কাশ্মীর সংকট: মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে পরাজিত উপত্যকাবাসী!



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
১৬ ঘণ্টা চেষ্টা করেও সাপে কাটা ছেলেকে বাঁচাতে পারেননি অবরুদ্ধ কাশ্মীরের দুখিনী মা সাজা বেগম/ছবি: দ্যা নিউ ইয়র্ক টাইমস

১৬ ঘণ্টা চেষ্টা করেও সাপে কাটা ছেলেকে বাঁচাতে পারেননি অবরুদ্ধ কাশ্মীরের দুখিনী মা সাজা বেগম/ছবি: দ্যা নিউ ইয়র্ক টাইমস

  • Font increase
  • Font Decrease

সাজা বেগম, ঘরে রান্না করছিলেন। হঠাৎ ভীতসন্ত্রস্ত মুখ নিয়ে তার ছেলে রান্নাঘরে ঢুকলেন। মায়ের কাছে গিয়ে বলেন, ‘মা, আমাকে সাপে কামড় দিয়েছে। আমি বোধহয় এখনই মারা যাব।’

ছেলের মুখে ‘অলক্ষুণে’ কথা শুনে আঁতকে ওঠে মায়ের মন। রান্না ফেলে মা ব্যস্ত হয়ে ওঠেন ছেলের জীবন বাঁচাতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মৃত্যুর কাছে হার মানতে হয় এই মাকে।

সময়মত অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়া, বিষের প্রতিষেধক না দিতে পারায় চিরদিনের জন্য ছেলেকে হারিয়ে ফেলেন সাজা বেগম। দুখিনী এই মা এরজন্য দায়ী করেছেন ভারত সরকার কর্তৃক কাশ্মীরে আরোপিত অবরোধকেই।

ঘটনার দিন ছিল ১৩ আগস্ট। তার ২২ বছর বয়সী ছেলে আমির ফারুক দার। কাশ্মীরে অবরোধের কারণেই তার কলেজ ছিল বন্ধ। তাই ঘরের কাজে বাবা-মাকে সাহায্য করতেন। সেদিন কাশ্মীরের বারমুল্লা শহরের কাছে তাদের পারিবারিক বাগানে ভেড়া চড়াতে গিয়েছিলেন আমির ফারুক। সেখানেই তাকে কেউটে সাপ (ক্রাইট) কামড়ে দেয়।

কেউটে খুবই বিষাক্ত সাপ। এই সাপে কাটলে প্রথম ৬ ঘণ্টার মধ্যেই ‘পপি ভ্যালেন্ট’ নামক প্রতিষেধক শরীরে নিতে হয়। কিন্তু ১৬ ঘণ্টা চেষ্টা করেও সেদিন সাজা বেগম তার ছেলেকে প্রতিষেধক দিতে পারেন নি। কারণ, সাজা বেগমের জন্য সেদিন সময় ছিল সবচেয়ে বড় শত্রু।

বিষ যাতে দ্রুত শরীরে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য ছেলের পায়ে একটি ন্যাকড়া বেঁধে দিয়েছেন সাজা। সময়মত প্রতিষেধক না পেলে কী হবে দু:শ্চিন্তাও আসতে থাকে মনে। এদিকে ছেলের পা ফুলে যেতে শুরু করেছে, মুর্ছা যাচ্ছেন। দ্রুতই সিদ্ধান্ত নিতে হলো সাজা বেগমকে। ছেলেকে সাথে নিয়ে উপত্যকার বিপদসংকুল পথ, নিরাপত্তা চৌকি পেরিয়ে চলে যান গ্রামের জনস্বাস্থ্য কার্যালয়ে। সঙ্গে তার স্বামীও ছিলেন। সাধারণত গ্রামের হাসপাতালগুলোতে বিষের প্রতিষেধক পাওয়া যায়। কিন্তু সেদিন ওই কার্যালয় বন্ধ ছিল।

সময় যেতে থাকে ভেতরে ভেতরে অস্থির হয়ে ওঠেন সাজা বেগম। তখন তিনি বারামুল্লা জেলা সদর হাসপাতালে পৌঁছানোর জন্য সাহায্যের আশায় চিৎকার শুরু করেন। একপর্যায়ে কোনভাবে বারামুল্লা হাসপাতালে গেলেও সেখানেও পাওয়া যায় নি প্রতিষেধক। বারামুল্লা থেকে ডাক্তাররা একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেন। অ্যাম্বুলেন্সে করে ছেলেকে নিয়ে শ্রীনগর হাসপাতালের পথে রওনা হন সাজা বেগম ও তার স্বামী।

কিন্তু শ্রীনগরের পথ ততটা মসৃণ ছিল না। পথে পথে ভারতীয় সৈন্যরা অ্যাম্বুলেন্সটির গতিরোধ করেন।

পরিবারের সদস্যরা জানান, আমির তখন ধীরে ধীরে চোখ বন্ধ করছিল। শুধু ক্ষীণকণ্ঠে মাকে জানান, তার ডান পা তখন ছিল অনুভূতিহীন।

শ্রীনগর পৌঁছুতে তাদের ২ ঘণ্টারও বেশি সময় পেরিয়ে যায়।

প্রতিষেধকের খোঁজে পাহাড়ি পথে কয়েক ঘণ্টার দীর্ঘযাত্রা, পথে পথে নানা হয়রানি পেরিয়ে একসময় সাজা বেগম ছেলেকে নিয়ে শ্রীনগরের সোউরা হাসপাতালে পৌঁছান। কিন্তু বিধিবাম! সেখানেও মেলে দু:সংবাদ। হাসপাতালে প্রতিষেধক নেই।

এমন সময় খোঁজ আসে বারামুল্লার হাসাপতালে প্রতিষেধক ছিল কিন্তু সেখানকার স্টোররুমে তালা মারা ছিল। স্টোররুমের চাবি যার কাছে ছিল তিনি তখন আশেপাশে ছিলেন না আবার মোবাইল সেবা বন্ধ থাকায় তাকে কলও করা যায় নি।

অজানা আশঙ্কা ঘিরে ধরে মা সাজা বেগমের মনে! ছেলেকে বাঁচাতে মরিয়া হয়ে ওঠেন তিনি।

বিষের প্রতিষেধকের খোঁজে শ্রীনগরের প্রতিটা ফার্মেসি হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকেন তারা। কিন্তু, নেই, কোথাও নেই! এমনকি খুঁজতে খুঁজতে তাঁরা একটি সেনা ক্যাম্পে পৌঁছে যান, সেনা ক্যাম্পগুলোতে সাধারণত বিষের প্রতিষেধক থাকে। আগামীকাল আসার কথা বলে তারাও সেদিন মুখ ফিরিয়ে নেন।

এদিকে আমিরের অবস্থা আরো করুণ হয়ে ওঠে। প্রতিষেধক খোঁজার সমস্ত চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে গেলে কাতর মা সাজা বেগম স্বামীর দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে ওঠেন, ‘তুমি সবকিছু বিক্রি করে দেও, কিন্তু আমার ছেলেকে বাঁচাও।’

এ সময় স্ত্রীকে সান্ত্বনা জানিয়ে আশ্বস্ত করতে থাকেন স্বামী। মি.দার জানান, ‘তাকে সান্ত্বনা দিচ্ছিলাম কিন্তু আমার বুকে কেউ যেন ছুরি দিয়ে হানছিল।’

পরের দিন সকাল সাড়ে ১০টা। আমিরকে সাপে কাটার ততক্ষণে ১৬ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। আমির চিরদিনের জন্য ঘুমিয়ে পড়েন।

সন্তানের মৃতদেহ সঙ্গে নিয়ে ৫৫ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে ভগ্ন হৃদয়ে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঘরে ফিরে আসে সাজা-দার দম্পতি।

আমিরের মৃত্যুর দুইদিন পর ১৫০ মাইল দূরের একটি শহর থেকে শ্রীনগরের হাসপাতালে বিষের প্রতিষেধক পৌঁছেছিল। অন্যান্য ওষুধের সঙ্গে সেদিন ৩০ শিশি (কাচের ছোট বোতল) প্রতিষেধক আনা হয়েছিল।

কাশ্মীরে চিকিৎসা পরিস্থিরি গুরুতর অবনতি

কাশ্মীরের স্বায়ত্বশাসন তুলে নেওয়ার দুইমাস পেরিয়েছে। চলতি বছরের ৫ আগস্ট ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে অঞ্চলটিকে দুই ভাগ করে অবোরোধ চাপিয়ে দেয় ভারতের কেন্দ্রিয় সরকার। ওই দিন সকাল থেকে কার্যত অচলাবস্থার মধ্যে নিমজ্জিত হয় ভূস্বর্গখ্যাত কাশ্মীর উপত্যকা। আর এই সময়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন অসুস্থ রোগীরা।

উপত্যকার ডাক্তারদের মত, যথাযথ চিকিৎসা না পাওয়ায় বহু মানুষের জীবন চলে গেছে দুই মাসে। যারা জীবিত আছেন তারাও দুর্বিষহ জীবন পার করছেন। তার একটাই কারণ যোগাযোগবিচ্ছিন্নতা। উপত্যকার ইন্টারনেট পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।

যার কারণে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী, যিনি হয়ত অনলাইন থেকে ওষুধ ক্রয় করতেন, তিনিও সেটা পারছেন না।

মোবাইল সেবা বন্ধ থাকায় ডাক্তাররাও নিজেদের মধ্যে যোগযোগ করতে পারছেনা, জীবণমরণ সন্ধি:ক্ষণে থাকা রোগীর জন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের সঙ্গে পরামর্শ করাও সম্ভব হচ্ছে না। অন্যদিকে বেশিরভাগ কাশ্মীরিও যেহেতু ল্যান্ডলাইন ফোন ব্যবহার করেন না তারাও অনেকটা একে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগবিচ্ছিন্ন।

কাশ্মীর হাসপাতালের চিকিৎসক সাদাত। ভয়ের সংস্কৃতি থেকে হোক কিংবা অন্যকারণে নিজের পুরা নাম তিনি প্রকাশ করতে চান না। নিউইয়র্ক টাইমকে তিনি বলেন, সময় মত অ্যাম্বুলেন্স না ডাকতে পারার জন্য কয়েক ডজন রোগী মারা গেছেন এই কয়দিনে, যাদের বেশিরভাগই হৃদরোগে আক্রান্ত ছিল।

তবে ডাক্তারদের অভিযোগ অস্বীকার করেছে ভারতীয় কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, হাসপাতালগুলোতে স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে। এমনকি এই অবরোধের সময়ও কোন অসুবিধা নাই উপত্যকায়। নিরাপত্তা চৌকিগুলো পার হতে স্বাস্থ্যকর্মী ও গুরুতর রোগীদের পাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এমনি মানবেতর পরিস্থিতিতে মানবিক দিক বিবেচনা করে কাশ্মীরের কারফিউ তুলে নিতে ভারত সরকারকে চিঠি দিয়েছে ভারতীয় এক দল চিকিৎসক। তাদের একজন রামানি আতকুড়ি। তিনি বলেন, ‘মানুষ মারা যাচ্ছে শুধুমাত্র মোবাইল সেবা না থাকার কারণে। মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় অনেকে অ্যাম্বুলেন্সও ডাকতে পারছেন না।’

`সেভ হার্ট ইনিশিয়েটিভ’ হৃদরোগের ডাক্তার নিয়ে গড়ে ওঠা একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। ইতোমধ্যে তারা ১৩ হাজার হৃদরোগীর জরুরি চিকিৎসাসেবা দিয়ে অনন্য নজির রেখেছে। সেই গ্রুপে কাশ্মীরের ডাক্তার যেমন আছে তেমনি আছে আমেরিকান হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরাও। গ্রুপেই ডাক্তাররা কোন রোগীর ইলেকট্রোকার্ডিওগ্রাম শেয়ার করে কিংবা জরুরি তথ্য বিনিময় করে জটিল রোগের চিকিৎসায় নিজেদের মধ্যে শলাপরামর্শ করে থাকেন। যা অনেকসময় রোগীর জীবন বাঁচিয়ে দিয়েছে।

কিন্তু এই মুহূর্তে কাশ্মীর উপত্যকায় ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় ডাক্তাররা সেটিও ব্যবহার করতে পারছেন না।

কাশ্মীরের অন্যতম বড় শহর শ্রীনগরের শ্রী মহারাজা হরি সিং হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, গত দুই মাসের অবরোধ সেই সাথে ওষুধের স্বল্পতার জন্য হাসপাতালে অস্ত্রপোচার প্রায় ৫০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।

চিকিৎসকদের মতে, অবরোধের কারণে শিশু রোগের চিকিৎসা ও মাতৃত্বকালীন সেবা দেওয়াটা সবচেয়ে বেশি দু:সাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গতমাসে রাজিয়া খান নামের এক নারীর গর্ভকালীন জটিলতা দেখা দেয়। কিন্তু তার বাড়ি থেকে নিকটবর্তী হাসপাতালের দুরত্ব ছিল ৭ মাইল। মোবাইল সেবা না থাকায় সেদিন তিনি অ্যাম্বুলেন্স ডাকতে পারেন নি। পরে বাধ্য হয়ে তারা কয়েকঘণ্টায় সাত মাইল হেঁটে হাসপাতালে পৌছান। কিন্তু সে হাসপাতালে কোন চিকিৎসা না পেয়ে তাদের শ্রীনগরে পাঠানো হয়। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়। গর্ভের সন্তান নষ্ট হয় রাজিয়ার।

রাজিয়ার স্বামী বিলাল মান্ডু বলেন, যদি সেদিন মোবাইল সেবা চালু থাকত তাহলে হয়ত সঠিক সময়ে একটা অ্যাম্বুলেন্স আমরা ডাকতে পারতাম।

   

ফিলিপাইনে তীব্র তাপদাহে নিঃশ্বাস নেওয়া যাচ্ছে না



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ফিলিপাইনে তীব্র তাপদাহে সবকিছু ঝলসে যাচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেশটির কর্তৃপক্ষ বুধবার (২৪ এপ্রিল) কিছু এলাকার স্কুল বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে এবং লোকজনকে বাইরে থাকার বিষয় সতর্কতা জারি করেছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, মার্চ, এপ্রিল ও মে সাধারণত ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জের সবচেয়ে উষ্ণ ও শুষ্কতম মাস। তবে এই বছর এল নিনোর আবহাওয়ার প্রভাবে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।

ম্যানিলার দক্ষিণে ক্যাভিট প্রদেশের একটি সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্টে কাজ করেন ৬০ বছর বয়সি এরলিন তুমারন।

তিনি বলেন, ‘এত গরম যে, আপনি নিশ্বাস নিতে পারবেন না।’ রিসোর্টটিতে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) তাপ সূচক ৪৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে।

এরলিন তুমারন বলেন, ‘এটা আশ্চর্যজনক যে, আমাদের পুলগুলো এখনও খালি। এই গরমে আপনি আশা করতে পারেন যে, লোকেরা এসে পুলগুলোতে সাঁতার কাটবে। কিন্তু মনে হচ্ছে তারা গরমের কারণে বাড়ির বাইরে যেতে নারাজ।’

দেশটির আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বুধবার অন্তত ৩০টি শহর ও পৌরসভায় তাপ সূচক ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি বিপদজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

রাজ্যের আবহাওয়া পূর্বাভাসের প্রধান জলবায়ু বিশেষজ্ঞ আনা সোলিস বলেছেন, আগামী দিনগুলোতে তাপ আরো তীব্র হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সোলিস এএফপিকে বলেন, ‘আমাদের বাইরে কাটানো সময় সীমিত করতে হবে, প্রচুর পানি পান করতে হবে, বাইরে যাওয়ার সময় ছাতা ও টুপি ব্যবহার করতে হবে।’

সোলিস বলেন, এল নিনোর কারণে ‘চরম তাপ’ দেশের বিভিন্ন অংশকে প্রভাবিত করছে। দেশটির প্রায় অর্ধেক প্রদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে খরায় রয়েছে।

অ্যাপাররি উত্তর পৌরসভায় মঙ্গলবার তাপমাত্রা ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছে, যা দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

;

ইউক্রেন-ইসরায়েল সহায়তা ও টিকটক নিষিদ্ধকরণ বিলে বাইডেনের স্বাক্ষর



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে পাস হওয়া ইউক্রেন, ইসরায়েল ও তাইওয়া সহায়তা বিল এবং টিকটক নিষিদ্ধকরণ বিলে স্বাক্ষর করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দেশটির সিনেটে বিলগুলো অনুমোদনের পর এটি অপেক্ষায় ছিল বাইডেনের স্বাক্ষরের। অবশেষে তার স্বাক্ষরের পর বিলগুলো চূড়ান্ত আইনে পরিণত হলো।

অনুমোদিত টিকটক বিলের শর্তে বলা হয়েছে, টিকটকের চীনা মালিক প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সকে আগামী নয় মাসের মধ্যে তাদের শেয়ার বিক্রি করতে হবে। নয়তো এই অ্যাপটি যুক্তরাষ্ট্রে ব্লক করে দেওয়া হবে।

এর আগে মঙ্গলবার ইউক্রেন, ইসরায়েল ও তাইওয়ানের জন্য ৯৫ বিলিয়ন ডলারের সহায়তা প্যাকেজ অনুমোদন দেয় মার্কিন সিনেট।

এক বিবৃতিতে বিলটি পাস করায় আইনপ্রণেতাদের প্রশংসা করেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। তিনি বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এই আইন আমাদের দেশ ও বিশ্বকে আরও বেশি সুরক্ষিত করবে। আমরা আমাদের সেই বন্ধুদের সহায়তা করছি, যারা সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও (রুশ প্রেসিডেন্ট) ভ্লাদিমির পুতিনের মতো স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে নিজেদের রক্ষায় লড়াই করছে।

এদিকে সহায়তা প্যাকেজ অনুমোদনের পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, এটি গণতন্ত্রের আলোকবর্তিকা এবং মুক্ত বিশ্বের নেতা হিসেবে আমেরিকার ভূমিকাকে শক্তিশালী মনে করে।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটে পাস হওয়া বিদেশি সহায়তা প্যাকেজে ইসরায়েলে সামরিক ও গাজায় মানবিক সহায়তা হিসেবে ২৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রয়েছে। এছাড়া এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মার্কিন মিত্র তাইওয়ানের জন্য ৮ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার সহায়তা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কমিউনিস্ট শাসিত চীনকে মোকাবিলায় এই অর্থ সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

;

‘ইরানের সঙ্গে ব্যবসা করা দেশগুলো নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকির সম্মুখীন হবে’



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইরানের সঙ্গে ব্যবসা করা দেশগুলো সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকির সম্মুখীন হবে বলে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির পাকিস্তান সফরকে উদ্দেশ্য করে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এ মন্তব্য করা হয়েছে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।

রয়টার্স জানিয়েছে, রাইসির সফরে ইরান ও পাকিস্তানের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা ও ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্য বাড়ানো নিয়ে আটটি সমঝোতা চুক্তি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সোমবার (২২ এপ্রিল) ইসলামাবাদে আকস্মিক সফরে আসেন রাইসি। এ বছরের শুরুতে পাকিস্তান ও ইরানের পাল্টাপাল্টি হামলার পর সম্পর্ক জোরদার করার উদ্যোগ হিসেবে রাইসি পাকিস্তান সফর করেন।

গত সপ্তাহে ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক উত্তেজনার মধ্যেই রাইসির এ সফর অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এদিকে, ইসলামাবাদ সফরে এসে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন রাইসি। তিনি বাণিজ্য, জ্বালানি, যোগাযোগসহ নানা বিষয়ে পাকিস্তানের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।

রাইসির পাকিস্তান সফর ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমঝোতা স্বাক্ষর সই নিয়ে প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ভেদান্ত প্যাটেল সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা ঝুঁকির কথা বলেন।

ভেদান্ত প্যাটেল বলেন, ‘আমরা ইরানের সঙ্গে ব্যবসায়িক চুক্তি বিবেচনায় নিষেধাজ্ঞার সম্ভাব্য ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিই। তবে পাকিস্তান সরকার তাদের নিজস্ব পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণের কথা জানাতে পারে।’

গত সপ্তাহে চীন ও বেলারুশের তিন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পাকিস্তানকে ক্ষেপণাস্ত্র যন্ত্রাংশ সরবরাহ করায় নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তিনি বলেন, এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল, কারণ সেসব এমন উপকরণ ছিল, যা গণবিধ্বংসী অস্ত্র বিস্তারে ভূমিকা রেখেছে।

;

লোকসভায় এনডিএ জোট ২২০টা আসনও পাবে না: কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বলেছেন, নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন এনডিএ (ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স) জোট জাতীয় সংসদের লোকসভায় ২শ ২০টা আসনও পাবে না।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) ভারতের স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেল এনডিটিভির সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সিদ্দারামাইয়া এবারের নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রীর পদে প্রার্থী হবেন না জানিয়ে বলেন, আমার প্রার্থী না হওয়ায় ইন্ডিয়া ব্লক কোনো বেকায়দায় পড়বে না।

তিনি এমন সময় এ মন্তব্য করলেন যখন মাত্র আর দুদিন পর ২৬ এপ্রিল শুক্রবার দ্বিতীয় ধাপের লোকসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এদিন কর্ণাটকের ২৮টি লোকসভা আসনের ২৪টিতে ভোটগ্রহণ করা হবে।

সিদ্দারামাইয়া বলেন, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া ব্লক লোকসভায় ৪শটি আসনে বিজয়ী হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে নির্বাচনে লড়ছে। তবে এনডিএ জোট ২শ ২০টি আসনও পাবে না। এর কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদি তার দেওয়া প্রতিশ্রুতি রাখেননি।

এ সময় এনডিটিভিকে তিনি বলেন, বিজেপি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী এইচডি দেবগৌড়ার দল জনতা দলের (ধর্মনিরপেক্ষ) জোটে দেবগৌড়া একজন ‘অপবিত্র’।

 

;