যে উপন্যাসগুলো বাড়িয়ে দিয়েছিল অপরাধপ্রবণতা



আহমেদ দীন রুমি, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
কিছু বই পাঠককে করে তুলেছে অপরাধপ্রবণ

কিছু বই পাঠককে করে তুলেছে অপরাধপ্রবণ

  • Font increase
  • Font Decrease

কিছু উপন্যাস পড়ে ভয় লাগে। কিছু গল্প হাসি আনে আর কিছু আনে কান্না। অনেকের আবার কিছু উপন্যাস পড়লে নাকি ঘুম পায়। সাহিত্য এক বিচিত্র জগত। লেখক তাঁর সম্ভাব্য সমস্তটা দিয়ে জন্ম দেন একটা প্লটের; তার সাথে জন্ম নেয় অনেকগুলো চরিত্র। পাঠক তাতে বুদ হয়ে থাকে; এমনকি পরিবর্তন করে ফেলে ভবিষ্যতের ধ্যান-ধারণা। তাই হত্যার মতো অপরাধও ঘটিয়েছে পাঠকেরা, এমন নজির কম নেই। বিশ্ব সাহিত্যের এমন পাঁচটি বই নিয়ে আজ আমাদের গল্প; দুর্দান্ত সাহিত্যকর্মের তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও যা পাঠককে করে তুলেছে অপরাধপ্রবণ।

ফাউন্ডেশন সিরিজ

বোস্টন ইউনিভার্সিটির বায়োকেমিস্ট্রির প্রফেসর আইজ্যাক আসিমভ। জন্ম ১৯২০ এবং মৃত্যু ১৯৯২ সালে। মূলত তার পরিচিতি আমেরিকান লেখক হিসাবে; যিনি সায়েন্স ফিকশনকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জনপ্রিয় করার অন্যতম অগ্রনায়ক। তার রচিত “ফাউন্ডেশন সিরিজ”কে গণ্য করা হয় সর্বকালের শ্রেষ্ঠ রচনাগুলোর তালিকায়। জিনোম প্রেস, নিউ ইয়র্ক থেকে ১৯৫১ সালে হার্ড কাভারে ২৫৫ পৃষ্ঠার প্রথম বইটি প্রকাশিত হয়। পরবর্তী দু বছরের মধ্যেই ফাউন্ডেশন ত্রয়ী প্রকাশিত হয়; নাম যথাক্রমে—ফাউন্ডেশন, ফাউন্ডেশন এন্ড এম্পায়ার এবং সেকেন্ড ফাউন্ডেশন। পরবর্তীতে জনপ্রিয়তার কারণে সিকুয়েল এবং প্রিকুয়েলও লিখতে হয় আসিমভকে।

সায়েন্স ফিকশনের ক্লাসিকে পরিণত হয় ফাউন্ডেশন সিরিজ


গল্প আবর্তিত হয়েছে বৃহৎ এক গ্যালাক্টিক সাম্রাজ্যের পতন এবং নবজীবনকে কেন্দ্র করে। আর তা থেকে প্রভাবিত হয় জাপানের নতুন এক ধর্মীয় গোষ্ঠী ওমো শিনরিকিয়োর নেতারা। ফলাফল ১৯৯৫ সালে টকিওতে আক্রমণ। ১৩ জন নিহত এবং প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষ আহত হয় সেই ভয়াবহ ঘটনায়।

জ্যাক শেপার্ড

আজকাল কেউ আর উইলিয়াম হ্যারিসন আইনসওয়ার্থ-এর উপন্যাসগুলো পড়ে না। হয়তো না পড়াটাই ভালো; অতিমাত্রায় উত্তেজনা কিংবা ক্লান্তিকর হয়ে উঠতে পারে তার সৃষ্টিগুলো। কিন্তু ঊনিশ শতকের প্রথম ভাগে আইনসওয়ার্থ ছিলেন ইংল্যান্ডের খ্যাতনামা সাহিত্যিকদের একজন। ১৮০৫ সাল থেকে ১৮৮২ সাল অব্দি দীর্ঘ জীবনে তার অনেক রচনাই পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে। তবে বিশেষ স্থান নিয়ে আছে তার রচিত ‘জ্যাক শেপার্ড’।

লেখক আইনসওয়ার্থ ও তার সৃষ্টিকর্ম জ্যাক শেপার্ড


বার্নার্ড নামক জনৈক সুইস ব্যক্তি তার অধীনস্থ চাকুরিজীবীকে হত্যা করে ফেলেন ১৮৪০ সালে। নিহত ব্যক্তির নাম উইলিয়াম রাসেল। বিষয়টা জটিল হয়ে পড়ে যখন হত্যাকারী দাবি করে, আইনসওয়ার্থের উপন্যাস জ্যাক শেপার্ড পাঠান্তেই সে এ হত্যাকাণ্ড ঘটানোর ব্যাপারে অনুপ্রাণিত হয়েছে। বার্নার্ড আদতেই উপন্যাসটি পড়েছে নাকি এমনি বলেছে; তা স্পষ্ট না। কিন্তু লেখক আইনসওয়ার্থ এই ঘটনায় দারুণভাবে ভীত হয়ে পড়েন। ভীতি এতটাই চরমমাত্রায় পৌঁছে গিয়েছিল যে, এরপর থেকে তিনি ঐতিহাসিক উপন্যাস লিখেই দিন গুজরান করতে লাগলেন।

দ্য সিক্রেট এজেন্ট

পোলিশ-ব্রিটিশ লেখক জোসেফ কনরাডের জন্ম ১৮৫৭ সালে। ইংরেজি সাহিত্যের ইতিহাসের মাইলফলক হয়ে বিরাজ করা এই সাহিত্যিকের একটা উপন্যাস প্রকাশিত হয় ১৯০৭ সালে, নাম “দ্য সিক্রেট এজেন্ট : এ সিম্পল টেইল”। জনৈক মি. এডলফ ভারলোক এবং তার স্পাইজীবনের নানা কীর্তি নিয়ে গল্পের অবয়ব গড়ে উঠেছে। প্লট আবর্তিত হয়েছে ডিনামাইট ব্যবহারের মতো ধ্বংসাত্মক নানা ক্রিয়াকলাপ নিয়েও।

দ্য সিক্রেট এজেন্ট বইয়ের ফ্ল্যাপ


দ্য সিক্রেট এজেন্ট-এর এক ডাই হার্ড ভক্ত টেড ক্যাজিনস্কি নিজের বিছানার পাশে বইটির এককপি প্রায়ই রাখতেন। নৈরাজ্যবাদী আর বোমাহামলাকারী হিসাবে তার কুখ্যাতি ছিল। ‘দ্য সিক্রেট এজেন্ট’-এর প্রফেসর চরিত্রের দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিলেন তিনি। গ্রেফতারের পর এফবিআইয়ের কাছে স্বীকারও করেছিলেন, “কনরাডের বই না পড়লে তাকে বুঝতে পারা যাবে না।”

স্ট্রেঞ্জার ইন এ স্ট্রেঞ্জ ল্যান্ড

আমেরিকান সাহিত্যিক রবার্ট এনসন হাইনলেইনের জীবনকাল ১৯০৭ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত। ১৯৬১ সালে প্রকাশিত হয় তার বিখ্যাত সায়েন্স ফিকশন “স্ট্রেঞ্জার ইন এ স্ট্রেঞ্জ ল্যান্ড”। গল্পের নায়ক ভ্যালেন্টাইন মাইকেল স্মিথ পৃথিবীতে আগমন করে; যার জন্ম ও শৈশব কেটেছে মঙ্গল গ্রহের অধিবাসীদের কাছে। সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এবং ক্ষমতার টানাপোড়েনকেই মূলত তুলে আনা হয়েছিল এখানে। কিন্তু ঘটনা সেদিকে থাকেনি।

সেই বিখ্যাত বই আর ‘ফ্যামিলি’র প্রতিষ্ঠাতা চার্লস ম্যানসন


চার্লস ম্যানসন এবং তার ম্যানসন ফ্যামিলির নাম মোটামুটি সবার জানা। এই গোষ্ঠী কেবল ধর্মীয় বিশ্বাসের বদল ঘটায়নি; সেই সাথে গঠন করেছে সশস্ত্র আক্রমণাত্মক সেল। তাদের হাতে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা বিখ্যাত অভিনেত্রী শ্যারন টেটকে হত্যা। দাবি করা হয়, চার্লস ম্যানসন হাইনলেইনের এই বইটি থেকে প্রভাবিত ছিলেন। সান ফ্রান্সিসকোর পত্রিকা এবং ১৯৭০ সালের টাইম ম্যাগাজিন পর্যন্ত দাবি করে বসে ম্যানসন ফ্যামিলির ওপর স্ট্রেঞ্জার ইন এ স্ট্রেঞ্জ ল্যান্ড-এর প্রভাব আছে। যদিও সার্বিকভাবে এই মতকে প্রতিষ্ঠা করা যায়নি।

দ্য ক্যাচার ইন দ্য রাই

জে ডি সেলিঞ্জার প্রকৃতপক্ষে তার “দ্য ক্যাচার ইন দ্য রাই”-এর জন্যই বিখ্যাত। তার জন্ম ১৯১৯ সাল; মৃত্যু ২০১০ সালের জানুয়ারিতে। উপন্যাস হিসাবে বইটা প্রকাশিত হয় ১৯৫১ সালের ১৬ জুলাই। মেরুন রঙের ফ্ল্যাপে সোনালি হাতের লেখা। দুর্ভাগ্যক্রমে বইটি দুর্ধর্ষ খুনে প্ররোচনা দেবার দায়ে অভিযুক্ত।

জন লেননের হত্যাকারী প্রভাবিত ছিল এই বই দ্বারা


বিষয়টা গোচরে আসে বিখ্যাত গায়ক জন লেনন মারাত্মকভাবে গুলিবিদ্ধ হবার পর। ১৯৮০ সালের কথা। মার্ক ডেভিড চ্যাপম্যানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তল্লাশি চালিয়ে তার কাছ থেকে জে ডি সেলিঞ্জারের বইটি পাওয়া যায়। পরবর্তীতে তিনি নিউ ইয়র্ক টাইমসের কাছে স্বীকার করেন, “আসলে যা ঘটেছে তা বুঝতে হলে ক্যাচার ইন দ্য রাই বইটা সাহয্য করতে পারে।” ২০০০ সালে এসে চ্যাপম্যান দাবি করেন, উপন্যাসটি তাকে জন লেননকে হত্যা করতে প্ররোচিত করেনি। বরং তিনি নিজেকে উপন্যাসের নায়ক হোল্ডেন কলফিল্ড-এর চরিত্রে ডুবিয়ে ফেলেছিলেন।

   

খাবারের পর প্লেট ধোয়া কষ্ট? তাহলে এই কৌশল আপনার জন্য!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

খাওয়ার বিষয়ে সবাই পটু। কিন্তু খাওয়ার পর থালা বাসন ধোয়াকে অনেকেই কষ্টকর কাজ মনে করেন। তাই দেখা যায় খাওয়ার পর অপরিষ্কার অবস্থায়ই থেকে যায় থালা বাসনগুলো। এবার এই কষ্ট কমাতে এক অভিনব কৌশল বেছে নিয়েছেন এক ব্যক্তি।

সম্প্রতি এমন এক ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি। 

হর্ষ গোয়েনকা নামে ভারতের এক শিল্পপতি তাঁর এক্স হ্যন্ডেলে (সাবেক টুইটার) ভিডিওটি শেয়ার করেন। এতে দেখা যায়, থালাবাসন পরিষ্কারের কাজ এড়াতে এক ব্যক্তি মজার এক কৌশল নিয়েছেন। এতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি খাবার রান্না করছেন। খাবার আগে তিনি প্লাস্টিক দিয়ে প্লেট, চামচ ও পানির গ্লাস মুড়িয়ে নিচ্ছেন।

শেয়ার করে তিনি মজাচ্ছলে লিখেছেন, "যখন আপনার থালা-বাসন ধোয়ার জন্য পর্যাপ্ত পানি থাকে না..."।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওটি অনেক বিনোদনের জন্ম দিয়েছে। যদিও কেউ কেউ প্লাস্টিকের মোড়ককে হাস্যকর মনে করেন এবং এর ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।

এক্স ব্যবহারকারী একজন লিখেছেন, 'পানি সংরক্ষণ ও পুনর্ব্যবহার করা হল মন্ত্র হল এমন কৌশল! তবে প্লাস্টিকের ব্যবহার নতুন করে ভাবাচ্ছে।'

অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, 'আমি আমার হোস্টেলের দিনগুলিতে এটি করেছি। আমাদের পানি সরবরাহ ছিল না এবং বারবার ধোয়ার কষ্টে এমন কৌশল নিয়েছি।'

আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘মনে হচ্ছে বেঙ্গালুরুতে পানি–সংকটের সমাধান হয়ে যাচ্ছে।’

;

জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রহস্যময় জলদানব জলদানব ‘লক নেস’কে খুঁজে পেতে নাসার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে লক নেস সেন্টার। ২০২৩ সালের এই রহস্যময় প্রাণীর শব্দের উৎস ও একে খুঁজে পেতে হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হয়েছিল।

স্যার এডওয়ার্ড মাউন্টেনের ৯০তম অভিযানের অংশ হিসেবে আগামী ৩০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত এই ‘লক নেস মনস্টার’কে খুঁজে পেতে অনুসন্ধান চালানো হবে।

রহস্যময় এই ‘লক নেস মনস্টার’কে ১৯৩৪ সালে প্রথম দেখা যায়। এ পর্যন্ত ১ হাজার ১শ ৫৬ বার দেখা গেছে বলে লক নেস সেন্টার সূত্রে জানা গেছে।

এ বিষয়ে লক নেস সেন্টারের এমি টোড বলেছেন, আমরা আশা করছি, এই রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার গবেষকেরা আমাদের সহযোগিতা করবেন। তারা আমাদের জলদানবকে খুঁজে পেতে যথাযথ নির্দেশনা দেবেন এবং এ বিষয়ে সব কিছু জানাতে সাহায্য করবেন।

তিনি বলেন, আমাদের অভিযানের বিষয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছি। আমরা আশা করছি, নাসার উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা জলদানব বিষয়ে প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাবো।

রহস্যময় জলদানব খুঁজে পেতে স্বেচ্ছাসেবকের ভূপৃষ্ঠ থেকে যেমন নজর রাখবেন, তেমনি পানির ভেতরে অভিযান চালানোর বিষয়ে তাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হবে। রহস্যময় জলদানবকে খুঁজে পেতে ১৯৭০ দশক ও ১৯৮০ দশকের যে সব তথ্যচিত্র লক নেসের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে, সেগুলো যাচাই করে দেখা হবে।

তারপর জলদানব সম্পর্কে স্বেচ্ছাসেবকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন লক নেসের পরিচালক জন ম্যাকলেভারটি।

এ নিয়ে গবেষকদের নিয়ে একটি অনলাইন বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। যারা রহস্যময় এই জলদানবকে সচক্ষে দেখেছেন, তারাও এ লাইভ বিতর্কে অংশ নেবেন।

নেস হৃদ

যে হ্রদে জলদানব অবস্থান করছে বলে জানা গেছে, অভিযানের অভিযাত্রী দল নৌকায় করে সেখানে যাবেন। এসময় তাদের সঙ্গে থাকবেন গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধানকারী দলের ক্যাপ্টেন অ্যালিস্টার মাথিসন। তিনি লক নেস প্রজেক্টে একজন স্কিপার হিসেবে কাজ করছেন। তার সঙ্গে থাকবেন ম্যাকেন্না।

অনুসন্ধান কাজে ১৮ মিটার (৬০ ফুট) হাইড্রোফোন ব্যবহার করা হবে। এটি দিয়ে রহস্যময় শব্দের প্রতিধ্বনি রেকর্ড করা হবে।

দ্য লক নেস সেন্টার ড্রামনাড্রোচিট হোটেলে অবস্থিত। ৯০ বছর আগে অ্যালডি ম্যাককে প্রথম রিপোর্ট করেছিলেন যে তিনি একটি জলদানব দেখেছেন।

লক নেস সেন্টারের জেনারেল ম্যানেজার পল নিক্সন বলেছেন, ২০২৩ সালে নেসিকে খুঁজে পেতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, জাপানসহ আরো অনেক দেশ অনুসন্ধান কাজে অংশ নিয়েছিল। এটি ছিল বড় ধরনের একটি অভিযান।

তিনি বলেন, অনুসন্ধানের সময় যে অদ্ভুত শব্দ শোনা গিয়েছিল, সে শব্দের কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যায়নি। তবে আমরা এবার দৃঢ় প্রতিজ্ঞ যে, জলদানব লক নেসের রহস্য উন্মোচন করতে পারবো।

এ বিষয়ে আমরা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করবো। এ রহস্যময় জলদানব লক নেস সম্পর্কে যাদের ধারণা আছে, তাদের সহযোগিতা নেওয়া হবে। পল নিক্সন আরো বলেন, এবার আমরা খুবই উচ্ছ্বসিত যে, জলদানবকে খুঁজে পেতে নতুন ধরনের যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবো।

স্কটল্যান্ডের ইনভার্নেসের কাছে এক বিশাল হ্রদের নাম ‘নেস’। স্কটিশ গেলিক ভাষায় হ্রদকে লক (Loch) বলা হয়। আর উচ্চারণ করা হয় ‘লক’। গ্রেট ব্রিটেনের স্বাদুপানির সবচেয়ে একক বৃহত্তম উৎস এ হ্রদটির আয়তন ২২ বর্গ কিলোমিটার, গভীরতা ৮০০ ফুটেরও বেশি। এই হ্রদেই দেখা মিলেছিল সত্যিকারের জলদানব ‘লক নেসের’।

;

স্টেডিয়ামে খেলা দেখার জন্য অফিসে মিথ্যা বলা, শেষ রক্ষা হয়নি তার!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বহুল প্রত্যাশিত ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) শুরু হয়েছে ২২ মার্চ থেকে। বিশ্বের নামিদামী সব খেলোয়াড়ের উপস্থিতি থাকায় বিশ্বজুড়ে এই লীগের চাহিদা তুঙ্গে। তাই এর দর্শক সংখ্যাও কত হতে পারে সেটা সহজেই অনুমেয়। যাদের সুযোগ সামর্থ্য থাকে তারা স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখেন আর যাদের সুযোগ না থাকে তারা টেলভিশনের পর্দায়ই বিনোদন খোঁজেন।

সম্প্রতি, এই লীগের একটি ম্যাচ স্টেডিয়ামে দেখতে গিয়ে অদ্ভুত এক কাণ্ডের জন্ম দিয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরের নেহা নামে এক নারী ভক্ত। ওইদিন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও লখৌন সুপার জায়ান্টসের মধ্যে ম্যাচ চলছিল। সেই খেলা মাঠে বসে দেখতে তিনি পারিবারিক সমস্যার কথা বলে আগেই অফিস থেকে বের হয়ে যান।

তারপর যথারীতি সে মাঠে বসে খেলা উপভোগ করছিল। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে অন্য জায়গায়। খেলা চলার এক পর্যায়ে তাকে টিভি স্ক্রিনে দেখতে পায় তার অফিসের বস।

পরে এই ঘটনাটির একটি ভিডিও তিনি তার ইন্সটাগ্রাম একাউন্টে শেয়ার করেন। সেখানে তিনি পুরো বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করেন।

ওই ভিডিওতে নেহা বলেন, অফিস থেকে পারিবারিক সমস্যার কথা বলে মাঠে এসে খেলা দেখেছি। আমি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর একজন ভক্ত। কিন্তু টিভি স্ক্রিনে আমার বস আমাকে দেখে ফেলে। পরে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেছেন আমি কোন দলের সমর্থক হিসেবে খেলা দেখছি। আমি বলেছি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।

এরপর বস বলেন, তাহলে আপনি নিশ্চয় গতকাল খুব অসন্তুষ্ট ছিলেন। ওরা ফিল্ডিংয়ে একটি ক্যাচ মিস করার সময় আপনাকে খুব উদ্বিগ্ন চেহারায় দেখেছি। ১৬.৩ ওভারে যখন কিপার ক্যাচ মিস করলো, তখন।

হাতেনাতে ধরা পড়ে যাওয়ার পর নেহা স্বীকার করে নেন, ওটা তিনিই ছিলেন। বলেন, হ্যাঁ, অনুজ রাওয়াত ক্যাচ মিস করেছিল।

এরপর নেহার বস বলেন, মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য ক্যামেরায় আপনাকে দেখিয়েছিল। আর তাতেই আমি চিনে ফেলেছি। তাহলে এটাই ছিল গতকাল দ্রুত বেরিয়ে যাওয়ার কারণ।

এরপর তিনি একটি হাসির ইমোজি দিয়ে কথপোকথন শেষ করেন।

ভিডিওটি শেয়ার করার পর রাতারাতি সেটি ভাইরাল হয়ে যায়।

পোস্টের নিচে অনেকেই নিজেদের অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

একজন লিখেছেন, এটা ঠিক আছে। ম্যানেজারের উচিত কর্মচারীকে স্বাধীনতা প্রদান করা। যাতে সে সত্য বলতে পারে বা নিজের জীবনকে স্বাধীনভাবে উপভোগ করতে পারে।

আরেকজন লিখেছেন, আপনাকে এর জন্য চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত। একে তো আপনি অফিস থেকে মিথ্যা কথা বলে বের হয়েছে আবার নিজেদের ব্যক্তিগত কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন।

;

নওগাঁয় কালের সাক্ষী কয়েক শ বছরের পুরোনো বটগাছ



শহিদুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁ সদর উপজেলার বক্তারপুর ইউনিয়নের মুরাদপুর গ্রামে বট ও পাকুড় গাছের মেল বন্ধন প্রায় ৩০০ বছরের অধিক সময়ের। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম কালের সাক্ষী হয়ে এখনো দাঁড়িয়ে আছে রহস্যময় এই বট গাছটি। প্রায় ৫ থেকে ৬ একর জমির ওপরে শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে এই পুরাতন বটগাছটি।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বট ও পাকুর মিলে বিশাল জায়গাজুড়ে কাল্পনিক এক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়েছে। বট গাছের কাণ্ড থেকে কাণ্ড শাখা থেকে প্রশাখা মাটিয়ে লুটে পড়ে আরেক বটগাছের জন্ম দিয়েছে। কাণ্ডগুলো দেখলে বোঝার উপায় নেই যে এটির মূল শাখা কোনটি। লতা থেকে মাটিতে পড়ে সৃষ্টি হয়েছে আরেকটি বটগাছ এভাবে অনেকটা জায়গাজুড়ে এক অন্যরকম সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়েছে স্থানটি। বটগাছের নিচে ও পাশে রয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কালি মন্দির যেখানে কয়েকদিন পর পর বিভিন্ন অনুষ্ঠান করেন তারা।

মুরাদপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা গৌরাঙ্গ সাহা ( ৫০) এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আসলে এই গাছটির সঠিক বয়স কত সেটি আমরা কেউ জানিনা। আমার বাবা-দাদা তারাও এখানে পূজা করতেন তবে তারা আমাদেকে সঠিক বয়স বলতে পারেনি। আমার দাদার মুখে শুনেছি উনার ছোটবেলাতে সেখানে গিয়ে খেলাধুলা করতেন সে সময় গাছটি ঠিক এমন-ই ছিল। তবে অনুমান করা যায়, এই গাছের বয়স প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ বছরের অধিক হতে পারে।

একই গ্রামের গৃহবধূ লাইলী বেগম ( ৫৫) বলেন, আমার বিয়ে হয়েছে প্রায় ৩০ বছর হলো আর তখন থেকেই এই গাছটি দেখে আসছি। বাড়ি কাছে হওয়ায় প্রতিদিন আশেপাশে আসতে হয় বিভিন্ন কাজে। মূল গাছটি আমরা অনেক খুঁজেছি কিন্তু পাইনি। একটা গাছ থেকে এতগুলো গাছের সৃষ্টি হয়েছে দেখতে ভালোই লাগে। তবে যদি এটি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করলে আরো কয়েকশ বছর টিকবে বলে মনে করি।

হালঘোষপাড়া থেকে আসা রায়হান নামের এক দর্শনার্থী বলেন, শুনেছিলাম এখানে অনেক পুরাতন বটগাছ আছে আজকে দেখতে আসলাম। চারিদিকে ছড়িয়ে গেছে এমন বটগাছ আমাদের এলাকায় নেই। দেখে খুব ভালো লাগছে এখন থেকে মাঝেমধ্যেই আসব।


কল্পনা রানী ( ৪৮) বলেন, আমার স্বামীর বাবার মুখ থেকে শুনেছি এটির বয়স প্রায় ৩০০ বছরের অধিক। কিছুদিন পর পর এখানে পূজা হয় বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এসে পূজা দেয়। এমন সুন্দর বটগাছ আমি কোনোদিন দেখিনি।

বিমল সাহা নামের এক শিক্ষার্থী জানান, আমরা প্রতিদিন আমরা এখানে এসে ক্রিকেট খেলি। এতো পুরাতন একটি বটের গাছ দেখতে পেয়ে আমাদের খুব ভালো লাগে।

এ বিষয়ে নওগাঁ সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এনায়েতুস সাকালাইন বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রাকৃতিকভাবে একেকটা উদ্ভিদের আয়ু একেক রকম হয়ে থাকে সেরকম বটগাছ দীর্ঘজীবি উদ্ভিদ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, কোনো কোনো জায়গায় ৫০০ বছর বা অধিক সময়ের বেশি বেঁচে থাকে। এই উদ্ভিদগুলোর অভিযোজন ক্ষমতা অনেক বেশি ও পরিবেশের সাথে এদের খাপখাইয়ে নেওয়ার ক্ষমতাও বেশি এবং যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশে এরা মোকাবিলা করতে সক্ষম। বটগাছ গুলো বেশি পানি না পেলেও দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে আবার খুব বেশি তাপমাত্রা বা তাপমাত্রা নিচে নেমে গেলেও এ ধরনের উদ্ভিদ সে সময় টিকে থাকতে পারে সেজন্য অনেক সময় বিল্ডিং বাড়ির দেয়ালেও এদের বিস্তার দেখা যায়।

তিনি আরও বলেন, বট গাছগুলোর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য আছে সেটি হলো ওপরের দিকে একটু বেড়ে অনেকদিকে বিস্তার লাভ করে বেশ বড় জায়গা দখল করে তখন এই উদ্ভিদগুলোর ওপরের অংশের ভার বহন করার জন্য ঠেসমূল গঠন করে তারা। মূল কাণ্ড থেকে আস্তে আস্তে মাটিতে ঠেসমূল নেমে আসে তখন ধীরে ধীরে মোটা হতে থাকে। মূল যে কাণ্ডটা তার থেকে বয়সের সাথে সাথে আরো তৈরি হয় যাতে গাছের ভার বহন করতে সক্ষম হয় এবং এভাবে বিশাল জায়গাজুড়ে একে একে বিস্তার লাভ করে কাণ্ডগুলো। বটগাছে এ ধরনের কর্মকাণ্ড লক্ষ্য করা যায় কিন্তু পাকুড় জাতীয় গাছে কম লক্ষ্য করা যায়।

;