দ্য সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও)-এর দুইদিনব্যাপী ২৩তম সম্মেলনে যোগ দিতে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে পৌঁছেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
এসময় দেশটির এয়ারবেসে তাকে লালগালিচা দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ডিরেক্টর জেনারেল ইলিয়াস মাহমুদ নিজামি ও পাকিস্তানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) পাকিস্তানের দ্য ন্যাশন, জিও নিউজ, দ্য ডন এবং দ্য নিউজ এ বিষয়ে খবর প্রকাশ করে।
খবরে বলা হয়, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটের সময় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর পাকিস্তানের রাজধানী ইসলাবাদের এয়ারবেসে এসে পৌঁছান।
অন্তত ১০ বছরের ভেতরে এই প্রথম ভারতীয় কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী পাকিস্তান সফরে গেলেন।এসসিও-র ২৩তম সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ।
পাকিস্তানে অবস্থানকালে ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে কোনো আলোচনা হবে না। এ বিষয়ে জানা যায়, কোনো প্রতিনিধি এ রকম দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে আলোচনা করতে পারেন না।
পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি)-এর চেয়ারম্যান ও পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলওয়াল ভুট্টো-জারদারি জিও নিউজকে বলেন, দ্য সাংহাই কো-অপারেশন (এসসিও)-এর নিয়মানুযায়ী, সম্মেলনে কোনো দেশের প্রতিনিধি দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে কোনো কথা বলতে পারেন না। সে কারণে জয়শঙ্করে সঙ্গে পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে কোনো আলোচনা হবে না।
তিনি আরো বলেন, এ জন্য আরো ফোরাম আছে, যেখানে দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে আলোচনা করা যায়।
এদিকে, আগত অতিথিদের নিরাপত্তা বিধানে ইসলামাবাদের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শপিংমল, কমিউনিটি সেন্টার, ব্যায়ামগার, জনসভা ৩ দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এর আগে ৩ ও ৪ জুলাই কাজাখস্তানে ২২তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
দ্য ডন জানায়, ভারতের ৪ সদস্যের প্রতিনিধি দল, রাশিয়ার ৭৬ সদস্য, চীনের ১৫ সদস্য, ইরানের ২ সদস্য এবং কিরগিজস্তানের ৪ সদস্যের প্রতিনিধি দল এ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।
এছাড়া চীন, রাশিয়া, বেলারুশ, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান এবং উজবেকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী এই সম্মেলনে উপস্থিত থাকছেন।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের পাশাপাশি ইরানের ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রেজা আরেফ এই সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী লুভসাননামস্রেইন ওইউন-এরডেন পর্যবেক্ষক এবং তুর্কমেনিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রশিদ মেরেদভ বিশেষ অতিথি হিসেবে এই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করছেন।
২০০১ সালের ১৫ জুন চীনের সাংহাইতে দ্য সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজশনের (এসসিও) নামে এই আন্তর্জাতিক সংগঠনটি গঠিত হয়।
সে সময় ৬টি দেশ এর সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। এই দেশগুলি হচ্ছে- চীন, রাশিয়া, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজিকিস্তান এবং উজবেকিস্তান।
এসসিও গঠনের উদ্দেশ্য
দ্য সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজশন (এসসিও) গঠনের উদ্দেশ্য হচ্ছে, সংগঠনের সদস্যভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আস্থা শক্তিশালী এবং সহযোগিতা বাড়ানো; নিজেদের মধ্যে সহযোগিতার মাধ্যমে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং নিরাপত্তা ইস্যুগুলো সমাধান করা; সন্ত্রাসবাদ ও চরম উগ্রপন্থা দমনের জন্য সদস্য দেশগুলোর মধ্যে স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা জোরদার করা।
সদস্য দেশ
১০ সদস্য বিশিষ্ট এই এসসিও সংগঠনে রয়েছে- রাশিয়া, চীন, ভারত, কিরগিজস্তান, পাকিস্তান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, কাজাখস্তান, ইরান এবং ২০২৪ সালের জুলাই মাসে যোগ দেওয়া বেলারুশ।