায্য নেন। ব্যবহার করেন দামি ব্র্যান্ডের মেকআপ। কিন্তু এতসব না করে কিছু নিয়ম মেনে চললেই মুখের দাগ কমানো যায়। জেনে নিন সেসব উপায়-
যে কয়েকটি নিয়ম অবশ্যই মেনে চলবেন
০১. প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।
০২. ত্বক পরিষ্কার রাখুন।
০৩. প্রতিদিন ভালো করে মুখের মেকআপ তুলুন।
০৪. অপরিষ্কার হাতে ব্রণের জায়গাটি ধরবেন না।
০৫. ব্রণ অযথা নখ দিয়ে খুঁটবেন না।
০৬. বিজ্ঞাপনে ভুলে যে কোনও ক্রিম বা লোশন মুখে মাখবেন না।
০৭. তেল মশলাযুক্ত খাবার পারলে বন্ধ করে দিন।
বাড়াবাড়ি হলে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
ব্রণ কমে গিয়েছে মানেই, ত্বকের পরিচর্যায় ইতি টানলে চলবে না। ব্রণ কমে যাওয়ার পর ত্বকের যত্ন নিয়ে যেতে হবে নিয়ম করে। বিশেষ করে স্ক্রাবিং করা বন্ধ করলে চলবে না। স্ক্রাব করার ফলে ত্বকের মৃত কোষ দূর হয়। লোমকূপে জমে থাকা ময়লা বাইরে বেরিয়ে যায়। এর ফলে দাগছোপ তৈরি হওয়ারও আশঙ্কা কম থাকে।
সকালে উঠে আলসেমি কাটানোর একমাত্র উপায় চা ছাড়া কিছু হতেই পারে না। ছুটির দিনে পাড়ার বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় কিংবা সঙ্গীর সঙ্গে ক্যাফের নিভৃত কোণে, চা জনপ্রিয় সব পরিস্থিতিতেই। দুধ কিংবা লিকার চায়ের পাশাপাশি ইদানিং অবশ্য ভেষজ চায়ের প্রতিও আসক্তি বাড়ছে। এতে ওজন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। আবার স্বাদ বদলও হয়। সেই সঙ্গে সুস্থ থাকে শরীরও। কারণ ভেষজ চায়ের রয়েছে একাধিক গুণ।
তুলসী চা
ঠান্ডা-গরমের মৌসুমে সর্দি-কাশি লেগেই থাকে। তবে যদি রোজ এক কাপ করে তুলসী চা খেতে পারেন, তা হলে ঠান্ডা লাগার আশঙ্কা কিন্তু অনেকটাই কমবে। একটি পাত্রে পানি গরম করে তাতে তুলসী পাতা ফুটিয়ে নিন। তার পর মধু ও লেবু মিশিয়ে নিলেই তৈরি তুলসী চা। লেবুতে থাকা ভিটামিন সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতে সহায়তা করে। ডায়াবেটিসের সমস্যা থাকলে নিয়মিত তুলসী চা খান, এটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
দারচিনি চা
শরীর থেকে অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে চান? তা হলে এই পানীয়টি আপনাকে খেতেই হবে। একটি পাত্রে পানি গরম করে দারচিনি গুঁড়ো, লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে নিন। তার পর এই চা ছেঁকে খান। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, যা বিভিন্ন রোগ থেকে শরীরকে বাঁচাতে সহায়তা করে। ঋতুস্রাবের সময় পেটে ব্যথা হলে, তা থেকেও আরাম মিলবে এই চা খেলে।
পুদিনা চা
বদহজমের সমস্যায় ভুগছেন? পুদিনা পাতার চা খান। পানি গরম করে তাতে কুচি কুচি করে কয়েকটা পুদিনা পাতা কেটে মিনিট ১৫ ঢাকা দিয়ে রাখুন। পাতা কেটে দিলে পুদিনার গন্ধটা পুরোটাই পাবেন। নিঃশ্বাসের দুর্গন্ধ এড়াতেও খেতে পারেন পুদিনা চা। এই চা খেলে নিমেষেই দূর হয়ে যাবে শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, একটানা কাজ করার জন্য মনোসংযোগ বাড়াতেও সহায়তা করে এই চা।
বয়স বাড়লে দুধ হজমের ক্ষমতা হ্রাস, দুধের বিকল্প হিসেবে কী খাবেন?
প্রবল কুমার মন্ডল
ছবি: সংগৃহীত
লাইফস্টাইল
ল্যাকটোজ একটি ডাইস্যাকারাইড, অর্থাৎ এটি দুটি সরল শর্করা (গ্লুকোজ ও গ্যালাকটোজ) দিয়ে গঠিত। গ্লুকোজ আমাদের দেহে শক্তি উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন। গ্যালাকটোজের রাসায়নিক গঠন গ্লুকোজের মতই, শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে এটা গ্লুকোজেও পরিবর্তিত হতে পারে।
এছাড়াও এটি কোষ ঝিল্লির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। প্রকৃতিতে স্তন্যপায়ীদের দুধ ছাড়া অন্য কোথাও ল্যাকটোজ বিরল।শিশুরা এই গুরুত্বপূর্ণ শক্তির উৎসকে জীবনের প্রথম বছরে ব্যবহার করে (Silanikove et al, 2015)। শিশুদদের পরিপাকতন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়া (প্রোবায়োটিক) উৎপাদনে সহায়তা করে যা শিশুদের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে (Fassio et al., 2018)।
দুধ ও অন্যান্য দুগ্ধজাত খাবারের ল্যাকটোজ নামক ভাঙ্গতে ল্যাকটেজ নামক এনজাইমের প্রয়োজন। অধিকাংশ স্তন্যপায়ী প্রাণীতে এই এনজাইমের উৎপাদন বন্ধ হয়, যখন তারা দুধ খাওয়া ছেড়ে দেয়। তবে পশ্চিম ইউরোপের অধিকাংশ মানুষ এই এনজাইমের উৎপাদন প্রায় সারাজীবনই করে থাকে।
যদি যথেষ্ট পরিমাণ ল্যাকটেজ উৎপন্ন না হয়,তবে ল্যাকটোজ থাকে এমন খাদ্য গ্রহণের ফলে পরিপাক সংক্রান্ত জটিলতা যেমন- পেট ব্যাথা, ডায়রিয়াতে ভোগে। এই অবস্থাকে ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স বলা হয়ে থাকে। অনেকে একে ল্যাকটোজ ডেফিসেন্সিও বলে।
ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে-
• প্রাইমারি ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স:
যখন শিশু অবস্থায় থাকে তখন দুধ হজমের জন্য যথেষ্ট ল্যাকটেজ এনজাইম থাকে। আস্তে আস্তে শিশুরা যখন পারিবারিকক খাবারের সঙ্গে অভ্যস্ত হতে থাকে তখন এনজাইমের উৎপাদন হ্রাস পেতে আরম্ভ করে এবং দুধ হজমে সমস্যা আরম্ভ হয়।
• সেকেন্ডারি ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স:
যদি ক্ষুদ্রান্ত্রে কোন অপারেশন বা সার্জারির কারণে ল্যাকটোজ উৎপাদন হ্রাস পায় তবে তা এই ধারণের অন্তর্ভূক্ত হবে সাধারণত সিলিয়াক ডিজিস, intestinal Infection, Crohn's disease এর কারণে ক্ষুদ্রান্ত্রে এনজাইম উৎপাদন হ্রাস পায়।
• জন্মগত ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স:
এটা সম্ভব কিন্তু বিরল। এই ডিসর্ডার বংশগত। মা ও বাবার থেকে একটি করে মিউটেটেড জিন যখন সন্তানের মধ্যে আসে তখন এই সমস্যা সৃষ্টি হয়। এছাড়াও পূর্বেই জাত (premature) শিশুদের ল্যাকটেজ উৎপাদন ক্ষমতা কম থাকলে এই এই সমস্যা সৃষ্টি হয়।
ককেশীয় অঞ্চলে বসবাসকারীদের ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স হওয়ার সম্ভবনা অনেক কম কিন্তু এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের কিছু দেশে পাঁচ বছর বয়স অতিক্রম করার পর ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সের সম্ভবনা অনেক বেশি। বিশ্বের প্রায় তিন-চতুর্থাংশ মানুষের ল্যাকটোজ প্রোডাকশন ক্রমাগত হ্রাস পেতে থাকে, বিশেষ করে তিন থেকে পাঁচ বছর বয়সে ল্যাকটেজ হ্রাসের মাত্রা দুগ্ধপোষ্য অবস্থার চেয়ে ১০% কমে যায়। (Ugidos-Rodriguez et al, 2018).
পরিণত বয়সে বিশ্বের মাত্র এক চতুর্থাংশ মানুষের ল্যাকটোজ হজম করার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ ল্যাকটেজ এনজাইম থাকে। (Szilagyi & Ishayek, 2018)
দক্ষিণ এশীয় প্রাপ্তবয়স্কদের ৯৫% এর ল্যাকটেজ স্বল্পতা, অন্যদিকে স্ক্যান্ডিনিভিয়ান অঞ্চলের মাত্র ১০% প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ ল্যাকটেজ এনজাইম স্বল্পতায় ভোগে। (Forsgård, 2019)
ল্যাকটটেজ এনজাইম ক্ষুদ্রান্ত্রের পাওয়া যায়। ক্ষুদ্রান্ত্রে ল্যাকটেজ এনজাইম ল্যাকটোজকে ভেঙ্গে গ্লুকোজ ও গ্যালাকটোজ নামক সরল শর্করায় রূপান্তরিত করে।
যখন প্রয়োজনীয় এনজাইম উৎপন্ন হয় না তখন তা ক্ষুদ্রান্ত্রে ল্যাকটোজ সম্পূর্ণ না ভেঙ্গে বৃহদান্ত্রে যায়।
বৃহদান্ত্রে অনেক ব্যাকটেরিয়া থাকে, যেগুলো অহজমকৃত ল্যাকটোজের সঙ্গে ফার্মেন্টেশন বিক্রিয়া করে ল্যাকটেট,ফ্যাটি এসিড ও বিভিন্ন গ্যাস (হাইড্রোজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড, মিথেন) উৎপন্ন করে। যার ফলে পেট ফেপে যায়, ব্যাথা হয়।
ল্যাকটোজ জাতীয় খাদ্য গ্রহণের ত্রিশ মিনিট থেকে দুই ঘণ্টার মধ্যে এইসব লক্ষণ দেখা যায়। (Costanzo & Canani, 2018)
অনেক মানুষের ল্যাকটেজ স্বল্পতা থাকলেও নির্দিষ্ট মাত্রা পর্যন্ত ল্যাকটোজ সহ্য করতে পারে। যদি কেউ ল্যাকটেজ স্বল্পতায় ভোগে তবে সে যদি ১২ গ্রামের কম ল্যাকটোজ গ্রহণ করে তবে তার ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার সম্ভবনা কম থাকে। (Dekker et al, 2019) যেসব খাবারে ল্যাকটোজের মাত্রা বেশি সেগুলো কম, আবার যেসব খাবারে ল্যাকটোজের মাত্রা কম সেসব একটু বেশি খাওয়া যেতে পারে,তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যেন ল্যাকটোজ ১২ গ্রাম অতিক্রম না করে।
Low fat Milk অপেক্ষা উচ্চ ফ্যাটযুক্ত দুধ ল্যাকটোজ ইনটলারেন্সের ক্ষেত্রে ভালো।কারণ ফ্যাটের সঙ্গে ল্যাকটোজ গ্রহণ করা হলে ল্যাকটোজ পাকস্থলী থেকে আস্তে আস্তে ক্ষুদান্ত্রে যায়।ফলে অল্প ল্যাকটেজ দিয়ে হজমে তত বেশি বেগ পেতে হয় না, যার ফলে লক্ষণ কম প্রকাশ পায়, যদিও দুধে ফ্যাটের পরিমাণ মাত্র ৪-৫%। (Ugidos-Rodriguez et al, 2018)
কিছু তরল দুধ ও দধি(yogurt) উৎপাদনের সময় এগুলোতে ল্যাকটেজ এনজাইম যুক্ত করে দেওয়া হয়, ফলে এসব খাদ্য খাদকের মুখে যাওয়ার আগেই ল্যাকটোজকে ভেঙ্গে ফেলে।যদিও এর ফলে খাবারের স্বাদের পরিবর্তন হয়,কিন্তু কোন সমস্যা দেখা দেয় না।
দই,দধি সহ ফারমেন্টেশন প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন দুগ্ধজাতীয় খাবারে যেসব উপকারী ব্যাকটেরিয়া রয়েছে সেগুলো ল্যাকটেজ এনজাইম উৎপন্ন করে। এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ল্যাকটেজ স্বল্পতায় ভোগা মানুষেরা তরল দুধের ১৮গ্রাম ল্যাকটোজ গ্রহণ করার ফলে যেসব লক্ষণ দেখা দিয়েছে, ঠিক সম পরিমাণ দধির ল্যাকটোজ গ্রহণের ফলে একই বৈশিষ্ট সম্পন্ন ব্যক্তিদের তার চেয়ে কম লক্ষণ দেখা দিয়েছে। দেখা যায় যে দধির ল্যাককটোজের ৯০% ই ক্ষুদ্রান্ত্রে হজম হয়েছে। (Savaiano, 2014)
দুধ থেকে পনির তৈরির সময় অনেকদিন রেখে দেওয়া হয় যাতে ব্যাকটেরিয়ার সহায়তায় আকাঙ্ক্ষিত গন্ধ ও গঠন পাওয়া যায়। ফলে এতে থাকা ল্যাকটোজ, ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা ভেঙ্গে যায়। এ কারণে পনিরে খুবই অল্প পরিমাণ ল্যাকটোজ থাকে।
অনেকে ল্যাকটেজ এর অভাব পূরণের জন্য ল্যাকটেজ এনজাইম সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করে থাকেন। এটাও কার্যকরী তবে এক্ষেত্রে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের সময়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। ল্যাকটোজ জাতীয় কিছু গ্রহণের পাঁচ থেকে ত্রিশ মিনিট পূর্বে এই সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে হবে। (Fassio et al, 2018)
রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পেলেই জীবনে একটা বড়সড় পরিবর্তন চলে আসে। নিয়মের বেড়াজালে জড়িয়ে পড়ে প্রাত্যহিক জীবন। বিশেষ করে খাওয়াদাওয়ায় একটা বদল আসে। কারণ এই রোগ শরীরে বাসা বাঁধলে অনেক খাবার খাওয়া যায় না। সেই বিধিনিষেধের তালিকায় রয়েছে বেশ কিছু স্বাস্থ্যকর খাবারও। ডায়াবেটিস থাকলে দুধ খাওয়া যায় কি না, তা নিয়ে একটা দ্বন্দ্ব কাজ করে অনেকের মনেই। অনেকেরই মনে হয়, দুধ খেলে বোধ হয় বেড়ে যেতে পারে ডায়াবেটিসের মাত্রা। সত্যিই কি তাই? চিকিৎসকেরা কিন্তু অন্য কথা বলছেন।
চিকিৎসকদের মতে, ডায়াবেটিক রোগীদের দুধ খাওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই। কারণ দুধের মতো স্বাস্থ্যকর পানীয় খুব কমই রয়েছে। দুধে রয়েছে বিভিন্ন খনিজ পদার্থ, বিভিন্ন ধরনের প্রোটিন এবং সেই সঙ্গে ক্যালশিয়াম। এগুলি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য জরুরি। দুধে থাকা ক্যালশিয়াম ডায়াবেটিসের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। সেই সঙ্গে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও কমায়। ফলে দুধ খাওয়া যেতেই পারে। তবে পরিমাণে রাশ টানতে হবে। দিনে এক গ্লাস দুধ খেলে কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তবে দুধের সঙ্গে কয়েকটি জিনিস যদি মিশিয়ে খেতে পারেন, তা হলে আরও বেশি উপকার পাওয়া যায়।
>> হলুদ স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। ডায়াবেটিস জব্দ করতেও এর জুড়ি মেলা ভার। দুধের সঙ্গে যদি হলুদ মিশিয়ে খাওয়া যায়, তবে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে। এই পানীয় খেলে ডায়াবেটিস সংক্রান্ত নানা শারীরিক সমস্যা থেকেও মুক্তি মেলে।
>> রক্তে শর্করার মাত্রা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম দারচিনি। এতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, পটাশিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রয়েছে। দুধের সঙ্গে যদি নিয়মিত দারচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে খাওয়া যায়, তা হলে রক্তে শর্করার মাত্রা অনেকটাই বাগে থাকবে।
>> দুধের সঙ্গে বাদামবাটা মিশিয়ে খেলেও শরীরে বিভিন্ন ধরনের উপাদান পৌঁছবে। প্রোটিন, ফাইবার থেকে ক্যালশিয়াম— একসঙ্গে সব কিছু পাবে শরীর। নিয়ন্ত্রণে থাকবে ডায়াবেটিস। রোজের ডায়েটে কাঠবাদাম বা সোয়া দুধ রাখলেও বেশ উপকার পাওয়া যায়।