স্কটল্যান্ডে প্রথম মুসলিম শাসক হামজা ইউসুফ



সাঈদ চৌধুরী
হামজা ইউসুফ

হামজা ইউসুফ

  • Font increase
  • Font Decrease

স্কটল্যান্ডে সরকার প্রধান তথা ‘ফার্স্ট মিনিস্টার’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে যাচ্ছেন প্রথম কোন মুসলিম রাজনীতিক। স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি-এসএনপির সর্বোচ্চ নেতা নির্বাচিত হয়েছেন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ৩৭ বছর বয়সী হামজা ইউসুফ। ফার্স্ট মিনিস্টার নিকোলা স্টার্জনের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন তিনি। এর মধ্য দিয়ে পশ্চিম ইউরোপের কোনো দেশের প্রথম মুসলিম শাসক হতে চলেছেন কৌশলী ও সাহসী সংগঠক হামজা ইউসুফ।

ব্রিটেনসহ ইউরোপ জুড়ে এটা ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। মুসলিম কমিউনিটি এতে বেশ উৎফুল্ল। বিভিন্ন ইসলামী সংগঠন ও ব্যক্তিত্ব হামজা ইউসুফকে প্রাণখােলা অভিনন্দন জানাচ্ছেন।

এর আগে, ২০২১ সালের মে মাসে লন্ডনের মেয়র হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হয়েছেন লেবার পার্টির নেতা সাদিক খান। বর্তমান সরকার দল কনজারভেটিভ পার্টির সাউন বেইলিকে হারিয়ে তিনি মেয়র নির্বাচিত হন। ব্রিটিশ-পাকিস্তানি সাবেক পার্লামেন্ট সদস্য সাদিক খান যখন ২০১৬ সালে প্রথম লন্ডনের মেয়র নির্বাচিত হন, তিনি ছিলেন ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত কোন দেশের রাজধানী শহরের প্রথম মুসলমান মেয়র। তখন নতুন প্রজন্মের মুসলিম তরুণেরা মূলধারার রাজনীতিতে ব্যাপকভাবে অংশগ্রহণে আশাবাদী হয়েছেন।

শুধুমাত্র মুসলিম কমিউনিটি নয়, হামজা ইউসুফের বিজয়ে ব্রিটেনের এশিয়ান রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিত্বদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনে সয়লাব হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ এশিয়ান রাজনীতিক ঋষি সুনাক ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির নেতা এবং প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বিষয়টিও আলোচনায় আসছে। ঋষি সুনাকই প্রথম একজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত অভিবাসীর সন্তান, একজন অশ্বেতাঙ্গ ব্রিটেনের রাষ্ট্র ক্ষমতার শীর্ষ পদে বসেছেন।

২০২১ সালে স্কটল্যান্ডে আরেক মুসলিম রাজনীতিক আনাস সারওয়ার স্কটিশ লেবার পার্টির প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন। এশীয় বংশোদ্ভূত এবং মুসলমান প্রতিনিধি হিসেবে আনাসই প্রথম ব্যক্তি ব্রিটেনের কোনো বড় দলের নেতা নির্বাচিত হলেন। গ্লাসগো সেন্ট্রাল আসনের স্কটিশ পার্লামেন্ট সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। এই আসনে ১৯৯৭ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত এমপি ছিলেন আনাস সারওয়ারের বাবা ব্রিটেনের প্রথম মুসলিম এমপি মোহাম্মদ সারওয়ার। ২০১০ সালে বাবার আসনে প্রথম এমপি নির্বাচিত হন আনাস সারওয়ার।

বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত একমাত্র স্কটিশ পার্লামেন্ট সদস্য ফয়ছল চৌধুরী এমবিই জানালেন, স্কটল্যান্ডে এখন ৪ জন মুসলিম এমপি। সকলেই স্কটল্যান্ডের স্বার্থ এবং নিজেদের শিকড়ের সংযোগ রক্ষা করে চলেছেন। স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি-এসএনপির সর্বোচ্চ নেতা এবং স্কটল্যান্ডে ‘ফার্স্ট মিনিস্টার’ নির্বাচিত হওয়ায় তিনি হামজা ইউসুফকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান। একজন সাহসী, অমায়িক ও গণমুখী রাজনীতিক হিসেবে হামজা ইউসুফের সাফল্য তিনি প্রত্যাশা করেন।

ফয়ছল চৌধুরী এমবিই আরেও বললেন, সেখানকার পার্লামেন্ট সদস্য ও লেবার পার্টির নেতা আনাস সারোয়ার এবং মুসলিম নারী সদস্য কোকাব স্টুয়ার্ডও রাজনীতিতে ভাল করছেন। মুসিলম এমিপদের মধ্যে আন্তরিক বন্ধুত্ব ও সৌহার্দ্য রয়েছে। এছাড়া ব্রিটিশ পার্লামেন্টে লেবার পার্টির সদস্য চারজন বাংলাদেশি এমিপ রয়েছেন। তারা হলেন, রুশনারা আলী, রূপা হক, টিউলিপ রেজওয়ানা সিদ্দিক ও আফসানা বেগম ৷ ভারত ও পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এমপির সংখ্যাও কম নয়।

এদিকে হামজা ইউসুফের অতীত নিয়ে মূলধারার সংবাদ পত্রে নানা বিশ্লেষণ শুরু হয়েছে। তরুণ এই সংগঠক গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনীতিতে ডিগ্রি নিয়েছেন। তারপরই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করেন। ইরাকে বুশ-ব্লেয়ারের আগ্রাসন বিরোধী আন্দোলন থেকেই হামজার রাজনীতিতে পদার্পণ। অল্পদিনে সর্বকনিষ্ঠ স্কটিশ এমপি নির্বাচিত হয়ে প্রথম আলোচনায় আসেন। মুসলিম এবং সংখ্যালঘু হিসেবেও তিনি ছিলেন প্রথম সংসদ সদস্য।

একজন মুক্তচিন্তার মানুষ হিসেবে নিজ দলে এবং স্কটিশ পার্লামেন্টে হামজা ইউসুফ অসাধারণ গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছেন। প্রায় সকল মহল থেকেই তার এই বিচক্ষণতার প্রশংসা হচ্ছে। ২০১২ সালে তিনি জুনিয়র মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। সেই সময়ে স্কটিশ সরকারে নিযুক্ত হওয়া সর্বকনিষ্ঠ ব্যক্তি এবং প্রথম জাতিগত সংখ্যালঘু ছিলেন হামজা ইউসুফ। ২০১৮ সালে তিনি বিচারমন্ত্রী হিসাবে মন্ত্রিসভায় যোগদান করেন এবং ২০২১ সালের মে মাসে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হন।

হামজা ইউসুফ ৫২.১ শতাংশ ভোট পেয়ে এসএনপির নেতা নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী অর্থ সচিব কেট ফোর্বস পেয়েছেন ৪৭.৯ শতাংশ ভোট। এর আগে, প্রথম গণনায় প্রাক্তন মন্ত্রী অ্যাশ রেগান ১১.১ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। হামজা ইউসুফ সাবেক ফার্স্ট মিনিস্টার স্টার্জনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন এবং তার জয় অনেকটাই প্রত্যাশিত ছিল।

গ্লাসগোতে জন্মগ্রহণকারী হামজা ইউসুফের বাবা পাকিস্তান থেকে ১৯৬০ এর দশকে স্কটল্যান্ডে যান। আর তার মা কেনিয়াতে দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। হামজা ইউসুফের জয়ের খবরে মা শায়েস্তা ভুট্টো ও স্ত্রী নাদিয়া এল নকলার আনন্দাশ্রু মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। হামজা ইউসুফ প্রথম স্কটিশ এশীয়, যিনি স্কটল্যান্ডের 'ফার্স্ট-মিনিস্টার' হলেন। তার বিজয় স্কটল্যান্ডের নেতৃত্বের 'প্রজন্মগত পরিবর্তনের' ইঙ্গিত দেয় বলেও সংবাদ পর্যালোচনায় আলোচিত হচ্ছে।

গতকাল এডিনবার্গে হামজা ইউসুফ বলেন, আমরা হচ্ছি সেই প্রজন্ম, যারা স্কটল্যান্ডকে স্বাধীন করবো। আমাদেরকে অবশ্যই দলের মধ্যে সব বিভাজন দূর করতে হবে। ঐক্যবদ্ধ থাকেল দল হিসেবে আমরা হব সব থেকে শক্তিশালী। আর আমাদের ঐক্যই কেবল স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা উপহার দিতে সক্ষম হবে।

লেখক: লন্ডন প্রবাসী। সাংবাদিক, কবি ও কথাসাহিত্যিক।

   

গাজায় ইসরায়েলি হামলা: মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৩৪ হাজার



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৪২ জন ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে ইসরায়েলি বর্বর হামলায় ফিলিস্তিনে নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৩৪ হাজারে। গত ২৪ ঘণ্টায় আহত হয়েছেন আরও ৬৩ জন।

শনিবার (২০ এপ্রিল) সংবাদ মাধ্যম আল-জাজিরার এক লাইভ আপডেটে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের কনস্যুলেটে হামলার জবাবে ইসরাইলে হামলা চালায় ইরান। এর প্রতিত্তোরে ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক প্রকল্পের জন্য আলোচিত শহর ইসফাহানে হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি।

এমন পরিস্থিতিতে গাজায় মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৩৪ হাজারে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা জানিয়েছে, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৪ হাজার ১২ জন নিহত হয়েছেন। এসময়ে আরও ৭৬ হাজার ৮৩৩ জন আহত হয়েছেন। ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৩৯ জনে। এছাড়াও গাজায় কয়েক ডজন ইসরায়েলি নাগরিক বন্দী রয়েছে।

;

অন্ধ জ্যোতিষী বাবা ভঙ্গ'র কথা কী ফলতে যাচ্ছে!



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
অন্ধ জ্যোতিষী বাবা ভঙ্গ'র কথা কী ফলতে যাচ্ছে!

অন্ধ জ্যোতিষী বাবা ভঙ্গ'র কথা কী ফলতে যাচ্ছে!

  • Font increase
  • Font Decrease

গাজা ইস্যুতে যখন ইরান ও ইসরায়েল মুখোমুখি, তখন যে কারো মনেই জেগেছে শঙ্কা! সবারই প্রশ্ন- কি হতে যাচ্ছে? কোন পথে বিশ্ব? বিশ্ব কি সেই পথেই যে পথের শঙ্কা প্রকাশ করে গিয়েছিলেন সেই অন্ধ জ্যোতিষী বাবা ভঙ্গ। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ! কিংবা এক ভয়াল ২০২৪!

জ্যোতির্বিদ্যায় পারদর্শী সে নারী পৃথিবীর মায়া ছেড়েছেন ২৭ বছর হলো। কিন্তু এখন থেকে আরো তিন হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বে কোন বছর কি ঘটবে তা নিয়ে নিজের গণনালব্দ ভবিষ্যদ্বাণী তিনি করে গেছেন। তার সে সব কথা যে একেবারে ফ্যালনা নয়, তা এরই মধ্যে বিশ্ববাসী টের পেয়ে গেছে। সবশেষ তাজা তাজা যা ঘটলো তা হচ্ছে কোভিড-১৯ অতিমারি। যে অতিমারির কথাও ছিল বাবা ভঙ্গের ভবিষ্যদ্বাণীতে।

আর ২০২৪ নিয়ে তার বক্তব্যই ছিল ভয়াল কালোয় আচ্ছন্ন একটি বছর হবে এটি। সে আশঙ্কার তালিকায় রয়েছে ইউরোপ জুড়ে সন্ত্রাসী হামলা, বিশ্বজুড়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকট আর জীবাণু অস্ত্রের ব্যবহার। এমনকি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর একটি হত্যাচেষ্টা চালানো হবে এমন সুনির্দিষ্ট তথ্যও তার গণনায় এসেছিল।

১৯৯৬ সালে মৃত্যু হয় এই বুলগেরীয় জ্যোতিষীর। বলকানদের নস্ট্রাডামাস বলেই ডাকা হতো তাকে। জ্যোতির্গণনার সেই দিনগুলোতে বাবা ভঙ্গ বছর বছর ধরে ৫০৭৯ সাল পর্যন্ত ভূমণ্ডলে কখন কি ঘটবে তার একটি তালিকা দিয়ে গিয়েছিলেন। মৃত্যুর পর বিগত বছরগুলোতে কিছু ঘটনা তার সেই গণনার সঙ্গে মিলে যাওয়ায় অনেকেই সেসব সত্যিই বলেই মানতে শুরু করেছেন। তার গণনায় ২০২৪ কে একটি কালো বছর হিসেবেই দেখানো হয়েছে। এ অবস্থায় অনেকেই সামনে এনে মিলিয়ে দেখছেন বাবা ভঙ্গের কোন কোন ভবিষ্যদ্বাণী ফলে যাচ্ছে নাতো। প্রকাশিত হচ্ছে এ পর্যন্ত সেসব বাণী ফলে গেছে সেসবের কথাও।

কোভিড-১৯ অতিমারির কথা আগেই বলেছি। কিন্তু এই তালিকায় আরেকটি দগদগে স্মৃতি হয়ে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে ৯/১১ এর ভয়াল হামলা। ১৯৮৯ সালে এই সম্ভাব্য হামলার ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন বাবা ভঙ্গ। বলেছিলেন ইষ্পাতে তৈরি পাখি এসে আমেরিকার গর্ব চূর্ণ করবে। সেই কথা সত্যি হলো। চারটি উড়োজাহাজ এসে ভেঙ্গে দিলো আকাশচুম্বির গর্ব। আর কেড়ে নিলো ৩০০০ তাজা প্রাণ। ইস্পাতের পাখি বলতে উড়োজাহাজকেই বুঝিয়েছিলেন বাবা ভঙ্গ।

১৯৬৬ সালে বাবা ভঙ্গের ভবিষ্যৎদ্বাণী ছিল কোভিড-১৯ অতিমারির। তিনি সতর্ক করে বলেছিলেন, আমাদের সকলের মাঝে করোনা ছেয়ে যাবে। নেশকা স্টেফানোভা রোবেভা নামে ৭৩ বছরের এক নারীকে উদ্ধৃত করে এই খবর দিয়েছিলো দ্য ডেইলি স্টার। তিনি বলেছিলেন মৃত্যুর আগে বাবা ভঙ্গ তাকে কথাগুলো বলেছিলেন। তখন তিনি বুঝতেও পারেননি এই কথার মানে কি?

কথিত রয়েছে বাবা ভঙ্গ তার মৃত্যুর বছরটিও নাকি ঠিক ঠিক বলে দিয়েছিলেন। বলেছিলেন ১৯৯৬ সালের ১১ আগস্ট ৮৫ বছর বয়সে তার মৃত্যু হবে। তার এই কথা সত্যি হয়েছে বলেও দাবি করা হয়। সে বছর স্তন ক্যান্সারে তার মৃত্যু হয়।

২০০৪ সালের সুনামির কথা বিশ্ববাসী ভুলতে পারেনি আজও। যে সুনামি ভাসিয়ে দিয়ে গেছে ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলঙ্কা, ভারত, থাইল্যান্ড ও অন্যান্য দেশকে। সেই সুনামির দিনের আগে কেউ কি জানতো এমন কিছু হতে যাচ্ছে! না। কিন্তু বাবা ভঙ্গ বলেছিলেন এক বিপুলা ঢেউ এসে সমুদ্র উপকূল ছাড়িয়ে লোকালয়, শহর বন্দর ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। পানির নিচে তলিয়ে যাবে সব কিছু। হয়েছিলও তাই। তিনি বলেছিলেন, সবকিছু আইসক্রিমের মতো গলে গলে পড়বে।

২০০০ সালের কার্স্ক সাবমেরিন ডিজ্যাস্টারের কথাও নাকি ছিল বাবা ভঙ্গের ভবিষ্যৎ বাণীতে। তিনি বলেছিলেন কার্স্ক পানিতে নিমজ্জিত হবে। আর বিশ্বকে কাঁদাবে। কার্স্ক দুর্ঘটনায় ১১৮ জনের মৃত্যু হয়। ডাইভাররা আটদিন পর কার্স্কের কাছে পৌঁছতে পারে আর জানা যায় সেটি তলিয়ে ছিল ৩৫০ ফুট পানির গভীরে।

বুলগেরীয় এই জ্যোতির্বিদের ভবিষ্যৎ বাণির তালিকায় ছিল ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী হত্যাকাণ্ডের কথাও। ১৯৮৪ সালে ঘটে এই হত্যাকাণ্ড। যা ১৯৬৯ সালেই বাবা ভঙ্গ বলে দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তার পোশাকই তাকে ধ্বংস করবে। ধোঁয়াশা ও আগুনের মাঝে আমি দেখতে পাচ্ছি কমলা-হলুদ পোশাক। ১৯৯৪ সালের ৩১ অক্টোবর ইন্দিরা গান্ধীকে যেদিন হত্যা করা হলো সেদিন তার পরনে ছিল জাফরান রঙের শাড়ি।

যুক্তরাষ্ট্রের দুই প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের উত্থানের খবরও জানা ছিল এই নারী জ্যোতিষীর। তিনি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ৪৪তম প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন এক কৃষ্ণাঙ্গ। তবে তার আরেকটি কথা সত্যি হয়নি। বাবা ভঙ্গ বলেছিলেন সেটাই হবে শেষ কোনো কৃষ্ণাঙ্গের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়া। কারণ ৪৫তম মেয়াদের প্রেসিডেন্ট হিসেবে বারাক ওবামাই দ্বিতীয় দফা নির্বাচিত হয়েছিলেন। ৪৫তমের ব্যাপারে তার ভবিষ্যদ্বাণী ছিল, তার সময়ে যুক্তরাষ্ট্র সঙ্কটের মুখে পড়বে। তবে সেটা মিলে গেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে। ২০২০ সালের ক্যাপিটল হিলের ঘটনার সাথে বিষয়টি মিলিয়ে দেখতে পছন্দ করেন অনেকেই।

৫০ বছরের জ্যোতিষবিদ্যা চর্চার সময়ে আরও কিছু ভবিষ্যৎ বাণী ছিল বাবা ভঙ্গের যা মিলে গেছে। যার মধ্যে ছিল ১৯৮৬ সালে ইউক্রেনে চেরনোবিল ডিজ্যাস্টার, ১৯৯৭ সালে প্রিন্সেস ডায়ানা হত্যাকাণ্ড।

তবে কিছু ভবিষ্যদ্বাণী ছিল যা মোটেই মেলেনি। যেমন ২০২৩ সালের প্রাকৃতিক জন্মলাভের ইতি ঘটবে, পৃথিবী তার ঘূর্ণয়ণ পথ পরিবর্তন করবে, সৌরঝড় হবে এগুলোর কোনোটাই ঘটেনি। ২০১৭ সালের মধ্যে ইউরোপ তার অস্তিত্ব হারাবে এমন কথাও তিনি বলেছিলেন যা ফলেনি। তবে জ্যোতির্বিদ্যায় যারা বিশ্বাসী তারা ২০২৩ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়ার সাথে এই কথার মিল খোঁজার চেষ্টা করেন।

;

উৎসব-সহিংসতায় কাটলো ভারতের নির্বাচনের প্রথম দিন



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের ১৮তম লোকসভার নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনের প্রথম পর্বে ২১ রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মোট ১০২ আসনের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে।

স্থানীয় সময় শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকাল ৭টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয়েছে সন্ধ্যা ৬টায়।

উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট শুরু হলেও বিক্ষিপ্ত কিছু অশান্তি, সহিংসতা ছাড়া ভারতের লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট গ্রহণ মোটামুটি শান্তিপূর্ণ হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার শহরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে উত্তেজনা হয়। সাধারণ ভোটারকে ভয় দেখানো এবং বাড়ি ভাঙচুর ও মারধরের অভিযোগ তৃণমূলের দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল।

কোচবিহার জেলায় চান্দামারী এলাকায় তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের ছোড়া পাথরের আঘাতে বিজেপি বুথ সভাপতি লব সরকার আহত হয়েছে বলে অভিযোগ বিজেপির। হাসপাতালে ভর্তি ওই বিজেপি নেতা। এছাড়াও নাটাবাড়ি এলাকায় তাদের আরও বেশ কয়েকজন কর্মী সমর্থকের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।


আলিপুরদুয়ারে তৃণমূলের বুথ এজেন্ট এর ওপর হামলা, তুফানগঞ্জ-২ ব্লকের হরিরহাট এলাকায় দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ, তৃণমূল নেতা এবং তৃণমূলের বেতাগুড়ি ব্লক প্রেসিডেন্ট অনন্ত বর্মনের ওপরও হামলার অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। নির্বাচনী সহিংসতাসহ বিভিন্ন ঘটনায় দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে।

বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা ঘটেছে উত্তরপূর্ব ভারতের রাজ্য মণিপুরেও। রাজ্যটির রাজধানী ইমফলে বেশ কিছু ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে বুথ দখল, ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট মেশিন নষ্ট করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এছাড়াও আরও বিভিন্ন যায়গায় বিক্ষিতপ সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, বিকেল ৫টা পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে ভোট পড়েছে ৬৬ দশমিক ৭ শতাংশ এবং মেঘালয়ে পড়েছে ৬২ শতাংশ। কিছু যায়গায় ইভিএম ব্যাবহারের ক্ষেত্রে বেশ কিছু সমস্যার খবর পাওয়া গেলেও তা দ্রুত সমাধান করা হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানান।

ছত্তিশগড়ে নকশালবাদীদের প্রভাব থাকলেও ভোটগ্রহণ হয়েছে ৪২ শতাংশের বেশি। রাজ্যের বিজাপুর জেলায় আইইডি বিস্ফোরণে সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সের এক সহকারী কমান্ড্যান্ট আহত হন। তামিলনাড়ুতে জয়ের জন্য বিজেপি মরিয়া। এ রাজ্যে ৩৯ শতাংশের বেশি ভোট পড়েছে। অরুণাচলে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে সকালে ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম থাকলেও, শেষ পর্যন্ত ৩৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ ভোট পড়েছে। বিহারের চারটি আসনে ৭৫ লাখ ভোটারের মধ্যে দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রায় ৩২ শতাংশ ভোট পড়েছে। জম্মু-কাশ্মীরে অবিরাম বৃষ্টির মধ্যেও ৪৩ দশমিক ১১ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে নির্বাচন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এদিকে পূর্ব নাগাল্যান্ডের ছয় জেলায় তেমন ভোটার উপস্থিতি দেখা যায়নি। আলাদা রাজ্যের দাবিতে ওইসব এলাকার উপজাতিদের সংগঠনগুলোর ডাকে সেখানকার ভোটাররা বাড়ি থেকে বের হননিএছাড়া জাতিগত দ্বন্দ্ব থাকা স্বত্বেও মণিপুরে বিকেল ৩টা পর্যন্ত প্রায় ৪৫ দশমিক ৬৮ শতাংশ ভোট পড়েছে।

উল্লেখ্য, মোট সাত দফায় লোকসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেক্ষেত্রে আর ছয়টি দফার ভোটগ্রহণ বাকি রয়েছে। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল, তৃতীয় দফায় ৭ মে, চতুর্থ দফায় ১৩ মে, পঞ্চম দফায় ২০ মে, ষষ্ঠ দফায় ২৬ মে এবং সপ্তম শেষ দফার ভোট ১ জুন। ভোট গণনা আগামী ৪ জুন।

;

ইরানের ইস্পাহানকেই কেন টার্গেট করে হামলা চালালো ইসরায়েল



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ইসরাইলি ভূখণ্ডে তেহরানের নজিরবিহীন হামলার ছয় দিনের মাথায় একটি ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্র ইরানে আঘাত করেছে বলে দাবি করছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। মার্কিন কর্মকর্তারা বিবিসি’র যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগী সিবিএস নিউজকে জানিয়েছে, একটি ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্র ইরানে আঘাত হেনছে।

শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) সকালে ইরানের কেন্দ্রীয় শহর ইস্ফাহানের চারপাশে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে ইরানের গণমাধ্যমে এসেছে।

ইরানের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করার মাধ্যমে তিনটি ড্রোনকে ধ্বংস করা হয়েছে।

ইরানি গণমাধ্যম এবং দেশটির কর্মকর্তারা ইস্ফাহান এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের তাবরিজ শহরে হামলার খবরটিকে হালকাভাবেই উপস্থাপন করছেন।

ইরানিয়ান স্পেস অ্যাজেন্সি একজন কর্মকর্তা হোসেইন দালিরিয়ানের দাবি, সীমান্তের বাইরে থেকে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়নি।

এদিকে মার্কিন কর্মকর্তাদের দাবি, একটি ইসরাইলি ক্ষেপণাস্ত্র ইরানে আঘাত হেনেছে।


বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে শুক্রবার ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমে দেশটির মধ্যাঞ্চলের নগরী ইস্পাহানের বিমানঘাঁটির কাছে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করার কথা জানানো হয়েছে।

তবে ইরানের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, ইরানে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়নি। ইরানের আকাশ সুরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় হওয়ার কারণে ইস্পাহান বিমানঘাঁটির কাছে বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া গেছে।

ইরানের বার্তা সংস্থা ফারস বলেছে, মধ্যাঞ্চলের শহর ইস্পাহানের একটি সেনাঘাঁটির কাছাকাছি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ইরানের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছে, এটা কোনো ক্ষেপণাস্ত্র হামলা নয়। ইরানের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা সক্রিয় হওয়ার কারণেই এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলা হয়েছে, মধ্যরাতের একটু পরেই ‘ইস্পাহানের আকাশে তিনটি ড্রোন দেখা যায়। সঙ্গে সঙ্গে আকাশ নিরাপত্তাব্যবস্থা সক্রিয় করা হয়। আর এর ফলে ড্রোনগুলো আকাশেই ধ্বংস করে ফেলা হয়।


যে কারণে ইস্পাহানই ইসরায়েলের লক্ষবস্তু-


বিবিসিকে একজন পারমাণবিক এবং রাসায়নিক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, সম্ভাব্য লক্ষ্য হিসেবে ইরানের দ্বিতীয় শহর ইস্ফাহানকে বেছে নেয়া ‘অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ’।

যুক্তরাজ্য ও ন্যাটোর পারমাণবিক বাহিনীর সাবেক কমান্ডার হামিশ ডি ব্রেটন গর্ডন উল্লেখ করেছেন, শহরটির আশপাশে অনেকগুলো সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। সেগুলোরই একটি ছিল লক্ষ্যবস্তু। যেখানে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে বলে ধারণা করা হয় সেই স্থানটির খুব কাছেই আলোচিত আক্রমণটি করা হয়েছে। সুতরাং এটা তাদের জন্য একটা ঝাঁকুনি,’ বিবিসিকে বলেন তিনি।


এছাড়াও, ইস্পাহান ইরানের তৃতীয় বৃহত্তম শহর ও প্রধান পর্যটন নগরী। সমৃদ্ধ মুসলিম ঐতিহ্য ও নান্দনিক স্থাপত্যের জন্য বিখ্যাত এটি। একসময় শহরটিকে ‘ইস্পাহান নিসফে জানান’ বলা হতো, যার অর্থ ইস্পাহান পৃথিবীর অর্ধেক। ছন্দোবদ্ধ এই প্রবাদ আসলেই সত্য। এটি পৃথিবীর অন্যতম বড় শহর ছিল এবং দুবার ইরানের রাজধানী হওয়ার গৌরব অর্জন করেছিল। মুসলিম ঐতিহ্যের শহর ইস্পাহানকে ইউনেসকো বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দিয়েছে। ব্রিটিশ পর্যটক রবার্ট বায়রন এথেন্স বা রোমের মতো বিরল স্থানগুলোর সঙ্গে ইস্পাহানকে তুলনা করেছেন। ইস্পাহানের ইতিহাস ও চিত্তাকর্ষক স্থাপত্যের কারণে শহরটিকে ‘ইরানের লুকানো রত্ন’ও বলা হয়।

;