মোবাইল ফোনে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের নাম ব্যবহার করে মসজিদে অনুদান দেওয়া হবে জানিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে বিভ্রান্ত করছে একটি চক্র। এ জন্য সতর্ক থাকতে বলেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) এক বিজ্ঞপ্তিতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সমন্বয় বিভাগ বলেছে, প্রতারকচক্র অনুদান পেতে মোবাইল ফোনে বিকাশ, নগদে অর্থ প্রেরণ অথবা ক্রেডিট কার্ডের নম্বর দেওয়ার জন্য প্রলুব্ধ করছে।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বক্তব্য হচ্ছে, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে মসজিদ-মাদরাসায় কোনো অনুদান প্রদান করা হচ্ছে না।
অনুদান প্রদানের জন্য কোনো অগ্রিম অর্থ নেওয়া হচ্ছে না। তাই এসংক্রান্তে যেকোনো প্রতারক চক্রের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন না করা এবং বিষয়টি সর্বসাধারণকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
হজযাত্রী প্রতি অতিরিক্ত ৩০ হাজার টাকা নেওয়ার ঘোষণা
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
|
ছবি: ভিডিও থেকে নেয়া।
ইসলাম
আসন্ন হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) নির্বাচনে হাব ঐক্য কল্যাণ পরিষদ এর প্যানেল প্রধান সৈয়দ গোলাম সরোয়ার বলেছেন, তিনি নির্বাচিত হলে হজযাত্রীদের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা অতিরিক্ত আদায় করবেন এবং তা সবাই মিলে ভাগ করে নেবেন।
নির্বাচনী প্রচারণায় এ ধরনের অনৈতিক ঘোষণা দেওয়ায় হাব সদস্যদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
গত মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) হাব নির্বাচনের নির্বাচনী সমাবেশে তিনি এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, ‘যদি আমি নির্বাচিত হই, তাহলে হজযাত্রী প্রতি ৩০ হাজার টাকা অতিরিক্ত নেব এবং তা আমরা ভাগ করে নেব।’
হাব সদস্যরা বলেন, এটি শুধু ব্যবসা নয়, আমাদের জন্য একটি পবিত্র দায়িত্ব। আমরা আল্লাহর মেহমানদের সেবা করার কাজে নিয়োজিত। গোলাম সরোয়ারের সিন্ডিকেট করে হজযাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের পরিকল্পনা এই পবিত্র কাজকে কলুষিত করা। সাধারণ হজ এজেন্সির মালিকরা এমন ঘৃণিত কাজ হতে দেব না।
নির্বাচনের আগে প্যানেল প্রধানের এমন বক্তব্যে অস্বস্তিতে পড়েছেন হাব ঐক্য কল্যাণ পরিষদের প্রার্থীরা। প্রার্থীদের কয়েকজন বার্তা২৪.কমকে জানান, আমরা যারা হজ এজেন্সি মালিক,আমাদের অনেকেই মধ্যস্বত্বভোগীদের সরবরাহকৃত হজ যাত্রীদের প্রসেসিং করেই ব্যবসায় টিকে আছি। কিন্তু, এজেন্সী মালিক সব ধরণের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে, সব কাজ করে যেখানে- ৫/৭হাজার টাকা লাভ করে,সেখানে -যারা হাজী সরবরাহ করে,তারা ৫০/৬০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকাও আয় করে থাকেন। বিগত প্রায়২/৩ বছর হাব সভাপতির কৌশলে,হজ্জ্ব প্যাকেজে কিছু খাতে অতিরিক্ত আয়ের ব্যবস্থা রেখেছিলেন, এজেন্সী মালিকদের জন্য।
অনুরুপ ভাবে, আগামী হাব নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকল প্যানেলও, নির্বাচনে বিজয়ী হলে-মন্ত্রণালয়ের সহযোগীতায় হজ প্যাকেজে ৩০/৪০ হাজার টাকা লাভের খাত সৃষ্টি করার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।
হাবের সাবেক সাংস্কৃতিক সচিব মাওলানা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘হাব সবসময় সিন্ডিকেট মুক্ত ছিল। আমরা গোলাম সরোয়ারের এই ধরনের কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই। হজযাত্রীদের প্রতি এমন অনাচারের পরিকল্পনা আল্লাহ সহ্য করবে না।’
হাবের সাবেক সহসভাপতি মাওলানা ফজলুর রহমান বলেন, ‘আমরা সরোয়ারের এহেন পরিকল্পনার ঘোরবিরোধী। আমরা তা হতে দেব না।’
এদিকে, হাবের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতে তিনটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। হাব ঐক্য কল্যাণ পরিষদ (প্যানেল প্রধান সৈয়দ গোলাম সরওয়ার), হাব ঐক্য ফোরাম (প্যানেল প্রধান ফারুক আহমেদ সরদার) ও হাব বৈষম্যবিরোধী গনতান্ত্রিক জোট (প্যানেল প্রধান এম এ রশিদ শাহ্ সম্রাট)।
২০২৬ সালে মুসলিম বিশ্বের সাংস্কৃতিক রাজধানী বাগদাদ
ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
|
বাগদাদের একটি মসজিদ, ছবি: সংগৃহীত
ইসলাম
সৌদি আরবের জেদ্দায় অনুষ্ঠিত ইসলামি দেশগুলোর সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রীরা সর্বসম্মতিক্রমে বাগদাদ শহরকে ২০২৬ সালে ইসলামি বিশ্বের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে নির্বাচিত করেছেন।
ইরাকের সংস্কৃতি, পর্যটন ও পুরাকীর্তি মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে, ২০২৬ সালের জন্য বাগদাদকে ইসলামি সংস্কৃতির রাজধানী হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে।
চলতি মাসের ১২-১৩ ফেব্রুয়ারি সৌদি আরবের জেদ্দায় অনুষ্ঠিত ইসলামি দেশগুলোর সংস্কৃতি মন্ত্রীদের ১৩তম সম্মেলনে এই নির্বাচন নিশ্চিত করা হয়।
সম্মেলনে ইরাকি প্রতিনিধিদলের প্রধান এবং ইরাকি পাণ্ডুলিপি কেন্দ্রের মহাপরিচালক আহমদ করিম আল-আলিয়াভি বলেন, শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কো-অপারেশনের সহযোগিতায় ইরাকি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অসামান্য প্রচেষ্টায় আমাদের এই অর্জন। এর মাধ্যমে বাগদাদ কয়েক শতাব্দীর বৈজ্ঞানিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক কার্যকলাপের স্বীকৃতি ফিরে পেয়েছে।
সম্মেলনে দেওয়া বক্তৃতায় আলিয়াভি ইরাকের ইতিহাস ও সভ্যতার দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে একটি অগ্রগামী শহর হিসেবে বাগদাদের ভূমিকার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক পরিচয় সংরক্ষণ এবং ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো রক্ষায় ইরাক জোর দেবে।
উল্লেখ্য, ইসলামিক ওয়ার্ল্ড এডুকেশনাল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড কালচারাল অর্গানাইজেশনের তত্ত্বাবধানে (আইসেসকো) প্রতিবছর ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন শহরকে মুসলিম বিশ্বের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে নির্বাচন করা হয়।
২০০৫ সালে মক্কা নগরী মুসলিম বিশ্বের প্রথম সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে নির্বাচিত হয়। এর পরের বছরগুলোতে যথাক্রমে- সিরিয়ার আলেপ্পো, উজবেকিস্তানের তাসখন্দ, সিরিয়ার দামেস্ক, তিউনিসিয়ার কাইরুয়ান, তাজিকিস্তানের দুশানবে, আলজেরিয়ার টিমসেন নগরী, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা, সৌদি আরবের মদিনা, সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজা, কাজাখস্তানের আলমাটি, কুয়েত, জর্ডানের রাজধানী আম্মান, আজারবাইজানের নাখচিভান, তিউনিসিয়ার রাজধানী তিউনিস, উজবেকিস্তানের বুখারা, কাতারের দোহা, মিসরের রাজধানী কায়রো, মৌরিতানিয়ার নোয়াকচোট শহর, আজারবাইজানের শুশা ও উজবেকিস্তানের সমরকন্দ মুসলিম বিশ্বের সাংস্কৃতিক রাজধানী হিসেবে নির্বাচিত হয়।
অনেক সময় একাধিক দেশের একাধিক প্রাচীর শহরকে মুসলিম বিশ্বের সাংস্কৃতিক রাজধানীর মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।
শায়খ আবদুর রহমান আল হুজাইফির (বামে) সঙ্গে পবিত্র কাবার প্রধান ইমাম শায়খ সুদাইস, ছবি: সংগৃহীত
ইসলাম
মসজিদে নববির প্রধান ইমাম হিসেবে শায়খ আবদুর রহমান আল হুজাইফিকে নিযুক্ত করেছে সৌদি আরব। অপরদিকে শায়খ ইবরাহিম আল আকবারকে মসজিদে নববির কোরআন তেলাওয়াত প্রোগ্রামের সুপারভাইজার হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে।
পবিত্র কাবা ও মসজিদে নববির রক্ষণাবেক্ষণ কর্তৃপক্ষের বরাতে দুই পবিত্র মসজিদ বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘ইনসাইড দ্য হারামাইন’ শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) এ তথ্য জানিয়েছে।
শায়খ আবদুর রহমান আল হুজাইফি ভরাট কণ্ঠে কোরআন মাজিদ তেলাওয়াতের জন্য বিখ্যাত। এছাড়া মদিনায় কোরআন ছাপানোর দায়িত্বে থাকা কমিটির অন্যতম সদস্য তিনি।
শায়খ আবদুর রহমান ১৯৪৭ সালের ২২ মে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার গ্রামেই প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। শায়খ মোহাম্মদ বিন ইবরাহিম আল-হুজাইফির তত্ত্বাবধানে তিনি কোরআন হেফজ বা মুখস্ত করেন।
এরপর ১৯৭৫ সালের দিকে ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি মিসরের বিখ্যাত আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
মসজিদে নববির সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ ও প্রবীণ ইমাম তিনি। দীর্ঘ ৪৫ বছরের বেশি সময় ধরে মসজিদে নববিতে ইমাম ও খতিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। কিছুদিন নবী কারিম (সা.)-এর সময়ে তৈরি করা ইসলামের প্রথম মসজিদ মসজিদে কুবায়ও ইমামতি করেছেন তিনি।
১৯৭৯ সালে মসজিদে নববির ইমাম হিসেবে যোগ দেন। পরের বছরের রমজান মাসে তাকে মক্কার হারাম শরিফে ইমামতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে পুনরায় তিনি মসজিদে নববিতে ফিরে আসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা ও মসজিদে নববিতে ইমাম-খতিবের দায়িত্বের পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন শায়খ হুজায়ফি।
২০১৯ সালে মসজিদে নববিতে তার দায়িত্ব পালনের ৪০ বছর পূর্ণ হওয়ার বছর নতুন দুইজন ইমাম নিয়োগ দেওয়া হয়। তাদের অন্যতম হচ্ছেন শায়খ হুজাইফির ছেলে শায়খ ড. আহমদ বিন আলি আল-হুজাইফি। অবশ্য তিনি রমজানে মসজিদে নববিতে তারাবি নামাজের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
মুসলমানদের আবেগ-অনুভূতি ও প্রধান ইবাদতের কেন্দ্র হচ্ছে কাবাঘর। এই ঘরের দেয়ালে বিশেষভাবে স্থাপনকৃত মর্যাদাপূর্ণ একটি পাথরের নাম ‘হাজরে আসওয়াদ’। শরিয়তে মর্যাদাপূর্ণ এই পাথরে সরাসরি বা ইশারার মাধ্যমে চুমু দেওয়ার বিধান আছে। হাজরে আসওয়াদে চুমু দেওয়ার প্রধান উদ্দেশ্য নবীজির সুন্নতের অনুসরণ।
কাবা শরিফের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে লাগানো রয়েছে পাথরটি। মুসলমানদের কাছে এই পাথর অতি মূল্যবান ও পবিত্র। তাদের কাছে এটি বেহেশতি পাথর। এতে চুমু দেওয়ার ফজিলতও বেশি।
হাজরে আসওয়াদ তাওয়াফ (কাবা শরিফ সাতবার চক্কর দেওয়া) শুরুর স্থান। প্রতিবার চক্কর দেওয়ার সময় এই হাজরে আসওয়াদে চুমু দিতে হয়। ভিড়ের কারণে না পারলে চুমুর ইশারা করলেও চলে। এটিই নিয়ম।
হাজরে আসওয়াদের কাছে খুব ভিড় থাকে। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারতের লোকজন চুমু দেওয়াকে অবশ্য-কর্তব্য মনে করে ভিড়ে কষ্ট পান। এই পাথরকে চুমু দেওয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য স্বীকার। চুমু খাওয়া সুন্নত। তবে চুমু দিতে গিয়ে কাউকে কষ্ট দেওয়া শরিয়তবিরোধী।
হাজরে আসওয়াদ শব্দের আভিধানিক অর্থ কালো পাথর। যদিও বহুসংখ্যক হাদিস ও ইসলামের ইতিহাসে হাজরে আসওয়াদের রং সাদা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কোনো কোনো কিতাবে আছে, পাথরটি রুপার মতো সাদা। প্রচলিত আছে, আদম সন্তানের গুনাহ জমা হতে হতে আস্তে আস্তে এই পাথর কালো হয়ে উঠেছে।
হাজরে আসওয়াদে চুমু দিতে ভিড়, ছবি: সংগৃহীত
হাজরে আসওয়াদ কাবা শরিফের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে মাতাফ (তাওয়াফের জায়গা) থেকে দেড় মিটার ওপরে লাগানো। এখন আমরা যে হাজরে আসওয়াদকে চুমু দেই বা স্পর্শ করি, তা আগের পাথর থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। আগে এটি ছিল আস্ত একটা পাথর। হজরত আবদুল্লাহ বিন জোবায়েরের শাসনামলে কাবা শরিফে আগুন লাগলে কয়েক টুকরো হয়ে যায় হাজরে আসওয়াদ। আবদুল্লাহ বিন জোবায়ের পরে ভাঙা টুকরোগুলো রুপার ফ্রেমে বাঁধিয়ে দেন। ফ্রেম সংস্করণের সময় চুনার ভেতরে কয়েকটি টুকরা ঢুকে যায়।
বর্তমানে হাজরে আসওয়াদের আটটি টুকরো দেখা যায়, বাকিগুলো দেখা যায় না। প্রতিটি টুকরোর আকৃতি বিভিন্ন। বড় টুকরোটি খেজুরের সমান। সর্বদা এর ওপর আতর ও সুগন্ধি মাখার কারণে কালো রং আরও বেড়ে গেছে। ফ্রেমের মধ্যে মুখ ঢুকিয়ে পাথরে চুমু দিতে হয়। মুখ না ঢোকালে চুমু দেওয়া সম্ভব নয়। আর মুখ ঢোকাতে গিয়ে সৃষ্টি হয় প্রচণ্ড ভিড়। ধর্মপ্রাণ মুসলমান ব্যাকুল হয়ে ওঠেন।
হাজরে আসওয়াদের পাশে সৌদি পুলিশ দাঁড়ানো থাকে ২৪ ঘণ্টা। মাথা ঢোকাতে বা চুমু দিতে গিয়ে কেউ যেন কষ্ট না পান সে দিকে তাঁরা খেয়াল রাখেন। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও চুমু দেওয়ার জন্য দীর্ঘ লাইন ধরে অপেক্ষা করেন। ফরজ নামাজ চলাকালীন কেউ চুমু দিতে পারে না। তবে ইমাম যখন নামাজের সালাম ফেরান, অমনি অপেক্ষমাণ মুসলমানেরা পাথরের দিকে ছুটে যান।
অভিজ্ঞতার আলোকে দেখা গেছে, চুমু খাওয়ার ক্ষেত্রে হাজরে আসওয়াদের দিকে যাওয়ার সময় সামনের দিক থেকে বা রুকনে ইয়ামেনির দিক থেকে না এসে মুলতাজামের দিক থেকে আসলে হাজরে আসওয়াদের নাগাল পাওয়া সহজ হয়। এ সময় নিজের থেকে কাউকে ধাক্কা দেবেন না, সরাতেও যাবেন না। তাহলে মানুষকে কষ্ট দেওয়ার কোনো গোনাহ হলো না। শুধু চেষ্টা করা, হাজরে আসওয়াদ চুমু দিয়ে কেউ বের হয়ে আসার সময় যে গ্যাপ সৃষ্টি হয়, সেখানে ঢুকে পড়া। কোনোভাবেই ভিড়ের চাপে পেছনে ছিটকে পড়া যাবে না। হাজরে আসওয়াদ চুমু দিতে যাওয়ার সময় মনে পড়বেন- ইয়া কাভিয়্যু, ইয়া আজিজু, ইয়া আলিয়্যু, ইয়া আজিমু- ইন্নাকা আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির।
হাজরে আসওয়াদ চুমু শেষে ফেরার সময় যদি খুব বেশি চাপ সৃষ্টি হয়, তাহলে সেই উল্টো স্রোতের মোকাবেলা না করা। এতে বেশ ঝুঁকি থাকে। কোনো সময় দেখা যায়, এমতাবস্থায় মানুষ আপনাকে ওপরে তুলে ফেলে, তাহলে ওপরে উঠে যাবেন। কোনো সমস্যা নেই, একটু পরেই নেমে যাবেন।
আরেকটি কথা, তাওয়াফ করতে যাওয়ার আগে (ওয়াজিব তাওয়াফ হলে ইহরামের আগে) হাত-পায়ের নখ কেটে যাবেন, ফলে আপনার মাধ্যমে কেউ কোনো কষ্ট পাবে না।