পবিত্র মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষে সিলেটে মুবারক র‍্যালি



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ আনজুমানে তালামীযে ইসলামিয়ার উদ্যোগে বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সিলেট মহানগরে ‘মুবারক র‌্যালি’ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

র‌্যালিতে অংশগ্রহণের জন্য সকাল থেকেই সোবহানীঘাটস্থ হযরত শাহজালাল দারুচ্ছুন্নাহ ইয়াকুবিয়া কামিল মাদরাসা প্রাঙ্গণে সিলেট বিভাগের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা জমায়েত হন। সকাল ১০টা থেকে যোহরের পূর্ব পর্যন্ত প্রিয়নবী (সা.) এর জীবনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মী ও অতিথিবৃন্দ। বাদ যুহর শুরু হয় র‌্যালি।

এসময় নবী সা.-এর শানে রচিত নানা কবিতার শ্লোক অঙ্কিত নানা রঙের ফেস্টুন ও প্লেকার্ড র‌্যালিতে শোভাবর্ধন করে। 

র‌্যালিপূর্ব আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, হযরত মুহাম্মদ (সা.) জগতের রহমতের উৎস। তাঁর আগমনে পৃথিবী অন্ধকার থেকে আলোর পথ পেয়েছিল। তিনি দুনিয়া ও আখিরাতের সরদার। তিনি শুধুমাত্র নবুওয়াত প্রকাশের পরে নয় বরং বাল্যকাল থেকেই সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন। পৃথিবীর এমন কোনও লাঞ্ছিত, বঞ্চিত, মযলুম ব্যক্তি নেই, যার স্থান তাঁর কাছে ছিলোনা। তিনি ছিলেন মযলুমদের আশ্রয়স্থল। তায়েফের ময়দানে তিনি সবচেয়ে বেশি দুঃখিত হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি তায়েফবাসীদের কখনো বদদুআ দেননি। তিনি ছিলেন মানবতার শিক্ষাদাতা। তিনি বদরের যুদ্ধে যুদ্ধবন্দিদের সাথে যে মানবতা দেখিয়েছেন তা পৃথিবীর মানবতার ইতিহাসে অবিস্মরণীয়। তারা বলেন, আল্লাহর নবী (সা.) এর জন্মের আলোচনা বিদআত নয় বরং উত্তম। শুধু তাই নয় এটি সুন্নাতে এলাহি ও সুন্নাতে সাহাবি। সাহাবায়ে কিরাম হেঁটে হেঁটে নবীর মিলাদ কায়েম করেছেন। উম্মতে মুহাম্মদীর মুহাব্বাত আল্লাহর হাবীব (সা.) এর দরবারে পৌঁছায়। শুধু পৌঁছায় না, বরং তার পরিচয়ও তুলে ধরা হয়। পৃথিবী আজ বিপর্যস্ত। এর পূর্বে এসব এত ঘন ঘন বিপর্যয় পৃথিবীতে কখনো দেখা যায়নি। একদিকে পৃথিবীব্যাপী দিকে দিকে অশান্তি, অপরদিকে গযবের ব্যাপকতায় বিপর্যস্ততা। এসব কিছুই আল্লাহর হাবীব (সা.) এর ভবিষ্যদ্বাবাণী। এসব কিছু থেকে মুক্তির সমাধান রয়েছে উসওয়ায়ে মুসতাফায়। আমাদের ঘরে-বাহিরে, চিন্তা-চেতনায় রাসূল (সা.) এর আদর্শ অনুসরণ করা প্রয়োজন। তাঁর অনুসরণ ব্যতিত আল্লাহকে পাওয়ার কোনও পথ নেই। তাঁর উসওয়াকে ব্যক্তিজীবন ও সমাজজীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। আল্লাহর হাবীবের জন্মের আলোচনা, তাঁর সীরাতকে সমাজে ছড়িয়ে দিতে হবে। তাঁর আনুগত্যই আমাদের ঈমান। আল্লাহর হাবীব (সা.) কে না জানা ব্যতিত কোনও কিছুই আমাদের কাজে আসবে না। তিনি ছিলেন সত্যবাদী। আমাদের তাঁর উম্মতের পরিচয় বহন করতে হবে। তাঁর সৌন্দর্যের পরিচয় বহন করতে হবে। যে সকল অসামাজিকতা আমাদের উপর চাপানো হচ্ছে, শয়তানের তাবেদার বানানোর যে দুরভিসন্ধি চলছে; এগুলো থেকে বেঁচে থাকতে রাসুল (সা.) এর আদর্শ অনুসরণের বিকল্প নেই। আমরা তাঁর উসওয়ার দিকে যত ধাবিত হবো, ততো আমাদের পরিবার ও সমাজ সুন্দর হবে।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আনজুমানে আল ইসলাহ’র মুহতারাম সভাপতি হযরত মাওলানা হুছামুদ্দীন চৌধুরী ফুলতলী।

র‌্যালি বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক মোহাম্মদ হোসাইন এর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আতিকুর রহমান সাকের এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহবুবুর রহমান ফরহাদ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে র‌্যালিতে উপস্থিত ছিলেন আনজুমানে আল ইসলাহর মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা একেএম মনোওর আলী, ভারতের উজানডিহির সৈয়দ শামীম আহমদ আল মাদানী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবি এডভোকেট মাওলানা আব্দুর রকিব, আনজুমানে আল ইসলাহর সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল মুনঈম মনজলালী, সাংগঠনিক সম্পাদক ড. মাওলানা মঈনুল ইসলাম পারভেজ, মাওলানা মাহমুদ হাসান চৌধুরী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা শেহাব উদ্দিন আলীপুরী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা নজমুল হুদা খান, অর্থ সম্পাদক মাওলানা গুফরান আহমদ চৌধুরী, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা আবু ছালেহ মোঃ কুতবুল আলম ও শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা সিরাজুল ইসলাম ফারুকী।

র‌্যালি বাস্তবায়ন কমিটির যুগ্ম আহবায়ক এস এম মনোয়ার হোসেন এর স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে সূচিত র‌্যালিপূর্ব আলোচনায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তালামীযে ইসলামিয়ার সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মোঃ আলমগীর হোসাইন, মাওলানা আজির উদ্দিন পাশা, হাফিয মাওলানা নজীর আহমদ হেলাল, মাওলানা বেলাল আহমদ, মাওলানা মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মোস্তফা হাসান চৌধুরী গিলমান, সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা রেদওয়ান আহমদ চৌধুরী, তালামীযে ইসলামিয়ার কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মনজুরুল করিম মহসিন, সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মাওলানা আতাউর রহমান, মাওলানা হুমায়ূনুর রহমান লেখন, সাবেক সহ-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ উসমান গণি, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ জাহেদুর রহমান, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা হাফিজুর রহমান, আনজুমানে আল ইসলাহ’র সুনামগঞ্জ জেলা সভাপতি মাওলানা তাজুল ইসলাম আলফাজ, সিলেট জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ছালেহ আহমদ, তায়্যিবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক মাওলানা মারজান আহমদ চৌধুরী ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান।

 

 

   

গাজা বিষয়ে আমেরিকান মুসলিমদের নতুন কর্মসূচি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
গাজা বিষয়ে আমেরিকান মুসলিমদের নতুন কর্মসূচি, ছবি : সংগৃহীত

গাজা বিষয়ে আমেরিকান মুসলিমদের নতুন কর্মসূচি, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ফিলিস্তিনের গাজা ইস্যুতে বদলে যাচ্ছে মার্কিন রাজনীতির গতিপথ। ১৬ হাজারের মতো ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার পরও ইসরায়েলকে অকুণ্ঠ সমর্থন করায় আমেরিকান মুসলিমদের ভোট হারাতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক দল। ২০২৪ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে সমর্থন করা থেকে বিরত থাকার ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের ৯ রাজ্যের মুসলিম নেতারা।

শনিবার (২ ডিসেম্বর) মিশিগানের ডিয়ারবোর্নে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন সদ্য গঠিত জাতীয় জোট এব্যান্ডন বাইডেনের প্রধান জয়লানি হুসাইন।

নতুন এই জোটে রয়েছে মিশিগান, মিনেসোটা, অ্যারিজোনা, উইসকনসিন, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, নেভাদা, নর্থ ক্যারোলাইনা ও পেনসিলভানিয়া রাজ্যের মুসলিম নেতারা। এখানে সবচেয়ে বেশি আরব আমেরিকান মুসলিমদের বসবাস রয়েছে এবং ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এই রাজ্যগুলোর ভোটের প্রভাব খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস মিনেসোটার নির্বাহী পরিচালক ও সদ্য গঠিত জাতীয় জোট এব্যান্ডন বাইডেনের প্রধান জয়লানি হুসাইন বলেন, ‘আমরা আজ ঘোষণা করছি, প্রেসিডেন্ট বাইডেন ২০২৪ সালের নির্বাচনে হেরে গেছেন। হ্যাশট্যাগ এব্যান্ডন বাইডেন ২০২৪ প্রচারাভিযান আসন্ন নির্বাচনে বাইডেনের পরাজয় নিশ্চিত করবে। কারণ তিনি গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাতে এবং নিরপরাধ ব্যক্তিদের রক্ষা করতে অনাগ্রহী।’

আরব আমেরিকান ইনস্টিটিউটের (এএআই) তথ্য অনুসারে যুক্তরাষ্ট্রে আনুমানিক ৩.৪৫ মিলিয়ন আমেরিকান মুসলিম ঐতিহ্যগতভাবে জাতীয় নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের সমর্থন করে আসছে। তবে গত অক্টোবরে এএআই পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, আরব আমেরিকান ভোটারদের মধ্যে বাইডেনের প্রতি সমর্থন ৪২ শতাংশ কমেছে। মূলত গাজায় ইসরায়েলের হামলা বৃদ্ধির পাশাপাশি বাইডেনের প্রতি মুসলিম সমর্থন কমতে শুরু করে।

জরিপে আরব আমেরিকানদের মাত্র ১৭ শতাংশ নির্বাচনে বাইডেনের পক্ষে ভোট দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানায়। অথচ ২০২০ সালে বাইডেনের পক্ষে তাদের ৫৯ শতাংশ সমর্থনের কথা জানিয়েছিল। আরব আমেরিকান ইনস্টিটিউটের ২৬ বছরের সমীক্ষার ইতিহাসে এবারই প্রথম আরব আমেরিকান ভোটাররা ডেমোক্রেটিক পার্টির পক্ষে এত কম সমর্থন দিয়েছে।

;

ভূমিকম্প থেকে শিক্ষা নেওয়া জরুরি



হেদায়াতুল্লাহ বিন হাবিব, অতিথি লেখক, ইসলাম
ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত একটি এলাকা, ছবি : সংগৃহীত

ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত একটি এলাকা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মানুষ যখন সৃষ্টিকর্তা দয়াময় আল্লাহতায়ালাকে ভুলে ইবাদত-বন্দেগি থেকে দূরে সরে যায় এবং বিভিন্ন পাপাচারে লিপ্ত হয়- তখন আল্লাহতায়ালা পৃথিবীতে কোনো বিপর্যয় বা বালা-মসিবত সৃষ্টি করেন। এর মাধ্যমে তিনি বান্দাদের সতর্ক করেন, যাতে তারা অন্যায়-অনাচার থেকে ফিরে আসে, তওবা করে; ইবাদত-বন্দেগিতে মনোনিবেশ করে। কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘মানুষের কৃতকর্মের কারণেই জলেস্থলে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে। আর তা এ কারণে যে, আল্লাহতায়ালা বান্দাকে তার কিছু কৃতকর্মের স্বাদ আস্বাদন করান, যাতে তারা (তওবা করে) ফিরে আসে।’ -সুরা আর রূম : ৪১

অন্য এক আয়াতে তিনি বলেন, ‘আমি ভয় দেখানোর জন্যই নিদর্শনসমূহ পাঠাই।’ -সুরা বনি ইসরাইল : ৫৯

তেমনি একটি বিপর্যয় হলো- ভূমিকম্প। এটি আল্লাহতায়ালার অসীম শক্তিমত্তার একটি প্রমাণ। অতীত যুগে এর মাধ্যমে তিনি অনেক অবাধ্য সম্প্রদায়কে সমূলে বিনাশ করেছেন। কেয়ামত দিবসেও প্রচণ্ড এক ভূমিকম্পের মাধ্যমেই তিনি দুনিয়াকে ধ্বংস করবেন। এ সম্পর্কে কোরআন মাজিদে ‘যিলযাল’ (কম্পন) নামে স্বতন্ত্র একটি সুরাও নাজিল করেছেন।

অন্য এক আয়াতে আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আল্লাহ তোমাদের ওপর থেকে অথবা তোমাদের পায়ের নিচ থেকে আজাব পাঠাতে সক্ষম।’ -সুরা আনআম : ৬৫

আরেক আয়াতে আল্লাহতায়ালা নাফরমান বান্দাদের ভয় দেখিয়ে বলেন, ‘তোমরা কি তোমাদেরকে নিরাপদ মনে করে নিয়েছ যে, যিনি আকাশে আছেন তিনি তোমাদেরকে জমিনে বিধ্বস্ত করে দেবেন না, যখন তা হঠাৎ থর থর করে কাঁপতে থাকবে?’ -সুরা মুলক : ১৬

ভূমিকম্প সম্পর্কে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘এ উম্মত ভূমিকম্প, বিকৃতি এবং পাথর বর্ষণের মুখোমুখি হবে। একজন সাহাবি জিজ্ঞাসা করলেন, কখন হবে সেটা হে আল্লাহর রাসুল? তিনি বলেন, যখন গায়িকা এবং বাদ্যযন্ত্রের প্রকাশ ঘটবে এবং মদপানের সয়লাব হবে।’ -জামে তিরমিজি : ২২১২

অন্য এক হাদিস থেকে জানা যায়, ভূমিকম্প হলো- কেয়ামতের একটি আলামত। কেয়ামতের পূর্বে অধিক পরিমাণে ভূমিকম্প হবে। -সহিহ বোখারি : ১০৩৬

এ প্রসঙ্গে সতর্ক করে নবী কারিম (সা.) বলেন, ‘যখন অবৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জিত হবে, কাউকে বিশ্বাস করে সম্পদ গচ্ছিত রাখা হবে, কিন্তু তা আত্মসাৎ করা হবে, জাকাতকে জরিমানা মনে করা হবে, ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়া বিদ্যা অর্জন করা হবে, একজন পুরুষ তার স্ত্রীর বাধ্যগত হয়ে মায়ের সঙ্গে বিরূপ আচরণ করবে, বন্ধুকে কাছে টেনে পিতাকে দূরে সরিয়ে দেবে, মসজিদে উচ্চস্বরে শোরগোল হবে, সবচেয়ে দুর্বল ব্যক্তি সমাজের শাসকরূপে আবির্ভূত হবে- সে সময় তোমরা অপেক্ষা করো রক্তিম বর্ণের ঝড়ের, ভূকম্পনের, ভূমিধ্বসের, রূপ বিকৃতির (লিঙ্গ পরিবর্তন), পাথর বৃষ্টির এবং সুতো ছেঁড়া (তাসবিহ) দানার ন্যায় একটির পর একটি নিদর্শনের জন্য।’ -জামে তিরমিজি : ১৪৪৭

ভূমিকম্প যেহেতু আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি সতর্কবার্তা, তাই আমাদের সতর্ক হতে হবে। তওবা করে সব ধরনের গোনাহের কাজ ছেড়ে দিতে হবে। বেশি বেশি দোয়া-ইস্তেগফারের (ক্ষমাপ্রার্থনার) পাশাপাশি ইবাদত-বন্দেগিতে বিশেষ মনোনিবেশ করতে হবে।

ইসলামি স্কলাররা বলেন, ভূমিকম্পের সময় বেশি বেশি ‘লা-ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন’ পড়া। এতে বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এই দোয়ার বরকতেই আল্লাহতায়ালা হজরত ইউনুস (আ.) কে মাছের পেট থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন।

এছাড়া ভূমিকম্পের ক্ষয়-ক্ষতি থেকে বাঁচতে বেশি বেশি দান-সদকা করা। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘সদকা বিপদ-আপদ দূর করে।’

ভূমিকম্প হলে হজরত উমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.) তার গভর্নরদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে দান-সদকা করার প্রতি জোর তাকিদ দিতেন।

ভূমিকম্প যেহেতু একটি আজাব, তাই সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর কাছেই আমাদের ফিরে যেতে। তিনি ছাড়া কেউ আমাদের রক্ষা করতে পারবেন না। আল্লাহতায়ালা সবাইকে আমল করার তওফিক দান করুন। ভূমিকম্পসহ সব ধরনের বিপদ-আপদ থেকে হেফাজত করুন। আমিন।

;

মুচকি হাসিও ইবাদত



সাকী মাহবুব, অতিথি লেখক, ইসলাম
অর্থ : তোমার ভাইয়ের (সাক্ষাতে) মুচকি হাসাও একটি সদকা

অর্থ : তোমার ভাইয়ের (সাক্ষাতে) মুচকি হাসাও একটি সদকা

  • Font increase
  • Font Decrease

হাসি সৌন্দর্যের প্রতীক। হাসিমুখে কথা বললে শত্রুও বরফের মতো গলে যায়। একে অপরের থেকে দূর হয়ে যায় হিংসা ও বিভেদের চওড়া দেয়াল। হৃদয় থেকে দূর হয় অহংকার ও আত্নগরিমা। হাসির মাধ্যমে বন্ধুত্ব সৃষ্টি হয়। একটুখানি মুচকি হাসি দুজনের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে দিতে যোগ করতে পারে নতুন মাত্রা। তাছাড়া এভাবে কথা বলা ইবাদতের অন্তর্ভুক্ত। তাই পরিচিত-অপরিচিত সবার সঙ্গে সদা হাসিমুখে সাক্ষাৎ করা উত্তম।

একজন মুসলিম হিসেবে অন্য ভাইয়ের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ কেমন হওয়া উচিৎ, তা নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের শিখিয়ে গেছেন। পাশাপাশি অপর ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করতে নির্দেশনা দিয়েছেন।

এক হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘প্রতিটি ভালো কাজ সদকা। আর গুরুত্বপূর্ণ একটি ভালো কাজ হলো- অন্য ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করা।’ -জামে তিরমিজি

আরেক হাদিসে নবী কারিম (সা.) বলেছেন, তোমার ভাইয়ের মুখে (সাক্ষাতে) মুচকি হাসি নিয়ে আসাও একটি সদকা। হজরত আবু যর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমার হাসোজ্জ্বল মুখ তোমার ভাইয়ের সামনে উপস্থিত হওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। তোমার সৎকাজের আদেশ এবং তোমার অসৎ কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ তোমার জন্য সদকাস্বরুপ। পথহারা লোককে পথের সন্ধান দেওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরুপ। স্বল্পদৃষ্টিসম্পন্ন লোককে সঠিক দৃষ্টি দেওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরুপ। পথ থেকে পাথর, কাঁটা ও হাড় সরানো তোমার জন্য সদকাস্বরুপ। তোমার বালতি দিয়ে পানি তুলে তোমার ভাইয়ের বালতিতে ঢেলে দেওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরুপ। -জামে তিরমিজি

কারও সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করলে সে খুশি হয়। মুখ গোমড়া করে রাখালে মনে সন্দেহের দানা বাঁধে। তাই সাক্ষাতে হাসিমুখে কথা বলা ও আনন্দ দেওয়ার বিষয়টি আল্লাহতায়ালা পছন্দ করেন। নবী কারিম (সা.) সবসময় মুচকি হাসতেন। মুচকি হাসি ছিল তার চিরাচরিত ভূষণ। সুতরাং আমরা কথা ও কাজে সবসময় মুচকি হেসে কথা বলব। তাহলে আমাদের পরস্পরে সৃষ্টি হবে ভালোবাসা ও সম্প্রীতির অমোঘ বন্ধন। সেই সঙ্গে পালন করা হবে রাসুলের সুন্নত। আল্লাহতায়ালা আমাদের তওফিক দান করুন। আমিন।

;

৮ সপ্তাহ ধরে মসজিদে আকসায় প্রবেশে বিধি-নিষেধ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আল আকসা প্রাঙ্গণে নামাজ আদায় করছেন অল্প কয়েকজন মুসল্লি

আল আকসা প্রাঙ্গণে নামাজ আদায় করছেন অল্প কয়েকজন মুসল্লি

  • Font increase
  • Font Decrease

ফিলিস্তিনের পবিত্র মসজিদুল আকসায় জুমার নামাজ পড়তে মুসল্লিদের প্রবেশে বিধি-নিষেধ অব্যাহত রেখেছে দখলদার ইসরায়েলি পুলিশ। গত ৭ অক্টোবর গাজায় ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর পবিত্র এ মসজিদে প্রবেশে আগের চেয়ে কঠোরতা বাড়িয়েছে দখলদার ইসরায়েল। এ নিয়ে গত আট জুমার নামাজে পবিত্র আল-আকসা মসজিদ ও এর প্রাঙ্গণ প্রায় মুসল্লিশূন্য ছিল।

সর্বশেষ গত ১ ডিসেম্বর এ মসজিদে মাত্র সাড়ে তিন হাজার মুসল্লি জুমার নামাজ পড়েছেন। তুরস্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনাদোলু এজেন্সি এ তথ্য জানিয়েছে।

জেরুজালেমের ইসলামিক ওয়াকফ বিভাগ জানিয়েছে, ‘সাধারণত পবিত্র মসজিদুল আকসায় ৫০ হাজারের বেশি মুসল্লি জুমার নামাজ পড়তে আসেন। কিন্তু আজ মাত্র সাড়ে তিন হাজার লোক এখানে জুমার নামাজ পড়েছেন। গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মসজিদে প্রবেশে শক্ত অবস্থানে রয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ। আর জুমার দিন তাদের বিধি-নিষেধ আরো কঠোরভাবে পালন করা হয়।’

ওয়াকফ বিভাগ আরো জানায়, ‘পবিত্র আকসা মসজিদ ও আশপাশের চত্বর প্রায় মুসল্লিশূন্য থাকলেও সেখানে মুসল্লিদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আকসা প্রাঙ্গণে শুধু ৬৫ বছরের বেশি বয়সী মুসল্লিদের প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গত আট জুমায় ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বেশির ভাগ মুসল্লিদের মসজিদে প্রবেশে বাধা দেয়।’

মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে না পেরে বিভিন্ন রাস্তায় নামাজ পড়তে বাধ্য হন বেশির ভাগ মুসল্লি। জেরুজালেমের অলিগলিতে মোতায়েন করা ইসরায়েলি পুলিশ কম বয়সীদের মসজিদে প্রবেশে বাধা দেয় এবং অনেককে গ্রেপ্তার করে। এমনকি ওয়াদি আল-জোজ এলাকায় মুসল্লিদের ওপর ইসরায়েলি পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে হামলা চালায়।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর থেকে ৪৮ দিন ধরে গাজা উপত্যকায় নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে প্রায় ১৬ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়; যার মধ্যে অর্ধেকের বেশি শিশু ও নারী।

এরপর গত ২৪ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধবিরতি গত শুক্রবার শেষ হয়। এ সময়ে ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে বন্দি ও জিম্মি বিনিময় হয়।

;