চীনে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট, সপ্তাহে ৬ কোটি আক্রান্তের শঙ্কা



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চীনে আবারও করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্টের আবির্ভাব ঘটল। আশঙ্কা করা হচ্ছে, করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট জুন মাসে তার শীর্ষে পৌঁছাতে পারে।

এক সপ্তাহের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ছয় কোটিতে পৌঁছাতে পারে। ভাইরাসটির নতুন ভ্যারিয়েন্ট মোকাবিলায় টিকাদান বাড়ানোর কথা ভাবছে চীনের প্রশাসন।

এনডিটিভি প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন ‘এক্সবিবি’ ভ্যারিয়েন্টের কারণে এই উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। গত বছর চীন তার ‘জিরো কোভিড’ নীতি থেকে সরে আসার পর নতুন ভ্যারিয়েন্টটি ইমিউন সিস্টেমকে দমন করছে বলে মনে করা হচ্ছে।

গত শীতে চীন তার কঠোর জিরো-কোভিড নীতি পরিত্যাগ করার পর নতুন ভ্যারিয়েন্টের প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বড় তরঙ্গ হতে পারে। যদিও চীনের সরকারী সূত্র দাবি করছে, সাম্প্রতিক উত্থান সেই অর্থে মারাত্মক হবে না। তবে দেশের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দেশে করোনায় বয়স্কদের মৃত্যু রোধে টিকা দান কর্মসূচির প্রয়োজন রয়েছে। পাশাপাশি হাসপাতালগুলোতে অ্যান্টিভাইরাল সরবরাহ করা প্রয়োজন।

প্রসঙ্গত, করোনা মহামারিতে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিল গোটা বিশ্ব। যার কারণে বহু মানুষ মারা যায়। ২০১৯ সালে ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের পর এর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য এর ভ্যাকসিন তৈরির জন্য বিজ্ঞানীদের তাড়াহুড়ো করতে হয়েছিল। প্রায় তিন বছর পর পৃথিবী স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে। তবে বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে পরবর্তী মহামারী নিয়ে উদ্বিগ্ন।

তবে, দেশটির জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, করোনায় বয়স্কদের মৃত্যু ঠেকাতে টিকাদান কর্মসূচির প্রয়োজন রয়েছে। পাশাপাশি হাসপাতালগুলোতেও অ্যান্টিভাইরাস সরবরাহ করা প্রয়োজন।

সূত্র: এনডিটিভি

   

প্রায় সব আর্মেনীয়ান নাগোর্নো-কারাবাখ ছেড়ে পালিয়েছে



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
আর্মেনিয়া সীমান্তে অপেক্ষমান শরণার্থীরা। ছবি : সংগৃহীত

আর্মেনিয়া সীমান্তে অপেক্ষমান শরণার্থীরা। ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নাগোর্নো-কারাবাখ অঞ্চল ছেড়ে এক লাখেরও বেশি জাতিগত আর্মেনিয়ান পালিয়েছে বলে দাবি করেছে আর্মেনিয়া।

বিবিসি জানিয়েছে, গত সপ্তাহে আজারবাইজান ওই অঞ্চলটি দখল করার পর থেকে এই ছিটমহল আর থাকার সাহস করেনি জাতিগত আর্মেনিয়ানরা।

তবে আজারবাইজান বলেছে, তারা অঞ্চলটিকে পুনরায় একীভূত করতে এবং এর সকল বাসিন্দাদের প্রতি ন্যায্য আচরণ করতে চায়। তবে, আজারবাইজানের ওই ঘোষণাকে "মিথ্যা" বলে অভিহিত করেছেন আর্মেনিয়ার এক মুখপাত্র।

এদিকে, আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র নাজেলি বাগদাসারিয়ান বলেছেন, গত সপ্তাহে নাগোর্নো-কারাবাখের মোট জনসংখ্যা ১ লাখ ২০ হাজারের মধ্যে আনুমানিক ১ লাখ ৪১৭ জন শরণার্থী আর্মেনিয়ায় প্রবেশ করেছে।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) বলেছে, প্রায় ১ লাখ মানুষ পালিয়ে গেছে এবং যারা পালিয়েছে তাদের মধ্যে অনেকেই ক্ষুধার্ত, ক্লান্ত এবং অবিলম্বে তাদের সহায়তা প্রয়োজন"।

কারাবাখের সাবেক বিচ্ছিন্নতাবাদী কর্মকর্তা আর্তাক বেগলারিয়ান বলেছেন, নাগর্নো-কারাবাখ বাসিন্দাদের শেষ দল শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) আর্মেনিয়ায় পৌছেছে।

তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, "প্রায় কয়েকশ লোক রয়ে গেছে, যাদের বেশিরভাগই কর্মকর্তা, জরুরী পরিষেবার কর্মচারী, স্বেচ্ছাসেবক, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন কিছু ব্যক্তি।"

জাতিসংঘ বলেছে, মানবিক পরিস্থিতির মূল্যায়ন করার জন্য তারা চলতি সপ্তাহান্তে নাগর্নো-কারাবাখে একটি মিশন পাঠাবে।

নাগর্নো-কারাবাখ অন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের অংশ হিসাবে স্বীকৃত, যা গত তিন দশক ধরে জাতিগত আর্মেনিয়ানদের দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছিল।

দক্ষিণ ককেশাসের এই পার্বত্য অঞ্চলটি আর্মেনিয়া দ্বারা সমর্থিত এবং এর মিত্র রাশিয়াও।

৭০ বছর বয়সি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ভেরা পেট্রোসিয়ান মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রয়টার্সকে বলেন, ‘আমি সবকিছু পিছনে ফেলে এসেছি। আমি জানি না আমার ভাগ্যে কী আছে। আমার কিছুই নেই। আমি কিছুই চাই না।’ আজারবাইজানের সঙ্গে সীমান্তের আর্মেনিয়া অংশের একটি হোটেলই এখন তার বাড়ি।

তিনি আরও বলেন, ‘আমি যে, গুলি, ক্ষুধা, অশান্তি এবং যন্ত্রণা প্রত্যক্ষ করেছি, তা আর দেখতে চাই না।’

এদিকে আজারবাইজান বলছে, তাদের সামরিক অভিযানে বেসামরিক নাগরিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজান ৩০ বছরের মধ্যে ছিটমহলটি নিয়ে দুটি যুদ্ধ করেছে। ২০২০ সালে ছয় সপ্তাহের সংঘর্ষের পর নাগর্নো-কারাবাখ এবং এর আশেপাশের কিছু অংশ ফিরে পায় আজারবাইজান।

আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ বলেছেন, ‘আর্মেনিয়ানদের অধিকারকে সম্মান করা হবে এবং ওই অঞ্চলটিকে একটি স্বর্গে পরিণত করা হবে।’

কিন্তু কারাবাখের আর্মেনিয়ানরা রয়টার্সকে বলেছে, তারা আজারবাইজানের অংশ হিসাবে বাস করতে চায় না, বরং তারা আজারবাইজানের হাতে জাতিগত নির্মূলের ভয় পায়।

কারাবাখ নেতৃত্বের উপদেষ্টা ডেভিড বাবায়ান বলেন, ‘আমাদের জনগণ আজারবাইজানের অংশ হিসেবে থাকতে চায় না। ৯৯ শতাংশ আর্মেনিয়ান আমাদের ঐতিহাসিক ভূমি ছেড়ে যেতে ইচ্ছুক।’

আজারবাইজানের প্রেসিডেন্টর পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা হিকমেত হাজিয়েভ আল-জাজিরাকে বলেছেন, ওই অঞ্চলের বেসামরিক নাগরিকদের রাজনৈতিক একীকরণ, আর্থসামাজিক সমস্যাসহ তাদের ভবিষ্যত সম্পর্কে সরাসরি সংলাপের জন্য বলা হয়েছে।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবী শিলা পেলান বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন না যে, আজারবাইজানের শাসনের অধীনে জাতিগত আর্মেনিয়ানদের সঙ্গে ন্যায্য আচরণ করা হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘আর্মেনিয়ানদের প্রতি ঘৃণার একটি দীর্ঘস্থায়ী নীতি রয়েছে। এটা শুধু রাতারাতি শেষ হবে না। কারাবাখের আর্মেনিয়ানদের জন্য কোনো নিরাপত্তা বা অধিকার সুরক্ষিত থাকবে বলে বিশ্বাস করার কোনো যুক্তিসঙ্গত ভিত্তি নেই। তারা এখন খুব বিপদে আছে।’

নাগোর্নো-কারাবাখে মানবাধিকার ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য অবিলম্বে জাতিসংঘের একটি দল মোতায়েনের আহ্বান জানিয়েছে আর্মেনিয়া।

;

ফের অগ্নিগর্ভ মণিপুর, মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা



আন্তর্জাতিক ডেস্ক বার্তা২৪.কম
মণিপুরে সহিংসতার চিত্র। ছবি : সংগৃহীত

মণিপুরে সহিংসতার চিত্র। ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দুই ছাত্রের অপহরণ এবং নৃশংস খুনের ঘটনায় জনবিক্ষোভের জেরে শুক্রবার নতুন করে অশান্তি ছড়িয়েছে ভারতের রাজ্য মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলে।

হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, ইম্ফলে খুরাই সাজোর লেইকাই এলাকায় স্থানীয় বিজেপি দলীয় মন্ত্রী এল সুসিন্দ্রোর বাসভবনও তছনছ করেছে উত্তেজিত জনতা। ওই সহিংসতার রেশ দেখা গেছে শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালেও।

এ ছাড়াও দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষুদ্ধ জনতার সংঘর্ষ হয়েছে ইম্ফলের বিভিন্ন এলাকায়।

মেইতেই জনগোষ্ঠীর দুই ছাত্রের খুনের জেরে চলতি সপ্তাহে নতুন করে অশান্ত হয়ে ওঠে মণিপুর। গুজব ঠেকাতে গত মঙ্গলবার থেকে সে রাজ্যের বিজেপি সরকার ইন্টারনেট পরিষেবার উপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে।

বুধবার ঘোষণা করা হয়েছে, কুকি অধ্যুষিত পাহাড়ি অঞ্চলে আগামী ছয় মাসের জন্য জারি থাকবে সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন বা আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট (আফস্পা)। কিন্তু, তাতে পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি।

এই পরিস্থিতিতে নতুন করে মেইতেই ছাত্র-যুব সংগঠনগুলোর বিক্ষোভে ফের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

চলতি সপ্তাহে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে শতাধিক বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে, উত্তেজনা আরও বেড়েছে।

এর আগে থৌবলে জেলা বিজেপি দফতর এবং ইম্ফলে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের পৈতৃক বাড়িতেও হামলা চালিয়েছে বিক্ষুদ্ধ জনতা।

প্রসঙ্গত, দুই ছাত্রকে অপহরণ ও হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ ও সহিংসতায় কয়েক ডজন ছাত্র আহত হওয়ার পর ভারতের অশান্ত রাজ্য মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলসহ কিছু জায়গায় এর আগে কারফিউ জারি করা হয়।

আল-জাজিরা জানিয়েছে, জাতিগত সহিংসতায় নিমজ্জিত হয়েছে মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এই রাজ্যটি।

ওই সংঘর্ষকে ভূমি, চাকরি এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার জন্য দুটি বৃহত্তম স্থানীয় গোষ্ঠীর মধ্যে রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার নিয়ে একটি তীব্র গৃহযুদ্ধ হিসাবে বর্ণনা করেছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।

মণিপুরের রাজধানী ইম্ফলের একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা এল কাইলুন বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বলেছেন, ‘ইম্ফল এবং অন্যান্য কয়েকটি জেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়েছে।’

এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘গত বুধবারের সংঘর্ষে ৮০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সশস্ত্র জনতা গভর্নিং পার্টির একটি অফিস ভাঙচুর করার পরে পুলিশের প্রতি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে। তাই পরিস্থিতি অত্যন্ত উত্তেজনাপূর্ণ ছিল।’

রাজ্যটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ‘পাঁচ দিনের জন্য রাজ্যে মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছে।’

অন্যদিকে, গত ৩ মে প্রথম সহিংসতা শুরু হওয়ার পর থেকে মণিপুরে এ পর্যন্ত ১৮০ জনেরও বেশি নিহত হয়েছে এবং প্রায় ৫০ হাজার মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং, যিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) একজন নেতা, কথিত হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করেছেন এবং দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

কুকি-জো সিভিল সোসাইটি গ্রুপের একজন মুখপাত্র বলেছেন, সর্বশেষ হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তাদের কাছে তাত্ক্ষণিক মন্তব্য নেই।

বিরোধী কংগ্রেস দলের নেতারা মোদি সরকারকে তার হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল শাসিত ওই রাজ্যে সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার অভিযোগ করেছেন।

অন্যদিকে, ওই দুই ছাত্রকে অপহরণ করে খুনের ঘটনার তদন্ত করতে গত বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) মণিপুর পৌঁছেছে সিবিআই।

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার স্পেশাল ডিরেক্টর অজয় ভাটনগরের নেতৃত্বাধীন দল বিশেষ বিমানে করে বুধবার ইম্ফল পৌঁছেছেন জানা গেছে। এই ঘটনার তদন্তভার আগেই সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংয়ের সরকার।

কুকি এবং মেইতেই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষে গত কয়েক মাস ধরেই অশান্তির চাদরে ঢাকা পড়েছে ভারতের উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য।

সূত্রের খবর, গত ৬ জুলাই থেকে ওই দুই ছাত্র নিখোঁজ ছিল। ছবিতে দেখা গেছে, দুই সশস্ত্র আততায়ীর সঙ্গে বসে রয়েছে ওই দুই ছাত্র। অন্য একটি ছবিতে দেখা গেছে, তাদের মৃতদেহ পড়ে রয়েছে।

এনডিটিভি জানিয়েছে, ওই দুই ছাত্রের মৃতদেহ এখনও উদ্ধার করা হয়নি। ওই দুই ছাত্রকে শেষবার দেখা গিয়েছিল বিষ্ণুপুর জেলায়। অভিযোগ, ওই দুই ছাত্রকে অপহরণ করে খুন করা হয়েছে।

এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরেই নড়েচড়ে বসেছে মণিপুর সরকার। এক্স হ্যান্ডলে (টুইটার) মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘রাজ্যবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই যে, অপরাধীদের ধরতে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে।’

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন বলেও জানান বীরেন সিং।

;

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে অচলবস্থা সৃষ্টির আশঙ্কা



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট

ছবি: যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্ট

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র। গত শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) মার্কিন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান সদস্যরা সরকারকে অস্থায়ীভাবে অর্থায়নের জন্য প্রস্তাবিত স্টপগ্যাপ ফান্ডিং বিলটি প্রত্যাখ্যান করেন। ফলে আগামী রোববার (১ অক্টোবর) থেকে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ও ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার (৩১ অক্টোবর) পর্যন্ত মার্কিন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে স্বল্পমেয়াদি তহবিল বিলটি পাস করানোর চেষ্টা করা হয়। চূড়ান্ত পর্বে বিলের বিপক্ষে ২৩২ ও পক্ষে ১৯৮টি ভোট পড়ে। এতে আংশিকভাবে অচল হয়ে যেতে পারে দেশটির ফেডারেল (কেন্দ্রীয়) সংস্থাগুলো।

উল্লেখ্য, ১ অক্টোবর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী অর্থবছর শুরু হবে। নতুন অর্থবছরের জন্য এখনও কোনো বাজেট বরাদ্দ করেনি কংগ্রেস। যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান রাজনৈতিক প্যাটার্ন এ পরিস্থিতির জন্য দায়ী। হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসে রিপাবলিকান পার্টির আসন সংখ্যা ২২১ যা সংখ্যাগরিষ্ঠ অবস্থানে আছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটদের আসন সংখ্যা ২১২টি। আবার কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে ক্ষমতাসীন ডেমোক্র্যাটরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও ব্যবধান মাত্র দুটি আসনের। ডেমোক্রেটিক পার্টির আসন ৫১টি। বিপরীতে ৪৯টি আসন নিয়ে খুব কাছেই অবস্থান করছে রিপাবলিকান পার্টি। ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের মধ্যে আসন সংখ্যার ব্যবধান কম হওয়ায় এবং হাউসের উভয় কক্ষেই কোনো দলই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ না হওয়ার কারণে বিল পাসে বাধা সৃষ্টি হয়েছে।

মূলত, ফেডারেল সরকারের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়া এড়াতে অস্থায়ী স্টপগ্যাপ ফান্ডিং বিল আনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন কংগ্রেসের হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভসের স্পিকার ও রিপাবলিকান পার্টির নেতা কেভিন ম্যাককার্থি। কিন্তু তার রিপাবলিকান দলের কট্টর ডানপন্থী অংশের আইনপ্রণেতাদের বিরোধিতার কারণে সেই বিল পাস হতে পারেনি।

বিলে ম্যাককার্থি প্রস্তাব করেন, যতক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ বাজেটের বিষয়ে কংগ্রেস ঐকমত্যে পৌঁছানো ‌না যায় ততদিন অন্তত এক মাসের জন্য অস্থায়ী ভিত্তিতে স্টপগ্যাপ ফান্ডিং চালু করা হোক। কিন্তু ভোটে বিলটি পাস হয়নি। বিলের পক্ষে ভোট দেন ১৯৮ জন রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা ও বিপরীতে ভোট দেন ২৩২ জন আইনপ্রণেতা। এই ২৩২ জনের মধ্যে আবার ২১ জন রিপাবলিকান পার্টির। অর্থাৎ, নিজ দল রিপাবলিকান পার্টির আইনপ্রণেতাদের বিরোধিতার কারণেই বিলটি পাস হয়নি।

বিল পাস না হওয়ায় আসন্ন শাটাডাউনের ফলে মার্কিন সশস্ত্র বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বিচার বিভাগ, পরিবহন বিভাগসহ বিভিন্ন খাত সরাসরি প্রভাবিত হবে। ফলে দেশটিতে সরকারি সেবা অনেকটাই কমে যেতে পারে বলে মনে করছে বিশ্লেষকরা।

মুডি’স অ্যানালিটিক্সের অর্থনীতিবিদ জাস্টিন বেগলি বলেছেন, চরম রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে দেশে অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হতে চলেছে। এই অবস্থায় কর্মকর্তারা পূর্ণ বেতন পাবেন না।

এদিকে, বিষয়টি মার্কিন অর্থনীতিতে কতটা প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে অর্থনীতিবিদদের মধ্যে ভিন্ন মত দেখা গেছে। তারা বলছেন, শাটডাউনের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেডিট রেটিং (প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তিকে ঋণ দেওয়া হলে, সেটা নির্ধারিত সময়ে পরিশোধ করার ক্ষমতা) ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে ঋণের বিপরীতে সুদের হার বাড়িয়ে দিতে পারে বাইডেন প্রশাসন।

গত ১০ বছরে যুক্তরাষ্ট্রে চতুর্থ বারের মতো শাটডাউন হতে চলেছে। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েক লাখ সরকারি কর্মচারী কোনো ধরনের আর্থিক প্রণোদনা ছাড়াই চাকরিচ্যুত হতে পারেন। এক্ষেত্রে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী না থাকলে সরকারি কার্যক্রম চালানো সম্ভব না তাদেরই রাখা হবে, তাও বিনা বেতনে।

এই পরিস্থিতি সামলাতে ফেডারেল কর্মীদের ছুটি দীর্ঘ করতে পারে বাইডেন প্রশাসন। কিংবা সামরিক বাহিনীকে বেতন ছাড়াই কাজ চালিয়ে যেতে বলতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্লেষকরা।

;

‘শুধু মৃতদেহ দেখেছি’- পাকিস্তানে বোমা হামলা নিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘বিস্ফোরণের পরে আমি শুধু মৃতদেহ এবং আহত দেখেছি। ঘটনাস্থলে অসহায় মানুষদের বাঁচার জন্য লড়াই করতে দেখেছি। রক্তাক্ত আহতদের হাহাকার ভুলতে পারি না’।

হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারের বাইরে অসহায়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকা তরুণ বরকত আলী অশ্রুসিক্ত চোখে আল জাজিরাকে এসব কথা বলেন। আলীকে দেখা গেলো- রক্ত ভেজা কাপড়ে। 

পাকিস্তানে পরপর দুইবার বোমা হামলার ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫৭ জন এবং আহত শতাধিক। ঈদে মিলাদুন্নবী অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে এই আত্মঘাতী বোমা হামলা ঘটে।

প্রথমে শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় দুপুরবেলায় বেলুচিস্তানের মাস্তুংয়ে একটি ধর্মীয় মিছিলকে লক্ষ্য করে আত্মঘাতী বোমা হামলা হয়। এতে নিহত হন এবং অন্তত ১৩০ জন আহত হয়েছেন।

সেই রেশ না কাটতেই দেশটির খাইবার-পাখতুনকওয়া (কেপি) প্রদেশের পেশোয়ার শহরে হাঙ্গু নামের একটি মসজিদের ভেতরে আত্মঘাতী বোমা হামলা ঘটে। পাকিস্তান গণমাধ্যম জিও টিভির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার জুমার নামাজের জন্য লোকজন পেশোয়ারে হাঙ্গু মসজিদে জড়ো হওয়ার সময় হঠাৎ বোমা হামলা হয়। এতে মুহূর্তেই মসজিদটি ধসে পড়ে এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে মানুষ আটকা পড়ে।

জিও টিভি জানিয়েছে, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৫ জন মারা গেছেন এবং বেশকিছু মানুষ আহত হয়েছেন। আটকা পড়া লোকজনকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ধসে পড়া ভবনের নিচে আটকে আছে বলেও জানিয়েছে গণমাধ্যমটি। 

জেলা পুলিশ অফিসার নিসার আহমেদ জিও টিভিকে বলেন, আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীরা প্রথম বিস্ফোরণটি দুয়াবার থানার গেটে এবং দ্বিতীয়টি মসজিদের ভেতরে ঘটেছে।

আহত মানুষজন এবং তাদের স্বজনেরা কোয়েটা সিভিল হাসপাতালের বাইরে জড়ো হন। এসময় তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন। মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেও যে মানুষটা সুস্থ ছিল, ধর্মীয় অনুষ্ঠান সেরে বাড়ি ফেরার কথা ছিল, তারা আর ফেরেননি।  তিনি হয়তো আর ফিরবেন না। এমন হৃদয় বিদারক আহাজারিতে হাসপাতালের পরিবেশ ছিল শোকে আচ্ছন্ন।

মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় ব্যক্তি নবী মুহাম্মদ (সা.) এর জন্মদিন উদযাপনের অংশ হিসেবে এদিন সমাবেশ বা মিছিলের আয়োজন করা হয়। 

বেলুচিস্তানের বৃহত্তম শহর কোয়েটার হাসপাতালে এখন চলছে আরেক লড়াই। যারা অল্পের জন্য মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন তাদের এখন বেঁচে থাকার লড়াই।

;