আরও ৩ মামলায় জামিন পেলেন মামুনুল হক
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ও সোনারগাঁও থানায় ভাঙচুর ও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে করা তিন মামলায় হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক জামিন পেয়েছেন।
মঙ্গলবার (৯ মে) বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে জামিন দেন।
আদালতে মামুনুলের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আবু রায়হান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী। পরে মামুনুল হকের আইনজীবীরা তার জামিনের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।
এর আগে, গত ৩ মে ঢাকার পল্টন ও চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানার পাঁচ মামলায় মামুনুল হককে জামিন দেন হাইকোর্ট। এখন পর্যন্ত ২১টি মামলায় মামুনুল জামিন পেয়েছেন। এর মধ্যে গত কয়েক দিনে হাইকোর্ট থেকে আটটি মামলায় তার জামিন হয় বলে জানান আইনজীবীরা।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নেতা মামুনুল হক ২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ ও সহিংসতার পর বিভিন্ন সময়ে আলোচনায় ছিলেন। এর মধ্যে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে আসেন তিনি। দুই বছর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য স্থাপনের বিরোধিতা করেন। এরপর ২০২১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দুই দিনের বাংরাদেশ সফরে আসেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার এই সফরের বিরোধিতা করে আন্দোলনে নামেন ধর্মভিত্তিক কয়েকটি সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে ওই বছর ২৬ মার্চ বায়তুল মোকাররমে সংঘর্ষের জের ধরে চট্টগ্রামের হাটহাজারী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সহিংসতায় অন্তত ১৭ জনের মৃত্যু হয়।
এর পরের মাসেই ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় রিসোর্টে এক নারীকে নিয়ে অবস্থান করার সময় মামুনুল হককে আটক করে স্থানীয় লোকজন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়। তখন ওই নারীকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে দাবি করেন মামুনুল।
ঘটনার ১৫ দিন পর ১৮ এপ্রিল মামুনুল হককে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর তেজগাঁও বিভাগের পুলিশ। আর রয়েল রিসোর্ট কাণ্ডের ২৭ দিন পর ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় হাজির হয়ে মামলা করেন ওই নারী। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করা হয়। রিসোর্টকাণ্ডের পর হেফাজতে ইসলামের কমিটি থেকে বাদ দেওয়া হয় মামুনুল হককে।
মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ৪১ মামলার মধ্যে মতিঝিল থানায় ৪টি, পল্টন থানায় ৯টি, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানায় ৩টি, সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ৩টি, হাটহাজারী মডেল থানায় ৮টি, খুলনার সোনাডাঙ্গা থানায় ১টি, কুমিল্লার চান্দিনা থানায় ১টি, রাজধানীর ভাটারা থানায় ১টি, মোহাম্মদপুর থানায় ১টি, দারুস সালাম থানায় ৫টি ও মিরপুর মডেল থানায় ৩টি। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনালেও দুটি মামলা হয়।