মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষে বিতর্ক অনুষ্ঠানে ডেমোক্রেটিক দলের পক্ষে প্রার্থী কমলা হ্যারিস রিপাবলিক্যান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এক মন্তব্যের জেরে বলেন, আমি জো বাইডেন নই, কমলা হ্যারিস।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ায় এ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। সে বিতর্কে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে এভাবেই আক্রমণ করেন কমলা হ্যারিস।
চলতি বছরের নভেম্বর মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। সে নির্বাচন উপলক্ষে এই প্রথমবারের মতো বিতর্কে মেতে উঠেছিলেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বর্তমানে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ডেমেক্রেটিক দলের প্রার্থী ও বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস।
মঙ্গলবার ফিলাডেলফিয়ায় ট্রাম্প ও কমলা বিতর্কে মেতে ওঠেন। এ বিতর্ক চলে ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট ধরে। এ সময় তারা গর্ভপাত আইন, অভিবাসন এবং বিদেশনীতি নিয়ে নিজেদের দলের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন।
তাদের মধ্যকার বিতর্কের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত ছিল এরকম-
প্রথমে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিস মঞ্চে তাদের পোডিয়ামের সামনে দাঁড়ান। এরপর ডেমোক্রেটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিস ডোনাল্ড ট্রাম্পের পোডিয়ামের দিকে এগিয়ে গিয়ে হ্যান্ডশেকের জন্য হাত বাড়িয়ে বলেন, আমি কমলা হ্যারিস। আমাদের ভালো বিতর্ক হোক।
এর উত্তরে ডোনাল্ড ট্রাম্প হ্যারিসের দিকে হাতবাড়িয়ে হ্যান্ডশেক করে বলেন, আপনার সঙ্গে দেখা হয়ে ভালো লাগলো।
বিগত ৮ বছরে মধ্যে এটাই ছিল দুইজনের প্রথম হ্যান্ডশেক। বিতর্কের বেশিরভাগ সময়ই কমলা হ্যারিস ডোনাল্ড ট্রাম্পের দিকে সরাসরি চোখে চোখ রেখে কথা বলেছেন। বিতর্কের মাঝে হেসেছেন এবং প্রশ্নের উত্তরে মাথা ঝাঁকিয়েছেন।
অন্যদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ঋজুভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে থেকেছেন এবং সরাসরি কথপোকথন করেছেন।
কমলা হ্যারিস ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বিনয়ের সঙ্গে আক্রমণ ছুড়ে দিয়েছেন এবং তার অপরাধের বিচার প্রসঙ্গ এবং কোভিড-১৯ মোকাবিলায় তার ব্যর্থতার কথা তুলে ধরেন।
অন্যদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ডেমোক্রেটিক দল ক্ষমতায় থাকার সময়ে মুদ্রাস্ফীতি এবং অভিবাসন এবং রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কথা তুলে ধরেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, বাইডেন ও হ্যারিস প্রশাসন দেশকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। শুধু তাই-ই নয়, হ্যারিসকে ‘মার্কসিস্ট’ হিসেবে অভিহিত করেন তিনি।
বিতর্কের এক পর্যায়ে কমলা হ্যারিস ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথার মাঝে কথা বলতে গেলে ট্রাম্প বলে ওঠেন, এখন আমি কথা বলছি। এছাড়াও গর্ভপাত নিয়ে দুজনে বিতর্ক তুঙ্গে উঠলে কমলা হ্যারিস ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি চরম আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন। হ্যারিস এসময় বলে ওঠেন, একজন নারী তার শরীর নিয়ে কী করবেন, তা নিয়ে অন্য কেউ বলার অধিকার রাখেন না।
দুইজনের বিতর্ক একসময় বেশ জমে ওঠে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশনীতি নিয়ে।
ট্রাম্প হ্যারিসের উদ্দেশে বলেন, হ্যারিসের কোনো নীতি নেই। তিনি বরং ট্রাম্পের নীতিই অনুকরণ করেছেন এবং তার পক্ষে ক্যাম্পেইন করার জন্য হ্যারিসকে ‘মেগা হ্যাট’ (বড় টুপি) দিতে চান। সেইসঙ্গে বলেন, জো বাইডেন থেকে তার আলাদা কোনো বৈশিষ্ট্য নেই।
এর উত্তরে কমালা হ্যারিস বলেন, আমি জো বাইডেন নই।
এভাবেই জমে উঠেছিল কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্ক। এরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যমগুলো জনমত জরিপ করে তুলে ধরবে, বিতর্কে কে এগিয়ে, আগামী নির্বাচনে কে হতে যাচ্ছেন দেশের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট!