ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিচার, শেষ পর্ব

দণ্ড ছাড়িয়েছে আগের আইনকেও



নাজমুল আহসান রাজু, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সর্বোচ্চ শাস্তি ও জরিমানার (অর্থদণ্ড) পরিমাণ ছাড়িয়ে গেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) আইনের সর্বোচ্চ শাস্তি ও জরিমানাকে। সংশোধিত আইসিটি আইনে সর্বোচ্চ ১৪ বছরের সাজা ও এক কোটি টাকা জরিমানা ছিল। ডিজিটাল আইনে সাজা বেড়ে যাবজ্জীবন হয়েছে। আর একই অপরাধ দ্বিতীয় বার করলে যাবজ্জীবনের সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে ৫ কোটি কোটি টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড।

আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, আর্থ সামাজিক অবস্থার সাথে সামঞ্জস্য রেখে আইন প্রণয়ন করা উচিত। সাজার বিধান করলেই হবে না, দণ্ডিত হলে তা পরিশোধের সামর্থ রয়েছে কিনা- তাও দেখতে হবে। তবে কেউ কেউ বলছেন, এটি হচ্ছে অপরাধ থেকে বিরত রাখতে সতর্কতামূলক বিধান। এতে সাজা ও অর্থদণ্ড অপরাধ প্রবণতাকে নিরুৎসাহিত করবে।

প্রতিবেশী ভারতে সাইবার অপরাধ রোধে তথ্য প্রযুক্তি অ্যাক্ট ২০০০ প্রণয়ন করা হয় ওই বছরের ১৭ অক্টোবর। আট বছর পর এ আইনে দ্বিতীয় দফা সংশোধন আনে লোকসভা। ভারতের আইনের ছয় বছর পর ২০০৬ সালের ৭ অক্টোবর বাংলাদেশে প্রণীত হয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬। ভারতের আইনের সাজা ও জরিমানার বিধান হুবহু অনুসরণ করা হয় বাংলাদেশের আইসিটি আইনে।

আরও পড়ুন:‘মানহানি’তে হাতিয়ার এখন সাইবার আইন

পুলিশের ফাইনাল রিপোর্টেই শেষ ৩৩৪ মামলা

ভারতের আইনে কম্পিউটারে বেআইনি অনুপ্রবেশে শাস্তির বিধান রয়েছে ৬৫ ধারায়। শাস্তি ৩ বছরের কারাদণ্ড ও ২ লাখ রুপি অর্থদণ্ড। এটি আমলযোগ্য ও অজামিনযোগ্য অপরাধ। ৬৬ ধারা হ্যাকিং অপরাধের, শাস্তি ৩ বছরের কারাদণ্ড ও ২ লাখ রুপি অর্থদণ্ড। ৬৭ ধারায় ইলেকট্রনিক মাধ্যমে অশ্লীল তথ্য প্রকাশ করা হলে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ২ লাখ রুপি অর্থদণ্ড। ৭১ ধারায় মিথ্যা তথ্য প্রদানের শাস্তি দুই বছর এবং ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড। ব্যক্তিগত গোপনীয় তথ্য প্রকাশের শাস্তি বর্ণিত আছে ৭২ ধারায়, শাস্তি দুই বছর ও ১ লাখ রুপি অর্থদণ্ড। প্রতারণার উদ্দেশ্যে ডিজিটাল সনদের জালিয়াতির সাজা দুই বছর ও এক লাখ রুপি জরিমানা। ভারতের আইনে মানহানি, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের মতো অপরাধ অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি।

২০১৩ সালে আইসিটি আইনের ৫৭ ধারাসহ চারটি ধারায় সাজার পরিমান সর্বোচ্চ ১৪ এবং অন্যূন সাত বছর ও এক কোটি টাকা জরিমানা বিধান অন্তর্ভূক্ত করে সরকার।

কানাডার হেলিফ্যাক্স ভিত্তিক সেন্টার ফর ল’ অ্যান্ড ডেমোক্রেসির বিশ্লেষণে বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ত্রুটি বিচ্যুতি তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ডিজিটাল আইন আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মানদণ্ডের প্রতি সম্মান প্রদর্শনে ব্যর্থ হয়েছে। মানবাধিকারের সবধরণের মানদণ্ডের সঙ্গে আইনটি অসঙ্গতিপূর্ণ।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আইনের বড় একটি সমস্যা হলো- ডিজিটাল নিরাপত্তা বলতে সবধরণের নিরাপত্তাকে আওতাধীন করা হয়েছে। বেআইনি প্রবেশকে এমনভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে যেখানে বৈধ প্রবেশও অপরাধ। এমনকি কেউ তার কম্পিউটার যতবার বন্ধ করবে ততবারই অপরাধী হতে পারে। ম্যালাওয়ারকেও এমনভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে যা একটি বড় ভুল। এতে করে আইনের অপব্যবহার হতে পারে।

আরও পড়ুন:হয়নি আপিল ট্রাইব্যুনাল, ভরসা হাইকোর্ট

বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ডিজিটাল আইন, ২০১৮ এর গুরুতর আপত্তির দিক হলো ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সির ব্যাপক ক্ষমতায়ন। আইনের সঙ্গেসঙ্গে বিধি প্রণয়নের কথা থাকলেও তা হয়নি। যেখানে আইন কার্যকরের জন্য তদারককারী এজেন্সির ক্ষমতা নির্ধারিত হবে বিধি দ্বারা। আরেকটি সমস্যা হলো অপরাধের গুরুত্ব অনুধাবন। ১৮টি অপরাধের মধ্যে ১৪টি আমলযোগ্য এবং অজামিনযোগ্য। আমলযোগ্য অপরাধ হেতু পুলিশ যে কাউকে বিচারিক পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতার করতে পারবে। এতে সাংবাদিক ও নাগরিকরা বেশি হয়রানির শিকার হবেন। অজামিনযোগ্য অপরাধে একজন গ্রেফতার হওয়ার পার যতক্ষণ পর্যন্ত না আদালত তার সহজাত ক্ষমতা প্রয়োগ করছে ততক্ষণ পর্যন্ত তাকে কারাগারে থাকতে হবে।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে অনলাইন অপরাধের সাজা দুর্ধর্ষ অপরাধের সাজার মতো কঠোর করা হয়েছে। হ্যাকিং করা (ধারা ৩৪) আর কাউকে হত্যাচেষ্টা এখন সমান অপরাধ। আইনের ২৯ ধারার অপরাধ দণ্ডবিধির মতো একই ধরণের হলেও সাজার পরিমাণ বেশি।দণ্ডবিধিতে মানহানির সাজা দুই বছর। কিন্তু ডিজিটাল আইনের তা তিন বছর। সঙ্গে রয়েছে পাঁচ লাখ টাকার জরিমানা। দ্বিতীয় বার এ অপরাধ করলে সাজা পাঁচ বছরের। জরিমানা ১০ লাখ টাকা বা উভয় দণ্ড। ধারা ২৮ এ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অপরাধে সাজার বিধান রয়েছে পাঁচ বছর কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ লাখ টাকা জরিমানা। অথচ দণ্ডবিধিতে এ সাজা মাত্র এক বছরের কারাদণ্ড।

এছাড়া ১৭, ১৮, ১৯, ২০, ২২, ২৩, ২৪, ২৬, ২৭, ৩০, ৩২, ৩৩ ও ৩৪- এই ১৩টি ধারাই আমলযোগ্য ও অজামিনযোগ্য অপরাধ। ২২ থেকে ২৪ ধারা প্রতারণা ও জালিয়াতি সম্পর্কিত। দণ্ডবিধিতে এ দুই অপরাধের সাজা তিন বছর কারাদণ্ড। ডিজিটাল আইনে এ সাজা বাড়িয়ে করা হয়েছে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা। ১৭, ১৮, ৩২, ৩৩ এবং ৩৪ ধারা তথ্য ও কম্পিউটারে বেআইনি প্রবেশ সম্পর্কিত। ক্ষতির উদ্দেশ্যে ইচ্ছকৃতভাবে বেআইনি প্রবেশ রোধ করার বিষয় বলা হলেও ক্ষতির কারণগুলো স্পষ্ট করা হয়নি আইনে। ৩৪ ধারা অনুযায়ী হ্যাকিং একটি অপরাধ। এখন কেউ নিজস্ব কম্পিউটারের তথ্য পরিবর্তন করলেও হ্যাকিংয়ের আওতায় পড়বেন। হ্যাকিংয়ের সাজা ১৪ বছর কারাদণ্ড, বা অনধিক এক কোটি টাকার অর্থদণ্ড। দ্বিতীয়বার পুন:পুন অপরাধ করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে, বা পাঁচ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

আরও পড়ুন:একমাত্র ট্রাইব্যুনালে সারা দেশের চাপ

৩২ ধারায় সরকারি গোপনীয়তা ভঙ্গের অপরাধ হিসেবে অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট ১৯২৩ অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। এ ধারায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাকে বাদ দিয়ে তৃতীয়পক্ষকে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে, যা ঠিক নয়। এর ফলে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। তথ্য অনুসন্ধানে নিয়োজিত সাংবাদিকের ১৪ বছরের সাজা ও ২৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ডে পড়ার ঝুকি তৈরি হয়েছে। পুন:পুন (দ্বিতীয়বার) অপরাধ করলে সাজার পরিমান বাড়িয়ে যাবজ্জীবন এবং অনধিক ১ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে ধারাটিতে। সম্পুর্ণ আইনের ইতিবাচক দিক হলো ৩৮ নম্বর ধারা। যেখানে তথ্য উপাত্ত প্রাপ্তির বন্দোবস্ত করার কারণে সেবাপ্রদানকারী দায়ী হবেন না।

এ প্রসঙ্গে সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, অপরাধকে নিরুৎসাহিত করতে সাজা ও জরিমানার বিধান করা হয়েছে। দিনে দিনে সাইবার অপরাধ বাড়ছে। এটাকে সামাল দিতে শক্ত আইন প্রয়োজন ছিল। সাজার যে বিধান করা হয়েছে তা সতর্কতামূলক। এতে অপরাধ সংঘটনকে নিরৎসাহিত করা হয়েছে। তবে লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে কেউ অযথা হয়রানি না হন।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, সাজা ও জরিমানা দিয়ে অপরাধ রোধ করা যায় না। দেখা গেছে, আইন আছে কিন্তু সেই আইনের অপরাধ কি কমেছে। সাজার পরিমাণ বাড়ানো হলেও যে অপরাধ কমবে তা ঠিক নয়। যারা আইন প্রণয়ন করেন তাদের বিষয়টি চিন্তাভাবনা করতে হবে।

   

পরীমনির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আলোচিত নায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেছেন মামলার বাদী ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ। 

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এম সাইফুল ইসলামের আদালতে এ আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত পরে আদেশ দিবেন বলে জানান।

বাদীপক্ষের আইনজীবী আবুল কালাম মোহাম্মদ সোহেল এ তথ্য জানান।

এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক মো. মনির হোসেন ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পরীমনি ও তার কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিমের বিরুদ্ধে মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করেন। তবে আরেক আসামি ফাতেমা তুজ জান্নাত বনির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া মর্মেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

২০২২ সালের ৬ জুলাই আদালতে মামলাটি করেন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, পরীমনি ও তার সহযোগীরা অ্যালকোহলসেবী (মদ পানকারী)। সুযোগ বুঝে তারা বিভিন্ন নামীদামি ক্লাবে ঢুকে মদ পান করেন এবং পার্সেল নিয়ে মূল্য পরিশোধ করেন না। পরীমনি তার পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে মিথ্যা মামলা করে হয়রানির ভয় দেখান। ২০২১ সালের ৯ জুন রাত ১২টার পর আসামিরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢুকে দ্বিতীয়তলার ওয়াশরুম ব্যবহার করেন।

পরে তারা ক্লাবের ভেতরে বসে মদ পান করেন। বাদী ও তার সহযোগী শাহ শহিদুল আলম রাত সোয়া ১টার দিকে যখন ক্লাব ত্যাগ করছিলেন, তখন পরীমনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাদী নাসির উদ্দিনকে ডাক দেন এবং তাদের সঙ্গে কিছু সময় বসার অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে পরীমনি অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে নাসির উদ্দিনকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন এবং একটি ব্লু লেবেল মদের বোতল বিনা মূল্যে পার্সেল দেওয়ার জন্য বাদীকে চাপ দেন। 

বাদী এতে রাজি না হওয়ায় পরীমনি বাদীকে গালমন্দ করেন। বাদী এবং আসামিদের মধ্যে বাদানুবাদের একপর্যায়ে পরীমনি বাদীর দিকে একটি সারভিং গ্লাস ছুড়ে মারেন এবং হাতে থাকা মোবাইল ফোনটিও ছুড়ে মারেন। এতে নাসির উদ্দিন মাথায় এবং বুকে আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরীমনি ও তার সহযোগীরা নাসির উদ্দিনকে মারধর ও হত্যার হুমকি দেন ও ভাঙচুর করেন।

;

দ্বীপ উন্নয়ন, কৃষিজমি সুরক্ষা আইন করতে সংসদকে হাইকোর্টের পরামর্শ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘দ্বীপ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ নামে একটি পৃথক কর্তৃপক্ষ গঠনে দ্বীপ উন্নয়ন আইন দ্রুত প্রণয়নের জন্য জাতীয় সংসদকে পরামর্শ প্রদান করে রায় দিয়েছে হাইকোর্ট।

রায়ে, কৃষি জমি সুরক্ষা ও ব্যবহার আইন, ২০১৬ অতি দ্রুত আইন আকারে পাশ করার জন্যও জাতীয় সংসদকে পরামর্শ দিয়েছে উচ্চ আদালত।

রায়ে বলা হয়েছে, জাপান ও ফিনল্যান্ডের প্রণীত আইন যতটুকু সম্ভব অনুসরন ও সমন্বয় করে আমাদের দেশের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি ‘দ্বীপ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ নামে একটি পৃথক কর্তৃপক্ষ গঠনের নিমিত্তে দ্বীপ উন্নয়ন আইন দ্রুত প্রণয়নের জন্য মহান জাতীয় সংসদকে পরামর্শ প্রদান করা হলো।

বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ এ রায় দেয়।

২০২২ সালের ২ জুন রায়টি দেওয়া হয়। দুই বিচারপতির স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে আজ বুধবার ১৫ পৃষ্ঠার এ রায় সুপ্রিম কোর্টের ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এই রায় ও আদেশের অনুলিপি সকল মন্ত্রী ও জাতীয় সংসদ সদস্যদেরকে ই-মেইলে প্রেরণের জন্য সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। রায় ও আদেশের অনুলিপি সকল পক্ষকে দ্রুত অবহিত করতেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

নওগাঁর মিজানুর রহমানকে পুকুর খনন বন্ধ করতে ভূমি অফিসের নোটিশ চ্যালেঞ্জ করে আনা এক রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে এ রায় দেয় উচ্চ আদালত। নোটিশটিকে আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ও বাতিল ঘোষণা করে দেয়া এই রায়ে বলা হয়েছে, ‘সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪২ (১) মোতাবেক সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর এবং যেকোনো ভাবে এর বিলি-ব্যবস্থা তথা শ্রেণি পরিবর্তন প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার। কেবলমাত্র সংসদ কর্তৃক প্রণীত আইন দ্বারা নাগরিকের উপরোল্লিখিত সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর এবং যেকোনোভাবে এর বিলি-ব্যবস্থা তথা শ্রেণি পরিবর্তন-এ বিধি নিষেধ আরোপ করা তথা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এটি সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪২(১) এর মর্মার্থ। সুতরাং এটি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলা যায় যে, বাংলাদেশের প্রত্যেক নাগরিকের সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর এবং যেকোনোভাবে এর বিলি-ব্যবস্থা তথা শ্রেণি পরিবর্তন সংবিধান প্রদত্ত মৌলিক অধিকার। কোনোভাবেই উক্ত মৌলিক অধিকার তথা সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর এবং যেকোনোভাবে এর বিলি-ব্যবস্থা তথা শ্রেণি পরিবর্তনে বাধা প্রদান করা যাবে না। নাগরিকের সম্পত্তি অর্জন, ধারণ, হস্তান্তর এবং যেকোনোভাবে এর বিলি- ব্যবস্থা তথা শ্রেণি পরিবর্তন এর অধিকারে পরিবর্তন, বিধি-নিষেধ এবং যেকোনো প্রকারের নিয়ন্ত্রণ কেবলমাত্র সংসদ কর্তৃক প্রণীত আইনের মাধ্যমে করতে হবে।’

রায়ে বলা হয়েছে, বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর উপরিল্লিখিত ধারা ৪ পর্যালোচনায় এটি কাঁচের মতো পরিস্কার যে, বিপণন তথা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে কোন উন্মুক্ত স্থান থেকে মাটি বা বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ। কিন্তু স্বীকৃত মতেই আলোচ্য মোকদ্দমায় দরখাস্তকারী বিপণন বা বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে কোন মাটি উত্তোলন করছেন না। রায়ে আরো বলা হয়েছে, ফসলী জমিতে পুকুর খননের বিধিনিষেধ আরোপ করে ও কৃষি জমি সুরক্ষা ও ব্যবহার আইন, ২০১৬ খসড়া আইন প্রণয়ন করা হলেও কোন এক অজানা কারণে এটি এখনো আলোর মুখ দেখছে না।

দীপ সংরক্ষণ, ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ সম্মত টেকসই উন্নয়নের নিমিত্তে পৃথিবীতে প্রথম জাপান রিমোট আইল্যান্ডস ডেভেলপমেন্ট এক্ট নামে একটি আইন ১৯৫৩ সালে প্রণয়ন করে। আমাদের প্রতিবেশী ভারতেও দ্বীপ উন্নয়নের গুরুত্ব অনুধাবন করে ২০১৭ সালে আইল্যান্ডস ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি নামে একটি পৃথক কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠা করেন দ্বীপসমূহের উন্নয়নের ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। আমাদের দ্বীপ সমূহের উন্নয়নের নিমিত্তে দ্বীপ উন্নয়ন আইন দ্রুত প্রণয়ন করা প্রয়োজন।

;

বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তরুণীকে ধর্ষণ, যুবকের যাবজ্জীবন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় মো. আলমগীর (৩১) নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৪ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মো.জাকির হোসেন এ রায় দেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, তরুণীর সঙ্গে প্রেমের বন্ধনে জড়িয়ে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিল আসামি আলমগীর। তরুণীকে বিভিন্ন জায়গায়, মাজারে নিয়ে আলমগীর মাথায় হাত রেখে বিশ্বাস করান যে, তরুণীকে আলমগীর বিয়ে করবে। ২০১৮ সালের ১৮ আগস্ট নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার তারা গেইট আসলাম কলোনিতে ভাড়া বাসায় তরুণীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে আলমগীর। এ সময় তরুণী বাধা দিলে মাথায় হাত রেখে আলমগীর বলে যে, আমি আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বলছি যে, তুমি আমার স্ত্রী এবং আমি তোমার স্বামী। আমি তোমাকে ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ে করব বলে সুকৌশলে তরুণীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কয়েক দফা শারীরিকভাবে মেলামেশা করে।

পরে তরুণী আলমগীরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তরুণীকে চেনে না জানিয়ে হুমকি দেয়। পরে তরুণী ট্রাইব্যুনালে মামলা করলে মামলার তদন্ত শেষে  অভিযোগপত্র জমা দিলে ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি অভিযোগ আমলে নেন। ২০২১ সালের ৩ মার্চ আলমগীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি নিখিল কুমার নাথ বলেন, পাঁচজন সাক্ষীর সাক্ষ্যপ্রমাণে বিয়ের প্রলোভনে তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় মো. আলমগীরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৪ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। রায়ের সময় আসামি উপস্থিত ছিলেন। পরোয়ানামূলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

;

ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগের মামলায় গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান এবং নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ৪ জনের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। এসময় তাদের স্থায়ী জামিনের আবেদন নাকচ করে দেন আদালত।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সকালে শ্রম অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম. এ আউয়ালের আদালতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ৪ জন হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত স্থায়ী জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে আগামী ২৩ মে পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেছেন।

অপর তিন আসামিরা হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নুরজাহান বেগম এবং মো. শাহজাহান।

ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

গত ১ জানুয়ারি শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চার জনকে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড, ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করেন আদালত। তবে আপিল করার শর্তে আসামিদের এক মাসের জামিন দেওয়া হয়।

ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা এ রায় দেন।

২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদফতরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে এ মামলা করেন।

মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

;